welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

বৃষ্টিপাত মাপার যন্ত্র (Rainfall Measure-ment Apparatus)

বৃষ্টিপাত মাপার যন্ত্র (Rainfall Measure-ment Apparatus)


Rain Gauge: যে যন্ত্রের সাহায্যে কোনো স্থানের বৃষ্টিপাত মাপা হয় তাকে Rain Gauge বা বৃষ্টিপরিমাপক যন্ত্র বলে। যন্ত্রটি ফাঁপা চোঙ-এর মতো দেখতে। চোঙের মাথাটি ফানেল আকৃতির হয়। যন্ত্রটির ব্যাস 12.5 সেন্টিমিটার বা 5 ইঞ্চি। এটি উন্মুক্ত স্থানে ভূমি থেকে সামান্য ওপরে বসাতে হয়। সারাদিন অর্থাৎ 24 ঘণ্টায় যতটা বৃষ্টির জল জমা হয় সেই জলটুকুর পরিমাপ করা হয়। বৃষ্টিপাত সেমি ও ইঞ্চি এককে মাপা হলেও সেমি বা মিমি এককের ব্যবহার বর্তমানে বেশি।

• বৃষ্টিপাত পরিমাপের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ (Apparatus Required for the Measurement of Rainfall):

বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ হল-

(a) 12.5 সেমি বা 5 ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত একটি তামার চোঙ বা বেলন (Cylinder).

(b) 12.5 সেমি বা 5 ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত একটি ফানেল,

(c) একটি কাচের বোতল বা রিসিভার এবং

(d) একটি বৃষ্টিপাত পরিমাপক কাচপাত্র (Measuring glass)

• বৃষ্টিপাতমাপক যন্ত্রের বিবরণ (Description of a Rain Gauge):

12.5 সেমি বা 5 ইঞ্চি সমমাপের ব্যাসযুক্ত একটি তামার তৈরি চোঙার মুখে একটি ফানেল বসানো থাকে। ফানেলটি এমনভাবে বসানো থাকে যাতে বৃষ্টির জলের একটি বিন্দুও বাইরে না পড়ে। চোঙার ভিতরে রাখা কাচের বোতল বা রিসিভারের মধ্যে বৃষ্টির জল জমা হয়। কোনো কোনো বৃষ্টিপাতমাপক যন্ত্রের ফানেল ও চোঙার ব্যাস 20 সেমি হয়ে থাকে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরগুলিতে 5 ইঞ্চি ব্যাসযুক্ত চোঙা ও ফানেল ব্যবহার করা হয়। এটি Symon's Rain Gauge নামেও পরিচিত।

বৃষ্টিপাতের পরিমাপ ও পাঠগ্রহণ (Measurement of Rainfall and Recording):

বৃষ্টিপাত পরিমাপের সময় ফানেলটিকে সরিয়ে চোঙার ভিতরে রাখা বোতল বা রিসিভারটিকে বের করে এর ভিতরে সঞ্চিত বৃষ্টির জল ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাত পরিমাপক কাচপাত্রে (Measuring glass) ঢালা হয়। বৃষ্টিপাত পরিমাপের সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে বৃষ্টির জলের কোনো অংশ বাইরে না পড়ে। পাঠ গ্রহণের সময় বৃষ্টি পরিমাপক পাত্রটিকে সমতল স্থানের ওপর বসাতে হবে যাতে পাত্রটি কাত হয়ে না থাকে। পাঠ নেওয়ার সময় পর্যবেক্ষকের চোখ ও কাচপাত্রের জলতল যেন একই তলে অবস্থান করে।

ফানেলের মুখের ক্ষেত্রফল ও বৃষ্টিমাপক কাচপাত্রের মুখের ক্ষেত্রফলের অনুপাতের ওপর নির্ভর করেই কাচপাত্রের গায়ে স্কেলের মাত্রাঙ্কন করা হয়। ফানেলের মুখের ক্ষেত্রফল কাচপাত্রের মুখের ক্ষেত্রফলের 5 গুণ হলে, কাচপাত্রে 5 ইঝি পরিমাণ জলতল উঠলে ধরে নিতে হবে ওই স্থানে বৃষ্টিপাত হয়েছে 1ইঞ্চি.

বৃষ্টিমাপক কাচপাত্রের পরিমাপ ক্ষমতা সাধারণত । ইব্ি হয়ে থাকে। ওই। ইঞ্চি বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য কাচপাত্রে যে দৈর্ঘ্য নির্দেশিত থাকে তাকে সমান 100টি সেন্টে ভাগ করা হয়। তাই প্রতিটি দাগের পরিমাপ ধরা হয় 1 সেন্ট বা 0.01 ইঞ্চি। কোনো কোনো বৃষ্টিপাত পরিমাপক পাত্রের পরিমাপ ক্ষমতা।/, ইঞ্চি বাস) সেন্টও হয়ে থাকে।

বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 1 ইঞ্চির বেশি হলে, ওই পরিমাপক পার দিয়ে বারবার পরিমাপ করতে হয়। ধরা যাক, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 3 ইঞ্চির বেশি। এক্ষেত্রে ওই পাত্র দিয়ে তিনবার পরিমাপ করার পর বাকি অংশেরও অবশেষে পরিমাপ করা হয়। যদি অবশিষ্টাংশের পরিমাণ হয় 45 সেন্ট বা 0-45 ইঞ্চি, তাহলে মোট বৃষ্টিপাত হবে (1-003) + 0-45" 3-45"। বর্তমানে ইঞ্চির পরিবর্তে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মিলিমিটারে প্রকাশ করা হয়। অতএব, মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 3-45" 25-4 মিলিমিটার= 87-63 মিলিমিটার বা 8-76 সেন্টিমিটার। পরিমাপক কাচপাত্রের গায়ে মিলিমিটার বা সেন্টিমিটার স্কেল থাকলে বৃষ্টিপাতের পরিমাপ মিলি বা সেমিতে করা হয়.

বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নির্ণয়: প্রথম পদ্ধতিতে (Method: 1) Rain gauge থেকে বৃষ্টিপাত সংগ্রহকারী পাত্র বা রিসিভারটি বের করে পরিমাপক পাত্রে ঢালা হল। এক্ষেত্রে পর পর দুই বার পাত্রটি সম্পূর্ণ ভরে যাওয়ায় তালিকায় 100 সেন্ট করে লেখা হল। এর পর তৃতীয় বারে দেখা গেল পাত্রটি 54 সেন্ট ভরেছে। সুতরাং উক্ত দিনটিতে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ হল 254 সেন্ট অর্থাৎ 2.54"। এখন 1" = 25.4 মিলিমিটার ধরে ওই দিনের বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হল-(2.54"×25.4) = 64.52 মিলিমিটার।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে (Method: 2) Parallex error-কে বিচার করে রিসিভারে রাখা বৃষ্টির জলকে উক্ত পদ্ধতিতে পরিমাপ করে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সেন্টে প্রকাশ করা হল। এরপর পুনরায় একই পদ্ধতি অনুসরণ করে পর পর আরও দুইবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পরিমাপ করা হল। এভাবে পর পর তিনবার পুনরাবৃত্তি করে বৃষ্টিপাতের পাওয়া পরিমাণগুলি হল যথাক্রমে 254, 253 এবং 255 সেন্ট। এর পর এই তিনটি মানের গড় নির্ণয় করে তা 100 দ্বারা ভাগ করলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ইঞ্চিতে পাওয়া যায়। যা উক্ত তালিকা অনুযায়ী হল-

254+253+255 3 762 762=2.54" 3

এবার একে 25.4 দ্বারা গুণ করে মিলিমিটারে প্রকাশ করা হল- (2.54"×25.4) মিলিমিটার= 64.52 মিলিমিটার।

সতর্কতা (Caution): বৃষ্টিপাতের সঠিক পরিমাপ নেওয়ার জন্য কয়েকটি বিষয়ে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্রের স্থাপন ও বৃষ্টিপাত পরিমাপের সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলির দিকে নজর দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন-

(a) বৃষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে যাতে জল এসে বৃষ্টিপাত পরিমাপক যন্ত্রে যুক্ত না হয়, তার জন্য যন্ত্রটিকে অন্তত। উঁচু স্থানে পাকা গাথুনি করে ফাঁকা সমতল জায়গায় বসাতে হবে। এর পাশে গাছপালা, ঘরবাড়ি না থাকাই ভালো।

(b) গবাদি পশু বা অন্যান্য জন্তুর আক্রমণে যন্ত্রটি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য বিশেষ নজর দিতে হবে এবং এর স্থায়িত্বের জন্য যন্ত্রের কিছুটা অংশ মাটির মধ্যে পুঁতে রাখতে হবে।

(c) বৃষ্টিপাত পরিমাপের সময় বাইরের জল যাতে বৃষ্টিমাপক যন্ত্রের মধ্যে না এসে পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

(d) বৃষ্টির জল কাচপাত্রে ঢালার সময় এক বিন্দুও জল যেন মাটিতে না পড়ে সেই দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন (৫) এমনভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাপ করতে হবে যাতে এর কোনো অংশ বাষ্পীভবনের কারণে নষ্ট না হয়।

24 ঘণ্টার বৃষ্টিপাতের পরিমাণকেই সংশ্লিষ্ট দিনের বৃষ্টিপাত ধরা হয়। কোনো স্থানের কোনো মাসের তিরিশ দিনের মৌ বৃষ্টিপাতকেই ওই মাসের বৃষ্টিপাত ধরা হয়। আবার, যে-কোনো বছরের বারো মাসের মোট বষ্টিপাতই সেই বছরের বার্ষিত বৃষ্টিপাত। কোনো মাসের কয়েক বছরের গড় বৃষ্টিপাতকে গড় মাসিক বৃষ্টিপাত ধরা হয়। একইভাবে কোনো স্থানের কয়েক বছরের গড় বৃষ্টিপাতকে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত বলে। কোনো স্থানে কোনো দিনে ০-01" বা তার অধিক বৃষ্টিপাত হলে ও নথিভুক্ত করা হয় .

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01