আঞ্চলিকীকরণের সমস্যার সমাধান (Solution to solve the problem of Regionalizatim)
আঞ্চলিকীকরণের ক্ষেত্রে উল্লিখিত বিভিন্ন সমস্যার নিরসনের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘকালীন প্রচেষ্টারূপে ভৌগোলিকরা বেশ কয়েকটি কৌশল অবলম্বনের বিধান দিয়ে থাকেন। যেমন-
(i) আঞ্চলিকীকরণের প্রথমেই নির্বাচিত অঞ্চল বা এলাকাটিকে ভালো করে জরিপ (survey) এবং সান্নি ক্ষেত্রগুলি থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের সময় যথেষ্ট সচেতন থাকতে হবে।
(ii)আঞ্চলিকীকরণের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকার পরিসংখ্যানগত তথ্যের প্রাপ্যতা যদি খুব সীমিত। হয়, সেক্ষেত্রে সংলগ্ন বাফার এলাকাগুলি থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাহায্যও নিতে হবে।
(iii) আঞ্চলিকীকরণের স্কেলসংক্রান্ত ত্রুটি এড়াতে অভিজ্ঞতামূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে দৈশিক বিভিন্ন স্কেলগুলির সমন্বয় ঘটাতে হবে। তা ছাড়া, কার্যকরী ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করার সময় প্রশাসনিক বিভাগগুলিতে পাওয়া বিভিন্ন স্থানীয় মানচিত্র এবং এলাকাভিত্তিক সংযোগের ধরন সংক্রান্ত প্রকৃতি অনুমতিসাপেক্ষে বিবেচনা করতে হবে।
(iv)) যে-সমস্ত এলাকা দ্রুত বর্ধনশীল, সেখানকার আকারের পরামিতিগুলি বুঝতে একটি কার্যকরী এলাকার ন্যূনতম পরিবর্তনের মাত্রা এবং পরিবর্তনের অভিমুখটিকে যথার্থভাবে বিশ্লেষণ করা একান্ত প্রয়োজন।
(v) একটি নতুন অন্যল সম্পর্কে ভৌগলিক ধারণা তৈরি করতে অথবা আঞ্চলিকীকরণের প্রচেষ্টাটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, প্রয়োজনে পূর্বেকার অপর কোনও ভৌগোলিকদের আঞ্চলিকীকরণের পদক্ষেপগুলিকে অনুসরণ করতে হবে।
(vi) আঞ্চলিকীকরণের প্রাথমিক প্রচেষ্টায় সর্বদা ক্ষুদ্র কার্যকরী এলাকাগুলিকে বরাবর যথার্থভাবে সমীক্ষা করতে হবে। এর ফলে, এলাকাগত সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলিকেও খুব সহজে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। ঠিক এই কারণেই ভারতসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ সাম্প্রতিককালে আঞ্চলিকীকরণের প্রচেষ্টায় "Cluster analysis method"-এর সাহায্যে এলাকাকে ছোটো ছোটো এককে বিভক্ত করে বিশ্লেষণ করে থাকেন।
(vii) আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ করতে সর্বদা একটি দেশের ন্যূনতম ক্ষেত্রফলের উপর এমনকি সেখানকার সম্পদ সম্ভাবনা এবং অর্থনৈতিক কার্যকারিতার বিষয়গুলিকেও অনুধাবন করতে হবে।
(viii) স্থানীয় এলাকার উপাদানগত সমন্বয় ঘটাতে আঞ্চলিকীকরণ প্রক্রিয়ায় নির্দিষ্ট এলাকাটির কাঠামোগত সমতা নির্ধারণ করতে হবে।
(Ix) তাছাড়া, গাণিতিক পদ্ধতিতে শ্রেণিবশ্য ক্লাস্টার নির্বাচন করে একটি এলাকাকে সীমায়িত করে, সবশেষে সর্বজনস্বীকৃত কোনও নির্দিষ্ট প্রশাসনিক মানচিত্রে তার উপস্থাপন একান্ত আবশ্যক।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আঞ্চলিকীকরণ পদ্ধতিটিকে আরও ভালোভাবে মানচিত্রে উপস্থাপনার জন্যে বর্তমানে Arc GIS software-এর সাহায্য নেওয়া হয়। তা ছাড়া, আঞ্চলিকীকরণের সামগ্রিক বিষয়টিকে আরও দক্ষতাপূর্ণভাবে পরিচালিত করতে বহুমুখী তথ্য আহরণের ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।