welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ম্যালথাসের ও মার্কসের তত্ত্ব ( Theory of Malthusian & marx )

ম্যালথাসের ও মার্কসের তত্ত্ব ( Theory of Malthusian & marx )


ম্যালথাসের জনসংখ্যা তত্ত্বটি বিভিন্নভাবে সমালোচিত হয়েছে। যেমন-

• ম্যালথাসের মতে কোনো দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় জ্যামিতিক হারে এবং খাদ্যের উৎপা বৃদ্ধি পায় সমান্তর হারে। কিন্তু শিল্পবিপ্লবের পরবর্তী পর্যায়ে ইউরোপ মহাদেশের অনেক দে জনসংখ্যার বৃদ্ধির তুলনায় খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে- এই ঘটনা লক্ষ করা  গেছে

ম্যালথাসের তত্ত্বে কৃষি উৎপাদন প্রাচীন বা প্রথাগত ব্যবস্থার মাধ্যমে করা হয় বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিল্পে উন্নতি এবং প্রযুক্তিবিদ্যায় উন্নতির ফলে আধুনিক যন্ত্রনির্ভর কৃষিপ্রণালীতে বিপুল পরিমাণে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব। ম্যালথাস এই দিকটিতে একেবারেই আলোকপাত করেননি।

(ii) আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসারের ফলে কোনো দেশে খাদ্যের জোগানের ঘাটতি দেখা দিলে ওই দেশটি ওই খাদ্যফসল অন্য দেশ থেকে আমদানি করে খাদ্যের ঘাটতি মেটাতে পারে। ম্যালথাস তাঁর তত্ত্বে এ সম্পর্কে কিছু উল্লেখ করেননি।

(iv) ইউরোপের কিছু কিছু দেশ, যেমন- সুইডেন, নরওয়ে প্রভৃতি দেশে জনসংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। অথচ ম্যালথাস তাঁর তত্ত্বে উল্লেখ করেছেন স্বাভাবিক অবস্থাতে জনসংখ্যা সর্বদা বৃদ্ধি পাবে।

(গ) জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটলে শ্রম সম্পদের জোগান বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সম্পদের যেমন উন্নয়ন ঘটে তেমনি সম্পদ উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ম্যালথাস তাঁর তত্ত্বে এই দিকটি উল্লেখ করেননি।

(খ) জনসংখ্যা সর্বদা মানুষের জৈবিক তাড়নায় বৃদ্ধি ঘটে তা নয়। মানুষের মানসিক অবস্থা এবং আর্থসামাজিক বিষয়গুলি জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটায়।

(ii) ম্যালথাসের মতানুসারে কোনো দেশের জনসংখ্যা 25 বছরে দ্বিগুণ হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে 100 বছরে, ইরান ও বাংলাদেশ 29 বছরে এবং জাপানের জনসংখ্যা প্রায় 270 বছরে দ্বিগুণ হয়েছে।

কাল মার্কসের জনসংখ্যা বিষয়ক তত্ত্ব (Population Theory of Karl Marx)

কার্ল মার্কস (1818-1883 খ্রিস্টাব্দ) হলেন একজন জার্মান চিন্তাবিদ, সাম্যবাদী ও সমাজবিজ্ঞানী ব্যক্তি। তাঁর রচিত "Law of Population" আমাদের নিকট খুব আকর্ষণীয়। দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ এবং সাম্যবাদ নীতির নিগঞ্জওপর নির্ভর করে তিনি জনসংখ্যা বিষয়ক তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেন।

কার্ল মার্কস-এর মতে সমাজে দুটি শ্রেণি আছে- ধনী এবং গরিব। ধনী সম্প্রদায় সমাজের উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে। এরা মালিকশ্রেণি। এদের কাজ হল সর্বহারা বা প্রলেতারিয়েত সম্প্রদায়কে শোষণ করে নিজেদের আর্থিক মুনাফা বৃদ্ধি করা। এর ফলে মালিক সম্প্রদায়ের পুঁজির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

গরিব সম্প্রদায় শ্রমের বিনিময়ে স্বল্প অর্থ বা পুঁজি গড়ে তোলে। এই কারণে 'ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায়' মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে সমাজে দরিদ্র জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

কার্ল মার্কস জনসংখ্যা এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সম্পর্ক ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই সম্পর্ককে মুক্ত প্রণালী (open system) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এজন্য জনসংখ্যার কোনো নির্দিষ্ট 'natural law' বা প্রাকৃতিক নিয়ম নেই ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় দেখা যায় যে, শ্রমিকশ্রেণির মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে তাদের মধ্যে প্রমিকার হিয়া। কি বাদী সমাজ' ব্যবন্ধ্যাতে প্রযুক্তির পরিবর্তনের মাধ্যমে অতিরিস্থ বা ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে শ্রমে রূপান্তরিত করে উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা যায়। ফলে ওই এ জনসংখ্যাকে আর অতিরিক্ত জনসংখ্যা বলে মনে হয় না।

 মার্কস-এর মতে, ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মালিক শ্রেণির স্বার্থে সমাজে তিন ধরনের উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা হয়-

(1) লীন উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা (Latent Surplus Population).

(ii) ভাসমান উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা (Floating Surplus Population) এবং

(iii) স্থবির উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা (Stagnant Surplus Population)

(i) লীন উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা: পুঁজিবাদের প্রথমদিকে শিল্পের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। এর ফলে প্রচুর কলকারখানা তৈরি হয়। এসব কলকারখানায় কর্মের সুযোগ সৃষ্টি হয়। ফলে গ্রামের প্রচুর সংখ্যক লোক শহরের শিল্পাঞ্চলে কাজ লাভের আশায় দলে দলে চলে আসতে থাকেন। কারখানার মালিক শ্রমিকের শ্রম দ্বারা প্রচুর আর্থিক লাভ করে। মালিক কারখানাগুলিতে ক্রমশ উন্নত যন্ত্রপাতি আরা পেরিচালনার দিকে থাকে। এই কারণে দেখা যায় কারখানাতে আগের মতো শ্রমিক আর প্রয়োজন হচ্ছে না। এই যান্ত্রিকীয় প্রচুর উদ্‌বৃত্ত শ্রমিক তৈরি করে যা পরে লীন উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যায় পরিণত হয়।

(ii) ভাসমান উদবৃত্ত জনসংখ্যা: দ্রুত শিল্পায়নের ফলে সমাজের মালিকশ্রেণি আরও বেশি মুনম লাভের জন্য কলকারখানাতে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার করতে থাকে। এর ফলে একদিন যেমন কম শ্রমিকের দরকার হয়, তেমনি অন্যদিকে বেশির ভাগ শ্রমিক নতুন প্রযুক্তি ও যন্ত্রের ব্যবহার। জানায় তারা কর্মচ্যুত হয়। নতুন কোথাও কাজের সন্ধানে বিভিন্ন শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেজ এদেরকে ভাসমান উদ্বৃত্ত জনসংখ্যা বা প্রচ্ছন্ন বেকার বলা হয়।

(iii) স্থবির উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা: ধনতান্ত্রিক পুঁজিবাদী এবং সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেখা যায় যে শ্রেণির শ্রমিক সম্পূর্ণভাবে মালিকশ্রেণির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে তাদের জীবিকা নির্বাহ কর জমিতে এদের অধিকার থাকে না অথচ এরা জমিতে মালিকের ইচ্ছায় কৃষিকাজ করে। তেমনি শহরের দি কলকারখানাতেও শিল্প শ্রমিকের কিছু অংশ মালিকের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে কাজ করে। এদের কোনোরর দাবি-দাওয়া থাকে না। এরা হল স্থবির উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা।

কাল মার্কস-এর মতে, সমাজতন্ত্র বা সামাবাদ প্রতিষ্ঠিত হলে শ্রমিকশ্রেণিকে মালিকশ্রেণি আর শোষ করতে পারবে না। সমাজের সকল মানুষ সমানভাবে রাষ্ট্রীর সম্পদের অধিকার পাবে। ফলে উৎপাদনে পরিবর্তন কিংবা শ্রমের জোগান বৃদ্ধি ঘটলেও শ্রমিকশ্রেণির কোনো অসুবিধা হবে না।

• সমালোচনা (Criticisms):

(i) মার্কস-এর তত্ত্ব যদি সর্বত্র প্রয়োগ করা যেত তাহলে আমেরিকা, ব্রিটেন কিংবা জার্মানির ময়ে শিল্পোন্নত দেশগুলিতে বেকারত্ব তৈরি হত না।

(ii) মানুষের প্রজনন ইচ্ছা কিংবা নারী-পুরুষের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ কখনোই কোনো নিয়মনী মেনে চলে না। এজন্য আমরা দেখি যে চিনের মতো সমাজতান্ত্রিক দেশগুলিতে প্রচুর জনসংখ বৃদ্ধি পেয়েছে।

(iii) কত সংখ্যক শ্রমিকের জোগান থাকলে উৎপাদন ব্যবস্থা লাভজনক হবে এবং এই শ্রমিক সংখ্যা কা দিন পর্যন্ত সময় স্থিতিশীল থাকবে তা সময় এবং পরিস্থিতির সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। মার্কস-এ দেখানো পথে চললে উৎপাদন ব্যবস্থায় উদ্‌বৃত্ত জনসংখ্যা সৃষ্টি হবে না এরকম নিশ্চয়তা নেই।

(iv) জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলেই মজুরি হ্রাস পাবে এই মতও সর্বত্র সঠিক হয় না।

(V) মার্কস-এর জনসংখ্যা বৃদ্ধি তত্ত্বধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার ক্ষেত্রে উপযুক্ত হলেও সামন্ততান্ত্রিক সমাজব্যবস্যা আদিম শিকারি সমাজ কিংবা খাদ্যসংগ্রাহক অর্থনীতির যুগে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে না।

• ম্যালথাস ও মার্কসের জনসংখ্যা তত্ত্বের তুলনামূলক আলোচনা:

জনসংখ্যা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রসঙ্গো যে সমস্ত তত্ত্বগুলি আছে সে গুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয় ম্যালথাস ও কার্ল মার্কসের জনসংখ্যা তত্ত্ব।

ম্যালথাসের তত্ত্বের মূল বক্তব্য: রবার্ট ম্যালথাস মানবসম্পদকে জনসংখ্যা এবং খাদ্যের জোগান এই দুটি উপাদানের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর মতে কোনো দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় গুণোজ হারে। যথা- 1. 2. 3. 4. 8. 16, 32... কিন্তু খাদ্যের জোগান বৃদ্ধি পায় সমান্তর হারে। যথা-। 2. 3. 4. 5. অর্থাৎ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও খাদ্যের জোগান বৃদ্ধির হার কখনোই সমান হয় না। সুতরা সময়ের সঙ্গো সঙ্গো খাদ্যের জোগান যদিও বৃদ্ধি পায় কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তা সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় না। অর্থাৎ, খাদ্যের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে বিশাল ব্যবধান তৈরি হয়। এর ফলে তা অর্থনীতি ও সমাজের ভিতরে দুর্বল করে। এর ফলে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, যুদ্ধবিগ্রহের মতো নানাধরনের প্রাকৃতিক ও আর্থসামাজিক সমসার মষ্টি হয়। যে কারণে প্রচুর মানুষের মৃত্যু ঘটে, এই সময় খাদ্যের জোগান এবং জনসংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য ফিরে আসে। পুনরায় লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে 25 বছর পর দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগণ হয়ে যায়।

• মার্কসের তত্ত্বের মূল কথা: কার্ল মার্কস জার্মান অর্থনীতিবিদ এবং সাম্যবাদী ছিলেন। তাঁর জনসংখ্যা প্রধানত সাম্যবাদী নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাঁর মতে, সব মানুষই সম্পদ এবং সব মানুষের কার্যকারিতা এবং উপযোগিতা আছে। তবে সমাজে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অসাম্য আছে বলে সব মানুষের সমান অধিকার এন্থ। এর অপর একটি সামাজিক কারণ হল মানুষ এবং মানুষের ভেদাভেদ বা শ্রেণিবিন্যাস। মার্কসের মতে, সমাজের দুটি শ্রেণি আছে। যথা-

(1) ধনী শ্রেণি (মালিক শ্রেণি) ও

(ii) গরিব শ্রেণি (সর্বহারা বা প্রলেতারিয়েত শ্রেণি)

ধনী সম্প্রদায় সমাজের সমস্ত রকম উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে, কারণ তারা মালিকশ্রেণির অর্ন্তগত এবং সর্বহারাদের শোষণ করে মুনাফা অর্জন করাই তাদের কাজ। মুনাফার মাধ্যমে মালিকশ্রেণি নিজেদের পুঁজি সঞ্চয় করে। অন্যদিকে গরিব অর্থাৎ শ্রমিকশ্রেণি জনসংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে শ্রমের পুঁজি বা শ্রমের সঞ্চয় গড়ে তোলার চেষ্টা করে। ফলে ধনতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার ধনী গরিব অর্থাৎ মালিক এবং শ্রমিক সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে দরিদ্র জনগণের মধ্যে জনসংখ্যা বাড়তে থাকে এবং এই কারণে মানুষদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ব্যাহত হয়। মার্কসের মতে, সাম্যবাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত পরিবর্তন ঘটিয়ে ওই ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার শ্রমকে আরও উন্নত করা যায় এবং শ্রমিকদের আরও সুদক্ষ করা যায়। ফলে উৎপাদন বৃদ্ধি পায় সমাজ অর্থনৈতিক ভাবে অগ্রসর হয়। তখন ওই জনসংখ্যাকে আর অতিরিক্ত বলে। মনে করা হয় না। তখন সব মানুষই সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হয়।

মার্কস ও ম্যালথাসের তত্ত্বের তুলনা: তাত্ত্বিক প্রেক্ষাপটে ম্যালথাস এবং মার্কসের তত্ত্ব একে অপরের সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থিত। এই দুই তত্ত্বের মধ্যে অসংখ্য অমিল লক্ষ করা যায়। সেগুলি হল-

(i) ম্যালথাসের মতে বিবাহ, পরিবার উত্তরাধিকার সম্পত্তির মালিকানার মতো সামাজিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলি জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুঘটক হিসাবে কাজ করে। এগুলি একে অপরের সঙ্গে এতো নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত যে প্রত্যেক দম্পতির ব্যক্তিগত অর্থের সঙ্গে এই সিদ্ধান্তগুলি জড়িয়ে আছে। কিন্তু কার্ল মার্কস ব্যক্তিগত সম্পত্তি বা মালিকানার সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলেন। তাঁর মতে, সমস্ত সম্পদ হবে সমাজ বা রাষ্ট্রের সম্পদ। মার্কসের মতে, ব্যক্তিগত সম্পত্তির মালিকানা বুর্জোয়া গোষ্ঠীকে তৈরি করে। মার্কস মনে করেন, ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার সব সমস্যার মূল উৎস।

(ii) জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মানের মধ্যে যে সম্পর্ক, সে বিষয়েও মার্কস এবং ম্যালথাস পরস্পর বিরোধী মতামত পোষণ করেন। জনসংখ্যা এবং খাদ্য উৎপাদনের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ম্যালথাস জনসংখ্যাকে Independent Variable বলে উল্লেখ করেন। বিশেষ খাদ্য বা অন্যান্য উৎপাদন ব্যবস্থা জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে না।

কিন্তু মার্কসের মতে, ধনতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থাতেই বিশেষ শ্রেণিস্বার্থে জনসংখ্যাকে উদ্বৃত্ত হিসেবে দেখানো হয়। সুতরাং মার্কসের মতে ম্যালথাস জনসংখ্যাকে যে স্বাধীন বা নিরপেক্ষ প্রণালী হিসেবে দেখেছেন তার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। আসলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় বলে মালিকপক্ষ এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে হয় মজুরি দিয়ে শ্রমিক নিয়োগ করে। ফলে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানের অবনতি ঘটে তারা আরও শোষিত

(iii) ম্যালথাস তাঁর জনসংখ্যা তত্ত্বকে কোনো সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে অন্তর্গত করেননি। ভিতরকার নেয় ভিতিক উদেয় করেন তা প্রধানত ধনতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থ্যা বা বুনো অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে বলে মনে করা হয়।

 (iv) ম্যালথাস উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তনে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগের উল্লেখ করেননি। কিছু কর মার্কসের মতে প্রযুক্তিবিদ্যার প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায়। 

ম্যালথাস ও মার্কসের জনসংখ্যা তত্ত্বে পরস্পর বৈপরীত্য থাকলেও সেই সময়কার সামাজিক ও অর্থনৈতি পরিকাঠামো বিশ্লেষণ এবং সমাজ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁদের চিন্তাভাবনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01