ভারতীয় পরিকল্পনার বহুস্তুরীয় কাঠামো ধারনা(multi level structure of Indian Concept)
যে বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনাতন্ত্রে জাতীয় স্তর থেকে প্রণীত পরিকল্পনার বিধিবন্ধ উদ্দেশ্যগুলি তৃণমূল স্তর (Gras root level)-এর বিভিন্ন প্রশাসনিক কাঠামোয় সার্বিকভাবে বাস্তবায়িত হয়ে আসছে, সেটিই বহুস্তর বিশিষ্ট পরিকল্পনা নামে। পরিচিত। এখানে, একদিকে যেমন নিম্নস্তরের পরিকল্পনাগুলি উচ্চস্তরের পরিকল্পনার ভিত্তি গড়ে তোলে, অন্যদিকে উচ্চস্তরের বিভিন্ন আঞ্চলিক উন্নয়নমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিম্নস্তরের পরিকল্পনার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কার্যকরী কাঠামো এবং পথনির্দেশিকা প্রদান করে।
এ প্রসঙ্গো কে. ভি. সুন্দরম (K. V. Sundaram) বলেছেন, 'The concept of multi-level regional planning may be defined as planning for a variety of regions which together form a system and subordinate sub-system! অর্থাৎ, 'বহুস্তরের আঞ্চলিক পরিকল্পনার ধারণাটি বিভিন্ন অঞ্চলের পরিকল্পনা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে, যা একত্রে একটি প্রণালী এবং অধস্তন উপ-প্রণালী গঠন করে।'
প্রসঙ্গত, জাতীয় স্তরের বিভিন্ন এলাকাকে তাদের ভৌগোলিক বা আঞ্চলিক এবং প্রশাসনিক গঠনের ওপর ভিত্তি করে একাধিক ছোটো ছোটো ক্ষেত্রীয় এককে কাঠামোভুক্ত করে এই ধরনের আন্তঃক্ষেত্রীয় পরিকল্পনার যাবতীয় কার্যক্রমগুলিকে গ্রহণ করা হয়। সেই কারণে সুন্দরম আরও বলেছেন, সুসংবদ্ধ বহুস্তরীয় পরিকল্পনা হল জনগণের সার্বিক প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্যে অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ।
ভারতে বহস্তরীয় পরিকল্পনার প্রেক্ষাপট(The background of Multilevel Planning in India):
আমরা আগেই জেনেছি, স্বাধীনোত্তর ভারতে প্রথম তিনটি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কেন্দ্রীভূত দৃষ্টিভঙ্গীতে বাস্তবায়িত করার প্রচেষ্টা দেখা গেলেও, বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে কমিশন কিছুটা উদাসীন থেকেছে। কিন্তু, চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সময় ভারতের কয়েকটি রাজ্য (বিশেষত মহারাষ্ট্র) কেন্দ্র মনোনীত পরিকল্পনার দায়িত্বে থেকেও বি. আর. মেহেতা কমিটির সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে বহু স্টরি অঞ্চলিক পরিকল্পনা প্রভাব প্রচেষ্টা শুরু করেন। পরবর্তীকালে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারকে স্তরের পরিকল্পনার নির্দেশিকা ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে অশোকের মেহতা কমিটির প্রস্তাবিত ও পরিকল্পনায় ব্লক স্তরকে উৎসাহ প্রদান প্রকৃতি বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনার পথটি কে ধাপে ধাপে বহুস্তরে পরিকল্পনার দিকে নিয়ে যায়। তবে বহুস্তরী পরিকল্পনা লক্ষ্য ও ভারতের শ্রেষ্ঠ ৫০ কি পরিকল্পনায় গ্রামীণ উন্নয়ন মূলক ক্ষেত্রগুলিকে যেভাবে জোর দেয়া হয় তার স্পষ্ট পরিবহুল ঘটে ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে ২৪ শে এপ্রিল ৭৩ তম সংবিধান সংশোধনীতে ।
অবশ্যই তৎকালীন প্রেক্ষাপটে বেশ কয়েকটি সমস্যার পথ ধরেই বহুস্তরীয় পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। যেমন-
(i) ভারতের মতো বিশালায়তন দেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এবং সম্পদ বিতরণের ক্ষেত্রে বণ্টনগত অসামঞ্জস্যতা।
(ii) স্থানীয় প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনে জাতীয় তথা পরিকল্পনা কমিশনের দীর্যকালীন ব্যর্থতা।
(ⅲ) জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং সম্প্রদায় নির্বিশেষে বিভিন্ন আঞ্চলিক স্বার্থ বা চাহিদাকেন্দ্রিক প্রত্যাশা।
(iv) দেশের প্রান্তিক স্তরে বঞ্চিত মানুষদের উন্নয়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন অভিযোগ।
(v) সামাজিক এবং অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির যৌথ সমন্বয়ের অভাব।
(vi) স্থানীয় স্তরে কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার বাজেট বরাদ্দকরণে সদিচ্ছার অভাব, প্রভৃতি।
উল্লিখিত সমস্যাগুলির পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের সর্বস্তরের প্রত্যাশাকে যা সুনিশ্চিতভাবেই পূরণ করে আর্থ-সামাজিক বিকাশকে যাতে সুগঠিতভাবে গড়ে তোলা যায়, সেই লক্ষ্যেরই অনিবার্য প্রতিফলন ঘটেছিল বহুস্তরীয় পরিকল্পনায়।
ভারতে বহুস্তরীয় পরিকল্পনার পূর্ব শর্ত (Pre-condition of Multilevel Planning in India):
ভারতের বহুস্তরীয় পরিকল্পনার রূপায়ণ প্রসঙ্গে 1999 খ্রিস্টাব্দে কে. ভি. সুন্দরম বেশ কয়েকটি পূর্ব শর্তকে বিশেষভাবে মান্যতা দিয়েছিলেন। এগুলি হল-
(i) সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে স্থানীয় পরিকল্পনাগুলিকে রাজ্য পরিকল্পনার কাঠামোয় অন্তর্ভুক্তির অভীষ্ট লক্ষ্যে প্রস্তাবিত নীতি, উদ্দেশ্য এবং কৌশলগুলিকে এলাকাভিত্তিক অগ্রাধিকার প্রদান।
(ii) সংবিধানের একাদশ তফসিলে প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক ক্ষমতাসহ 29 টি নির্দিষ্ট বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে একটি বিশেষ বিতরণ প্যাকেজ গ্রহণ।
(iii) ব্লক পঞ্চায়েত, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং অন্যান্য শহরে স্থানীয় প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলির নির্দিষ্ট দায়িত্বগত মানদন্ডের ভিত্তিতে পরিকল্পনার সমস্ত তহবিলকে পৃথকভাবে স্থানান্তরিত করা।
ভারতের সংবিধানের 74-তম সংশোধনী অনুসারে বিভিন্ন জেলা পরিকল্পনা কমিটি (District Pum Committee/DPC) এবং মহানগর পরিকল্পনা কমিটি (Metropolitan Planning Commm MPC) প্রতিষ্ঠা করা।
(v) নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা পরিচালন ব্যবস্থার লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশাসনিক স্তরের কাঠামোগ সমন্বয় এবং সার্বিক অংশগ্রহণের জন্য সহায়ক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(vi) প্রশাসনিক প্রস্তুতির বিভিন্ন কার্যকরী পথ সম্প্রসারিত করা, যেমন-
• পরিকল্পনা প্রক্রিয়াকে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমায় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ।
• জেলা পরিকল্পনাগুলিকে সংশ্লিস্ট রাজ্য পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তকরণ বা সংহতকরণ।
• কর্মক্ষমতা এবং দায়বন্ধতার সফল প্রয়াসে স্থানীয় প্রশাসনিক স্তরের প্রতিটি কর্মীদের সংগঠিত করা।
• পরিকল্পনায় গৃহীত উন্নয়ন বাজেট নির্ধারণ।
• রিকল্পনায় নিয়োজিত বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী উভয়ের প্রশিক্ষণের জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ, শুধুতি
বহুস্তরীয় পরিকল্পনার কার্যপদ্ধতি (Functional Structure of Multi level Planning):
বহুস্তরীয় পরিকল্পনা এমনই একটি কার্যপদ্ধতি যেখানে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলি কেবল পরিকল্পনা প্রহণ ও বাস্তবজান সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকে না, বরং অত্যন্ত দায়বন্ধ এক যৌথ প্রশাসনিক দক্ষতা প্রদর্শন করে। আমাদের দেখ বহুস্তরীয় পরিকল্পনার কাঠামোগত সমন্বয়ে ওপর-নীচ বা অবরোহী (Top down) এবং নীচ-ওপর বা আত্রেই (Bottom up)-এই উভয় পদ্ধতির সমন্বয় ঘটানো হয়েছে।
অবরোহী (Top down) পদ্ধতির কার্যক্রম: অবরোহী পদ্ধতিতে পরিকল্পনার যাবতীয় কার্যকরে কৌশলগত নীতিগুলি উচ্চস্তরে থাকা কোনো কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান মারফত গৃহীত হয়। অবরোহী পদ্ধতিতে যে সময় কার্যকরী পদক্ষেপগুলিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলি হল- (1) জাতীয় প্রকৌশলী নীতি নির্ধারণ, (ii) বিভিন্ন অগ্রাধিকারপূর্ণ নির্দেশিকার জন্য উপযুক্ত বাজেট ধার্যকরণ, (iii) প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান, (iv) প্রকল্পগুলির পর্যবেক্ষন ও পর্যালোচনা, (৮) পরিকল্পনার মূল্যায়ন,সমন্বর এবং সংহতকরণ, প্রভৃতি।
আরোহীপদ্ধতির কার্যক্রম: আরোহী পদ্ধতিতে পরিকল্পনার বিকেন্দ্রীভূত দিকটির সর্বাধিক প্রাধান্য পায়, যেখানে বিভিন্ন প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানগুলি পরিকল্পনা প্রণয়নের দায়িত্বে থাকে। আরোহী পদ্ধতিতে যে সমস্ত কার্যক্রমগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলি হল- (৫) স্থানীয় চাহিদা ও পছন্দের প্রকৃতি অনুযায়ী পরিকল্পনা পরিচালনার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ, (ii) অগ্রাধিকারভিত্তিক
বহুস্তরীয় পরিকল্পনার পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গিগ
রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে সামঞ্জস্যতা প্রদান ও বাস্তবায়ন, (iii) পরিকল্পনার লক্ষ্য, সমস্যা এবং সীমাবদ্ধতা পর্যালোচনা প্রভৃতি। যেহেতু, ভারতে বহুস্তরের পরিকল্পনায় উচ্চ প্রশাসনিক স্তর থেকে নিম্নস্তরের পরিকল্পনাগুলির জন্য বেশকিছু মৌলিক কাঠামো সরবরাহ করে, তাই এখানে সমগ্র পরিকল্পনাটিকে কার্যকরী করে তুলতে উল্লিখিত পদ্ধতি দুটির সার্বিক সম্বন্ধ সাধন ঘটনা হয়।।
ভারতে বহুস্তরীয় পরিকল্পনার বিভিন্ন কাঠামোগত স্তর(Different Structural Levels of Multi-Level Planning in India):
ভারতে বহুস্তরীয় পরিকল্পনায় পাঁচটি উল্লেখযোগ্য কাঠামোগত স্তরকে চিহ্নিত করা যায়। যথা-
• জতীয় স্তর/কেন্দ্রীয় স্তর (National level/The Central level): ভারতের বহুস্তরীয় পরিকল্পনার প্রথম এবং অন্যতম ধাপটি হল জাতীয় স্তর। সর্বোচ্চ কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার এই স্তরটি প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে (দেশের প্রধান সরকারের নেতৃত্বাধীন) এবং জাতীয় উন্নয়ন পরিষদ (National Development Council)-এর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে থাকে।।
অবশ্য, এই স্তরটি শুধুমাত্র যে দেশের প্রধান আঞ্চলিক পরিকল্পনাগুলিকে প্রণয়ন করে তা নয়, বরং কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিভিন্ন বিভাগীয় মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের উন্নয়নমুখী কার্যকৌশলের যথাযথ বাস্তবায়ন ঘরিয়। এছাড়াও, পরিকল্পনা কমিশন রাজ্যগুলির স্বার্থে বিভিন্ন সমস্যা পর্যবেক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, মূল্যায়ন এবং পরিকল্পনার কাঠামোগত সমন্বয়ের জন্য বিধিবদ্ধ নির্দেশিকা জারি করে থাকে। জাতীয় স্তরে গৃহীত সমস্ত পরিকল্পনাই অত্যন্ত বৃহৎ পরিসরের হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতীয় সংবিধানের 52-তম সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করে, তাদের মাধ্যমে দেশের বৃহৎ আঞ্চলিক বা "Macro" স্তরে এবং উপ-আঞ্চলিক বা "Meso" স্তরে পরিকল্পনা রূপায়ণের যাবতীয় নীতিগুলি স্থিরীকৃত হয়েছে। সেই সঙ্গেঙ্গ আরো বলা হয়েছে, পরিকল্পনা কমিশনের পূর্বানুমতি ছাড়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোনো বড়ো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যাবে না।
পরিকল্পনা কমিশনের এক্তিয়ারে সর্বমোট 31টি বিভাগের (অর্থাৎ 11টি প্রধান বিভাগ এবং 20টি উপ-বিভাগ)-এর সমন্বয়ের মাধ্যমে তিন ধরনের পরিকল্পনা প্রণীত হয়, যথা-
15-25 বছরের দৃষ্টিভঙ্গীর সাপেক্ষে গৃহীত সুদুরপ্রসারী দীর্ঘমেয়াদী (Long term) আর্থ-সামাজিক পরিকল্পনা।
5 বছরের বেশি মধ্য মেয়াদী (medium term) পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা এবং
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কাঠামোর মধ্যে গৃহীত স্বল্পমেয়াদি (short term) বার্ষিক (yearly) পরিকল্পনা।
এছাড়াও, অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে দেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো জরিপ, মানবসম্পদ এবং মূলধন সংক্রান্ত যাবতীয় নীতিগুলির দক্ষ মূল্যায়ন, প্রভৃতি। সাধারণত, জাতীয় স্তর থেকে যে সমস্ত পরিকল্পনাগুলি বর্তমানে সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়ে থাকে, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-মহানগর পরিকল্পনা, জাতীয় নদী পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা, সড়ক পরিকল্পনা প্রকৃতি।
রাজ্যন্তর (State level): বহুস্তরীয় পরিকল্পনার দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্তরটি রাজ্য পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ট মূল কার্যকরী কাঠামোটি অনেকটাই জাতীয় স্তরের ক্ষমতার প্রায় সমতুল্য। এখানে, রাজ্য পরিকল্পনা বোর্ড ( Planning Board) জাতীয় পরিকল্পনা কমিশনের মতো কাজ করে এবং সেই সাথে পরিকল্পনার স্বার্থে রাজ্যের বিচর মন্ত্রণালয় মারফত জেলাভিত্তিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন ও সমন্বয়সাধন করে থাকে। রাজ্যের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলি থেকে পাওয়া তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ করে, আঞ্চলিক স্বার্থ ও চাহিদার কথা মাথায় অস হয়। এছাড়াও, রাষ্ট্রীয় বিধি অনুযায়ী বিভিন্ন পরিকল্পনা রাজাজিকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্বও রাজ্যস্তরের অধীনেই থাকে। কেন্দ্রীয় পরিকল্পনাগুলির মতোই রাজ্যের পরিকল্পনাগুদির সেগুড়ির মূলত পাঁচ বছর মেয়াদি সময়কাল ধার্য করা হয়। তবে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী ঃ-ও বছরের ভিন্ন রাজ্যস্তরে গ্রহণ করতে দেখা যায়।
নিরাজ্যান্তরের পরিকল্পনাগুলি মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং অনান্য পরিষদীয় মন্ত্রী ও আমলাদের সহযোগিতা বা পরামদ অনুযায়ী গ্রহণ করার পর, সেটির ছাড়পত্র প্রদান করে থাকেন রাজ্যের প্রধান কার্যনির্বাহী প্রতিনিধি রাজ্যপাল। সবশোর সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনাটি রূপায়ণের দায়িত্বভার যাঁদের ওপর বর্তায়, তাঁরা হলেন-রাজ্যের মুখ্য সচিব (Secretariat রাজ্য পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান, মন্ত্রিপরিষদের বিভাগীয় বিভিন্ন কর্মসচিব, এমনকি বিশেষ পরিস্থিতিতে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্র বা অন্যান্য মন্ত্রীগণ দায়বন্ধ থাকেন।
রাজ্যের পরিকল্পনামূলক কাজে গতি আনতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর খোলা হয়েছে। এগুলির মধ্যে অন্যতম হল
(a) উন্নয়ন বিভাগ (Development Departments): গ্রামোন্নয়ন, কৃষিকাজ, পশুপালন, কারিগরি শিল্প প্রশ্নটি এর অধীনস্থ।
(b) সমাজকল্যাণ বিভাগ (Social Welfare Departments) স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সম্প্রদায়গত উন্নয়ন এর অধীনস্থ।
অনেক সময় ভারতীয় সংবিধানের আইনি নির্দেশ মোতাবেক, কিছু কিছু রাজ্য আঞ্চলিক তথা স্থানীয় পরিকল্পন রূপায়ণের ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ভোগ করে থাকে। মূলত, আঞ্চলিক পরিকল্পনার কর্মসূচী গ্রহণ ও ত্য বাস্তবায়নে যে সমস্ত রাজ্য অত্যন্ত দায়িত্ব এবং আগ্রহ দেখিয়ে থাকে, তারাই এই কৃতিত্বসুলভ সুবিধাটি পেয়ে থাকে। (যেমন-অস্ত্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট প্রভৃতি)। তবে, এক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সার্বিক সুস্পষ্ট বা সম উদ্যোগের প্রচেষ্টা একান্ত কাম্য।
• জেলা স্তর (District level): রাজ্যস্তরের নীচে বহুস্তরীয় পরিকল্পনা কাঠামোয় সবচেয়ে উপযুক্ত প্রশাসনিক একক হল জেলা। যেহেতু সমস্ত পরিকল্পনার সাফল্যের জন্য স্থানীয় সম্পদের অধিকতর সংযোজন এবং ব্যবহার প্রয়োজন, তাই রাজ্য মধ্যবর্তী প্রশাসনিক ক্ষেত্ররূপে জেলা পর্যায়কে গুরুত্ব দিয়ে পরিকল্পনার
গ্রাম/পঞ্চায়েত-তর(Village/Panchayet level):
ভারতের সমগ্র গ্রামাঞ্চল জুড়ে বহুস্তরীয় পরিকল্পনার প্রশাসনিক, জনকল্যাণমূলক, বিচারবিভাগীয় প্রতিনিধিত্বমূলক স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার সর্বনিম্ন কাঠামোটি পঞ্চায়েত ব্যবস্থা নামে 1991 খ্রিস্টাব্দের 73-তম সংবিধান সংশোধন বিল পাস করে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। বিশেষ করে, সংবিধানের "243-(G)" অনুচ্ছেদ- এর নিয়মানুযায়ী, স্থানীয় নিম্ন প্রশাসনিক এলাকাগুলিতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতকে স্বশাসনের অধিকার দেওয়া হয়েছে। এর জন্য নির্দিষ্ট পঞ্চায়েতগুলি স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করবে এবং সেই লক্ষ্যের বাস্তবায়নে প্রতি বছর অক্টোবর এবং এপ্রিল মাসে যাম্মাধিক একটি বিশেষ আলোচনা সভায় গ্রাম সংসদের গ্রাম সভার প্রস্তাবিত একাধিক কর্মসূচিমূলক প্রতিবেদন আকারে পেশ করতে হবে। সাধারণত, প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত 5 থেকে 30 জন সদস্য নিয়ে গছে ওঠে। তবে, কার্যক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট সদস্যসংখ্যা ভোটার সংখ্যা অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে, প্রথমেই পঞ্চায়েতের এলাকাকে কয়েকটি নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করা হয়। এরপর, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে যারা বিধানসভা নির্বাচনে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন তাঁরা গোপন ব্যালটে, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি সদস্যকে পাঁচ বছর মেয়াদ সময়কালের জন্য নির্বাচিত করে থাকেন। জনগণের সার্বিক উন্নয়নমূলক প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুসারে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বার্ষিক পরিকল্পনার বাজেটের নির্ধারিত অর্থকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুরোপুরি ব্যবহার করার বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এখানে, গ্রাম সভার তত্ত্বাবধানে পঞ্চায়েত পর্যায়ের পরিকল্পনাগুলির। বাস্তবায়নের দায়িত্ব গ্রাম উন্নয়ন কর্মকর্তা (Village Development Officer) এবং গ্রাম প্রধান বা পঞ্চায়েত প্রধানের ওপর বর্তায়। সাধারণত, পঞ্চায়েত স্তরে কোনও পরিকল্পনা কাঠামোকে রূপায়িত করতে গেলে যে সমস্ত জনপ্রতিনিধি তথা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সহায়তা নেওয়া হয়, তার একটি ধারণাচিত্র (Pic-5.20) প্রদান করা হল।
উদ্দেশ্য (Objectives):
সাধারণত, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে পরিকল্পনা রচনার সময় যে বিষয়গুলি অত্যন্ত গুরর পায়, সেগুলি হল-
পরিকল্পনার নির্দিষ্ট নথির ভিত্তিতে প্রকল্পের নাম, স্থান, সময়কাল, পারিসরিক ক্ষেত্র এবং বাজেট তহবিল স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা।
প্রয়োজনে গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্যান্য একাধিক তহবিলকে পরিকল্পনার স্বার্থে অন্তর্ভুক্ত করা।
পরিকল্পনাটির সর্বাত্মক রূপায়ণে উপযুক্ত নির্মাণ সহায়ক সংস্থার সহায়তা নেওয়া।
পূর্ববর্তী কোনও পরিকল্পনার বরাদ্দকৃত অর্থ নতুন পরিকল্পনায় না ধরা।
নির্দিষ্ট সময়ভিত্তিক পরিকল্পনা তহবিলের খরচ সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা।
পরিকল্পনা খাতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার কর্তৃক আর্থিক সহায়তা ও অনুদানগুলির সঠিক ব্যবহার।
জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং অন্যান। স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার সাহায্য, সরকারিভাবে নেওয়া ঋণ কিংবা সরকার কর্তৃক প্রদত্ত ঋণ এবং বিভিন্ন কর প্রভৃতি একাধিক আয়ের উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করা, প্রভৃতি।
• সামগ্রিক কার্যাবলী (Overall functions): গ্রাম পঞ্চায়েতের সামগ্রিক কার্যাবলিকে মূলত তিন ভাগে ভাগ করা হয়, যথা-
(a) বাধ্যতামূলক কর্তব্য (Obligatory duties):
(1) জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান, যেমন-শিশু স্বাস্থ্য কর্মসূচি, জাতীয় টীকাকরণ কর্মসূচি, জননী ও শিশু সুরক্ষা যোজন, রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা, ডায়েরিয়া ও যক্ষ্মা সংক্রান্ত কর্মসূচি, এইট্স ও কুন্ঠ সংক্রান্ত কর্মসূচি, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, অন্ধত্ব নিবারণ ও আয়োডিনের অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ কর্মসূচি প্রভৃতি।
(ii) খাদ্য সুরক্ষা প্রদান, যেমন-রেশনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে খাদ্যের গণ বণ্টন সুনিশ্চিতকরণ, ন্যায্য দামের খাদ্যবস্তু প্রদান, খাদ্যশস্য সংগ্রহ প্রভৃতি।
(iii) স্থানীয় পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতি, যেমন-নতুন রাস্তা নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামত করা।
(iv) ধারাবাহিকভাবে কর সংগ্রহ প্রভৃতি।
(v) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত তথ্য প্রদান।
বহুস্তরীয় পরিকল্পনার সমন্বয় (Co-ordination of Multi level Planning):
হুস্তরীয় পরিকল্পনা কেন্দ্র থেকে রাজ্যের বিভিন্ন নিম্ন প্রশাসনিক স্তরে পৃথক পৃথকভাবে সম্পন্ন হলেও, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে এক্ষেত্রে একটি সমন্বয়মূলক পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়, যেমন-
(১) আমাদের দেশে প্রাথমিকভাবে একটি পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে কেন্দ্র। মূলত পরিকল্পনা কমিশন দ্বারা 2-3 বছর অন্তর দেশের বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন কাঙ্ক্ষিত দৃষ্টিভঙ্গীকে সামনে রেখে দীর্ঘমেয়াদি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এক্ষেত্রে, অন্যান্য রাজ্যগুলিও তাদের নিজস্ব নীতি অনুসারে একাধিক উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রত্যাশ্যামূলক খসড়া জাতীয় উন্নয়ন পরিষদ (National Development Council আলোচনা এবং অনুমোদনের জন্য জম দেয়। পরে, কমিশন মারফৎ সংশ্লিষ্ট পরিকল্পনার ছাড়পত্র পেলেই রাজ্যগুলি সেই সমস্ত পরিকল্পনা রূপায়ণের কাজ শুধু করে।
পরবর্তী ধাপে, ভারতের পরিকল্পনা কমিশনের বিভিন্ন প্রতিনিধি, পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ ও মন্ত্রীরা বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থের ব্যয় সংক্রান্ত থাইম পর্যালোচনা করেন এবং কমিশন নিজস্ব এন্ড্রিয়ারে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটির বাস্তপায়নের জন্য নির্দিষ্ট বাজেট অনুমোদন করে থাকে।
এরপর কেন্দ্রীয় পলিকানা কমিশনের নির্দিষ্ট নিয়মাবলীর ভিত্তিতে পরিকরানার বাস্তবায়নে রাজ্যের উদ্দেশ্যে একটি পড়া প্রতিলিপি পাঠায়। তার উপর ভিত্তি করেই, প্রতিটি রাজ্য নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামোয় একটি বিশের উদ্দেশ্যে এরিকল্পনা কমিটি তৈরি করে। এখানে, পরিকল্পনার যাবতীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পভিত্তিক ব্যয়ের খাত নিবারণ এবং রিওর সহায়ক সাপুর সম্পর্কিত বিষয়গুলিকে মুখ্যমন্ত্রীর পৃষ্ঠপোষকতায় রাজ্য মন্ত্রীসভার অধীনে আলাপ আে মাধ্যমে শির করা হয়। তার পর, রাজ্যন্তর থেকে পরিকল্পনার একটি সামগ্রিক চিন্তাধারামূলক খসড়া পুনরায় কেন্দ্রার পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়।
চূড়ান্ত পর্যায়ে, রাজ্যন্তর থেকে পাঠানো সামগ্রিক প্রকল্পের খসড়াটি দিল্লিতে পরিকল্পনা কমিশনের দপ্তরে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পর্যালোচনা করা হয়। প্রয়োজনে, সামগ্রিক প্রকল্পটিতে বেশ কিছু সংযোজন বা প্রিয়োজন ঘটিয়ে জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের সবুজ সংকেতের সাপেক্ষে সবশেষে রাজ্য বিধানসভায় আইনি সিলমোহর পেতে বিবি সম্মতভাবে পেশ করা হয়।
এখানে, ভারতে আঞ্চলিক পরিকল্পনা রূপায়ণের সমন্বয়ী দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণা চিত্র (Pic-5.21)-এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বহুস্তরীয় পরিকল্পনায় পরিচালনগত সমস্যা ও সম্ভাবনা(Management problems and possibilities in Multi level Planning):
ভারতের মতো বিশালায়তন দেশে বহুস্তরীয় পরিকল্পনাকে সফলভাবে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যায়। সেই জন্য, কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ এটিকে 'বিকেন্দ্রীভূত পরিকল্পনার ছদ্মবেশী ভণ্ডামি' বলে থাকেন। বহুস্তরীয় পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরিচালনগত সমস্যা হল-
ভারতের পিছিয়ে থাকা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির নিম্নতম প্রশাসনিক স্তরে বেশকিছু কাঠামোগত দুর্বলতা থাকায়, পরিকল্পনায় সার্বিক অংশগ্রহণের তৎপরতা এদের মধ্যে খুব একটা দেখা যায় না।
এমন কিছু কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা থাকে, যেখানে বিভিন্ন রাজ্যের নিম্ন প্রশাসনিক স্তরে থাকা আমলা বা জন-প্রতিনিধিরা পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক চাপ কিংবা নিজস্ব অনীহাবশত পরিকল্পনার কার্যকরী দায়ভারগুলিকে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত করতে চায়না।
অনেক সময় কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরে কোনো রাজনৈতিক মতাদর্শের বৈষম্যের পরিসরটি, উচ্চপর্যায় থেকে পরিচালিত পরিকল্পনার কোনও সিদ্ধান্তকে আঞ্চলিক নিম্নস্তরীয় প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে সঞ্চালনার ক্ষেত্রে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে।
স্থানীয় স্তরের কিছু রাজনৈতিক বাক্ বিতণ্ডা, জাতি বিদ্বেষ, ধর্মীয় চরম ভাবাবেগ, লিঙ্গ অসাম্য এবং পুরাতন বেশকিছু সামাজিক প্রথা বহুস্তরীয় পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় অথবা পরিকল্পনার দৃষ্টিভঙ্গিকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করে।
ভারতের ক্ষুদ্র অঞ্চলগুলির প্রশাসনিক ক্ষেত্রে পরিচালনা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা থাকায়, সেখানে বহুস্তরীয় পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ঘটানো যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ।
কখনো কখনো রাজ্য সরকার মারফত নিযুক্ত বেশ কিছু আমলা যাঁরা পঞ্চায়েত স্তরের পরিকল্পনামূলক কাজগুলি দেখাশোনার দায়িত্ব পেয়ে থাকেন, নিম্ন প্রশাসনিক স্তরে পরিকল্পনাটি রূপায়ণ না ঘটানোর জন্য তাঁরাই একাধিক অজুহাতের খাড়া তৈরি করে। এর ফলে, শেষ পর্যন্ত সমগ্র পরিকল্পনাটি অযথা বিড়ম্বনা ও বিলম্বের শিকার হয়।
বহুস্তরীয় পরিকল্পনায় সঠিক তথ্য প্রদান সংক্রান্ত ত্রুটি, পরিকল্পনায় ধার্য বাজেটের অপব্যবহার, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, জনসংযোগগত সীমাবদ্ধতার মতো আরও বেশ কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।