welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতের আঞ্চলিকতা প্রশমনে উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টা(Developmental efforts to alleviate Regionalism in India)

ভারতের আঞ্চলিকতা প্রশমনে উন্নয়নমূলক প্রচেষ্টা(Developmental efforts to alleviate Regionalism in India)


বৈচিত্র্যপূর্ণ ভারতে চরম আঞ্চলিকতা প্রায়শই যে সমস্ত অস্থিরতা এবং হুমকির পরিস্থিতি তৈরি করে চলেছে, সেগুলিকে প্রশমন করা খুব একটা সহজ কাজ নয়। তা সত্ত্বেও, দেশের আঞ্চলিকতা প্রশমনে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। সেগুলি

সাধারন প্রচেষ্টা (General effort): প্রাথমিকভাবে আঞ্চলিকতা প্রশমনের সাধারণ প্রচেষ্টাগুলি হল-

(i) অনুন্নত এলাকার উন্নয়ন: দেশের অবহেলিত এলাকাগুলিকে উন্নয়নের আলোয় নিয়ে আসা।

(ii) সমস্যার সমাধান: শান্তিপূর্ণ ও সাংবিধানিক উপায়ে জনগণের সমস্ত ধরনের সমস্যার সমাধান করা।

(ii) আইন প্রণয়ন: চরম আঞ্চলিকতা দমনে রাষ্ট্র স্বীকৃত যথাযথ আইনগুলিকে কঠোরভাবে বলবৎ করা।

(iv) কৌশলগত নীতি গ্রহণ: জাতীয় স্বার্থ ব্যতীত রাজ্যের বিষয়ে খুব একটা হস্তক্ষেপ না করে কৌশলী নীতি গ্রহণ।

(V) সমগুরুত্ব প্রদান: প্রাদেশিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের প্রতিটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া।

(vi) বিচ্ছিন্নতা দমন: রাজনৈতিক স্বার্থে বিচ্ছিন্নতাবাদকে প্রশ্রয় না দিয়ে সংঘটিত মনোভাব বজায় রাখা প্রভৃতি।

কেন্দ্রীয় প্রচেষ্টা (Central effort): আঞ্চলিকতা প্রশমনে কেন্দ্রীয়ভাবে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে, তার কয়েকটি হল নিম্নরূপ-

(i) আঞ্চলিক পরিষদ গঠন: 1956-খ্রিস্টাব্দের রাজ্য পুনর্গঠন আইন অনুযায়ী বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করা হয়েছে।

(ii) উন্নয়নমূলক ফোরাম গঠন: অন্তঃআঞ্চলিক বৈষম্য এড়িয়ে সমন্বয়মূলক প্রচেষ্টা বাড়াতে 1971 খ্রিস্টাব্দে একটি উন্নয়ন ফোরাম গড়ে তোলা হয়।

(iii) তহবিল গঠন: দেশের মোট 272টি অনগ্রসর অঞ্চল চিহ্নিত করে সেখানকার উন্নয়নের জন্য অনুদান তহবিল (Backward region fund) গঠন করা হয়েছে।

(iv) PMKKKY চালু : আদিবাসী ও উপজাতীয় এলাকা এবং খনি দ্বারা প্রভাবিত অন্যান্যদের কল্যাণের জন্য সেপ্টেম্বর 2015 খ্রিস্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী খনিজ ক্ষেত্র কল্যাণ যোজনা (PMKKKY) চালু করা হয়েছে।

(v) উন্নয়ন কর্মসূচী: পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলিকে পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত করতে, অনগ্রসর এলাকা উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে।

ভর্তুকি প্রদান: বিভিন্ন বেসরকারি আর্থিক খাতগুলিকে অনগ্রসর এলাকায় সঠিকভাবে বিনিয়োগের জন্য সরকারী প্রণোদনা, ভর্তুকি, কর রেয়াত এবং প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ প্রদানের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।

(vi) শিক্ষা কর্মসূচীর বাস্তবায়ন: রাজ্যের অঞ্চলভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাংস্কৃতিক সংযোগ এবং বিনিময়। কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করা হয়েছে।

(viii) NIC-এর দক্ষতাবৃদ্ধি: স্থানীয়দের সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষা করতে "National Integration Council (NIC)"-এর দক্ষতা বাড়ানো হয়েছে।

(ix) মর্যাদা প্রদান: অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া রাজ্যগুলি (যেমন-পাহাড়ি, সীমান্ত রাজ্য)-র জন্য বিশেষ মর্যাদা দিয়ে বিভিন্ন স্পন্সরভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে।বর্তমানে নীতি আয়োগ গঠন করে নীচ-উপর (Bottom-up) দৃষ্টিভঙ্গিতে আঞ্চলিক সমস্যাগুলির সমাধানে একাধিক ইতিবাচক পদক্ষেপ বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রাদেশিক অঞ্চলগুলিতে যথেষ্ট উৎসাহ বাড়িয়েছে।

সাংবিধানিক পদক্ষেপ ( Constitutional steps): ভারতের আঞ্চলিকতার হুমকি প্রতিরোধে সাংবিধানিকভাবেও বেশ কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর কয়েকটি হল-

(i) বাক স্বাধীনতা: বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান।

(ii) সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা: উপজাতি পরিচয় সংরক্ষণের জন্য পঞ্চম ও ষষ্ঠ তফসিল গঠন।

(iii) ক্ষমতার বিভাজন: কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে তফসিল 7 অনুযায়ী ক্ষমতার বিভাজন।

(iv) আঞ্চলিক ভাষার স্বীকৃতি: আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন অষ্টম তফসিল অনুযায়ী ভারতের সংবিধানে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাকে স্বীকৃতি প্রদান প্রভৃতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01