welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতে আত্মলিকতার সম্ভাব্য কারণ (Possible causes of regionalism in India)

ভারতে আত্মলিকতার সম্ভাব্য কারণ (Possible causes of regionalism in India)


ভারতের আম্মলিকতা বিকাশে সাধারণত যে কারণগুলিকে দায়ী করা চলে, তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল-


• রাজনৈতিক পরিস্থিতি (The political situation): ঔপনিবেশিক আমল থেকেই ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক পটভূমিকায় আঞ্চলিকতা বিকাশের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। প্রথমদিকে, দেশীয় রাজ্য এবং প্রেসিডেন্দিগুলির প্রতি ব্রিটিশদের ভিন্ন মনোভাব এবং আচরণ বিচ্ছিন্ন আঞ্চলিকতার ভাবধারাকে ক্রমেই বিক্ষুব্ধতায় পরিণত করে। স্বাধীনতার পরবর্তীকালে দেশের বেশ কিছু রাষ্ট্রনেতা নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে চরম আঞ্চলিকতাকে রাজনীতির ছত্রছায়াতেই আশ্রয় দিয়েছিল। তাছাড়া, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের জাতীয় তথ্য আঞ্চলিক দলগুলোর একাধিক শপ্ত রাজনৈতিক খাঁটি রয়েছে। এরা সবসময়ই সর্বভারতীয় বিভিন্ন অ্যাজেন্ডার উপর ভিত্তি করে, এমনকি তদের নিজস্ব ভোটব্যাঙ্কের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে চরম আঞ্চলিকতাদকে আজও টিকিয়ে রেখেছে। এর সুস্পষ্ট প্রতিফলন প্রায়শই আমরা লক্ষ্য করেছি ভাবতের উত্তরপূর্বের পাহাড়ি অঞ্চলগুলিতে।


• আঞ্চলিক বৈষনা (Regional inequality): ভারতের অন্তঃরাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈষম্যের দীর্ঘ প্রেক্ষাপট জাতীয় ঐক্য ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক ভাবধারাগুলিকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছে। বিশেষত, আর্থিক দিক থেকে অনগ্রসর বা বঞ্চিত রাজ্যগুলির দাবিদাওয়া নিয়ে অধিকাংশ সময় আঞ্চলিকতার বিচ্ছিন্ন আন্দোলনে ফেটে পড়তে দেখা গেছে। যেমন-নকশালবাদের সমস্যার মূলে রয়েছে এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘকালীন অর্থনৈতিক কল্পনা।


• সামাজিক প্রেক্ষাপট (Social context): ভারতবর্ষের আঞ্চলিকতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে স্বতন্ত্র জীবন-রীতি, অভ্যাস, শিক্ষা, মূল্যবোধ, ভাষাগত অভিন্নতার প্রেক্ষাপট বা সামাজিক উপাদানগুলির বিশেষ মিথস্ক্রিয়া (Social interaction)। এখানকার প্রচলিত জাতব্যবস্থা, ধর্ম, ভাষা, বিবাহ, সামাজিক দল এবং সংস্কৃতিক ক্ষেত্রগুলি আঞ্চলিকতাকে চিরকাল অক্ষুণ্ণ রেখেছে।


• সামাজিক প্রতিষ্ঠান (Social organization): আমাদের দেশে বহুকাল আগে থেকেই বিভিন্ন ক্লাব, সাৎ,স্যাস্কৃতিক দলগুলি অতি সক্রিয়ভাবে প্রতিটি মানুষের মনে আঞ্চলিক বা স্বস্থানীয় ঐতিহ্যবাহী ভাবাবেগগুলিকে মন্ত্রের মতো গেথে দিয়েছে। এই ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ অনেকসময় আঞ্চলিকতার অনুরূপে স্বতন্ত্র ভাবাবেগগুলিকে মন্ত্রীর মতো যেতে দিয়েছে। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের বন্ধু অনেক সময় আঞ্চলিক তার অনুরুপে স্বতন্ত্র ভাবধারায় জন্ম দেয়।


• জাত ব্যবস্থা (Cast system): ভারতবর্ষের বৈচিত্র্যপূর্ণ জাত ব্যবস্থাও আঞ্চলিকতা গড়ে তুলতে যথেষ্ট সহায়তা করেছে। বিশেষ করে, আর্থসামাজিক তথা রাজনৈতিক দিক থেকে অবহেলিত একাধিক নিম্ন বর্ণের জনসম্পাদ্য সহায়ারা হরেই পৃথক কয়েকটি মৌলিক ভাবধারাকে আশ্রয় করে আঞ্চলিকতায় উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বস্তুতপক্ষে, ভারতে মীর্ঘকায় বারেই পামর জাতিভিত্তিক আঞ্চলিক ভাবধারা DMK-এর মতো একটি রাজনৈতিক দলের উদ্ভব খাটানোর।


• ভাষা (Language): ভাষা মানুষের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদান ঘটিয়ে একদিকে যেমন পারস্পরিক সাচ্চা বৃদ্ধি করে, পরোক্ষভাবে ইতিবাচক ও নেতিবাচক বিভিন্ন দিক থেকেই আঞ্চলিকতার জন্মও দিতে পারে। যেমন-আমাদের দেশে ভাষার উপর নির্ভর করেই 1965 খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনগঠন কমিশন আঞ্চলিক রাজ্য গঠনকে স্বীকৃতি দিয়ে এসে


• ধর্ম [Religions): আমাদের দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ভিত্তিক ধর্মীয় আচরণগুলি যখনই গোঁড়ামিতে উপনীত হয়েছে, তখনই অসহিষ্কৃতার আবহ বিচ্ছিন্ন আঞ্চলিক ভাবধারার জন্ম দিয়েছে। এই ধরনের আন্তলিকতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল পাঞ্জাবের খালিস্থানপন্ধীদের রাজনীতি।


• সাংস্কৃতিক কারণ(Cultural reasons): ভারতে অঞ্চলভেদে জনসংস্কৃতিতে যথেষ্ট স্বাতন্ত্রতা লক্ষ্য করা যায়। এখানে, পৃথক সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর একজন নাগরিক যখন অন্য কারোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলিকে আঘাত করে, তখন সেখানে চাম সংবেদনশীল মনোভাব থেকে আঞ্চলিক সংঘাতের বীজ জন্মায়।


• কারখা (Caste system): দেশের বর্ণপ্রথার জন্য পৃথক সামাজিক মর্যাদার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকসময় সাম্প্রদায়িক এবং আঞ্চলিক আকাঙ্ক্ষাকে নানাভাবে প্রচার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, উত্তর তামিলনাড়ুর ভানিয়াররা শূধুমাত্র বর্ণ পরিচয়ের ভিত্তিতে নিজেদের একটি পৃথক জাতি হিসেবে দাবি করে আসছে।


• অনান্য কারণে (Other reasons): ভারতে আঞ্চলিকতা বৃদ্ধির পিছনে আরও যে সমস্ত কারণ জড়িয়ে আছে, সেগুলি হল-


• দেশের ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা,

• পৃথক শিল্প নীতি,

• একমুখী উন্নয়ন,

• পরিকল্পনা কমিশনের ব্যর্থতা প্রভৃতি


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01