উন্নয়ন সংক্রান্ত সমস্যাবলী (Development related Issues)
উন্নয়নমূলক সমস্যাগুলিকে এককথায় "উন্নয়নের প্রতিকূলতা" বা "উন্নয়নগত বিলম্ব" রূপে উল্লেখ করা যায়, যেটি সামগ্রিকভাবেই প্রতিটি দেশের কাছেই সবচেয়ে বড়ো একটি চ্যালেঞ্জস্বরূপ। সাধারণত, উন্নয়নের বিভিন্ন পন্থাগুলির বাস্তবায়নে যে সমস্ত সমস্যাগুলি পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল-
• একটি দেশের উন্নয়নের প্রাথমিক বাধাটি তৈরি হয় মানুষের আয়কেন্দ্রিক প্রেক্ষাপটে। যে দেশে অর্থনীতির কাঠামো যত অনুন্নত হবে, সেখানে উৎপাদনশীল কাজে জনসাধারণের অংশগ্রহণ এবং তাদের মজুরি ক্রমশ তলানিতে এসে পৌঁছবে। এই অবস্থায় স্বল্প আয়ে নির্ভরশীল মানুষগুলি ক্রমশ পরিমাসীনায় উপনীত হবে। ফলে, তানের পক্ষে প্রতিদিনকার বেঁচে থাকার জন্য খাল এবং অনার মৌলিক উপকরণ সামগ্রী সংগ্রহ করাটাই সবচেয়ে কঠিন হিসেবে কি নিয়োগ (Low Investment in manufacturing sector) উৎপাদনীল হয়ে যে দেশের বিনিয়োগের পরিমাণ অতি স্বপ্ন, সেখানে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি-রপ্তানির অসামস্যাং যে সমস্তানন্ধু আয়, সঞ্চয়ের অভাব প্রস্তুতি বেশ কয়েকটি প্রতিকূল পরিস্থিতি উন্নয়নকে কখনোই কাঙ্ক্ষিত পর্যায় দয়ামায়াত দেয় না। যেমন, আমাদের দেশে কৃষি এবং শিল্পভিত্তিক অর্থনীতিতে বিনিয়োগ ঘাটতির পরিমাণ নগরে বধেখাই কম। যার ফলে, দেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি সঠিক সময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে না।
•অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা হল বেকার সমস্যা। একদিকে দেশের শিক্ষিত বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবক-যুবতীরা সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেও কর্মসংস্থানগত দিক থেকে শিময় পড়ছে, অনামিকে বেকারত্বের অতিরিন্ত সমস্যা তাদেরকে অনুৎপাদনশীল সম্পদ হিসেবেই পরিগণিত করছে। দীর্ঘয়ান বজায় থাকা এই পরিস্থিতি দেশে পরোক্ষভাবে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে উন্নয়ন অর্থনীতিকেও ক্রমশ ভার করে তুলছে।
• সার্বিক উৎপাদন বা সম্পদের প্রক্রিয়াকরণ উৎপাদিত দ্রব্যসামগ্রী বা পরিসেবার যথাযথ বন্টন এমনকি ইতিবাচক বিভিন্ন সিন্ধান্তগুলিকে বাস্তবায়িত করয়ে ৮৯ মানবসম্পদের কার্যকারিতা অত্যন্ত অপরিহার্য। কিন্তু, মানবসম্পদের অদক্ষতার কারাস বিশ্বের একাধিক দেশ তানো পূর্ণ শক্তি, সামর্থ্য, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে সক্ষম হয় না। এই ধরনের অদক্ষতা যত দিন যায় ক্রমেই এগট বোঝাস্বরূপ হয়ে উঠে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির উন্নয়নকে অনেকাংশেই ব্যাহত করে তোলে।
• বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামোগত অবস্থাগুলির সাথে উন্নয়নের প্রেক্ষাপটটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাধারণত একট দেশকে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার শিল্প, পরিবহণ, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তিগত সমস্ত ধরনের অবকাঠামোগুলিই যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু, পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলি ছাড়া বিশ্বের বেশিরভাগ যেস এই ধরনের ব্যবস্থা অপ্রতুল। বিশ্বায়নের যুগে এই ধরনের অনুয়ত অবকাঠামো এবং প্রথাগত উৎপাদন কৌশল বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতায় সংশ্লিন্ট দেশগুলির একাধিক সুযোগ কেড়ে নেয়। তাই, একটি দেশ সম্পদশালী বা বিশুদ উৎপাদনক্ষমতার অধিকারী হয়েও শুধুমাত্র সহায়তামূলক সুযোগের অভাবের কারণেই উন্নয়নে মনেন্ট পিছিয়ে থকে।
• উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলির পরিচালনাগত ক্ষেত্রী পৃথিবীর প্রায় সমস্ত দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু রাজনৈতিক এই পরিমণ্ডলটি সবসময় উত্থান-পতন বা অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্য দিয়ে চলে, তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই তার সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব উন্নয়নমূলক ক্ষেত্রটিতেও এসে পড়ে। বিশেষ করে, জনগণের বিভিন্ন সুযোগসুবিধা আদায় বা নতুন কোনও পরিকল্পনাকে ঘিরে রাজনৈতিক দলাদলি, অনাস্থা, হরতাল, অবরোধ, ভাঙচুর প্রভৃতির ফলে সরকারি সম্পল্লিনি রাজস্ব আদায়, উৎপাদন প্রণালী এবং বাণিজ্যের বিপুল ঘাটতিতে হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়ে যায়, য সরাসরি উন্নয়নের অন্তরায়রূপে বিবেচিত হয়। ভারত, বাংলাদেশ সহ বেশ কয়েকটি দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীল বাতাবরণ আর্থসামাজিক উন্নয়নের চাকাকে প্রায়শই মাঝপথে থামিয়ে দেয়।
• দুর্নীতি (Corruption) দুর্নীতি হল এমন একটি আর্থসামাজিক জরা যা ক্যানসারের মতো প্রতিটি দেশের সমৃদির কাঠামোকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়। বর্তমানে উন্নয়নমুখী অধিকাংশ কার্যক্রমগুলিতে স্বচ্ছতা যার জবাবদিহিতার কোনও ধরনের নৈতিকতা খুব একটা চোখে পড়ে না। যার ফলে, প্রতিনিয়ত মাথাচাড়া দিয়ে ওয় দুর্নীতির পরিস্থিতিতে মানুষের বিকাশমুখী প্রচেস্টাগুলি সম্পূর্ণভাবে মুখ লুকিয়ে যায়।
আইনশৃঙ্খলার অবনতি (Deterioration of law and order) উন্নয়নের জন্য একটি দেশের এইনশৃঙ্খলার ব্যবস্থাগুলি জনকল্যানের অনুকূলে থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু অনেক সময় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যাকান্ড, উন্ডারবাজি ঘুম, অপহরণ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার সংক্রান্ত দুর্নীতিগুলি উৎপাদনশীল যেকোনও প্রতিষ্ঠান এমনকি সেখানে কর্মরত মানুষের জনজীবনকে মারাত্মক বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। প্রতিকূল এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবের উন্নয়ন বজায় রাখা সম্ভব হয় না।
• উদ্যোজাদের অভাব (Lack of entrepreneurs) উন্নয়নমূলক পদক্ষেপগুলি গ্রহণের ক্ষেত্রে উদ্যোগপতিদের আগ্রহের যথেষ্ট অভাব থাকলে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলি খুব স্বাভাবিকভাবেই বাধাপ্রাপ্ত হয়। দুর্বল অর্থনীতির দেশগুলিতে বৈদেশিক বিনিয়োগ ও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বিদেশী উদ্যোক্তারাও অধিকাংশ সময় অনিচ্ছা শোষণ করে থাকে। যার ফলে, সেখানে সময়মতো উন্নয়ন পন্থাগুলিকে কার্যকর করা সম্ভবপর হচ্ছে না।
একটি সমস্যা হিসাবে "প্রথাগত উন্নয়ন"আমরা প্রায়শই সংকীর্ণ অর্থে যে প্রথাগত উন্নয়নের কথা বিবেচনা করি, সেই ধারণাটি নিজেই একটি গুরুত্বপূর্ণ অসা। কারণ, প্রচলিত অর্থনীতি শুধুমাত্র পুঁজিভিত্তিক শিল্প প্রযুক্তি নির্ভর উন্নয়নের কথাই বলে থাকে। এই ধরনের উন্নয়ন কাঠামো একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক স্তরে সমষ্টিগত বৈষম্যের বৃদ্ধি ঘটিয়ে সমাজ বিকৃতির পথ প্রশস্ত করে, একইভাবে শুধুমাত্র প্রবৃদিকে নজর দিতে গিয়ে পরিবেশগত সুরক্ষার বিষয়টিও এখানে যথেষ্ট ক্ষুন্ন হয়। আর তখনই প্রথাগত উন্নয়ন পন্থাগুলি বিশ্বব্যাপী তাত্ত্বিক সমস্যার এক্তিয়ার ও বুনিয়াদ হয়ে দাঁড়ায়। পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ রাষ্ট্রই তদের প্রথাগত উন্নয়নের ধারণা থেকে এখনও পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেনি। যার ফলে অর্থনৈতিক রেষারেষি, হস্পলাত আধিপত্য লিঙ্গা, রাজনৈতিক দলাদলি প্রভৃতি সার্বিক উন্নয়নকেই একটি বড়ো সমস্যার সম্মুখীন করেছে।
শুধু তাই নয়, উন্নয়নের নামে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উচ্চস্তরে ব্যবহার প্রকৃতির উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। যর অনিবার্য পরিণতিস্বরূপ জলবায়ু পরিবর্তন আজ মানবতার সামনে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে অন্যতম। এটি এমনই একটি সমস্যা যা জনসম্প্রদায়ভিত্তিক বিক্ষাংসী প্রভাব ফেলতে সক্ষম। এক্ষেত্রে, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এবং পুজিবাদী উন্নত দেশগুলির একমুখী শিল্পনীতি অপ্রতিরোধ্যভাবে দায়ী।
ভারত গত পাঁচ দশকে শিল্প উন্নয়নে যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করেছে এবং বিশ্বের দশম বৃহত্তম শিল্পোন্নত দেশ হিসাবে। অবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও, দেশের উন্নয়ন পরিস্থিতি সন্তোষজনক নয়। কারণ শিল্পভিত্তিক অধিক উৎপাদনকে গৃত্বে দিতে গিয়ে এখানকার পরিবেশগত সুরক্ষা ভীষণভাবে বিঘ্নিত। বর্তমানে, এদেশের বিপন্ন প্রজাতির 90 শতাংশই যনুষের প্রথাগত উন্নয়নমুখী ক্রিয়াকলাপের প্রভাবগত কারণে যথেষ্ট ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশে প্রাপ্ত সম্পদের পরিমাণগত যাঁতি দিনে দিনে তলানিতে পৌঁছচ্ছে। শিল্পজনিত দূষণের শিকারে ভারতের অধিকাংশ শহরাঞ্চল আজ অনিবার্যভাবেই জঅরিত। মানুষ এখনো তাদের প্রকৃতির অংশ মনে না করে প্রকৃতির প্রভুত্বকারীরূপে উপনীত করে চলেছে। তাই, সাক্ষি বিবেচনা করে বলা যায়, সভ্যতার যথার্থ প্রগতির ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রথাগত উন্নয়নের ধারণাটি কখনওই বাম না। এ প্রসঙ্গো Joseph E. Stiglitz তাই বলেছেন- "Development is about transforming the es of people, not just transforming economies
উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলিকে অতিক্রমের পথ (Overcoming Development challenges)
আয়নের সমস্যাকেন্দ্রিক চ্যালেঞ্জগুলিকে অতিক্রম করতে গিয়ে বিশ্বের উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলিতে যে হ্যাকটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে, তার মধ্যে কয়েকটি হল-
নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ (Adoption of new plan) উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি দেশ ঠিক কোন কোন মনায় জর্জরিত বা সমস্যার সম্ভাবনা রয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে যথাযথ তথা গ্রহণ করলেই উন্নয়নের বিকল্প সুযোগগুলি অরও স্পষ্ট হয়ে যায়। তাই অধিকাশে দেশ অতীত এবং বর্তমানের প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলির সমন্বয়ী অভিজ্ঞতাকে কাজে যদিয় নতুন নতুমা পারার কাবিজ্ঞাপকারে থাকে। বিশেষ করে, আঞ্চলিক সহযোগিতা, নারী-পুরুষের সাম্য, পল্লী নিয়ন, দবির বিনা পারিবেনা, এহন করে সার্বিক অংশগ্রহণ প্রকৃতি এক্ষেত্রে বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এখানে সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে 6.37 ধারণাচিত্রের মাধ্যমে আরও স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা হল।
বাহ্যিক অর্থনীতির পূর্ণ সদব্যবহার (full advantage দেশগুলি এখনো তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি। বাহ্যিক অর্থনীতির সাথে প্রাকৃতিক সম্পদ বা মানবসম্পদগুলির সঠিক ভারসাম্য যাতে বজায় থাকে, সেজন্য এই সকল দেশগুলি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিদেশী বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত এবং সাংগঠনিক সংক্রান্ত বিষয়গুলিতে যথেষ্ট মনোনিবেশ করে থাকে।
বাজেট প্রণয়ন (Budgeting) উন্নয়নের জন্য গৃহীত সমস্ত কার্যাবলী যাতে মাঝপথে থেমে না যায়, এমনকি পরিকল্পনায় নির্ধারিত কাজগুলিকে যাতে অতি দ্রুত সমাপ্ত করা যায়, সেজন্য জাতীয় আয়কেন্দ্রিক বিভিন্ন পথ পর্যালোচনা করে নির্দিষ্ট অর্থবর্ষভিত্তিক উন্নয়ন বাজেট প্রণয়ন ও তার সার্বিক বাস্তবায়ন একটি নৈতিক পদক্ষেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণ (Ensuring Food Security )বর্তমানে সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পিছিয়ে পড়া দেশগুলি তাদের খাদ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার বিষয়টিতেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে। অধিকাংশ দেশ মনে করে, প্রাথমিকভাবে কৃষি উন্নয়নই হল খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের অন্যতম প্রধান কৌশল। তার জন্য কৃষিবান্ধব বিভিন্ন যুগোপযোগী নীতি অনুযায়ী কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনের মাত্রাকে সর্বোচ্চ সীমায় নিয়ে যাওয়ার প্র চেষ্টা করে থাকে।
মানবসম্পদের দক্ষ পরিচালনা (Efficient management of human resources) সমস্ত মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে যাতে উপনীত করা যায়, সেই লক্ষ্যে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি, প্রশিক্ষণ এবং কর্ম-উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে মানব মূলধনকে সঠিকভাবে পরিচালনার বিষয়টিতে বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশে যথেষ্ট মনোনিবেশ করা হচ্ছে।
সঠিক জনসংখ্যা নীতি প্রণয়ন (Formulation of proper population policy)বর্ধিত জনসংখ্য যেহেতু উন্নয়নের সবচেয়ে বড়ো একটি সমস্যা, তাই বিশ্বের কোনও কোনও দেশ তাদের জনসংখ্যা নীতির পুনঃসংস্কারে ব্রতী হয়েছে। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশও এই লক্ষ্যে "দুই সন্তান নীতি"-কে বাধ্য হয়েই বর্তমানে অতান্ত গুরুত্বের সাথে দেখছে।
পরিবেশকে গুরুত্ব প্রদান (Giving importance to environment) বর্তমানে যে কোনও উন্নয়ন পরিবেশগত সুরক্ষায় ঠিক কি পরিমাণে প্রভাব ফেলছে, সেই বিষয়টিকেও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা কর হয়। এজন্য সরকারী এবং বেসরকারীভাবে বিভিন্ন টেকসই উন্নয়নের কৌশল দ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনীতির উচ্চতর অন্তর্ভুক্তির পথকে আরও সুনিশ্চিত করেছে।
উন্নয়নের বিকল্প পথ নির্বাচন (Choosing alternative paths for development) বিকর উন্নয়ন হল এমন একটি কর্মপন্থা যার মূল লক্ষ্য হল পরিকল্পনায় গৃহীত বিভিন্ন কৌশলগত দুর্বলতাগুলির অবসান ঘটিয়ে উন্নয়নকে বহুমুখী পথে পরিচালিত করা। তার জন্য বৈধ টেকসই উন্নয়ন নীতিকে বিশ্বের প্রায় সমস্ত দেশ যথাযথভাবে মেনে নিয়ে সেগুলিকে কার্যকর করেছে। উন্নয়নের বিকল্প একাধিক পন্থা কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে বর্তমানে উন্নয়নের ধারণাটাই পুরোপুরি বদলে গিয়েছে, যেমন-
• একক উন্নয়ন-সমষ্টিগত উন্নয়ন,
সাময়িক উন্নয়ন-দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন,
• নির্দিষ্ট অঞ্চলকেন্দ্রিক উন্নয়ন-আঞ্চলিক সীমা বহির্ভূত উন্নয়ন,
• রাষ্ট্রীয় পরিচালনায় উন্নয়ন-বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি এবং অংশীদারী প্রতিষ্ঠান মারফত উন্নয়ন,
• অর্থনৈতিক উন্নয়ন-আর্থসামাজিক, মানবকেন্দ্রিক এবং পরিবেশগত সামগ্রিক উন্নয়ন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উন্নয়নের কর্মযজ্ঞের সার্বিক এই পরিবর্তনমূলক ধারণাটি ভৌগোলিকদের কাছে "Paradigm shift of regional development policy" নামে পরিচিত।
সুশাসন এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন (Good governance and quality of life) আর্থিক প্রবৃদ্ধি, উৎপাদনের শৃঙ্খলা এবং বণ্টনগত ক্ষেত্রে সমতা বৃদ্ধি বা উন্নয়নের সার্বিক লক্ষ্যে দ্রুত সাফল্য আনতে রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আজ প্রতিটি দেশই যথেষ্ট বদ্ধপরিকর। তাছাড়া, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটাতে আঞ্চলিক পরিকাঠামোতেও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল।