World war 2 role of media
উত্তর :- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বহুমুখী ছিল। যুদ্ধের সময় প্রচার মাধ্যম বিভিন্নভাবে যুদ্ধ পরিচালনা, জনমত তৈরি, মনোবল বাড়ানো এবং শত্রুর বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। নিচে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মিডিয়ার ভূমিকার কিছু উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরা হলো:-
১. প্রচার ও প্রোপাগান্ডা:-
যুদ্ধকালীন সময়ে মিডিয়াকে বিশেষ করে রেডিও, পত্রিকা এবং চলচ্চিত্রকে প্রোপাগান্ডার হাতিয়ার হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।
উভয় পক্ষের সরকার তাদের জনগণের মনোবল বাড়াতে এবং শত্রুপক্ষকে দুর্বল দেখাতে তথ্য বিকৃত করে প্রচার চালিয়েছে।
যেমন, নাজি জার্মানি জোসেফ গোয়েবেলসের নেতৃত্বে বিশাল প্রোপাগান্ডা মেশিন চালায়, যেখানে মিডিয়া ব্যবহার করে অ্যাডলফ হিটলারকে মহান নেতা হিসেবে তুলে ধরা হয়।
২. জনমত প্রভাবিত করা:-
মিডিয়ার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।
পত্রিকা এবং রেডিওর মাধ্যমে যুদ্ধকালীন অর্থনীতি, ত্যাগ এবং অংশগ্রহণের গুরুত্ব বোঝানো হয়।
৩. তথ্য সংগ্রহ ও সেন্সরশিপ:-
যুদ্ধের সময় সরকারগুলো সেন্সরশিপের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্য প্রকাশে বাধা দেয়।
সামরিক গোপনীয়তা রক্ষার জন্য মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
শত্রুর পরিকল্পনা জানার জন্য গুপ্তচর এবং সাংবাদিকদের ব্যবহার করা হয়।
৪. সেনাবাহিনীর মনোবল বাড়ানো:-
মিডিয়া বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক প্রোগ্রাম প্রচার করে, যেমন রেডিওতে সঙ্গীত সম্প্রচার এবং সিনেমায় দেশপ্রেমিক গল্প।
যুদ্ধরত সৈন্যদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান এবং বার্তা পাঠানো হতো।
৫. যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদ পরিবেশন:-
যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি প্রতিবেদন এবং ফটোগ্রাফি যুদ্ধের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।
যদিও অনেক সময় এই প্রতিবেদনগুলিও সেন্সরড বা সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়।
৬. চলচ্চিত্র ও পোস্টার:-
যুদ্ধের সময় চলচ্চিত্র এবং পোস্টার একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
যুদ্ধের জন্য লোকদের অনুপ্রাণিত করতে এবং শত্রুকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরতে ভিজ্যুয়াল আর্ট ব্যবহার করা হয়।
উপসংহার:-
মিডিয়ার ভূমিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কেবলমাত্র তথ্য সরবরাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি ছিল একটি কৌশলগত হাতিয়ার। মিডিয়ার মাধ্যমে জনমত নিয়ন্ত্রণ, প্রোপাগান্ডা পরিচালনা এবং যুদ্ধ জয়ের জন্য মানসিক সমর্থন অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল।