আঞ্চলিক বৈচিত্র্য এবং উন্নয়নের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি(Negative Aspects of Regional Diversity and Development)
আঞ্চলিক বৈচিত্র্যর ক্ষেত্রে আমরা যদি ভারতের আঞ্চলিকতা, ভাষাবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ইত্যাদি বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করি, তাহলে বৈচিত্র্যের জন্য খুব সহজাতভাবেই এদেশের আঞ্চলিক উন্নয়নগত ভারসাম্যহীনতা এবং পশ্চাদ্্যামিতার বিষয়টিও যথেষ্ট প্রাধান্য পাবে। কারণ-
(i) ভারতের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্ম, ভাষা, আচারব্যবহার এবং রীতিনীতির চরম বৈচিত্র্য রয়েছে বলেই, দেশের ইতিবাচক আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রগুলিতে জনগোষ্ঠীর সকলের মধ্যে সর্বদা সম মনোভাব দেখা যায় না। এর ফলে উন্নয়নমূলক যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে বৃথা সময় নষ্ট হয়ে যায়।
(ii) আঞ্চলিক বৈচিত্রোর সমারোহ কখনো কখনো ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামোয় প্রতিযোগিতার সৃষ্টি করে, ফলে দেশের উপেক্ষিত অঞ্চলগুলিতে ন্যায়বিচার এবং অনুগ্রহের আকাঙ্ক্ষায় একাধিক বিচ্ছিন্ন আঞ্চলিকতাবাদী ভাবধারা জন্ম দেয়।
(iii) অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, ভারতের আঞ্চলিক বৈচিত্র্যকে ইংরেজদের মতো বেশ কিছু ঔপনিবেশিক গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্যে কাজে লাগিয়ে যে চরম বৈষম্য গড়ে তুলেছে, তারফলে দেশের ঐক্যবদ্ধতার বিপরীতে কখনো কখনো সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
(iv) স্বাধীনতা-পরবর্তীযুগে ভারতের সমস্ত অঞ্চলে জনসংখ্যা, নগরায়ণ, প্রযুক্তি গ্রহণ যে পরিমাণে বেড়েছে, তার ফলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে ঘিরে দেশের পার্শ্ববর্তী অনগ্রসর অঞ্চলগুলির পারস্পরিক ব্যবধান মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পেয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রতিকূল প্রভাব ফেলেছে।
ভারতের আঞ্চলিক বৈচিত্র্যর বিষয়টিকে বর্তমানে অনেকেই সম্পদ হ্রাস, জলবায়ু সংকট, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাগত প্রতিকূলতা, আঞ্চলিক সংঘাত এবং জাতীয় গোষ্ঠীগুলির দ্বন্দ্বের নিরিখে বিচার করে থাকেন। এরফলে, উন্নয়ন প্রসঙ্গো ভারতের আঞ্চলিক বৈচিত্র্যের বিষয়টি আজ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে।