Station model এবং আবহাওয়া মানচিত্রে ব্যবহৃত সাংকেতিক চিহ্নসমূহ (Symbols used in Station model and Weather Map)
আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদানগুলিকে যেসব সাংকেতিক চিহ্ন বা চরম মানবিশিষ্ট সংখ্যা দ্বারা উপস্থাপন করা হয় সেগুলিকে ভালোভাবে জানা ও পর্যবেক্ষণ করা বিশেষভাবে প্রয়োজন। বিশ্ব আবহাওয়া দপ্তর কর্তৃক নির্দিষ্ট করা সাংকেতিক চিহ্নগুলিকে নিচে আবহাওয়ার উপাদান অনুযায়ী উল্লেখ করা হল-
1. বায়ুর চাপ (Air Pressure):
কোনো নির্দিষ্ট স্থানে একক ক্ষেত্রফলের ওপর বায়ুমণ্ডল তার ওজনের জন্য লম্বভাবে যে পরিমাণ বল প্রয়োগ করে তাকে ওই স্থানের বায়ুর চাপ বলা হয়। আবহাওয়া মানচিত্রে বায়ুর চাপ সমপ্রেষরেখা দ্বারা দেখানো হয়। চাপের পরিমাণ মিলিবারে প্রকাশ করা হয়। সমপ্রেষরেখাগুলি 2 মিলিবার ব্যবধানে টানা থাকে, তবে কখনো কখনো 4 মিলিবার অন্তরও টানা থাকতে পারে। মানচিত্রে উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ ক্ষেত্র বোঝাতে যথাক্রমে ইংরেজি অক্ষর H L লেখা থাকে। এই উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ আপেক্ষিক অর্থে ব্যবহৃত হয়, কোনো চরম মান দ্বারা নির্দিষ্ট বা স্থির করা হয় না। Station model-এ বায়ুর চাপ উল্লেখ করার জন্য pppp সংকেত ব্যবহার করা হয়।
2. বায়ুর দিক ও গতি (Direction and Velocity of Wind):
বায়ুপ্রবাহের নির্দিষ্ট দিক ও গতিবেগ থাকায় এটি একটি ভেক্টর রাশি হিসেবে বিবেচিত হয়। বায়ুপ্রবাহের দিক তিরচিহ্ন দিয়ে এবং গতিবেগ তিরের পশ্চাতে ছোটো রেখা (Hand) কিংবা পাখির পালকের চিহ্ন (Quil) দিয়ে দেখানো হয়। বায়ু যেদিকে প্রবাহিত হয় অর্থাৎ মানচিত্রে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ স্টেশনের অভিমুখে তিরের অগ্রভাগ থাকে। অভিমুখটি এক ডিগ্রির এক-দশমাংশে প্রকাশ করা হয়। বায়ুর গতিবেগের চিহ্নটি সর্বদা বায়ুপ্রবাহের অভিমুখে প্রদর্শিত তিরের বাঁদিকেই থাকে। Station model-এ বায়ুপ্রবাহের অভিমুখকে 'dd' এবং গতিবেগকে 'If' সংকেত দ্বারা উপস্থাপন করা হয়।
বায়ুর গতিবেগ সাধারণত 'নটিক্যাল মাইলে' (Nautical mile) বা নটে প্রকাশ করা হয়। [1 নটিক্যাল মাইল = 1-15 ভৌগোলিক মাইল বা 1-85 কিমি।। বায়ুর দিক ও গতিবেগ সাংকেতিক চিহ্ন দ্বারা নিচে দেখানো হয়।
3. আকাশের অবস্থা (Condition of Sky):
আকাশের অবস্থা বলতে প্রধানত মেঘমুক্ত বা মেঘে-ঢাকা আকাশকে বোঝায়। কোনো আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে দিগন্ত পর্যন্ত বিস্তৃত আকাশের কতখানি অংশ মেঘহীন অথবা মেঘপূর্ণ তা দেখা হয়। সাধারণত আকাশে মেঘাচ্ছন্নতার হিসাব octant (সংক্ষেপে Octa) এ প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ, সমগ্র আকাশকে আটটি দিক অনুযায়ী আটভাগে ভাগ করে মেঘাচ্ছন্নতার পরিমাণ পরিমাপ করা হয়। এ ছাড়া একই সঙ্গে মেঘের উচ্চতা অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করা হয়। 1957 সালের আগে পর্যন্ত ভারতের মানচিত্রে উঁচু মেঘকে দেখানো হত। তবে উঁচু মেঘের গুরুত্ব না থাকায় 1957 সাল থেকে মানচিত্রে একে আর দেখানো হয় না। মেঘের প্রকার ও পরিমাণ সাংকেতিক চিহ্নের সাহায্যে নিচে দেখানো হয়।