welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

গ্রাম-শহরের মধ্যে দ্বৈত দ্বন্দ (Rural-Urban Dichotomy) :

গ্রাম-শহরের মধ্যে দ্বৈত দ্বন্দ (Rural-Urban Dichotomy) :


17%) খ্রিস্টাব্দে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের জনগণনায় 'Rural-Urban Dichotomy' কথাটি ব্যবহৃত এ-শহরের বিভাজন প্রসঙ্গে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে পরস্পর বৈপরীত্য ধারণা তৈরি হয়েছে। গ্রাম-শহরের ভাগ নির্ভর করে। কর্মের কাঠামোগত পার্থক্য, পরিবেশগত পার্থক্য, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের চিন্তাভাবনায় পার্থক্য, প্রখ্যার ঘনত্বগত পার্থক্য, সামাজিক স্তরগত পার্থক্য প্রভৃতির ওপর। শহর ও নগরসীমার বাইরে কিছু নাস্তি বিস্তৃত অঞ্চলে গ্রামীণ ও পৌর বসতি মিশ্রিত অবস্থায় থাকে। এই অঞ্চল সম্পূর্ণ গ্রাম নয়, আবার এরও নয়। জনসংখ্যা, জনঘনত্ব বা অধিবাসীদের জীবিকা অনুসারে শহর হলেও প্রশাসনিক দিক থেকে রণ গ্রাম্য অঞ্চলের (গ্রাম পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদের) অধীন। এই এলাকাকে গ্রামশহর (Rural-Urban) হয়।


গ্রাম-শহরের মধ্যে দ্বন্দ্বের একটি প্রধান বিষয় হল গ্রামের কৃষিব্যবস্থা এবং বনসৃজনের সঙ্গ্যে ররের নগর পরিকল্পনার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর 1950-এর দশক থেকে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। কারণ এই এর থেকেই বিশ্বজুড়ে নগরায়ণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। 1980-এর দশকে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু ৪। প্রশ্ন ওঠে- কারা বেশি গ্রামের সীমানায় থাকা শহরের বহির্দেশে নগরায়ণ প্রক্রিয়ায় সামিল হবেন


গ্রাম-শহরের দ্বন্দ্বের ফলে উভয়ের মধ্যে যেসব ক্ষেত্রগত পার্থক্য সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলি হল-


(৫) গ্রামে প্রাথমিক অর্থনৈতিক কাজে 75% বা তার বেশি মানুষ নিযুক্ত থাকেন। কিন্তু শহরের 75% বা তার বেশি মানুষ গৌণ ও প্রগৌণ স্তরের কাজে নিযুক্ত থাকেন।


(i) গ্রামের মানুষজন কৃষি, বনসৃজন এবং অন্যান্য ছোটো ছোটো শিল্পে নিযুক্ত থাকেন, শহরের মানুষজন শ্রমশিল্প, বসতবাড়ি নির্মাণ, প্রশাসন এবং বিভিন্ন চাকরিতে যোগদান করেন।


(iii) গ্রামে জাতীয় স্তর অপেক্ষা শিক্ষার হার অনেক কম। শহরে জাতীয় স্তর অপেক্ষা শিক্ষার হার অনেক বেশি হয়।


(iv) শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ-সুবিধা গ্রামে অনেক কম। শহরে শিক্ষা-চাকরির সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি থাকে।


(গ) শহরে স্বল্প জন্মহার ও স্বল্প মৃত্যুহার লক্ষণীয়। গ্রামের মানুষের জন্ম ও মৃত্যুহার দুটোই বেশি হয়।


(vi) গ্রামের মানুষের মধ্যে শহরের তুলনায় পরিব্রাজনের হার কম। কারণ গ্রামের মানুষ শহরের তুলনায় একটু বেশি মাত্রায় রক্ষণশীল হন।


• গ্রাম-শহর বিভাজনের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলি বেশি করে আলোচিত হয়, সেগুলি হল-


(৫) গ্রাম্য অঞ্চলের গ্রামে থেকে যাওয়ার মানসিকতা (অধিবাসীদের মধ্যে),


(b) নিম্ন জনঘনত্ব,


(c) বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গ্রামের বিস্তার,


(4) প্রাথমিক কার্যাবলির প্রাধান্য এবং


(৫) অধিবাসীদের মধ্যে চরম একাত্মতা।


বর্তমানে গ্রামের সীমানায়, শহরের প্রান্তভাগে সর্বক্ষেত্রে বৈচিত্র্য (diversity) লক্ষ করা যায়। বিশ্বায়নের প্রভাবে শহরের সীমানা গ্রামের দিকে চলে আসছে। ফলে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য লক্ষণীয়। তবে শহরের অনেক এলাকা আছে যেগুলি গ্রামের মতোই বৈশিষ্ট। বহন করে চলেছে। এখানে উন্নয়নের হার অনেক কম। আবার গ্রামের বেশ কিছু অঞ্চলে শহরের মতো উন্নয়নের ধারা লক্ষণীয়। তবে প্রশাসনিক দিক থেকে শহরের অন্তর্গত গ্রাম্য এলাকা এখনও অনুন্নত রয়ে গেছে।


1945-2005 খ্রিস্টাব্দে গ্রাম-শহর সম্পর্কের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, বেশ কিছু উপাদান বা নিয়ন্ত্রক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গ্রামের সীমানার নিরাপত্তা, কৃষির সম্প্রসারণ, শস্যের সমন্বয়ে চাষ, কৃবিতে যন্ত্রের অধিক প্রয়োগ, ইউরোপীয় কৃষিকাজের প্রসার, সুস্থায়ী উন্নয়ন। মডেল গ্রাম প্রভৃতি উপাদান গ্রাম-শহরের সম্পর্ককে বৈচিত্র্যপূর্ণ করেছে। সুতরাং, গ্রামের অঞ্চলকে আমরা তিনটি অংশে ভাগ করতে পারি-


(1) নির্দিষ্ট এলাকা যেখানে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বর্তমান, অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের এই এলাকা বসবাসের জন্য বেশি আকৃষ্ট করে।


(ii) গ্রামের সেইসব অঞ্চল যেখান থেকে খুব কম সময়ের মধ্যে মেট্রোপলিটান শহরগুলিতে যাতায়াত করা সম্ভব হয়।


(ii) প্রত্যন্ত গ্রাম্য অঞ্চল (Very remote rural area) যেখান থেকে অনেক দেরিতে শহরে পৌঁছানো যায়।


"Society has changed so that urban and rural areas are no longer distinct entities: micro conflict over the countryside reveals different groups and identities with their own agenda and aspirations." Beckett A (1998).


বর্তমানে দেখা যায় যে, অনেক শহরবাসী গ্রামের অধিবাসী অপেক্ষা বেশি বঞ্চনার শিকার। কারণ শহরেও বেশ কিছু সংখ্যক অধিবাসী দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছেন।


অতিরিক্ত নগরায়ণ প্রতিরোধের জন্য আইন, দৃষ্টিভঙ্গি, সচেতনতা প্রভৃতি বৃদ্ধি করা বিশেষভাবে প্রয়োজন। শহরের অতিরিক্ত প্রসার বন্ধ করা দরকার। গ্রামে কৃষিকাজ এবং বনসৃজন ভূমিব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। গ্রামের জমিকেও বর্তমানে বিভিন্ন অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে।


প্রথাগত পদ্ধতি মেনে গ্রাম-শহর বিভাজনের (rural-urban division) ক্ষেত্রে আমাদের প্রচলিত Myth গুলি হল-


(১) গ্রাম্য অঞ্চলে একটি সুনির্দিষ্ট Homogenity থাকে না। এখানে বিভিন্ন কর্মবৈচিত্র্য লক্ষ করা যায়।


(11) গ্রাম-শহর প্রসারের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে এগিয়ে চলা প্রয়োজন।


(iii) গ্রামের মধ্যে অনেকসময় সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে না। শহরের কোনো বৈশিষ্ট্যকে গ্রামে বেশি করে বিকশিত করা দরকার, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা দরকার।


(iv) গ্রাম-শহরের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন 'Tool' ব্যবহার করা উচিত।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01