শ্বেত বিপ্লব (White Revolution)
শ্বেত বিপ্লব কী?
শ্বেত বিপ্লব বলতে বোঝায়। দেশব্যাপী দুধ উৎপাদনে বিপুল বৃদ্ধি। ভারত সরকারের National Diary Development Board (NDDB) বা জাতীয় দুগ্ধ উন্নয়ন পর্ষদ অপারেশন ড (Operation Flood) নামে এক কর্মসূচি গ্রহণ করে যা দেশব্যাপী দুধ উৎপাদনে বিপুল বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রাখে। দুখ উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত সকলকে নিয়ে এই কর্মসূচি রূপায়ণে প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশে এক দশকের মধ্যেই দুগ্ধ উৎপাদন বিপুল বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ভারত পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দুখ উৎপাদক দেশে পরিণত হয়েছে।
ভার্গিস কুরিয়েন (Dr. Verghese Kurien) শ্বেত বিপ্লবের জনক এবং Milk Man of India নামে পরিচিত।দুখ্য বিপ্লব সারা দেশব্যাপী দুগ্ধ উৎপাদক এবং উৎপাদন কেন্দ্রগুলির মধ্যে যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা এমনভাবে গড়ে তোলে যে দেশের সাত শতাধিক শহর ও নগরকে তা যুক্ত করে এবং ঋতুভেদে আঞ্চলিক দুগ্ধ উৎপাদনের সঙ্গো যোগানের একটি ভারসাম্য তৈরি করে। এর ফলে একস্থানের উদ্বৃত্ত দুখ অপর স্থানে প্রেরণের পরিকাঠামো গড়ে ওঠায় প্রেরক ও প্রাপক উভয় অঞ্চলই উপকৃত হয়। প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হয়। ফলে যে সাফল্য দুগ্ধ উৎপাদনে আসে তা দুখ বিপ্লব নামে জনপ্রিয় হয়।
অপারেশন ফ্লাড: দেশব্যাপী দুগ্ধ উৎপাদনে বিপুল বৃদ্ধির লক্ষ্য এক কর্মসূচির নাম অপারেশন ফ্লাড (Operation Flood)। ১৯৭০ দশকে অপারেশন ফ্লাড-১ শুরু হয় দুগ্ধ উৎপাদন ও বিপণনের জন্য দেশের মহানগরীগুলির সংগঠিত দুগ্ধ সংস্থাগুলিকে নিয়ে। এই মহানগরীরগুলির পশ্চাৎভূমি অঞ্চলে দুগ্ধ উৎপাদনে উৎসাহ তৈরি হয়। ফলে গ্রামাঞ্চলের দুখ ব্যাপারীগণ দুগ্ধ বিপণনের সহজ সুযোগ পান। গুজরাটের আনন্দ (Amul Dairy) দুগ্ধ বিপ্লবে অগ্রণী ভূমিকা নেয়।
ভোরবেলান ব্লাড-২ আশির দশকে বড়ো বড়ো নগরীগুদির থেকে অন্যান্য শহরে মুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং লক্ষ লক্ষ দুখ উৎপাদককে ওই বৈপ্লবিক কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দুগ্ধ উৎপাদন বিপুল বৃদ্ধি পায়।
তৃতীয় পর্যায়ে নকাই-এর দশকে সমবায় ও পরিকাঠামো ব্যবস্থা শক্তিশালী করার দিকে লক্ষ্য দেওয়া হয় এবং বাজার সম্প্রসারণের কর্মসূচি নেওয়া হয়। পশুর স্বাস্থ্য রক্ষার্থে পশু স্বাস্থ্য পরিষেবা গড়ে তোলার উপর জোর দেওয়া হয়। এর ফলে ২০১১-১২ সালে ভারত পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দুগ্ধ উৎপাদক দেশে পরিণত হয়েছে। দুগ্ধ বিপ্লবের শুরুতে ২ কোটি মেট্রিক টন দুখ থেকে বর্তমানে এই বিপ্লবের সুফল হিসাবে ১০ কোটি মেট্রিক মিলন দুখ উৎপাদন হয়।