প্রবাহ বিশ্লেষণ পদ্ধতি (Flow Analysis Method)
ক্রিয়ামূলক অঞ্চল নির্ধারণে প্রাণায় বিশ্লেষণ হল এমন একটি পদ্ধতি যেখানে এক বা একের অধিক প্রভাবশালী কেন্দ্র এবং পার্শ্বদ উপকেন্দ্রগুলির দিকে কোনও কার্যকরী প্রবাহের মাত্রাগুলিকে নির্দিষ্ট মানদণ্ডে বিচার্য হয়। বিশেষত, কোনও একটি শহরকে যদি ক্রিয়ামূলক অন্ন্মদের একটি গ্রন্থিবিন্দু করা যায়, তাহলে সেটিকে কেন্দ্র করে পার্শ্বাস্য অঞ্চলগুলির একটি নিস্থের আর্থসামাজিক আস্তাসম্পর্ক লক্ষ্য করা যাবে। এখানে পার্শ্বাদ অঞ্চলের ঠিক কতটা জায়গা কেন্দ্রীয় শহরাঞ্চলটির সাথে দৈনন্দিন কাজকর্মের মাধ্যমে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে, সেটি নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হল প্রবাহ। বিশ্লেষণ পদ্ধতি। এখানে সান্ধিক প্রবাহগুলিকে যদি ম্যাট্রিক্স আকারে প্লাটি করা হয়। যেখান থেকে প্রতিটি কেন্দ্রের মধ্যে। প্রাথমিক এবং গৌণ প্রবত্রগুলিতে শনাক্তকরণ দ্বারা কার্যকরী অঞ্চলের সীমানা সহজেই উপস্থাপিত হবে।
যেহেতু সমস্ত ধরনের ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের মুল্য বিষয়বস্তু হল স্থান কেন্দ্রিকতা, তাই এটি বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে একাধিক পরিসেবা বা কর্মমুখী আত্মাসাযোগমূলক প্রবাহকে গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে, যেমন-
• অর্থনৈতিক (Economic) প্রবাহ এটি রাস্তাঘাটিকেন্দ্রিক যাতায়াতে এবং পণ্য কেনাবেচার সাথে জড়িত।
• সামাজিক (Social) প্রবাহ এটি শিক্ষার উদ্দেশ্যে ছাত্র-ছাত্রী অথবা চিকিৎসার প্রয়োজনে রোগীদের আসা যাওয়ার সাথে জড়িত।
রথা (Information) প্রবাহ-এটি টেলিফোন, সংবাদপত্র, টেলিগ্রাফ অথবা সরকারি কোনও তথা আদানপ্রদানের সাথে জড়িত।
• রাজনৈতিক (Political) প্রবাহ এটি সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পভিত্তিক আয়-ব্যয়ের সঙ্গো জড়িত।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোনও কেন্দ্রীয় অঞ্চল এবং তার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন উপ-অঞ্চলের মধ্যেকার সম্পর্ক নির্ণয়ে প্রবাহমান এবং পরিবর্তিত সমস্ত ধরনের তথাই যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে প্রবাহের দিক এবং বিভিন্ন দৈশিক উপাদানের পরিমাণগত কেন্দ্রিকতাকে স্থানিক আকর্ষণ মাত্রার অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ক্রিয়ামূলক অঞ্চল সহজেই নির্ধারণ হয়ে যায়। যেমন-একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরকেন্দ্র থেকে দূরত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তার যাবতীয় আর্থসামাজিক প্রবাহের আকর্ষণ প্রাবল্য ধীরে ধীরে যেমন কমে আসে, আবার উপকেন্দ্র থেকে কেন্দ্রের দিকে আকর্ষণের প্রাবল্য পুনরায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। সাধারণত কেন্দ্রীয় শহরাঞ্চলটির বিভিন্ন দিকে থাকা সমস্ত উপ-অঞ্চলগুলি, যাদের সাথে কেন্দ্রীয় শহরের আকর্ষণের মাত্রা সর্বনিম্ন, সেগুলিকে সামগ্রিক ভাবে চিহ্নিত করেই (প্রবাহ বিশ্লেষণ নীতি অনুযায়ী। ক্রিয়াশীল অন্যালের সীমানা নির্ধারণ করা যায়।
বিখ্যাত পরিকল্পনাবিদ Green ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত মডেলে স্লোভেনিয়ার বাস সার্ভিসকে একটি অন্যতম নির্ধারক হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এক্ষেত্রে যাত্রীদের কম ভাড়ায় বাসে ওঠার প্রবণতা এবং বাসের সময়সুচির ভিত্তিতে নির্ধারিত একটি প্রব্যহচিত্র উপস্থাপন করে তিনি কেন্দ্রীয় অঞ্চলটির গুরুত্ব পরিমাপ করেন। তাঁর মতে, যে-সমস্ত কেন্দ্র থেকে যত বেশি সংখ্যক বাস পরিধিস্থ অঞ্চলের দিকে চলাচল করে, সেই কেন্দ্রটি অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের নিরিখে ঠিক ততটাই উন্নত অঞ্চল রূপে পরিগণিত হবে। অবশ্য, পরবর্তীকালে আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণের এই পদ্ধতিটিকেও Green যথেষ্ট ত্রুটিপূর্ণ বলে মনে করেছিলেন।