গুরুত্বভিত্তিক সূচক সংখ্যা পদ্ধতি (Weighted Index Number Method)
বাহ্যিক অঞ্চলের পরিসরকে যথার্থভাবে চিহ্নিতকরণের উদ্দেশ্যে ফরাসি ধুলিক অর্থনীতিবিদ জে. আর।বাওডিভেলি (). R. Boudiveli) সর্বপ্রথম যে প্রয়োগমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রবর্তন করেছিলেন, সেটিকে গুরুত্বভিত্তিক সূচক সংখ্যা পদ্দতি বলা হয়। এই গতিতে আঞ্চলিক ক্ষেত্রের প্রতিটি স্থানীয় উপাদান বা নির্ধারকগুলির এক-একটি পৃথক গুরুত্বসূচক সংখ্যা দ্বারা নির্ণয় করা হয়। যেমন
এই লম্পতিতে অর্থনৈতিক পশ্চাদপদতা চিহ্নিতকরণের জন্য কর্মসংস্থ্যান এবং অর্থনৈতিক স্তরের মধ্যে থেকে দুটি উল্লেখযোগ্য স্থিতিমাপক (Parameter) যথা-বেকারত্বের হার ও মাথাপিছু আয়কে বেছে নিয়ে তাদের প্রত্যেকটিকে করা হল।
আঞ্চলিক পরিসর অনুযায়ী উপস্থাপন করতে হয়। নীচে প্রদর্শিত দুটি ধারণাচিত্রে বিষয়টিকে আরও স্পষ্টভাবে উল্লেখ
1 নং চিত্রে 12-টি পৃথক অঞ্চলের ওপর অর্থাৎ, A থেকে পর্যন্ত প্রতিটি কক্ষে প্রথমে বেকারত্বের হারকে (মা, নীল রঙে প্রদর্শিত) এবং মাথাপিছু আয়কে (যা, লাল রঙে প্রদর্শিত) সংখ্যাসূচক আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে। এখানে নির্ধারিত দুটি এককের পৃথক পৃথক গুরুত্বসূচককে ত্ববক সংখ্যা হিসেবে ধরে তাদের সামগ্রিক যোগফলকে 2 না চিত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর, প্রাপ্ত গুরুত্বসূচকের সমষ্টিগত পৃথক মানগুলিকে পুনরায় কয়েকটি সমমাত্রার নির্ধারিত মানের ভিত্তিতে চিহ্নিত দুটি পৃথক অঞ্চলে উপস্থাপন করা হয়। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে 5 সংখ্যার মাত্রাটিকে আঞ্চলিক সূচক সীমারূপে ধরায় দুটি ভিন্নধর্মী অঞ্চল এখানে পৃথকভাবে প্রকাশ পেয়েছে। এইভাবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক পরিসরে বেকারত্ব ও মাথাপিছু আয়ের যৌথ ভার আরোপিত এলাকাটি স্পষ্টতই চিহ্নিত করা গেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্ট দুটি অঞ্চলের সমধর্মিতা বিচারে অনেকসময় চিহ্নিত পরিসরের প্রতিটি মানের গড় (Mean) এবং গড় বিচ্যুতি (Standard deviation)-এরও সাহায্য নেওয়া যায়। এর ফলে অঞ্চলটির সীমানা এবং সীমানাকেন্দ্রিক অন্যান্য উপাদানগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
সাধারণত এই পদ্ধতিতে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে 'weitage'-কে গবেষকরা তাঁদের নিজস্ব ধারণা থেকে গৃহীত যেকোনো মানকেই আঞ্চলিক উপাদানগুলির গুরুত্বের ক্রমানুসারে বিবেচনা করে থাকেন।
অসুবিধা (Problems):
(i) পৃথিবীর এমনকিছু বাহ্যিক এলাকা থাকে, যেগুলির স্থানিক সীমানা নির্ধারণে ভৌগোলিকদের যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হতে হয়।
(ii) অনেক ক্ষেত্রে বাহ্যিক অঞ্চলের সীমানাগুলি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়।
(iii) আপাতদৃষ্টিতে পরস্পর সংলগ্ন বাহ্যিক অঞ্চলগুলির সীমানাকেন্দ্রিক কোনও সমস্যা না থাকলেও, বাস্তবে বিভিন্ন দেশের প্রাকৃতিক সীমানাগুলিতে অধিগ্রহণমূলক সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- 1956 খ্রিস্টাব্দে Oskar Spate-এর লেখা "India, Pakistan and Srilanka" নামক গ্রন্থটিতে ভারতীয় উপমহাদেশের ভৌগলিক সীমারেখার কেন্দ্রিক সমস্যার বিষয়টিকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।