welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

পৌরবসতি বা শহরবসতি[Urban Settlement]

পৌরবসতি বা শহরবসতি[Urban Settlement]



 ভূমিকা (Introduction):

গ্রামীণ বসতি অপেক্ষা শহর বসতিই কোনো অঞ্চলের বা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক নির্দেশ করে। গ্রামীণ ও শহর বসতির মধ্যে আকারে ও আয়তনগত দিক থেকে বিশেষ পার্থক্য থাকে না। এদের মধ্যে মূল পার্থক্য হল, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ প্রাথমিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপে নিযুক্ত থাকে। কিন্তু শহরে বেশির ভাগ অধিবাসী তৃতীয় এবং চতুর্থ স্তরের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নিযুক্ত থাকে, যেমন- ব্যাবসাবাণিজ্য, শিল্পকর্ম ইত্যাদি।



কৃষি ও শিল্পে উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নগরায়ণ (Urbanization) ঘটেছে। ফলে গ্রামীণ বসতি শহরে এবং শহর নগরে রূপান্তরিত হচ্ছে। এমনকি বনভূমি কেটে পরিষ্কার করে সেখানে নগরের পত্তন ঘটছে।



পৌর বসতির সংজ্ঞা (Definition of Urban Settlement):

'পৌর' কথাটির ইংরেজি প্রতিশব্দ 'Urban', ল্যাটিন শব্দ 'Urbanas' থেকে উৎপত্তি ঘটেছে। এটি সম্পূর্ণভাবে গ্রামীণ বসতির বিপরীত বৈশিষ্ট্য বহন করে। সাধারণত দু-একটি সংজ্ঞার মাধ্যমে পৌরবসতির সঠিক স্বরূপ নির্ধারণ করা অসম্ভব। সেজন্য পৌর বসতির সঠিক এবং সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা দেওয়া খুবই অসুবিধাজনক।



জনগণনাভিত্তিক সংজ্ঞা (Census Definition):

ভারতীয় আদমশুমার অনুসারে কোনো এলাকা পৌর বসতির অন্তর্ভুক্ত হতে গেলে তার নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন।



(i) পৌর বসতির ন্যূনতম জনসংখ্যা 5000 জন হবে।

(ii) প্রতিবর্গকিমিতে জনঘনত্ব 386 জন হতে হবে।

(iii) অধিবাসীদের 75% বা তার বেশি গৌণ প্রগৌণ ও অন্যান্য কাজে নিযুক্ত হতে হবে।

(iv) পৌরবসতি মাত্রই কোনো পৌর প্রতিষ্ঠান, নিগম, উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, টাউনশিপ, কিংবা সেনাআবাস(Contonment)

 অঞ্চলের অন্তর্গত হবে।



নগর বসতির উদ্ভব (Origin of Urban Settlement):

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে শহর কিংবা নগরের উৎপত্তির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, গ্রামীণ বসতির আয়তন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি তার বিবর্তন এবং আর্থসামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কারণে শহরের উদ্ভব ঘটে। শহর বসতির উদ্ভবের ক্ষেত্রে কোন্ নিয়ন্ত্রকটি অধিক কার্যকর হয়েছিল তা বিশ্লেষণ করা অত্যন্ত কঠিন বিষয়। কিন্তু বেশির ভাগ শহর ভৌগোলিকদের (Urban Geographer) এবং পৌর ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নতিই নগরের উদ্ভবের প্রধান কারণ।

নগরায়ণের মধ্য দিয়ে শহর/নগর বসতি গড়ে ওঠে। নগরায়ণ হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো গ্রামীণ এলাকা ধীরে ধীরে শহরের বৈশিষ্ট্যগুলি আহরণ করে এবং অধিবাসীরা কৃষিকাজের পরিবর্তে অন্যান্য শহরে পেশায় নিযুক্ত হন। নগরায়ণ প্রক্রিয়াতে পরিব্রাজন এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজবিজ্ঞনী লুইস মামফোর্ড নগর বসতির উৎপত্তিকে বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করেছেন। এগুলি হল-

প্রথম পর্যায় ইয়োপলিস (Eopolis): এই পর্যায়কে নগরসভ্যতার সূচনা বলা হয়। এই সময় গ্রামীণ সমাজব্যবস্থার কোথাও কোথাও ভাঙন ধরে এবং শহর বসতির সূচনা ঘটে। কৃষিকাজ এবং খনিকে কেন্দ্র করে এই জাতীয় পৌর বসতির উদ্ভব ঘটে।

দ্বিতীয় পর্যায় পলিস (Polis): মামফোর্ডের মতে ইয়োপলিস অপেক্ষা বড়ো পৌর বসতিকে পলিস বলা হয়। এই পর্যায়ে হস্তশিল্প, বিজ্ঞাননির্ভর প্রতিষ্ঠানের প্রভাব লক্ষ করা যায় শহর বসতিগুলিতে। অবশ্য গ্রামীণ সমাজের ধর্মীয় আচরণ এবং পরিবার পতি শহর বসতিগুলিতে বিদ্যমান থাকে। বাজারকেন্দ্রিক পৌর বসতি কিংবা খুচরো বিক্রয়কেন্দ্রের ওপর নির্ভর করে পলিস গড়ে ওঠে।

মেট্রোপলিস (Metropolis)মহানগর এই পর্যায়ে নগর সভ্যতার বিকাশ পূর্ণতা লাভ করে। বিভিন্ন অঞ্চলের বাণিজ্যিক যোগাযোগ এবং সাংস্কৃতিক ভাব বিনিময় বৃদ্ধি পায়। শ্রমবিভাজন অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে প্রকাশ পায়। মহানগরগুলিতে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের সুযোগ এবং বৈচিত্রা অনেক বেশি বলে উদ্বাস্তুরা এর প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে। এ ছাড়া মহানগর গুলিতে অধিবাসীদের খাদ্য সরবরাহের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হয়। মেট্রোপলিসের লোকসংখ্যা হয়।

10 লক্ষ বা তার বেশি। 2011 জনগণনা অনুসারে ভারতে 39টি মহানগর আছে। এপ্রসঙ্গে কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, চেন্নাই ইত্যাদি মেট্রোপলিসের উল্লেখ করা যায়।

চতুর্থ পর্যায় মেগালোপলিস (Megalopois) বা সুবৃহৎনগর: মহানগরগুলির সীমানা অধিক বিস্তৃত হয়ে পড়ে। সাংস্কৃতিক পরিবেশ উচ্চমানের হয়। শিক্ষা, স্থাপত্য, শিল্পকলা এবং আমোদ-প্রমোদের গুণমান বৃদ্ধি পায়। নগরগুলি প্রকৃতপক্ষে জাতীয় নগরের পর্যায়ে উন্নীত হয়। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলভাগে নিউইয়র্ক, বোস্টন, ফিলাডেলফিয়া এবং মরিসভিল এই চারটি মেট্রোপলিস এবং সংলগ্ন জনপদগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মেগালোপলিস সৃষ্টি করেছে।

পঞ্চম পর্যায়- টিরানোপলিস (Tyranopolis): এই পর্যায়ে নাগরিক জীবন সামাজিক এবং রাজনৈতিক জটিলতার শিকার হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক নানাবিধ নিয়ন্ত্রণ দ্বারা নগর জীবন নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে। নগরের অধিবাসীরা ক্রমশ নগরের সীমান্তবর্তী এলাকায় সরে যায়।

ষষ্ঠ পর্যায়- নেক্রোপলিস (Nekropolis): ভুয়া নগরী এই পর্যায়কে নগর সভ্যতার বিনাশ এবংপুনরায় গ্রামীণ সভ্যতার উত্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়

নগরের কায়িক গঠন (Urban Morphology):

কোনো শহর কিংবা নগরের গঠন বলতে বোঝায় তার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, বাণিজ্য এলাকা, শিল্পকেন্দ্রে প্রভৃতির মিলিত রূপ। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নগরায়ণের ফলে শহরবসতির অনুভূমিক বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে উল্লম্ব বিস্তারও ঘটছে। কারণ বহুতল বাড়ির সংখ্যা বর্তমানে দ্রুত হারে বাড়ছে।

নগরের কায়িক গঠন সম্পর্কে সুপ্রাচীনকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গবেষণা চলছে। এ প্রসঙ্গে আমেরিকা, গ্রেট ব্রিটেন প্রভৃতি দেশের শহরের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে উল্লেখ করা যায়।

শহরের কায়িকগঠন সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞানী এবং নগরবিজ্ঞানীদের মধ্যে প্রচলিত মতবাদগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল: (৫) এককেন্দ্রিক মতবাদ (Concentric Theory); (b) বৃত্তকলা মতবাদ (Sector Theory)

এবং (c) বহুকেন্দ্রিক মতবাদ (Multiple Nuclei Theory)

2.6. এককেন্দ্রিক মতবাদ (Concentric Theory):

1923 খ্রিঃ সমাজবিজ্ঞানী E.W. Burges আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের চিকাগো শহরের অভ্যন্তরীণ গঠনকাঠামো বিশ্লেষণ করেন। তিনি গবেষণাকালে এখানে নগরের বৃদ্ধিও তার গঠন বৈশিষ্ট্য অনুসরণ করে 'Concentric Zone Model' বা 'Concentric Zone Hypothesis'-এর উল্লেখ করেন।

তিনি শিকাগো শহরের গঠনের ক্ষেত্রে মনে করেন যে, নির্দিষ্ট একটি কেন্দ্র থেকে শহরটি তার চারপাশে বলয়ের আকারে বিস্তৃত হয়েছে। তাই শিকাগো শহরের গঠন কাঠামোকে তিনি পাঁচটি বলয়ে (zone) ভাগ করেছেন। এই বলয়গুলি হল-

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা (Central Business District): নগরের একেবারে কেন্দ্রশালে কেন্দ্রীয় এ এলাকা অবস্থান করে। এটি একেবারে প্রথম ও সবচেয়ে ভিতরের বলয়। এই অঞ্চলটিকে লুপ এ নামেও অভিহিত করা হয়।

এখানে ব্যাবসাবাণিজ্য, বড়ো বড়ো দোকান, আর্থিক সংস্থাগুলির প্রধান দপ্তর, যেমন-। এর বিমা, প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান, অভিজাত হো বিভিন্ন ধরনের হোটেল, বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক এর থিয়েটার হল প্রভৃতি গড়ে ওঠে। এই অঞ্চলকে বলা হয় শহরের মূলকেন্দ্র 'heart of the city'। এনে জমির দাম খুব বেশি এবং চাহিদাও খুব বেশি, ফলে জমির ওপর তৈরি বাড়িভাড়া খুব বেশি হয়। কারণে ঘরবাড়িগুলি খুব কাছাকাছি অবস্থান করে এবং এগুলি বহুতল বিশিষ্ট হয়।

(b) দ্বিতীয় বলয় (Transition): কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বলয় বা এলাকাকে ঘিরে দ্বিতীয় বলয় বা পরিবর্তনশীল (Transition Zone) অবস্থিত। কেন্দ্রীয় বলয়ের কিছু কিছু কাজের প্রভাব এখানে থাকে। বাণিজ্যিক নিয়া ক্রমশ পেতে পেতে আবাসিক ধারার সূচনা হয়।

(c) শ্রমজীবী এলাকা বলয় (Zone of working men): শিল্প কলকারখানায় যে সমস্ত শ্রমিক কাজ কেন এবং প্রথম দুটি বলয়ে কর্মরত শ্রমজীবীদের নিয়ে এই বলয় গঠিত। বিভিন্ন শিল্প কলকারখানাও এই য়ে অবস্থান করে।

(d) উন্নত আবাসিক এলাকা (Zone of better Residence): এই অঞ্চলটি প্রকৃতপক্ষে কিছু মধ্যবিত্ত উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়ের লোকের আবাসস্থল। এলাকাটি নগরের শিল্প এলাকা এবং কেন্দ্রীয় বাণিজ্য অঞ্চলের তো উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা দ্বারা যুক্ত থাকে। বিভিন্ন চাকুরীজীবী সম্প্রদায়; যেমন- ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কিল, ব্যবসায়ী মানুষ এখানে বসবাস করেন।

(৫) দৈনিক যাত্রী বলয় (Commuter Zone): E.W. Burges-এর এককেন্দ্রিক বলয় তত্ত্বে পঞ্চম লয়টি হল দৈনিক যাত্রী বলয় (Commuter Zonc)। এই বলয়ে প্রধানত মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত শ্রেণির অধিবাসীগণ বসবাস করেন। এই অঞ্চল থেকে প্রায় 30 মিনিট থেকে 60 মিনিট সময় যাতায়াতের মাধ্যমে যন্ত্রীগণ কেন্দ্রীয় বাণিজ্য অঞ্চলে পৌঁছাতে সক্ষম হন।

এ ছাড়া উন্নত আবাসিক এলাকা এবং দৈনিক যাত্রী বলয়ের মাঝে সবুজ বলয় (Green belt) অবস্থিত। • বার্জেস-এর মডেল বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি যে-

(1) কম উপার্জন বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ কর্মস্থলের কাছাকাছি বসবাস করেন।

(ii) মধ্যবিত্ত সম্প্রদায় কর্মস্থল থেকে কিছুটা দূরে বসবাস করেন। এঁরা খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে কর্মস্থলে পৌঁছে যান।

(iii) যেসব ব্যক্তি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত তাঁরা শহরের কোলাহলপূর্ণ এলাকায় এবং অস্বাস্থ্যকর এলাকায় বসবাস করতে বাধ্য হন।

(iv) শহরের মূল কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে দারিদ্রের হার, বিদেশি ব্যক্তিদের সংখ্যা, অপরাধীদের সংখ্যা, নারী-পুরুষের অনুপাত ক্রমশ কমতে দেখা যায়।

সমালোচনা: বার্জেস-এর মডেলের সমর্থন আমরা পাশ্চাত্য দেশের নগর কাঠামোয় আমরা পাই। কিন্তু এর মধ্যে বেশ কিছু ত্রুটি আমরা খুঁজে পাই।

প্রথমত, পৌর এলাকার গঠন এবং স্থানগত ক্ষেত্রে বার্জেস শিল্পের জন্য গৃহীত জমি এবং রেলপথের জন্য গৃহীত জমির ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেননি।

দ্বিতীয়ত, ভূমির উচ্চমূল্য এবং নগর কাঠামো গঠনে পরিবহণের গুরত্ব আরোপিত হয়নি।

তৃতীয়ত, ভূমিরূপের বন্ধুরতা বলয় বিন্যাস কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে সে বিষযেও তিনি তাঁর তত্ত্বে আলোকপাত করেননি।

আদিত, বার্জেস-এর তত্ত্বটি বর্তমানের নগর কাঠামোর সঙ্গে প্রায় মিল নেই। কারণ নগারের উল্লম্ব বিস্তারের ওপর তিনি আলোকপাত করেননি। ফলে বর্তমানে সিঙ্গাপুর, হংকং এসব নগরে অসংখ্য বহুতল বিশিষ্ট ঘরবাড়ি, শপিং মল, কমপ্লেক্স সমন্বিত নগর কাঠামোর সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না।

তাই আমরা বলতে পারি, বার্জেসের নগর কাঠামো তত্ত্বটি প্রাচীনকালের পাশ্চাত্য সভ্যতার মহানগরের গঠন কাঠামোর সঙ্গে মিললেও, বর্তমানের নগর কাঠামো বিশ্লেষণে এই তত্ত্বের প্রয়োগ ঘটানো সম্ভব নয়।

বৃত্তকলা মতবাদ (Sector Theory):

নগরের কাঠামো বিশ্লেষণ এককেন্দ্রিক মতবাদের সঙ্গে বাস্তব জগতের এতো অমিল হয়েছে যে, পরবর্তীকালে H. Hoyt এবং M. R. Davic 1939 খ্রিস্টাব্দে 'বৃত্তকলা মতবাদের' উপস্থাপনা করেন। এই তত্ত্বের মূল বক্তব্য হল এই যে, শহরের ভূমি ব্যবহারের বিন্যাস বিভিন্ন দিকে সড়কপথের বিস্তার ওপর নির্ভরশীল। শহরের কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে এসব পথগুলি বিস্তৃত হয়।

Hoyt নগরকে একটি বৃত্তরূপে কল্পনা করেছেন। কেন্দ্র থেকে প্রসারিত বৃত্ত দ্বারা এই নগর অসংখ্য বৃত্তাকলায় বিভক্ত হয়ে যায়। জমির ব্যবহারিক মূল্য শহরের ভূমির ব্যবহারে বিন্যাসকে প্রভাবিত করে।

Hoyt-এর মতে, শহরের উচ্চভাড়াসম্পন্ন বাসগৃহ এলাকা একপ্রান্ত থেকে (শহরের অভ্যন্তর থেকে) বাইরের দিকে বিস্তৃত হয়। Hoyt আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নগর কাঠামো বিশ্লেষণ করে দেখেন যে, যদি কোনো বৃত্তকলাতে প্রথমে উচ্চভাড়া বিশিষ্ট বসবাসের অঞ্চল পড়ে, তবে পরবর্তীকালে তৈরি ওই বাসগৃহ ওই বৃত্তকলা ধরে নগরের বাইরের দিকে বিস্তৃত হতে থাকবে। ছয়টি নগরের উচ্চভাড়া বিশিষ্ট অঞ্চলের অবস্থান উল্লেখ করেন। হাইটের এই মতবাদে নগরের বিস্তারকে কীলক সদৃশ (Wedge like) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। উচ্চভাড়া বিশিষ্ট বসতি অঞ্চলগুলি নগরের প্রধান প্রধান পথ ধরে বিস্তৃত হয়।

এর প্রমাণ হিসেবে হোমার হাইট বিভিন্ন বছরে প্রধান পরিবহন বৃত্তকলা মতবাদে আমেরিকান নগরগুলির অবস্থান ও বিস্তারের ক্ষেত্রে দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া যায়। যথা- অট্টালিকার ভাড়া (House Rent) এবং অট্টালিকার বয়স (Age of the buildings) (

1. অট্টালিকার ভাড়া: বৃত্তকলা মডেলে দেখা যায় যে, উচ্চভাড়া এলাকাগুলি নগরের বৃদ্ধি ও উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্র থেকে বাইরের দিকে বৃত্তকলা পথে নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করে গড়ে ওঠে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যে, নগর কোনো একটি অংশে নিম্নভাড়া আবাসিক এলাকা প্রথম অবস্থায় গড়ে ওঠে তখন বেশ কিছু এলাকা জুড়ে এর প্রবণতা লক্ষণীয়। এমনকি নগরের বৃদ্ধিও সম্প্রসারণ ঘটতে থাকলেও বেশ কিছু এলাকা নিম্নভাড়া বিশিষ্ট এলাকারূপে থেকে যায়।

আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নগরের গড় ব্লকভিত্তিক আবাসিক ভাড়া বিশ্লেষণ করে হাইট নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তে আসেন।

(i) নগরের সর্বোচ্চ ভাড়াযুক্ত বসতি এলাকা বৃত্তকলায় অবস্থিত বা নগরের একপাশে অবস্থিত।

(ii) উচ্চভাড়া বিশিষ্ট এলাকাগুলি কখনো কখনো একপ্রান্তে আবার কখনও কেন্দ্র থেকে ব্যাসার্ধের দিকে গড়ে ওঠে।

(iii) মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের ভাড়া এলাকাগুলি উচ্চভাড়া এলাকার দুপাশে বিস্তৃত হয়।

(iv) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত নিম্নভাড়া এলাকা উচ্চভাড়া এলাকার বিপরীত দিকে গড়ে ওঠেছে।

2. অট্টালিকার বয়স : যদিও উচ্চশ্রেণির আবাসিক এলাকাগুলি বৃত্তকলা বরাবর প্রসারিত হয়ে থাকে, তা সত্ত্বেও এটা লক্ষ করা যায় যে, একই বৃত্তকলায় অবস্থিত অট্টালিকার বয়স সমকেন্দ্রিক হয়। অর্থাৎ, এ থেকে যত প্রান্ত এলাকায় যাওয়া যায় অট্টালিকার বয়স তত কমতে থাকে। একই বৃত্তকলায় অট্টালিকার বস্তরে স্তরে বিন্যস্ত থাকে। হাইট যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় তিরিশটি নগরের ওপরে গবেষণা চালিয়ে উপলব্ধি এরা যে, নগরগুলি সমকেন্দ্রিক ও বৃত্তকলা উভয় তত্ত্বের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শিত হয়।

হাইটের বৃত্তকলা মডেল নগর বসতির বিন্যাস ও বণ্টনে দূরত্ব এবং Accessibility প্রভাব, ভূমি ভাড়ার এতমা এবং অন্যান্য বিষয়কে বিবেচনা করা হয়। তাই এই মডেলটি অধিকতর বাস্তবধর্মী এবং কার্যকর। পি.(P. Man) এককেন্দ্রিক এবং বৃত্তকণা মতবাদের উপাদানগুলিকে একত্র করার চেষ্টা করেছেন। তিনি ব্রিটিশ এরের গঠন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি তাঁর মডেলে চারটি বৃত্তকলা A, B, C এবং D অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ইনের মতে, বিভিন্ন বৃত্তকলায় এককেন্দ্রিক বিকাশ বলয় 1, 2, 3, 4 পাশাপাশি অবস্থান করতে পারে।

এর বহুকেন্দ্রিক মতবাদ (The Mutiple Nuclei Theory):

নগরের কায়িক গঠনের ব্যাখ্যায় এককেন্দ্রিক এবং বৃত্তকলা মতবাদ অত্যন্ত কার্যকরী মতবাদ হিসেবে ও উঠেছিল। কিন্তু নগরের জমির ব্যবহার এত জটিল ধরনের যে, পরবর্তীকালে আরও বিভিন্ন সমস্যা কে অন্য ধরনের মতবাদ গড়ে ওঠে। 1945 খ্রিঃ C. D. Harris এবং E. L. Ullman বহুকেন্দ্রিক এবাদ (Multiple Nucli Theroy) উপস্থাপন করেন।

বড়ো বড়ো নগরে ভূমি ব্যবহারের ধরন নির্দিষ্ট একটি বলয়ের আকারে গড়ে না উঠে এক-একটি এলে বেশ কয়েকটি বলয়ের আকারে গড়ে ওঠে। এই তত্ত্বে নগরের অভ্যন্তরীণ গঠনের সঙ্গে সঙ্গে হরের ভূমির ব্যবহারের ধরনেরও উল্লেখ দেখা যায়।

এই তত্ত্বে ৭টি কার্যভিত্তিক অঞ্চলের ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যথা-

(i) কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা (C.B.D)।

(ii) পাইকারী ও হালকা শিল্প এলাকা (Wholesaling and Light Manufacturing Zone) |

iii) নিম্ন শ্রেণির আবাসিক এলাকা (Low Class Residential Zone) | (

(iv) মধ্যবিত্ত শ্রেণির আবাসিক এলাকা (Middle Class Residential Zone)।

(v) উচ্চশ্রেণির আবাসিক এলাকা (High Class Residential Zone)।

(vi) ভারী শিল্প এলাকা (Heavy Industrial Zone)।

vii) প্রান্তীয় বাণিজ্য এলাকা (Outlying business area) |

( (viii) প্রান্তীয় আবাসিক এলাকা (Outlying Residential Area)।

(ix) প্রান্তীয় শিল্প এলাকা (Outlying Industrial Area

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা (Central Business District or C.B.D): Central Business District is the heart of the city and it is the Central Zone of Commercial activities, কোনো নগরের বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা। জাতীয় সড়ক কিংবা প্রধান রাজপথের সংযোগ খালে CB.D গড়ে ওঠে। জমির দাম ও খাজনা এই অঞ্চলে বেশি হয়। এলাকার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। তবে এর আকার আয়তাকার বৃত্তাকার কিংবা অর্ধবৃত্তাকারের, মতো হয়। বিবাদি বাগ বা ডালহোসী স্কোয়ার হল কলকাতা মহানগরীর C.B.D এলাকা বা অঞ্চল।

(ii) পাইকারী ও হালকা শিল্প এলাকা (Wholesaling and Light Manufacturing Zone):

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকার নিকটবর্তী একটি অঞ্চল থাকে। এখানে দূরপাল্লার বাস টার্মিনাল, রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পাইকারী ও হালকা শিল্প এলাকা বা কলকারখানা লক্ষ করা যায়। বড়ো বড়ো গুদাম, পরিবহণ দপ্তর ইত্যাদি অবস্থান করে।

(iii) নিম্নশ্রেণির আবাসিক এলাকা (Low Class Residential Zone): প্রধানত শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে নিম্নশ্রেণির আবাসিক এলাকা তৈরি হয়েছে। নগরের বিভিন্ন কলকারখানায় এরা কাজ করে। পাইকারী এবং হালকা শিল্প এলাকার নিকটবর্তী জায়গায় এই এলাকা অবস্থান করছে।

(iv) মধ্যবিত্ত শ্রেণির আবাসিক এলাকা (Middle Class Residential Houses Area): কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা এবং শহরতলীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে শিল্প-কলকারখানা থেকে দূরে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন।

(v) উচ্চশ্রেণির আবাসিক এলাকা (Higher Class Residential Area): নগর-কেন্দ্রের ভিড়, হট্টগোল, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে বেশ দূরে উন্মুক্ত ও দূষণ মুক্ত পরিবেশে উচ্চশ্রেণির আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠে। সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিগণ এই অঞ্চলে বসবাস করেন।

(vi) ভারী শিল্প এলাকা (Heavy Industrial Area): নগরের বাইরের বলয়ে রেলস্টেশন, নদী, কিংবা সমুদ্র বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ভারী শিল্প গড়ে ওঠে।

(vii) প্রান্তীয় বাণিজ্য এলাকা (Outlying Business Area): যেসব জায়গায় উচ্চশ্রেণির আবসিক অঞ্চল আছে তার আশেপাশে প্রান্তীয় বাণিজ্য এলাকা গড়ে ওঠে। এখানে বসবাসকারী উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়ের ক্রেতাদের ওপর নির্ভর করে বাণিজ্যিক কাজকর্ম গড়ে ওঠে। এমনকি নানা ধরনের বিনোদনমূলক ব্যবস্থা এখানে থাকে।

(viii) প্রান্তীয় আবাসিক এলাকা (Outlying Residential Area): নগরের সীমানায় গ্রামীণ পরিবেশে আবাসিক শহরতলী গড়ে ওঠে। এখানে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত উভয় সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন।

(ix) প্রান্তীয় শিল্প এলাকা (Outlying Industrial Area): নগরের সীমানায় একেবারে বাইরের দিকে ভারী শিল্প এলাকার সঙ্গে প্রান্তীয় শিল্প এলাকা গড়ে ওঠে।

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা (Central Business District or C.B.D): Central Business District is the heart of the city and it is the Central Zone of Commercial activities, কোনো নগরের বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা। জাতীয় সড়ক কিংবা প্রধান রাজপথের সংযোগ খালে CB.D গড়ে ওঠে। জমির দাম ও খাজনা এই অঞ্চলে বেশি হয়। এলাকার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। তবে এর আকার আয়তাকার বৃত্তাকার কিংবা অর্ধবৃত্তাকারের, মতো হয়। বিবাদি বাগ বা ডালহোসী স্কোয়ার হল কলকাতা মহানগরীর C.B.D এলাকা বা অঞ্চল।

(ii) পাইকারী ও হালকা শিল্প এলাকা (Wholesaling and Light Manufacturing Zone):

কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকার নিকটবর্তী একটি অঞ্চল থাকে। এখানে দূরপাল্লার বাস টার্মিনাল, রেলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং পাইকারী ও হালকা শিল্প এলাকা বা কলকারখানা লক্ষ করা যায়। বড়ো বড়ো গুদাম, পরিবহণ দপ্তর ইত্যাদি অবস্থান করে।

(iii) নিম্নশ্রেণির আবাসিক এলাকা (Low Class Residential Zone): প্রধানত শ্রমজীবী মানুষদের নিয়ে নিম্নশ্রেণির আবাসিক এলাকা তৈরি হয়েছে। নগরের বিভিন্ন কলকারখানায় এরা কাজ করে। পাইকারী এবং হালকা শিল্প এলাকার নিকটবর্তী জায়গায় এই এলাকা অবস্থান করছে।

(iv) মধ্যবিত্ত শ্রেণির আবাসিক এলাকা (Middle Class Residential Houses Area): কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এলাকা এবং শহরতলীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে শিল্প-কলকারখানা থেকে দূরে মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন।

(v) উচ্চশ্রেণির আবাসিক এলাকা (Higher Class Residential Area): নগর-কেন্দ্রের ভিড়, হট্টগোল, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে বেশ দূরে উন্মুক্ত ও দূষণ মুক্ত পরিবেশে উচ্চশ্রেণির আবাসিক এলাকা গড়ে ওঠে। সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিগণ এই অঞ্চলে বসবাস করেন।

(vi) ভারী শিল্প এলাকা (Heavy Industrial Area): নগরের বাইরের বলয়ে রেলস্টেশন, নদী, কিংবা সমুদ্র বন্দর সংলগ্ন এলাকায় ভারী শিল্প গড়ে ওঠে।

(vii) প্রান্তীয় বাণিজ্য এলাকা (Outlying Business Area): যেসব জায়গায় উচ্চশ্রেণির আবসিক অঞ্চল আছে তার আশেপাশে প্রান্তীয় বাণিজ্য এলাকা গড়ে ওঠে। এখানে বসবাসকারী উচ্চবিত্ত সম্প্রদায়ের ক্রেতাদের ওপর নির্ভর করে বাণিজ্যিক কাজকর্ম গড়ে ওঠে। এমনকি নানা ধরনের বিনোদনমূলক ব্যবস্থা এখানে থাকে।

(viii) প্রান্তীয় আবাসিক এলাকা (Outlying Residential Area): নগরের সীমানায় গ্রামীণ পরিবেশে আবাসিক শহরতলী গড়ে ওঠে। এখানে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত উভয় সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করেন।

(ix) প্রান্তীয় শিল্প এলাকা (Outlying Industrial Area): নগরের সীমানায় একেবারে বাইরের দিকে ভারী শিল্প এলাকার সঙ্গে প্রান্তীয় শিল্প এলাকা গড়ে ওঠে।


এককেন্দ্রিক ও বহুকেন্দ্রিক মতবাদের মধ্যে সাদৃশ্য (Similarities between Concentric Theory and Multiple Nuclei Theory):

বার্জেস এবং হ্যারিস ও উলম্যানের নগরের কায়িক গঠন সম্পর্কিত তত্ত্বের মধ্যে পার্থক্য থাকলেও, এই দুই তত্ত্বের মধ্যে বেশ কিছু সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।

প্রথমত, দুটি তত্ত্বের মধ্যেই কোনো শহরের কায়িক গঠন এবং ওই শহরের ভূমির ব্যবহার সম্পর্কে পর্যালোচনা করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, উভয় তত্ত্ব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, কেন্দ্রগুলি ওই নির্দিষ্ট শহরের বৃদ্ধি ও বিকাশের ওপর নির্ভর করে বিস্তৃত হয়।

তৃতীয়ত, বার্জেস ও হ্যারিস উলম্যালের তত্ত্বে নির্দিষ্ট কেন্দ্রকে নির্ভর করে শহর গড়ে উঠতে দেখা

চতুর্থত, দুটি তত্ত্বের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য অঞ্চলের বা C.B.D (Central Business District) অবস্থান।

পঞ্চমত, বিভিন্ন বসতি এলাকা, শিল্পাঞ্চল, দৈনিক যাত্রীবলয় প্রভৃতির অবস্থান দুটো তত্ত্বের মধ্যে লক্ষ

ষষ্ঠত, দুটি তত্ত্বেই লক্ষণীয় যে, শহরের বৃদ্ধির ফলে তার চারপাশের গ্রাম্য এলাকা এমনকি ছোটো প্রটো শহরও গ্রাসের কবলে পড়ে।

 শহরের ক্রিয়ামূলক গঠন (Functional Morphology of Town):

কোনো একটি শহর একটি বা দুটি কার্যাবলির জন্য প্রসিদ্ধ হলেও এমন বহু শহর আছে যেখানে অসংখ্য দুখনৈতিক কার্য পরিচালিত হয়। যেমন- কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই এই শহরগুলিতে বিভিন্ন ধরনের কাজ কণীয়।


কলকাতা মহানগরী:

অঞ্চল হুগলি নদীর পূর্বতীরে অবস্থিত কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী এবং ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহানগর। এখানে বিভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কার্য পরিচালিত হচ্ছে।

(i) রাজ্যের রাজধানী বলে এখানে প্রশাসনিক কার্য, কোর্টের কাজ, সরকারি অফিস, কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয়ের কার্যাবলি পরিচালিত হয়।

(ii) কলকাতায় হুগলি নদীর উভয় তীরে হুগলি শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে। ফলে শিল্পকর্ম এখানে প্রত্যহ চলে।

(iii) কলকাতা বন্দরকে কেন্দ্র করে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্য পরিচালিত হয়।

(iv) অসংখ্য পরিবহন ও পর্যটন সংস্থার অফিস এখানে অবস্থিত। ফলে এসব দপ্তরের কার্য পরিচালিত হয়।

(v) ফলতা মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের পরে কলকাতা মহানগরী একটি বাণিজ্য অঞ্চলে রূপান্তরিত হয়েছে।

(vi) পরিশেষে বলা যায় যে বৃহত্তর মহানগরীর সম্প্রসারণ কার্য সর্বদা ঘটছে। ফলে নগরায়ণের জন্য রেলপথ ও সড়কপথের সম্প্রসারণ, মেট্রোরেলপথের সম্প্রসারণ প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ কার্য পরিচালিত হচ্ছে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01