গৃহের আকৃতি (Shape of the rooms):
N. K. Bose তাঁর রচিত Peasant Life in India (Anthropological Survey of India)-প ভারতীয় গ্রামগুলিকে আকৃতি অনুসারে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। যেমন-
আয়তাকার ভূমিভাগ যুক্ত অনুভূমিক ছাদের বাড়ি (House with Rectangular Ground and Horizontal Roof)
(i) আয়তাকার ভূমিভাগযুক্ত হেলানো বা তির্যক ছাদের বাড়ি (House with Rectangular Ground Plan and Inclined Roof)
(ii) বৃত্তাকার ভূমিভাগযুক্ত শঙ্কু আকৃতির ছাদের বাড়ি (House with Circular Ground Plan and a Conical Roof)
(i) আয়তাকার ভূমিভাগ যুক্ত অনুভূমিক ছাদের বাড়ি ভারতের যেসমস্ত অঞ্চলে বছরে km-এ কম বৃষ্টিপাত ঘটে সেইসব অঞ্চলে এই ধরনের বাসগৃহ লক্ষ করা যায়। অত্যধিক খরা প্রবণ, মধু এবং মরুপ্রায় অঞ্চলেই অধিবাসীরা এই ধরনের বাসগৃহ নির্মাণ করে বসবাস করেন।
(ii) আয়তাকার ভূমিভাগযুক্ত হেলানো বা তির্যক ছাদের বাড়ি এই ধরনের বাড়ি ভারতে প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। ভারতের যেসমস্ত অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে সেইসব এলাকায় এই ধরনের বাড়ি নির্মাণ করা হয়। কারণ বাড়ির ছাদ যত বেশি ঢালু হবে বৃষ্টির জল তত দ্রুত ছাদ বেয়ে নিচে নেমে আসবে। উত্তর-পূর্ব ভারতে, ওডিশা, তামিলনাড়ু, কেরালার উপকূলবর্তী অঞ্চলে এই জাতীয় গৃহ নির্মাণ করে স্থানীয় অধিবাসীরা বসবাস করছেন।
(iii) বৃত্তাকার ভূমিভাগযুক্ত শঙ্কু আকৃতির ছাদের বাড়ি ভারতের কিছু কিছু উপজাতি এলাকায়
প্রাচীন প্রথা মেনে উপজাতিরা এই ধরনের গৃহ নির্মাণ করে। দক্ষিণ ভারতে নীলগিরির টোডা উপজাতিরা এই ধরনের গৃহে বসবাস করে। অন্ধ্রপ্রদেশের 'Chenchus' উপজাতি এবং ঝাড়খন্ডের 'Birhots' উপজাতির লোকজনও বৃত্তাকার ভূমিভাগযুক্ত শঙ্কু আকৃতির ছাদের বাড়িতে বসবাস করেন।
গ্রামের মানুষজন স্থানীয় যেসমস্ত উপাদান পাওয়া যায় সেগুলি তারা গৃহনির্মাণ কাজে ব্যবহার করে। ছের ডাল, পাতা ব্যবহার করে অনেকে তাঁবু জাতীয় গৃহ নির্মাণ করে। ভারতের কিছু কিছু পশুপালক প্রাবা সম্প্রদায় পশুর চামড়া দিয়ে তাঁবুর ছাদ ঢেকে দেয়।
ভারতের অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন ডালপালা বা বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে প্রবাল তৈরি করে। এসব ঘরের ছাদ টালি কিংবা অ্যাসবেস্টস দি
য়ে ঢেকে দেওয়া হয়।