welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

নিয়ামক বিশ্লেষণ পদ্ধতি (Factor analysis method)

নিয়ামক বিশ্লেষণ পদ্ধতি (Factor analysis method)


বর্তমানে আঞ্চলিকীকরণে আধুনিক তথা গাণিতিক কৌশলরূপে সর্বাধিক ব্যবহার করা হয় নিয়ামক বিশ্লেষণ পশ্চতি। এটি এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন ঘটনার নিয়মানুবর্তিতা, পুনরাবৃত্তি অথবা আঞ্চলিক উপাদানগুলিকে শৃঙ্খলাভাবে উপলব্ধি করা যায। 

1961 খ্রিস্টাব্দে পরিকল্পনাবিদ বি. জে. বেরি (B. J. Berry) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এই গন্ধতিটিকে আঞ্চলিকীকরণে ব্যবহার করেন। অবশ্য পরবর্তীকালে এটিকে উত্তর-পশ্চিম যুক্তরাজ্যের অনুন্নত অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণে (1968 খ্রিস্টাব্দে) ডি. এম. স্মিথ (D. M. Smith) বিশেষভাবে প্রয়োগ করেছিলেন। এক্ষেত্রে, স্মিথ দুটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামককে প্রাধান্য দিয়েছিলেন, যথ্য-শিল্প নিয়ামক এবং সামাজিক নিয়ামক (ধারণাচিত্রে প্রদর্শিত হয়েছে)। স্মিথ মনে করেন, যেখানে বা যে সমস্ত অঞ্চলে এই দুটি নিয়ামক সবচেয়ে প্রভাবশীল, সেটিই সমৃদ্ধ অঞ্চলরূপে পরিগণিত হবে।

স্মিথ উল্লিখিত নিয়ামকগুলির ওপর ভিত্তি করেই যুক্তরাজ্যের পূর্ব ল্যাঙ্কাশায়ার একটি 'অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ অঞ্চল' এবং মধ্য ল্যাঙ্কাশায়ারের তুলাবলয় একটি অন্যতম 'সমস্যাসংকুল অঞ্চল' রূপে চিহ্নিত হয়।

অসুবিধা (Problem): ক্রিয়ামূলক অঞ্চল চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রেও ভৌগোলিকদের বেশ কয়েকটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যেমন-

(i) ক্রিয়ামূলক অঞ্চলগুলির পরিসরটি খুব একটা স্থিতিশীল নয়। পরিসরগত তারতম্যের নিরিখে ভৌগোলিকরা এই ধরনের অঞ্চলকে সাময়িকভাবে চিহ্নিত করলেও, কোনও একসময় এর সীমানাটি যথেষ্ট পরিবর্তিত হয়ে যায়।

(ii) অনেকসময় একাধিক ক্রিয়ামূলক অঞ্চল সংগঠিত করতে দীর্ঘ সময় লাগে বলে, কার্যক্ষেতে বিভিন্ন অঞ্চলবিদদের যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।।

(iii) ক্রিয়ামূলক অঞ্চল চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে স্কেলের সমস্যা প্রায়শই থেকে যায়। বিশেষ করে, ক্রিয়ামূলক অঞ্চল চিহ্নিতকরণে ঠিক কোন্ স্থিতিমাপক (Parameter)-টিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে, সে বিষয়েও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট মতানৈক্য রয়েছে।

(iv) একটি ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের সীমানা নির্ধারণ যে পদ্ধতিতে করা হয়, সেটি আবার অন্য কোনও ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে।

(v) অনেকসময় ক্রিয়ামূলক অঞ্চলগুলিকে ছোটো ছোটো ভাগে বিভক্ত করলে তাদের প্রান্ত সংলগ্নতার নির্দিষ্ট সীমানা ভিত্তিক বেশকিছু সমস্যা দেখা দেয়।

(vi) সমস্ত ধরনের ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের আর্থসামাজিক সম্পর্ক তথা উৎপাদন এবং পরিসেবাগত প্রবাহগুলিকে সবসময় অনুধাবন করা সম্ভব হয় না।

(vii) অনেকসময় ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের সীমানা চিহ্নিতকরণ করতে গিয়ে বাহ্যিক অঞ্চলের একাধিক পারিসরিক উপাদান প্রত্যক্ষ নির্ধারক হয়ে দাঁড়ায়।

(viii) বাহ্যিক অঞ্চলের মতোই ক্রিয়ামূলক অঞ্চলগুলি সম্পূর্ণ গঠন বিশিষ্ট হয় না।

তবে, ক্রিয়ামূলক অঞ্চল নির্ধারণের একাধিক সমস্যা থাকলেও বর্তমানে আঞ্চলিক পরিকল্পনার স্বার্থে অথবা আঞ্চলিক বিশেষীকরণের দৃষ্টিভঙ্গিতে ক্রিয়ামূলক অঞ্চলের শ্রেণিবিভাজন ভৌগোলিক দিক থেকে সর্বজন স্বীকৃত হয়ে উঠেছে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01