শীতের ওঢ়নী পিয়া গীরিষির বা বরিষার ছত্র পিয়া দরিয়ার না।।"-প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আলোচ্য উদ্ধৃতিটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: প্রসঙ্গ: কবি বিদ্যাপতি রচিত পাঠ্য 'ভাব সম্মিলন' কবিতা থেকে আলোচ্য উদ্ধৃতিটি সংগৃহীত। আলোচ্য অংশে কবি বুঝিয়েছেন প্রিয়তম শ্রীকৃষ্ণ, কেবল শ্রীরাধিকার প্রেমিকই নন, তিনি তাঁর ত্রাতাস্বরূপ। রাধার জীবনে কৃষ্ণের গুরুত্ব কতখানি, তা বোঝাতে বিদ্যাপতি এই মালা রূপক অলংকার ব্যবহার করেছেন।
ব্যাখ্যা: দীর্ঘদিন কৃষ্ণবিচ্ছেদ শূন্য শ্রীরাধিকাকে উন্মাদিনী করে তুলেছিল। আকাঙ্ক্ষিত প্রিয়তমকে মানসলোকে পেয়ে তাঁর আনন্দের আর সীমা নেই। ভাবের অতিশয্যে ভেসেছেন শ্রীরাধিকা। সখীর কাছে সেই আনন্দ ব্যক্ত করছেন, নানা অলংকার-অভিধায় ভরিয়ে তুলছেন শ্রীকৃষ্ণকে। শ্রীকৃষ্ণ যে তাঁর কাছে কতটা মূল্যবান, তা বোঝাতে কী বলবেন, কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তিনি সখীকে বলছেন, ওড়না বা উত্তরীয় যেমন শীতের প্রকোপ থেকে শরীরকে রক্ষা করে তেমনই শ্রীকৃষ্ণ যেন শ্রীরাধিকার অসময়ের রক্ষক, আবার প্রবল গ্রীষ্মের দিনে সুশীতল বাতাসের মতো শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধিকার জীবনে আনেন প্রশান্তি। কৃষ্ণ যেমন ছাতার ন্যায় প্রতিকূলতার ধারা বর্ষণ থেকে রাধিকাকে রক্ষা করেন, তেমনই কৃষ্ণই তাঁর জীবন নদীর নৌকা। দুর্গম ভব পারাবারের কান্ডারি। রাধার জীবনে তিনি নিশ্চিন্ত আশ্রয় সুখ। অর্থাৎ রাধার জীবন জুড়ে শ্রীকৃষ্ণ বিরাজমান। এ কথাই আলোচ্য অংশে বর্ণনা করা হয়েছে.