পরিব্রাজনের ধারা (Stream of Migration)
কোনো অঞ্চল থেকে কোন্ অঞ্চলের দিকে পরিব্রাজন ঘটবে এবং কোন্ প্রক্রিয়াতে পরিব্রাজন ঘটবে তাকে একসঙ্গে পরিব্রাজনের ধারা (Stream of Migration) বলে।
(i) পরিব্রাজন সম্পন্ন হয় সুনির্দিষ্ট পথে এবং সুনির্দিষ্ট গন্তব্যস্থলের দিকে।
(ii) প্রতিটি পরিব্রাজনের স্রোত একটি উপস্রোত তৈরি করে।
(iii) পরিব্রাজনের উৎসস্থলে যদি 'Push factor' বা বিকর্ষণ বল অধিক কার্যকর হয় তখন পরিব্রাজনে অধিক দক্ষতা এবং সক্রিয়তা গড়ে ওঠে। Pull factor বা আকর্ষণ বল অপেক্ষা বিকর্ষণ বলই মানুষকে পরিব্রাজনে বাধ্য করে।
(v) পরিব্রাজনের উৎস ও গন্তব্যস্থলের অবস্থা প্রায় একই ধরনের হলে পরিব্রাজনের স্রোত এবং প্রতিস্রোত দুটোই কম শক্তিশালী হয়।
(vi) উৎস এবং গন্তব্যস্থলের মধ্যে বাধা থাকলে পরিব্রাজনের স্রোত আরও তীব্র হয়। যে সমস্ত পরিব্রাজক পরিব্রাজনকালে অনেক বাধাবিঘ্ন অতিক্রম করেছেন তারা যখন বাধ্যতামূলক পরিব্রাজন করে তখন পরিব্রাজনের হার তীব্র হয়।
(vii) পরিব্রাজনের তীব্রতা অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর নির্ভরশীল। জনগণের সমৃদ্ধিলাভের সময় পরিব্রাজনের হার বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থার সময় এর হার কম হয়।
পরিব্রাজনকারীদের চরিত্র (Characteristics of Migrants):
(i) পরিবাজন অত্যন্ত সুনির্দিষ্ট প্রকৃতির। পরিব্রাজনের প্রকৃতি ধনাত্মক হয় এবং যখন এর বিপী অবস্থা পরিলক্ষিত হয় তখন তাকে ঋণাত্মক পরিব্রাজন বলে।
(ii) গন্তব্যস্থলে আকর্ষণী বলের প্রভাবে পরিব্রাজন ঘটে থাকে। এসব ক্ষেত্রে মানুষ গন্তব্যস্থ্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পান বলে সেখানে হাজির হন।
(iii) পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে আমরা দেখি যে, কিছু মানুষ আকর্ষণী বলের প্রভাবে গন্তব্যস্থালের উদ্দেশে যাত্রা করে। আবার কিছু মানুষ বিকর্ষণ বলের প্রভাবে উৎস স্থল থেকে গন্তব্য অঞ্চলের দিয়ে পৌঁছায়।
(iv) পরিরাজনের অভিমুখ উভমুখী (bimodal) ধরনের হয়। কিছু গোষ্ঠীর মানুষ উৎস অঞ্চল যোঃ গন্তব্যস্থলের দিকে যাত্রা করে এবং কিছু সংখ্যক মানুষ অন্য অঞ্চল থেকে উৎস অখলো দিকে আসে। এখানেও 'Push' ও 'Pull factor কার্যকর হয়।
(V)পরিব্রাজনকারী ব্যক্তিদের জীবনচক্রের বিভিন্ন পর্যায়ে পরিব্রাজন ঘটে। তবে একটি বয়স শ্রেণির লোকের মধ্যেই এর হার সর্বাধিক হয়।