welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ওজোনস্তরের হ্রাস (Ozone Depletion)

ওজোনস্তরের হ্রাস (Ozone Depletion)


বায়ুমন্ডলে প্রাপ্ত বিভিন্ন গ্যাসগুলির মধ্যে এমন কিছু গ্যাস রয়েছে যেগুলি খুবই অল্প পরিমাণে পাওয়া গেলেও পরিবেশে এদের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। ওজোন হল এমনই একটি গ্যাস। এটি তিনটি অক্সিজেন পরমাণুর (১) আইসোটোপ যুক্ত হালকা নীল বর্ণের আঁশটে গন্ধযুক্ত গ্যাস। বায়ুমণ্ডলে এই গ্যাসের মোট পরিমাণ মাত্র 0.00006% 1 ওজোনের স্ফুটনাঙ্ক-112-4° C এবং গলনাঙ্ক-249.7° C। 1785 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী ভান মারুম (Van Marum) অক্সিজেন অণুর (O.) মধ্যে তড়িৎক্ষরণ ঘটিয়ে একটি বিশেষ গন্ধের উপস্থিতি উপলব্ধি করেন। কিন্তু গন্ধটি কীসের, সে বিষয়ে তিনি কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। পরবর্তীকালে 1840 খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী স্কোনবি (Schonbein) প্রমাণ করেন গন্ধটি নতুন একটি গ্যাসের। তিনি এই গ্যাসের নাম দেন ওজোন (Ozone)। 'ওজোন' শব্দটি গ্রিক শব্দ 'Ozzin' থেকে এসেছে, যার অর্থ গন্ধ (to smell)। এর 73 বছর পর 1913 খ্রিস্টাব্দে দুই ফরাসি বিজ্ঞানী হেনরি কুশন (Henry Buisson) ও চার্লস ফেরি (Charles Febry) বায়ুমণ্ডলে ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। 

ওজোন স্তর (Ozone Layer):

বায়ুমণ্ডলে ওজোনের ঘনত্ব সর্বত্র সমান নয়। ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুতে এই গ্যাসের উপস্থিতি অতি নগণ্য। স্ট্যাটোস্ফিয়ারের 15 থেকে 30 কিমি উচ্চতার মধ্যে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। তাই বায়ুমন্ডলে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে সীমাবন্ধ ওজোন গ্যাসের পুরু আবরণকে ওজোন স্তর বা ওজোনোস্ফিয়ার বলে।

বায়ুমণ্ডলের ওজোনের ঘনত্বকে পিপিএম (ppm)-এর পরিবর্তে ডবসন এককে প্রকাশ করা হয়। পদার্থবিদ্ গর্ডন ডবসন প্রথম 1920 খ্রিস্টাব্দে স্পেকটোমিটার যন্ত্র ব্যবহার করে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব পরিমাপ করায়, ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব ডবসন্ এককে প্রকাশ করা হয়। এক ডবসন একক বলতে একক বায়ুমণ্ডলীয় চাপে 0.001 মিলিমিটার পুরু ওজনের ঘনত্ব বা প্রতি বর্গমিটারে 2.69 10 সংখ্যক ওজোন অণুর উপস্থিতিকে বোঝায়। ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে মেরু অঞ্চলের দিকে ওজোনের ঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পায়। ক্রান্তীয় অঞ্চলে (0°-30°) এই গ্যাসের ঘনত্ব সর্বাপেক্ষা কম-250 DU। বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে উপমেরু অঞ্চলের দিকে বায়ুপ্রবাহের ফলে ওজোন গ্যাসের স্থানান্তর ঘটে। ফলে উপমেরু অঞ্চলে ক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা ওজোনের ঘনত্ব বেশি লক্ষ করা যায়।

ওজোন স্তরের সৃষ্টি (Formation of Ozone Layer):

বায়ুমন্ডলে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে অতিবেগুনি রশ্মির (UV-রশ্মি) উপস্থিতিতে দুটি অনুক্রমিক আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়ায় ওজোন গ্যাসের সৃষ্টি হয়। তবে সকলপ্রকার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন গ্যাস সৃষ্টিতে সাহায্য করে না। সাধারণত কম তরঙ্গদৈর্য্যের অতিবেগুনি রশ্মি ওজোন গ্যাস সৃষ্টিতে সাহায্য করে। সূর্য থেকে পৃথিবীর দিকে আগত অতিবেগুনি রশ্মিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়, যথা- UV-A (তরঙ্গদৈর্ঘ্য 0.315-0.4 µm); UV-(0.280-0.315 µm); UV-C (0.10-0.28 jum)। এদের মধ্যে UV-C এবং UV-B-এর কিছু অংশ ওজোন গ্যাস তৈরিতে সাহায্য করে। প্রথম বিক্রিয়ায় দ্বি-পরমাণুবিশিষ্ট অক্সিজেন অণু (O_{3}) UV-C এবং UV-B যারা বিয়োজিত হয়ে দুটি জায়মান অক্সিজেন পরমাণু (O) তৈরি করে।

ওজোন অণুর বিশ্লেষণের এই বিক্রিয়াকে আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে। দ্বিতীয় বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অক্সিজেন পরমাণুর (0) সঙ্গে অক্সিজেন অণুর (O_{3}) সংযোজনে ওজোন গ্যাস সৃষ্টি হয়। এই বিক্রিয়ায় প্রচণ্ড তাপ উৎপাদন হয় বলে একে তাপ উৎপাদী বিক্রিয়া বলে। ওজোন গ্যাস সৃষ্টির কারণে প্রতিনিয়ত তাপ উৎপাদনের জন্যই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে তাপমাত্রা বেশি হয়।

প্রথম বিক্রিয়া:

O_{2} UV-C এবং UV-B রশ্মি 0+0

দ্বিতীয় বিক্রিয়া:

O_{2} + O + (M) -> O_{3} + (M) [M = অনুঘটক]

এ ছাড়া, বায়ুমন্ডলে উপস্থিত নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড গ্যাসও (N*O_{2}) ওজোন গ্যাস সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড গ্যাসটি 0.43mu*m তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কম আলোকরশ্মি (lambda_{v}) দ্বারা বিশ্লিষ্ট হয়ে নাইট্রোজেন অক্সাইড (NO) এবং অক্সিজেন পরমাণু (O) তৈরি করে। 

N*O_{2} + lambda_{v} -> NO + O

এরপর অক্সিজেন পরমাণুটি (O) তাপ উৎপাদী বিক্রিয়ার মাধ্যমে অক্সিজেন অণুর (O_{2}) সঙ্গে যুক্ত হয়ে ওজোন গ্যাস (০) তৈরি করে। 

O_{2} + O + (M) -> O_{3} + (M)

ওজোন স্তরের বিনাশ (Destruction or depletion of Ozone Layer):

স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে যেমন প্রাকৃতিক উপায়ে ওজোন গ্যাসের সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি ধ্বংসও হচ্ছে। তবে ওজোন স্তর কীভাবে নষ্ট হচ্ছে সেবিষয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। ওজোন স্তর বিনাশের কারণগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- 1. প্রাকৃতিক কারণ ও 2. মনুষ্যসৃষ্ট কারণ।

1. প্রাকৃতিক কারণ (Natural Causes):

স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে আলক-রাসায়নিক বিক্রিয়ায় UV-C এবং LIV-B রশ্মির প্রভাবে যেমনভাবে ওজোন গ্যাসের সৃষ্টি হয় ঠিক তেমনভাবেই অধিক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের UV-A রশ্মির প্রভাবে ওজোন (O_{3}) ভেঙে অক্সিজেন অণু (O_{3}) ও অক্সিজেন পরমাণু (O) তৈরি করে।

O 3 UV - A_{2} + O

এভাবে দিনের বেলায় অক্সিজেন থেকে ওজোন উৎপাদন, বিয়োজন এবং পুনরুৎপাদন চলতে থাকে এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন স্তরের ঘনত্ব বজায় থাকে। এই প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন বায়ুমণ্ডলে প্রায় 350,000 মেট্রিক টন ওজোন গ্যাস সৃষ্টি ও ধ্বংস হয়।

এ ছাড়া সৌরকলঙ্কের চক্রের প্রভাবে বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেন নাইট্রাস অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়ে আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে। (i) প্রথমে নাইট্রোজেন অণু (N_{2}) অক্সিজেন পরমাণুর (0) সঙ্গে আলোক-রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নাইট্রাস অক্সাইড (N_{2}*O) তৈরি হয়। (i) এরপর নাইট্রাস অক্সাইড (N_{2}*O) অক্সিজেন পরমাণুর (O) সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক অক্সাইড (NO) উৎপন্ন করে। (iii) নাইট্রিক অক্সাইড (NO) ওজোনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (N*O_{2}) এবং অক্সিজেন অণু (O_{3}) তৈরি করে ওজোন স্তরকে ধ্বংস করে। O_{1}

1. N²+ O -> N²O

2.N²O + O -> 2NO

3. NO + O³ -> N*O² + O²



2. মনুষ্যসৃষ্ট কারণ (Man-made causes):

প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় ওজোন স্তরের বিনাশ একটি স্বাভাবিক ঘটনা। প্রাকৃতিক উপায়ে ওজোন গ্যাসের পুনরুৎপাদনের মাধ্যমে বিনাশ এবং উৎপাদনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষিত হয়ে ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু বিংশ শতকের শেষদিকে বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে লক্ষ করা গেছে যে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে উপস্থিত ওজোন স্তরটি ক্রমাগত পাতলা হয়ে আসছে। তাই বিজ্ঞানীগণ নিশ্চিত হন যে, ওজোন গ্যাসের ধ্বংসের হার পুনরুৎপাদনের হারের তুলনায় বেড়ে চলেছে। এই ওজোনের বিনাশ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় ঘটছে না। পরবর্তীকালে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয় যে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), ব্রোমিন যৌগ, নাইট্রাস অক্সাইড, সালফেট যৌগ ওজোন স্তরের ক্রমাগত বিনাশ ঘটিয়ে চলেছে।

(i) ক্লোরিন তত্ত্ব: মানুষের নানাবিধ ক্রিয়াকলাপের ফলে উৎপন্ন ক্লোরিন পরমাণু (CI) স্ট্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন স্তের বিনাশের পিছনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। আর মানুষের ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে উৎপন্ন ক্লোরিনের প্রধান উৎস হল ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) গ্যাস। 1930 খ্রিস্টাব্দে মার্কিন রসায়নবিদ থমাস মিজলে (Thomas Midgley) CFC আবিষ্কার করেন। ক্লোরোফ্লুরোকার্বন যৌগগুলি ফ্রেয়ন নামেও পরিচিত। এদের বাণিজ্যিক নাম জেনেট্রনস্। CFC-এর একাধিক রূপভেদ রয়েছে। যথা- CFC-11, CFC-12, CFC-22, CFC-113 ইত্যাদি। এদের একত্রে CFC, বলে। 1974 খ্রিস্টাব্দে দুইজন পরিবেশ বিজ্ঞানী মারিও মোলিনা (Ma-rio Molina) এবং শেরউড রোল্যান্ড (Sherwood Rowland) মনুষ্যসৃষ্ট ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) গ্যাসকে ওজোন স্তর পাতলা হওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে সর্বপ্রথম চিহ্নিত করেন। পরবর্তীকালে 1986 খ্রিস্টাব্দে ড. সুসান সালোমান ওজোন বিনাশের ক্ষেত্রে ক্লোরিন দুষদের ভূমিকার ওপর জোর দেন। সম্প্রতি NASAও CFC-এর মাধ্যমে উৎপন্ন ক্লোরিনকেই ওজোন ধ্বংসের কারণ হিসেবে মেনে নেয়। সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গেছে যে একটি CFC কণা । লক্ষেরও বেশি ওজোন কণাকে ধ্বংস করে।

শিল্পবিপ্লবের পরবর্তীকালে রেফ্রিজারেটার, এয়ারকন্ডিশনার, প্রেক্যান, বিমানের প্রপেলার, ফোম, গ্রাসিস্টক তৈরির কারখানায় প্রচুর CFC ব্যবহৃত হয়। ফলে CFC বায়ুতে মুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে ওজোন স্তরে পৌঁছাতে সক্ষম (5) F হয়। সেখানে সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে CFC ভেঙে ক্লোরিন পরমাণু উৎপন্ন করে। এই ক্লোরিন পরমাণু (CI) ওজোনকে বিশ্লিষ্ট করে ক্লোরিনমনোক্সাইড (CIO) এবং অক্সিজেন অণু (O_{2}) উৎপন্ন করে। 

CFCß +UV ray -CL 

CL + O³-> ClO + O²a

(ii) সালফেট তত্ত্ব: মানুষের বিভিন্ন শিল্প সংক্রান্ত কর্মকান্ডের ফলে কলকারখানার চিমনি থেকে ধোঁয়ার সঙ্গে নানাপ্রকারের সালফেট যৌগযুক্ত কণা নির্গত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মেশে। এই সালফেড কণাগুলি (বিশেষত হাইড্রোজেন সালফাইড HS) অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে ওজোন অণুগুলিকে ভেঙে অক্সিজেন অণু ও পরমাণুতে রূপান্তরিত করে।

সালফেট কণাগুলির মধ্যে হাইড্রোজেন সালফাইট (H_{2}*S) ওজোন ধ্বংসে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে। H.S গ্যাস হাইড্রক্সিল মূলকের (OH) সঙ্গে বিক্রিয়া করে HS এবং জল (H_{2}*O) উৎপন্ন করে। পরে HS ওজোনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে HSO এবং অক্সিজেন অণুতে পরিণত হয়ে ওজোনকে বিশ্লিষ্ট করে। আবার, উৎপন্ন HSO গ্যাসটি পুনরায় রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে ওজোনকে ভেঙে দেয়। OH + H_{2}*S -> H_{2}*O + HS HS + O_{3} -> HSO + O_{2} HSO+O,HSO, +0,



(iii) নাইট্রোজেন অক্সাইড তত্ত্ব:নগরায়ন ও শিল্পায়নের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে নাইট্রোজেন অক্সাইড যৌগ ঘটিত বিভিন্ন গ্যাস (NOx), যেমন-নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (N*O_{2}) নাইট্রিক অক্সাইড (NO) প্রভৃতি বাহুতে এসে মিশছে। এই গ্যাসগুলি নানা প্রকারে বিক্রিয়া করে ধ্বংস করছে। এ ছাড়া স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে সুপারসনিক বিমান থেকে নির্গত জলীয় বাষ্প এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড (NO) বায়ুতে মিশে ওজোনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ওজোনকে বিনাশ করছে। নাইট্রিক অক্সাইড (NO) ওজোনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (N*O_{2}) এবং অক্সিজেন অণু (O_{2}) উৎপন্ন করে ওজোনকে বিনষ্ট করছে। এই NO, পুনরায় অক্সিজেন পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাইট্রাস অক্সাইড (NO) তৈরি করে আবার ওজোন ধ্বংসে ফিরে আসছে। এভাবে চক্রাকারে NO থেকে N*O_{2} এবং পুনরায় NO উৎপাদনের মাধ্যমে ওজোন ধ্বংস হয়ে চলছে।

NO + O³ -> N*O² + O²

NO²+ O -> NO + O²

iv) ব্রোমিন যৌগ তত্ত্ব: বর্তমানে ওজোন বিনাশ প্রসঙ্গে ব্রোমিন যৌগের বিষয়টি উল্লেখ করা হচ্ছে। আগুন নেভানোর কাজে ট্রাইফ্লুরো ব্রোমোকার্বন (CF, Br), ডাই ফ্লুরো রোমো ক্লোরো কার্বন (CF,BrCl) এবং মিখাইল ব্রোমাইট (CH,Br) গ্যাস ব্যবহৃত হয়। এগুলি CFC-এর ন্যায় বায়ুমন্ডলে দীর্ঘদিন থেকে যায় এবং বিভিন্ন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ব্রোমিন উৎপন্ন করে ওজোন স্তরের বিনাশ ঘটায়।

CH³Br সূর্যরশ্মি CH³+Br 

2Br + O³-> Br²O + O²

Br²O + O -> 2Br + O²

(v) অন্যান্য: উপরিউক্ত গ্যাসীয় উপাদানগুলি ছাড়াও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড (H_{2}*O_{3}) এবং মিথেন (C*H_{2}) ওজোন স্তর ধ্বংসে খুব অল্প হলেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।

উর্ধ্বাকাশে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড (H_{2}*O_{2}) ভেঙে হাইড্রক্সিল মূলক (OH) তৈরি করে। এই হাইড্রক্সিল মূলক (OH) ওজোন অণুকে ভেঙে হাইড্রো পারঅক্সাইড (H*O_{2}) মূলক ও অক্সিজেন ST(O_{2}) তৈরি করে।

H 2 O 2 UV - B 2HO

HO + O_{3} -> O_{2} + H*O_{2}

মিথেন (CH²) উর্ধ্বাকাশে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে বিশ্লিষ্ট হয়ে (CH³) এবং হাইড্রোজেন পরমাণু (H) উৎপন্ন করে CH³ ওজোনকে ভেঙে সৃষ্টি করে।

মিথক্সি (CH³O) এবং অক্সিজেন (O³)

aligned CH 4 UV-B +CH 3 +H\\ 

CH³+ O³ -> CH³ O + O² aligned

 ওজোন গহ্বর (Ozone Hole):

প্রাকৃতিক উপায়ে ওজোন গ্যাসের সৃষ্টি ও ফরসে একটি স্বাভাবিক ঘটনা। এর প্রভাবে ওজোন স্তরের ঘনত্বের তেমন কোনো পরিবর্তন ঘটে না। কিন্তু মনুষ্যসৃষ্ট কারণে বায়ুমণ্ডলে অতিমাত্রায় ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), সালফার যৌগ (SOx), ব্রোমিন যৌগ (Br), নাইট্রোজেন অক্সাইড যৌগ (NOx) মেশায় স্টস্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন স্তর ক্রমশ পাতলা হয়ে যাচ্ছে। এভাবে কোনো স্থানে যদি ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব 200 ৬বসন ইউনিটের নিচে নেমে আসে তাহলে ওজোন স্তরের পাতলা হওয়ার অবস্থাকে ওজোন গহ্বর (Ozone Hole) বলে অভিহিত করা হয়। বিজ্ঞানী ফারমেন অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন ক্ষয় প্রসঙ্গে প্রথম ওজোন গহ্বর (Ozone Hole) শব্দটি ব্যবহার করেন।

1950 খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ পদার্থবিদ গর্ডন ডবসন ওজোন স্তর হ্রাস পাওয়ার ঘটনাটি প্রথম বিজ্ঞানীমহলে উপস্থাপন করেন। পরবর্তীকালে 1957-1985 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিকা সার্ভে (BAS)-এর একদল বিজ্ঞানী অ্যান্টার্কটিকার হ্যালিবে নামক স্থানে ওজোন স্তরের ক্ষয় সম্পর্কে অনুসন্ধান চালায়। 1984 খ্রিস্টাব্দে উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে অ্যান্টার্কটিকার ওপর ওজোন স্তরের পাতলা হয়ে যাওয়ার ঘটনা সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। তবে 1985 খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ অ্যান্টার্কটিকা সার্ভের (BAS) বিজ্ঞানী দলের একজন বিজ্ঞানী ডি. এ. সি. কারমেন (D.A.C Farpion) অ্যান্টার্কটিকার ওপর ওজোন গহ্বরের অস্তিত্বের কথা সর্বপ্রথম বিজ্ঞানসম্মতভাবে উল্লেখ করেন.


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01