শক্তি সম্পদ অন্যান্য খনিজ সম্পদ ( Power Resources Other Minerals)
ম্যাঙ্গানিজ (Manganese)
ভারত ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ৯-৫ লক্ষ টন ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলন করে ষষ্ঠ স্থানে আছে। এই ম্যাঙ্গানিজ সিলোমিলেন, বুনা ও পাইরোলুসাইট শ্রেণির। সাধারণত ইলেকট্রোলাইটিক পদ্ধতিতে আকর থেকে ম্যাঙ্গানিজ নিষ্কাশন করা হয়।
উত্তোলক অঞ্চলসমূহঃ
• মধ্যপ্রদেশ: ২০১৫-১৬ (৭-৬৩ লক্ষ টন) খ্রিস্টাব্দে শ্রেষ্ঠ স্থানে ছিল। বালাঘাট ও ছিন্দোয়ারা জেলা ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলনে প্রসিদ্ধ। অন্যান্য ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে রত্নগিরি ও ছোট উদয়পুর।
• মহারাষ্ট্রঃ দ্বিতীয় স্থানাধিকারী (৬-১৪ লক্ষ টন, ২০১৫-১৬) রাজ্য। নাগপুর ও ভান্ডারায় প্রচুর ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলিত হয়।
• ওড়িশাঃ ভারতের তৃতীয় শ্রেষ্ঠ (৩-৮৮ লক্ষ টন, ২০১৫-১৬) ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলক রাজ্য। সুন্দরগড়, কেওনঝাড় ও কোরাপুট জেলা ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলনে প্রসিদ্ধ। অন্যান্য খনিগুলি রয়েছে বোনাই, কেওনঝাড়, ময়ূরভপ্ত, গাংপুর ও কালাহান্ডি অঞ্চলে।
কর্ণাটক: শিমোগা, উত্তর কান্নাড়া ও চিত্রদূর্গ প্রসিদ্ধ উত্তোলক অঞ্চল। এছাড়া বেলগাঁও, টুকুর, সান্দুর, চিকর্মাগালুর অন্যান্য উত্তোলন ক্ষেত্র।
• অস্ত্রপ্রদেশের আদিলাবাদ ও ভিজিয়ানাগ্রাম।
• গোয়ার সাংপুয়েম, তালুক।
• ঝাড়খণ্ডের সিংভূম জেলা।
• গুজরাটের পাঁচমহল ও ভাদোদরা-য় ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলিত হয়।
নিম্নে ভারতের প্রধান প্রধান রাজ্যভিত্তিক ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলনের পরিমাণ (২০১৫-১৬) দেওয়া হলঃ
► ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলন: ২০১৫-১৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতে মোট ২১-৪৭ লক্ষ টন ম্যাঙ্গানিজ উত্তোলিত হয়।
তামা বা তাম্র (Copper)
ভারত তাম্র সঞ্চয়ে সমৃদ্ধ নয়। ভারতে। তামার অল্প কয়েকটি খনি আছে মধ্যপ্রদেশের মালপ্তখণ্ড রাজস্থানের ক্ষেত্রী ও দরিবা, ঝাড়খণ্ডের রাকা, মোসাবানী, পাথরগোড়া, তামাপাহাড়, সুরদা ও সিকিমের রাংপো অঞ্চলে। ভারতে তামার সঞ্চয় প্রায় ১০৩ কোটি মেঃ টন। উদ্দ্বারযোগ্য সঞ্চয় মাত্র প্রায় ৪০ কোটি টন। ভারতে তামার উত্তোলন বর্তমানে হ্রাস পেয়েছে। ১৯৫০-৫১ খ্রিস্টাব্দে তামার উত্তোলন ছিল ৩-৭লক্ষ মেঃ টন। কিন্তু ২০১৩-১৪ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৩৮ হাজার টন আকরিক তামা উত্তোলিত হয় মূলতঃ মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান থেকে।
নিম্নে ভারতের প্রধান প্রধান রাজ্যভিত্তিক ম্যাল্যানিজ উত্তোলনের পরিমাণ (২০১৫-১৬) দেওয়া হল
অভ্র (Mica)
ভারতে ২০১১-১২ খ্রিস্টাব্দে ৮০৭ টন অভ্র উত্তোলিত হয়। এক সময় ভারত অভ্র উত্তোলনে পৃথিবীয়ে শ্রেষ্ঠ ছিল। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন অনেক হ্রাস পেয়েছে।
(১) অন্দ্রপ্রদেশঃ বর্তমান ভারতের শ্রেষ্ঠ অভ্র উত্তোলক রাজ্য। ২০১১-১২ খ্রিস্টাব্দে ৬৯৪ টন অভ উত্তোলিত হয়। এই রাজ্যের নেজোর জেলার কাভালি, আত্মাকুর, রাপুর ও গুড়ুর নামক স্থানে অভ্র খনি গড়ে উঠেছে।
(২) রাজস্থান: আজমীর, ভিলওয়ারা, জয়পুর ও উদয়পুর জেলায় অভ্র পাওয়া যায় (বর্তমানে দ্বিতীয় স্থান, ১১৩ হাজার টন, ২০১১-১২)।
পূর্বে ঝাড়খন্ডের কোডার্মা, ডোমচাচ, ধার, গাওয়ান, তিসারি প্রভৃতি খনি অঞ্চলে অভ্র উত্তোলিত হত। উচ্চ শ্রেণির অভ্র এখানে পাওয়া যেত। তবে বর্তমানে এই অঞ্চলের অনেক খনিই নিঃশেষ হবার ফলে পরিত্যক্ত হয়েছে এবং অভ্র উত্তোলন গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
বিহারে মুঙ্গের জেলার নওয়াদি, মহেতনা, চাকাই। গয়া জেলার রাজোলি, সিঙ্গার: ভাগলপুর জেলার মহেশপুর, ফুলবার-এ অভ্র উত্তোলিত হত। এক সময় এই সকল খনি থেকে প্রচুর অভ্র উত্তোলিত হত।