welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতে বিভিন্ন ধর্ম (Religion in India)

ভারতে বিভিন্ন ধর্ম (Religion in India)


ভূমিকা (Introduction):

ভারতীয় জনগণের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল তার ধর্মগত বিভাজন। ভারতীয় নাগরিকগণের ছিলেন সাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক জীবনে ধর্মের প্রভাব অত্যন্ত সুদূরপ্রসারী। দেশের বিভিন্নপ্রান্তে বসবাসকারী গস্তিদের ধর্মীয় বৈচিত্র্যের জন্য জীবনযাত্রায় এবং সংস্কৃতিতে পার্থক্য লক্ষ করা যায়।

ভারতের প্রধান ধর্মসমূহ (Major Religions of India):

ভারতে প্রধানত চারটি ধর্মের প্রাধান্য দেখা যায়। এগুলি হল- (1) হিন্দুধর্ম (Hinduism), (ii) বৌদ্ধ *(Buddhism), (ii) জৈনধর্ম (Jainism) এবং (iv) শিখধর্ম (Sikhism).

হিন্দুধর্ম (Hinduism): ভারতীয় জনগণের সর্বপ্রধান ধর্ম হল হিন্দুধর্ম। হিন্দুধর্মের অধিবাসীদের বসবাস থাকার জন্য ভারতের নাম একদা ছিল হিন্দুস্থান (Hindusthan)। হাজার হাজার বছর আগে কোথায় প্রথম হিন্দুধর্মের প্রচলন ছিল সে নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা যায়। তবে বৈদিক যুগের পূর্বভাগ থেকে পূর্ব দ্বিতীয় মিলেনিয়াম পর্যন্ত সময়েই এখানে হিন্দুধর্মের সর্বাধিক প্রসার ঘটেছিল।

2001 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে হিন্দুধর্মের অধিবাসীগণ ভারতের অধিকাংশ রাজ্যে এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে সংখ্যাগত দিক থেকে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। 827.6 মিলিয়ন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করছেন, যা দেশের মোট জনসংখ্যা 80.5%। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার 12%। খ্রিস্টধর্মের পর হিন্দুধর্মের অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ইসলাম ধর্মের সমান। বর্তমানকালে হিন্দুধর্মের মানুষের সংখ্যা কিছুটা কমে যাচ্ছে। 1961 খ্রি. ভারতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার 83.4% ছিল। কিন্তু 2001 খ্রিস্টাব্দে সেটি 80.5% হয়েছে। এইভাবে হিন্দু জনসংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ হল হিন্দুদের মধ্যে জন্মহার অন্যান্য ধর্মের সম্প্রদায় অপেক্ষা কম। 1971 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারিতে দেখা যায় যে, 1971-81 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে হিন্দুদের বৃদ্ধির হার ছিল 24.2%, 1981-91 খ্রিস্টাব্দে 22% এবং 1991-2001 খ্রিস্টাব্দে 20% পৌঁছেছে।

ভারতের প্রায় সমস্ত অঙ্গরাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা বেশি শ্রেণীর। হিমাচল প্রদেশের মোট জনসংখ্যার 95% হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। ছত্তিশগড়ের 94% ওডিশার এ এবং দাদরা-নগর হাভেলির 93% মানুষ হিন্দু। মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের 91% মানুষই এই সম্প্রদায়ের মধ্যে এড কবে ভারতের কয়েকটি রাজ্যে এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে তিন্দ সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশ কম। যেমন- বেবীপে হিন্দু সম্প্রদায় সংখ্যালঘু। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে এবং লক্ষয়ীপে মসলিম, পাঞ্জাবে শিখ, মেঘালয়ে এখন মিজোরাম এবং নাগাল্যান্ড রাজ্যে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের চেয়ে অনেক কম সংখ্যক হিন্দু বসবাস করেন। গেল্যান্ডে মোট জনসংখ্যার 7.7%, মিজোরামে 3.6% এবং লক্ষদ্বীপে 3.7% হিন্দ।

রাজা হিসেবে বিচার করলে ভারতের মধ্যে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হিন্দু সম্প্রদায়ের তার বসবাস করেন। এই রাজ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা 133.98 মিলিয়ন। মহারাষ্ট্র রা সম্প্রদায়ের এ বিহার রাজ্যে 69.08 মিলিয়ন, অস্ত্রপ্রদেশে 67.84 মিলিয়ন এবং পশ্চিমবঙ্গে ১৪। মালয় সকালয়ের মানুষ বসবাস করেন। এই সমস্ত রাজ্যগুলি ছাড়াও মধ্যপ্রদেশে 55 মিলিয়ন, তামিলনাডুতে 54.98 জীবন, রাজস্থানে 50.15 মিলিয়ন এবং কর্ণাটক রাজ্যে 44.32 মিলিয়ন মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। এ সমস্ত রাজ্যগুলিতে মিলিতভাবে ভারতের মোট হিন্দু জনসংখ্যার 75% লোকের বসবাস আছে। 

ইসলাম ধর্ম (Islam Religion): 622 CE-তে হজরত মহম্মদ-এর মাধ্যমে মক্কাতে ইসলাম ধর্মের এর শুধু হয়। বর্তমানে ভারতীয় জনগণের একটি অংশ মুসলমান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। ভারতের সংখ্যালঘু প্রদায়ের মধ্যে ইসলাম ধর্মের অনুগামী মানুষ বৃহত্তর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এঁরা ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম জাখ্যা বিশিষ্ট সম্প্রদায়।

১৪০খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে, মুসলিম সম্প্রদায়যুক্ত মানুষের সংখ্যা 138 19 মিলিয়ন। ভারতের ১৫ জনসংখ্যার 13.4% মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুগামী। 1991 খ্রি.-2001 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের ধের হার 36%। হিন্দু সম্প্রদায়ের তুলনায় মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে জন্মহার এবং জনসংখ্যা দের হার দুটোই বেশি লক্ষ করা গেছে।

1981 খ্রিস্টাব্দে অসমে এবং জম্মু ও কাশ্মীরে 1991 খ্রিস্টাব্দে কোনো আদমশুমারি হয়নি। 1961, ৪। এবং 2001 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারিতে সমগ্র দেশের জনসংখ্যা গণনা করা হয়েছে। এই গণনায় দেখা হছে যে, 1971 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারিতে ভারতে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল 453.3 মিলিয়ন কিন্তু 2001 খ্রিস্টাব্দে এ বৃদ্ধি পেয়ে হয় 827.6 মিলিয়ন। অর্থাৎ, হিন্দু জনসংখ্যা এই ত্রিশ বছরে প্রায় ৪2% বৃদ্ধি পেয়েছে। া। খ্রিস্টাব্দে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল 61.4 মিলিয়ন। 2001 খ্রিস্টাব্দে মুসলিম জনসংখ্যা পরিমাণ হয়েছে ৩১ মিলিয়ন। অর্থাৎ, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার 125%। বাংলাদেশ থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের আগমন, এবশের মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির অপর একটি কারণ। ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যসমূহে মুসলিম জনসংখ্যা দ্বৈগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভারতের রাজ্যগত পরিসংখ্যানের দিকে নজর দিলে দেখা যাবে যে, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে মুসলিম জনসংখ্যা সংযকে বেশি (30.74 মিলিয়ন)। পশ্চিমবঙ্গে 20.24 মিলিয়ন, বিহারে 13.72 মিলিয়ন, মহারাষ্ট্রে 10.27 জিন, অসমে 8.20 মিলিয়ন, কেরালা রাজ্যে 7.86 মিলিয়ন এবং অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যে 6.99 মিলিয়ন মুসলমান সাদয়ের লোকজন বাস করেন। এ ছাড়া জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে 6.79 মিলিয়ন এবং কর্ণাটক রাজ্যে 6.46 মলয়ন মুসলিম আছেন।

ভারতের মোট জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে মুসলিম জনসংখ্যার পরিমাণ দেখলে বোঝা যায় যে, লক্ষদ্বীপে সচেয়ে বেশি মানুষ (95.5%) মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়ে। এই দ্বীপপুঞ্জে মোট 57903 জন মুসলমান মুষ বসবাস করেন। অঙ্গরাজ্যগুলির মধ্যে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে মুসলিমদের পরিমাণ সবথেকে বেশি (67%)।

এই রাজ্যের কাশ্মীর উপত্যকা অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি মানুষ মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে পড়েন। অসম গাজর 31% মানুষ এই সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের 25% মানুষ হলেন মুসলিম। উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের 18.5% মানুষ মুসলিম। রোহিলাখন্ড এবং উচ্চগাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলেই এই রাজ্যের অধিকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন। রামপুর, বিজনর, মোরাদাবাদ, বেরিলি, পিলিভিট, সাহারন্য মুজাফ্ফরনগর, মীরাট এবং গাজিয়াবাদ জেলাতে মুসলিম জনসংখ্যা মাঝারি ধরনের।

ভারতের কতগুলি রাজা আছে যেখানে মুসলিম জনসংখ্যা 5%-এর কম। এই সমস্ত রাজ্যগুলি হল- পাঞ্জাব, চন্ডীগড়, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মেঘালয়, ওডিশা, ছত্তিশগড় এবং দাদরা-নগর হাভেলি।

খ্রিস্টধর্ম (The Christianity): খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের লোকজন ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সম্প্রদায়।1001 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে ভারতে 24.1 মিলিয়ন খ্রিস্টান ধর্মের অনুরাগী মানুষ বসবাস করছেন। 1941 খ্রিস্টাব্দে আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র 1.6% খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোক ছিলেন। 1971 খ্রিস্টাব্দে দেশের মোট জনসংখ্যার 2.6%, 1981 খ্রিস্টাব্দে 2.5% এবং 1991 খ্রিস্টাব্দে 2.3% খ্রিস্টধর্মাবলম্বী মানুষ ছিলেন।

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে খ্রিস্টধর্মের মানুষ বেশি বসবাস করেন। নাগাল্যান্ডের মোট জনসংখ্যার ৩০৭৬ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ, মিজোরামের ৪7% মেঘালয়ের 70% এবং মণিপুরের 34% মানুষ ৫৫ ধর্মের অনুগামী। পোর্তুগিজ সম্প্রদায় দক্ষিণ ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলে দীর্ঘকাল বসবাস করেছিল প্রধানত। তাদের উপনিবেশ গঠনের জন্য। তাই এসব অঞ্চলে এখনও প্রচুর সংখ্যক মানুষ খ্রিস্টান ধর্মের অনুগামী। গোয়া এবং কেরালা রাজ্যে মোট জনসংখ্যার 26.7% ও 19% মানুষ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। ভারতের মধ্যে কেরালা রাজ্যে সবচেয়ে বেশি খ্রিস্টান বসবাস করেন। ভারতের মোট খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের 75% মানুষ কেরালাতে আছেন। এই রাজ্যে ও মিলিয়নের বেশি মানুষ খ্রিস্টান ধর্মের অনুগামী। কোট্রায়াম এবং এর্নাকুলাম জেলায় মোট জনসংখ্যার 40% মানুষ খ্রিস্টান।

কেরালা রাজ্য ছাড়া তামিলনাড়ু, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খন্ড এবং মহারাষ্ট্রে প্রচুর মানুষ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্তর্গত। তামিলনাডুতে 3.78 মিলিয়ন, অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে 1.79 মিলিয়ন মেঘালয় রাজ্যে 1.63 মিলিয়ন, অস্ত্রপ্রদেশ রাজ্যে 118 মিলিয়ন, ঝাড়খন্ডে 109 মিলিয়ন, মহারাষ্ট্রে 105 মিলিয়ন খ্রিস্টান বসবাস করেন।

খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, 1961-71 খ্রিস্টাব্ে 36%, 1971-81 খ্রিস্টাব্দে 19.2% এবং 1991 খ্রিস্টাব্দে 17% জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল, 1991-2000 খ্রিস্টাব্দে 22.1% ছিল জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার।

শিখধর্ম (The Sikhs): ভারতে বর্তমানে প্রায় 19.21 মিলিয়ন শিখ সম্প্রদায় বসবাস করেন। 1941 খ্রিস্টাব্দে ভারতের মোট জনসংখ্যার মাত্র 1.9% মানুষ শিখ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত ছিলেন। 1951 খ্রিস্টাকে প্রায় 1.7% শিখ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। প্রচুর সংখ্যক শিখ সম্প্রদায় পাকিস্তান থেকে ভারতে চলে আসার ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটেছিল। এরপর থেকে ধীরে ধীরে ভারতে শিখ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। 2001 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারিতে এই জনসংখ্যা 1.9% বৃদ্ধি পেয়েছে।

শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন বর্তমানে প্রায় সমগ্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করছেন। কিন্তু তা সাত্ত্বেও আমাদের দেশের পাঞ্জাব রাজ্যেই সবথেকে বেশি মানুষ শিখ ধর্মাবলম্বী। পাঞ্জাব রাজ্যের প্রায় 60% মানুষ শিখ সম্প্রদায়ের অন্তর্গত এবং এই রাজ্যে 14.59 মিলিয়ন শিখ বসবাস করেন (Census of India, 2001 Report), দেশের মোট শিখ সম্প্রদায়ের তিন-চতুর্থাংশ পাঞ্জাবে বসবাস করেন। গুরু নানকের জন্মস্থান বলেই, স্বাভাবিকভাবেই এই রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ শিখধর্ম গ্রহণ করেছেন।

পাঞ্জাব রাজ্যের অন্তর্গত অমৃতসর, কাপুরথালা, ফিরোজপুর, গুরুদাসপুর, ভাতিন্দা, পাতিয়ালা, লুধিয়ানা, ফরিদকোট, ফতেগড় সাহিব প্রভৃতি জেলাগুলিতে শিখ সম্প্রদায়ের সংখ্যা অনেক বেশি। হরিয়ানা রাজোও শিখ সম্প্রদায়ের সদস্য যথেষ্ট সংখ্যক পরিলক্ষিত হচ্ছে, এই রাজ্যে।। মিলিয়ন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করছেন। আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, ফতেহবাদ এবং শিরসা জেলাতেই সবচেয়ে বেশি শিখধর্মের মানুষজন বসবাস করছেন।

উত্তরাঞ্চল এবং উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের কয়েকটি এলাকায় এই সম্প্রদায়ের মানুষ আছেন। গঙ্গানগর, আলোয়ার, ভরতপুর এই জেলাগুলি রাজস্থানের অন্তর্গত। এখানেও শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজনকে দেখা যায়। ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লিতেও প্রায় 5.5 লক্ষ শিখ সম্প্রদায়ের মানুষজন আছেন। এই জনসংখ্যা মোট শিখ সম্প্রদায়ের 4%1

ভারতে শিখদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসছে। 1961-71 খ্রিস্টাব্দে জনসংখ্য বৃদ্ধির হার ছিল 32%, 1971-81 খ্রিস্টাব্দে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে হয়েছিল 26.2%। এমনকি 1981- 91 খ্রিস্টাব্দে এই জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার আরও কমে যায় (25.5%)। 1991-2001 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে শিখদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল 16.9%।

বৌদ্ধ সম্প্রদায় (The Buddhists): ভারতে 7.95 মিলিয়ন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করেন যা দেশের মোকখনও জনসংখ্যা পক্ষে খুবই নগন্য (৪%)। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সংখ্যাগত গতিপ্রকৃতি এক করে দেখা সংখ্যার পরিবর্তন মান্টো হ্রাস পেয়েছে, আবার কখনও জনসংখ্যা বৃদ্ধি সংখ্যারাতে গতিপ্রকৃতি সশাকে বৌদ্ধ জনসংখ্যার পরিবর্তন ঘটেছে। 1961-71 খ্রিস্টাব্দে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল 17% কিন্তু 1981- 19৭) খ্রিস্টাব্দে এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হয় 36%। এই হঠাৎ করে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ ছিল এই যে, মানুষ প্রচুর সংখ্যায় অন্য ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে বৌদ্ধ ধর্মগ্রহণ করেছিল। 1991-2001 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পুনরায় কমে যায় (23.2%)।

ভারতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি দেখা যায় মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্যপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম এবং জম্মু-কাশ্মীরের লাদাখ জেলায়। মিজোরাম, ত্রিপুরা এবং হিমাচল প্রদেশেও বৌদ্ধ সম্প্রদায়-এর মানুষ বসবাস করছেন।

উত্তর ভারতের হিমালয় সংলগ্ন পার্বত্য অঞ্চলে বৌদ্ধধর্ম একসময় প্রচার করার হার ছিল বেশি এবং এই অঞ্চলেই অসংখ্য বৌদ্ধধর্মের উপাসনালয় অবস্থিত। 2001 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে, মহারাষ্ট্র রাজা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বৌদ্ধধর্মের সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন (5.84 মিলিয়ন) যা দেশের মোট বৌধ সম্প্রদায়ের 73.5%। তবে মহারাষ্ট্র রাজ্যটির মোট জনসংখ্যার মাত্র 6% হলেন বৌদ্ধধর্মের অনুগামী। মহারাষ্ট্রে ড. বি. আর. আম্বেদকারের প্রচুর সংখ্যক হরিজন অনুগামী বৌদ্ধধর্মে পরিণত হন। সিকিম রাজ্যে 1.52,042 জন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষ। রাজ্যের মধ্যে শতাংশের বিচারে 28.1% লোক হলেন বৌদ্ধ সম্প্রদায়। অরুণাচল প্রদেশের 13% এবং মিজোরাম রাজ্যের প্রায় ৪% মানুষ বৌদ্ধধর্মের অনুগামী।

জৈন সম্প্রদায় (The Jains Community): ভারতে 4.22 মিলিয়ন জৈনধর্মের সম্প্রদায়ের লোকজন পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন অংশে বসবাস করছেন। মহারাষ্ট্র রাজ্যে প্রায় 13 লক্ষ, রাজস্থানে 6.5 লক্ষ, মধ্যপ্রদেশে 5 লক্ষ 40 হাজার, গুজরাটে 5 লক্ষ 20 হাজার এবং উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে 2 লক্ষ জৈনধর্মের লোক বসবাস করেন। বর্তমানে জৈন সম্প্রদায় দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র 1.3%। জৈন সম্প্রদায়ের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দেশের জাতীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অপেক্ষা বেশি হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা কমে আসছে।

পারসি সম্প্রদায় (The Parsis Community): ভারতে পারসি সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা বিগত দেশগুলির তুলনায় কমে আসছে। 2001 খ্রিস্টাব্দের জনসংখ্যার হিসেব অনুসারে 69601 জন পারসি সম্প্রদায়ের মনুষ আছেন। জরায়ুস্টের অনুগামীদের মোট জনসংখ্যা এভাবে কমে যাওয়া এদেশে পারসি নেতৃত্বের কাছে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় 90% পারসি সম্প্রদায় মুম্বাই এবং দক্ষিণ গুজরাটের উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে সুরাট শহরের আশেপাশে বসবাস করে আসছেন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01