বহুমুখী পরিকল্পনা (Multipurpose planning)
অনেক সময় জোনো একটি দেশে বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে পরিকল্পনায় বহুমুখী উদ্দেশ্যসাধনের পথা গরী হয়ে বাতে। একটি বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণের পিছনে আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক এমনকি পরিবেশার একাধিক দৃষ্টিভঙ্গী পূরণের সমন্বয়ী প্রত্যাশ্যাগুলি সমানরাতে গুরুত্ব পায়। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ধরনের পরিকল্পনাগুরি সামগ্রিক পরিকল্পনার একটি অংশরূপেই বিবেচিত হয়ে যাবে। বাস্তাব একটি বহুমুখী পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটাতে দীর্ঘমেয়াদি নিজ্যি সময়কাল ধার্য করে, তার জন্য বিপুল পরিমাণে অর্থ বরাদ করার প্রয়োজন হয়। অধিভ্যাশ অনুন্নত দেশগুলির আধুলিক ও স্থানীয় স্তরে এই ধরনের পরিকল্পনায় ব্যয় করার সক্ষমতা থাকে না, তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বহুমুখী পরিকল্পনাগুলি কেন্দ্রীয় ব জাতীয় স্তর থেকেই রূপায়িত হয়ে থাকে।
আমাদের দেশে, 1948 খ্রিস্টাব্দের 7 জুলাই ভারতীয় বদপরিষনের "Act No. XIV" অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের "Tennesi Valley Authority" আদলে কন্যা নিয়ন্ত্রণ, বিদু্যুৎ উৎপাদন, জলয্যে পরিসেবা এবং স্থানীয় পরিবেশ সংরক্ষসের বহুমুখী উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে Damodar Valley Corporation (DVC)-এর অধীনে গড়ে তোলা দামোদর নদী উপত্যকা পরিকল্পনাটি ছিল ভারতে গৃহীত প্রথম বহুমুখী পরিকল্পনা।
মন্তব্য (Remarks)
ভারতের মতো প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি বৃহদায়তন দেশে দীর্ঘ প্রায় ষাট বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে যে সমস্ত পরিকল্পনা অনুশীলন করে আসা হয়েছে, তার সার্বিক সাফল্য এখানকার আঞ্চলিক স্তরে থাকা বিভিন্ন প্রশাসনিক এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যতিরেকে কখনই সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে, স্থানীয় স্তরে সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, সামাজিক সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান, আর্থ-সামাজিক বৈষম্য দূর করা এবং আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন প্রভৃতি ক্ষেত্রে বহুস্তরীয় পরিকল্পনাগুলির ইতিবাচক ভূমিকা দেশের সার্বিক উন্নয়নকামী পথকে যথেষ্ট সম্প্রসারিত করেছে। সেই কারণেই, নিম্নস্তরীয় প্রশাসনিক এলাকা তথা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের গুরুত্ব উপলব্ধি করে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু বলেছিলেন- "Panchayats from the real base of our democracy, if the base is unsound, then we are not cent percent stable democratically, even with the second base of our parliament... The fact remains that the Panchayats are the primary base of our democracy and we have to improve them."
পরিশেষে বলা যায়, বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি দেশেরই পরিকল্পনার নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। অতীতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনও একটি দেশের আঞ্চলিক উন্নয়নে পরিকল্পনার একক উদ্দেশ্যকেই সর্বাধিক প্রাধান্য দেওয়া হত। কিন্তু, এখন প্রায় সব পরিকল্পনাগুলি প্রণয়নের ক্ষেত্রে মানুষের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি পরিবেশ-পরিস্থিতিতেকও সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়। তাই, এখনকার অধিকাংশ পরিকল্পনাকে বহুমুখী পরিকল্পনার অংশ বললেও অত্যুক্তি হয় না।