পশ্চিমবঙ্কোর মানব উন্নয়নের পরিচিতি পর্যালোচনা(A review of human development situation in West Bengal)
পশ্চিমবঙ্গের মানব উন্নয়ন পর্যালোচনা কিছুটা দেরিতে শুরু হলেও, সাম্প্রতিককালে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন বিবেচনায় অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ এখানকার মানব উন্নয়নের বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। বিংশ শতকের পূর্বে ভূমি সংস্কার এবং আর্থিক বিকেন্দ্রীকরণের প্রভাবকে সঠিকভাবে অনুধাবন না করতে পারায় এ রাজ্যে মানব উন্নয়নের বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা প্রকাশ পেয়েছিল। তা সত্ত্বেও, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামীণ অর্থনীতিতে উৎপাদনশীল শক্তির প্রকাশ এবং ভোগপ্রবণতায় দক্ষতা অর্জনের প্রতিটি উদ্যোগকে ঐ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।।
স্বাধীনতার প্রেক্ষাপট (Background) পরবর্তীকালে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটটি ছিল কৃষিকেন্দ্রিক। যে লক্ষ্যে এক সময় এরাজ্যে ভূমিসংস্কারের মধ্যে দিয়ে কৃষি উন্নয়নের সার্বিক প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। পরবর্তীকালে, অর্থাৎ 90- এর দশকের পর এরাজ্যের উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গি ধীরে ধীরে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দিকে ঝুঁকে পড়ে। অবশ্য, ইতিমধ্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘ তথা বিশ্বব্যাংক মারফত মানব উন্নয়নের প্রদর্শিত পথ ধরে একাধিক দেশ তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিতে সার্বিক সক্ষমভাবে অন্তর্ভুক্ত করে। অন্যদিকে, 2001 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারিতে প্রতিবর্গ কিমিতে প্রায় ৩৪ জন জনসংখ্যা এবং সামগ্রিকভাবে প্রায় ৪২ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ দেশের চতুর্থ জনবসতিপূর্ণ রাজ্যরূপে স্বীকৃতি অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। বাজে। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপে যখন মানবসম্পদের গুণমান আরও নিম্নমুখী হয়ে পড়ে, সেই অবস্থায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে মৌলিক পরিসেবার প্রাপ্যতা অক্ষুন্ন রাখতে সার্বিক প্রগতির স্বার্থে মানব উন্নয়নের পরিসরগুলিকে ক্রমশ উন্মুক্ত করা হয়।
এরাজ্যে মানব উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নতিকল্পে বিভিন্ন কর্মসূচির সফল প্রয়োগ ঘটতে দেখা যায় একবিশে শতকের শুরুতে। বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে অবৈতনিক শিক্ষা, জনশিক্ষার প্রসার, গ্রামীণ হাসপাতাল নির্মাণ, উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র মারফত প্রান্তিক অঞ্চলগুলিকে স্বাস্থ্য পরিসেবা, কর্মসংস্থান -সহ একাধিক বিষয়কে মান্যতা দিয়ে পঞ্চায়েত স্তর থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ্য সরকার গ্রহণ করে। 2004 খ্রিস্টাব্দে 18মে রাজ্যের 17টি জেলার ওপর ভিত্তি করে মানব উন্নয়নের যে প্রথম প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল সেটি ১৪ নং স্মরণীর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হলো
পশ্চিমবঙ্গে মানব উন্নয়নের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র(Some notable areas of human development in West Bengal):
পশ্চিমবঙ্গে মানব উন্নয়নের প্রকৃত অবস্থা পর্যালোচনা করতে হলে, এখানকার মানুষের আর্থসামাজিক প্রগতির বিচ্ছি দিকগুলি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা বাঞ্ছনীয়।
মাথাপিছু আয় (Percapita income): মাথাপিছু আয় মূলত পরোক্ষভাবে মানুষের জীবনযাত্রার মদনির্ধারণে বিশেষভাবে সহায়তা করে। 1960-এর দশকের শুরুতে পশ্চিমবঙ্গের জনগোষ্ঠীর মাথাপিছু আয় দেশের জাতীয় গড় আয়ের থেকেও যথেষ্ট বেশি ছিল। অবশ্য, 1980-এর দশকের গোড়ার দিক পর্যন্ত মাথাপিছু আয় জাতীয় গড়ের কাছাকাছি বা আয় সমান থাকলেও, 2000 এবং 2011 খ্রিস্টাব্দে সমগ্র দেশের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের মাথা পিছু আয়ের স্থান ক্রমান্বয়ে সপ্তম, দশম এবং একাদশ স্থানে নেমে আসে। বিষয়টিকে নিম্নলিখিত 15 নং সারণিতে উপস্থাপন করা হল।
দারিদ্র্য (Poverty): মানব উন্নয়ন বিবেচনায় এরাজ্যে বসবাসকারী মানুষের দরিদ্রতার প্রসঙ্গটিও দুর সামরিকভাবেই এসে যায়। প্রসঙ্গত 1999-2000 খ্রিস্টাব্দে, এখানকার সাহা 267 দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করাত, সেই সময় দেশে দারিদ্রের গড় জাতীয় সীমা 26.7% ছিল। পরবর্তীকালে, অর্থাং 2001-2010 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সেই দারিদ্রের হার পশ্চিমবঙ্গেঙ্গ প্রায় 20% এ নেমে আসে। অবশ্য, বিগত দশকে রাজ্যের দারিদ্র্য অবস্থা ইতিবাচকভাবে আরও প্রায় 14%-এ নেমে এসেছে। তা সত্ত্বেও, ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের কারণে পশ্চিমবঙ্গোর বিভিন্ন জেলায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে পারস্পরিক বৈষম্য কখনো কখনো ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বিশেষ করে বিগত ১০ বছরে পরিসংখ্যা অনুযায়ী এ রাজ্যের দারিদ্র মানুষের সিংহভাগই পুরুলিয়ায় জেলা বাসিন্দা। অন্যদিকে এই সময়কাল কলকাতা দারিদ্র মাত্রায় ছিল যথেষ্ট কম।
শিক্ষা (Education): ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষা ব্যাবস্থা প্রাথমিক থেকে স্নাতক স্তর পর্যন্ত কেন্দ্রীয়, রাজা এবং স্থানীয় -এই তিনটি স্তরে নিয়ন্ত্রিত হয়। শিক্ষাক্ষেত্রের সমস্ত ধরনের পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গা বহুকাল আগে থেকেই যথেষ্ট প্রশংসনীয় স্থান ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছে। এরাজ্যে শিক্ষার সম্প্রসারণে সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলি। যৌথভাবে যে উদ্যোগগুলি নিয়েছে, তার ফলশ্রুতিতেই শিক্ষার মানদন্ডে সময় দেশের অন্যান্য সমৃন্ধ রাজ্যের সাথে প্রায় সমানভাবে এগিয়ে চলেছে। বিশেষকরে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, শান্তিনিকেতন বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বয়স্ক সাক্ষরতার লক্ষে। 1988 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার যে 'National Literacy Mission' গ্রহণ করে, পশ্চিমবঙ্গে সেই নীতিগুলিকেও অত্যন্ত সাফল্যের সাথে বাস্তবায়িত করা হয়। 21 শতকের গোড়ার দিকে এ রাজোর সাক্ষরতার হার প্রায় 75 শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল এবং তৎকালীন সময় পশ্চিমবঙ্গেঙ্গ পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সাক্ষরতার হারে বৈষম্য জাতীয় গড় থেকে অত্যন্ত কম ছিল।
লিজা উন্নয়ন(Gender development): লিঙ্গ উন্নয়নের মূল বিষয়টিতে সমাজে মহিলাদের সক্ষমতার পক্ষে ইতিবাচক মতামত প্রদর্শন করে। 2004 খ্রিস্টাব্দের পশ্চিমবঙ্গ লিঙ্গ উন্নয়নের সূচকের নিরিখে সমগ্র দেশের মধ্যে মোটামুটি একটি ভালো অবস্থানে ছিল। এই সময় লিঙ্গ্য উন্নয়নের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বীর্যতম জেলাটি ছিল কলকাতা (1642)। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে ছিল যথাক্রমে দুই মেদিনীপুর 10.680) এবং দাজিলিং (0.650)। এই বছর, লিঙ্গ উন্নায়নে সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলাটি ছিল মালদা 10-440
পৃষ্টি (Health and Nutrition): স্বাস্য এবং পুষ্টি যৌথভাবে যে কোনও রাজ্যের প্রগতি অনুধাবনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য দুটি নির্ধারক। পশ্চিমবঙ্গে জনকল্যাণের স্বার্থে সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রথম রূপান্তর ঘটেছিল জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশন। NRHM)-এর হাত ধরে। পরবর্তীকালে, রাজ্য সরকারের স্বকীয় প্রচেস্টায় স্বাস্থ্য পরিসেবার বিভিন্ন ক্ষেত্রকে ঢেলে সাজানোর লক্ষ্যে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য উচ্চমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা বজায় রেখেছে। তা সত্ত্বেও, বিগত কয়েক দশকের পরিসংখ্যানে, শিশুমৃত্যু, রস্তাল্পতা, এবং বিভিন্ন দূষক রোগজনিত কারণে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা যথেষ্ট উদ্বেগের মধ্যে ছিল। 1998-99 খ্রিস্টাব্দের একটি প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সমগ্র দেশের 25টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গা শিশুমৃত্যুর নিরিখে ওয় স্থানে, রপ্তাল্পতা জনিত সমস্যায় 19তম স্থান বজায় রাখে। তৎকালীন, এ-রাজ্যের ৪টি জেলার গেটি ব্লকের প্রায় 135 মিলিয়ন মানুষ আর্সেনিকের মারাত্মক কবলের মধ্যে বসবাস করত। পুষ্টির দিক থেকেও রাজ্যের পুরুলিয়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিম মেদিনিপুরের বেশ কয়েকটি ব্লক অত্যন্ত পিছিয়ে পড়ে। স্বাস্থ্য এবং পুষ্টিথাতে বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে গিয়ে বাজোর প্রায় 76% ব্যয় হয়ে যেত, অথচ ভারতের কেরল ও তামিলনাডুতে এই ব্যয়ের পরিমাণ ছিল মাত্র 25%। সুতরাং, এর থেকে একটা বিষয় খুবই স্পষ্ট পশ্চিমবঙ্গের মানব উন্নয়ন ঘটানোর প্রাথমিক স্তম্ভটি শুরু থেকেই ছিল বেশ দুর্বল। প্রসঙ্গত, 2004 খ্রিস্টাব্দের মানব উন্নয়নের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে জেলাভিত্তিক স্বাস্থ্য সূচকের তালিকাটি উপস্থাপন করা।
সাম্প্রতিক অবস্থা (Recent Status):
2019 খ্রিস্টাব্দের মানব উন্নয়নের নিরিখে ভারতের 35টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্পান 2৪তম। অর্থাৎ, সমগ্র দেশের মানব উন্নয়ন সূচকের মান 0.645, অথচ পশ্চিমবঙ্গো এই সূচক 0.641-যা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। তা সত্ত্বেও, আয়তনে ভারতের 14তম এবং ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতির অঙ্গরাজ্য হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ্য সম্প্রতি মানব উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরসল প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন-
মানব উন্নয়নের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রাখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার শিক্ষাক্ষেত্রকে সম্পূর্ণরূপে ঢেলে সাজিয়েছে। বর্তমানে, রাজো প্রায় 64,081টি বিদ্যালয় এবং 30টিরও অধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেগুলি পাঠক্রম অনুযায়ী ছাত্র ছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের উপযোগিতার কথা মাথায় রেখে উপার্জনের পথ প্রস্তুত করে দেয়। সেইসাথে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, মেডিকেল কলেজ এবং প্রযুক্তিকেন্দ্রিক একাধিক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বৃত্তিমুখী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রদানের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে 5,000 টিরও বেশি বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্র সর্বজনীন শিক্ষার প্রসারে নানাভাবে সহায়তা করে। বর্তমানে, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিকল্পে মহিলা শিক্ষার প্রসারে কন্যাশ্রী প্রকল্প, সবুজ সাথী প্রকল্প, বৃত্তিমুখী নানা প্রকল্প এবং উচ্চ শিক্ষার উন্নতিকল্পে স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড-সহ বিভিন্ন পরিসেবা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
চিতি রাজ্যে এটি মাল্টি স্পেশালটি হাসপাতাল এবং 50টির কাছাকাছি Critical Care Unit 2019গান করার প্রস্তাব রূপায়িত হয়েছে। নবজাতক শিশু চিকিৎসার জন্য এস.এন.সি.ইট (SNCU)-এর সংখ্যা এটি যেতে যৌন হয়েছে ৫৪, যেখানে শ্যাসাখ্যা আিেট। এই মুহূর্তে 12টি সরকারি মেডিকেল কলেজের আরও পাঁচটি নতুন বেড়ে প্রাত্যডিকেল কলেজ সংযোজিত হয়েছে (কোচবিহার, রায়গঞ্জ, রামপুরহাট, ডায়মন্ডহারবার ও পুরুলিয়া)। রাজোর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে এই মুহূর্তে ৪২টি ন্যাফ মূল্যের ওষুধের দোকান স্থাপিত হয়েছে। এই পরিসেবা মারফল বিভিন্ন ২৪% থেকে 72% কমমূল্যে ওষুধপত্র কিনতে পারেন। সকলে বিনামূল্যে যাতে স্বাস্থ্য পরিসেবার সুযোগ পায় তার জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য সূচকের দিক থেকেও সমগ্র ভারতের নিরিখে মোটামুটি ভালো একটা স্থানে রয়েছে। সাধারণত, অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাত্রা ভারতের যে রাজা গুলিতেই এই সূচকটি সবচেয়ে ভালো হয়ে থাকে সেই নিরিখে আমাদের রাজ্য কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও স্বাস্থ্য পরিসেবায় যথেষ্ট এগিয়ে রয়েছে। বিশেষকরে, জন্মহার এবং মৃত্যুর হার উত্তরই কমিয়ে আনতে আমাদের রাজ্য যথেষ্ট সফল হয়েছে।
সঠিক লিঙ্গ অনুপাত বজায় রাখতেও সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ট উন্নতি করেছে। এরাজ্যে (14 বছরের জনসংখ্যার মধ্যে লিঙ্গ পরিমাণগত অনুপাত সর্বভারতীয় গড় অনুপাতের থেকে যথেষ্ট ভালো জায়গা দখল করে আছে। এর ফলে, ক্রুণহত্যা বা কন্যাশিশুদের জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও আরও সুবিধা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রও ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। এরাজ্যে 2004-05 থেকে 2014-15 সাল পর্যন্ত GSDP বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি হারে প্রায় 11.06 শতাংশ প্রসারিত হয়েছে (CAGR)। রাজ্যের প্রধান পেশারূপে কৃষিক্ষেত্র থেকে 2014-15 খ্রিস্টাব্দে জিএসডিপিতে ১৪.৪ শতাংশ অবদান রেখেছিল। পশ্চিমবঙ্গে 2000-15 অর্থবর্ষে প্রায় 2.9. বিলিয়ন মার্কিন ডলার মোট বিদেশী প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (FDI) আকর্ষণ করেছে। পশ্চিমবঙ্গে 2004-05 খ্রিস্টাব্দে মাথাপিছু GSDP-র পরিমাণ ছিল যেখানে 555 মার্কিন ডলার, সেটি 2014-15 খ্রিস্টাব্দে 1,450.0 ডলারে উপদীর হয়। এর থেকে একটা বিষয় খুব পরিষ্কার, আমাদের রাজ্যে মানুষের জীবনযাত্রার মান যথেষ্ট ভালো।
জীবিকার ক্ষেত্রে অবশ্য দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবল্যে বেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের নতুন পরিকল্পনাগুলি ভবিষ্যতে মানুষের জন্য নতুন করে পথ দেখাবে আশা করা যায়।
2020 খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গে আর্থিক সঞ্চয়, বিভিন্ন নতুন পরিকল্পনামূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণকে উৎসাহদান এবা পরিসেবা প্রদানের মানোন্নয়নের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (ADB)ও কেন্দ্র 5 কোটি মার্কিন ডলারের একটি ঋণের বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর থেকে আশা করা যায়, ভবিষ্যতে পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনগত দক্ষতা আরও মজবুত হয়ে উঠবে।
2021-22 অর্থবছরের রাজ্য বাজেটে সংখ্যালঘু উন্নয়নখাতে প্রায় 4,777 কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে,যা দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় যথেষ্ট বেশি। মানব উন্নয়নের প্রচেষ্টায় এটিকেও একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলা।