welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

থর্নথওয়েটকৃত জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজন, 1957 (Thornthwaite, 1957)

থর্নথওয়েটকৃত জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজন, 1957 (Thornthwaite, 1957)


1955 সালের পর পুনরায় 1957 খ্রিস্টাব্দে থর্নথওয়েট এবং মাদার (Thornthwaite and Mather) Publication in Climatology' পত্রিকায় 'Instruction & Tables for computing potential Evapotranspiration and the water Balance' শীর্ষক প্রতিবেদনে বিস্তারিতভাবে সম্ভাব্য বাষ্পীয় প্রস্বেদন ও আর্দ্রতা নির্ণয়ের সূচকগুলিকে আলোচনা করেন এবং অন্যান্য বিভিন্ন সূচকগুলির কিছু অসম্পূর্ণতাকে পরিমার্জনা করে ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা করেন। এ প্রসঙ্গো এই প্রতিবেদনটিতে থর্নথওয়েট I-E সূচকটির দুটি সহগ ৭ ও-এ মান কোন কোন পরিস্থিতিতে কত হবে তা একটি সারণির মাধ্যমে উল্লেখ করেন।

 সমালোচনা (Criticism):

থর্নথওয়েটের জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগটি কোপেনের জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগের তুলনায় কম জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাঁর জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগের বাস্তবিক ব্যবহার এতটাই কম যে এর গুরুত্ব ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। তাঁর শ্রেণিবিভাগের

যে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি ধরা পড়েছে, সেগুলি হল-

1. জলবায়ুবিদ থর্নথওয়েট পৃথিবীর জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগ করেছেন ঠিকই, কিন্তু জলবায়ু অঞ্চলের সংখ্যা অসংখা হওয়ায় প্রতিটি শ্রেণিবিভাগকে স্মৃতিতে ধরে রেখা ও তার ব্যাখ্যা করা তুলনামূলকভাবে কষ্টকর। ঘর্নর্থওয়েট কৃত এই শ্রেণিবিভাজনের সংখ্যা 120টি, যা কোপেনের শ্রেণিবিভাজনের তুলনায় তিনগুণেরও বেশি।

2. তিনি জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগের জন্য অনেকগুলি জটিল গাণিতিক সূত্রের অবতারণা করেন। ফলে শ্রেণিবিভাজনটি অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।

3. ঘর্নথওয়েট তাঁর জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজনে স্বাভাবিক উদ্ভিদের গুরুত্বকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেননি, যেখানে জলবায়ুর সীমানা স্বাভাবিক উদ্ভিদের বিস্তারের সীমানার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে।

4. জলবায়ুবিদ থর্নথওয়েট তাঁর শ্রেণিবিভাগটিকে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ওপর নির্ভর করে তৈরি করেন। এবং উত্তর আমেরিকার জলবায়ু মানচিত্রে তা প্রদর্শিত করেন। এই শ্রেণিবিভাগটিকেই তিনি পৃথিবীর জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজনে ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ওপর যে সমস্ত চিহ্নগুলি ব্যবহার করেন পৃথিবীর ক্ষেত্রেও একই চিহ্ন ব্যবহার করেন। ফলে তাঁর এই শ্রেণিবিভাজনটি উত্তর আমেরিকার ক্ষেত্রে প্রামাণ্য হলেও পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষেত্রে বিশেষত ক্রান্তীয় ও উপমেরু অঞ্চলের ক্ষেত্রে ততটা সাফল্য অর্জন করেনি।

5. এনথওয়েট কোপেনের মাতো জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজনে বৃষ্টিপাত, উদ্ভুতা-এই দুটি উপাদান থেকেই উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য মৃত্তিকায় জলের ভারসামোর (Soil moisture balance) ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করেন। ফলে শ্রেণিবিভাগটি অধিকতর জটিল হয়ে পড়ে।

6. ওথিওয়েট প্রথম জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগের একটি উল্লেখযোগ্য ভিত্তি হিসেবে সম্ভাব্য বাষ্পীয় প্রস্বেদন (Po-tential evapo-transpiration) ধারণাটি নিয়ে আসেন। কিন্তু এই সম্ভাব্য বাষ্পীয় প্রস্বেদনের ওপর অধিক দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে গিয়ে তিনি মাসিক ও বার্ষিক তাপমাত্রা ও অধঃক্ষেপণের পরিমাণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেননি।

7. ঘর্নর্থওয়েট দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের 21টি কেন্দ্রের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে PE সূচক নির্ধারণ করেন এবং ওই সূচককে পৃথিবীর জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন যা শ্রেণিবিভাজনের ভিত্তিকেই দুর্বল করে দেয়।।

৪. থর্নথওয়েট-কৃত এই শ্রেণিবিভাজনটি উদ্ভিদবিদ, প্রাণীবিদ এবং ভৌগোলিকদের কাছে এর ব্যাবহারিক গুরুত্ব থাকলেও আবহবিদ ও জলবায়ুবিদদের কাছে এর গুরুত্ব অনেকটাই কম।

গুণাবলি (Merits)

খনথওয়েট-কৃত জলবায়ুর শ্রেণিবিভাজন বিভিন্নভাবে সমালোচিত হওয়া সত্ত্বেও এর বেশ কিছু গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। সেগুলি হল-

(i) ঘর্মথওয়েট-এর 1931 সালের শ্রেণিবিভাগ কোপেনকৃত শ্রেণিবিভাগের অনুরূপ। এই শ্রেণিবিভাগ পরিসংখ্যান ভিত্তিক ও জলবায়ুর শ্রেণিগুলি প্রতীক অক্ষর দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ফলে সুদীর্ঘ বর্ণনামূলক 5পদবাচ্যের ব্যবহার পরিহার করা সম্ভব হয়েছে।

(ii) কোপেনের মতো এই শ্রেণিবিভাগে জলবায়ু অঞ্চলের সীমারেখাগুলি কেবল তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত দ্বারা নির্দিষ্ট করা হয়নি। এক্ষেত্রে তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের কার্যকারিতা তত্ত্ব প্রয়োগ করা হয়েছে। বিভিন্ন তাপ। প্রদেশ ও আর্দ্রতা প্রদেশের সীমা সুনির্দিষ্ট সূত্র অনুসারে নির্ধারণ করা হয়েছে।

(iii) এই শ্রেণিবিভাগে প্রতীক অক্ষরের সংখ্যা কোপেনের তুলনায় কম। তাই প্রতীক অক্ষরগুলি মনে রাখা বেশি সহজ।

(iv) থর্নথওয়েটের 1931 সালের জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগ খুবই সরল হওয়ায় বহু ভৌগোলিক এর শ্রেণিবিভাগটিকে বিশেষ করে উত্তর আমেরিকার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01