welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতে জনসংখ্যার গঠন(Population Structure of India)

ভারতে জনসংখ্যার গঠন(Population Structure of India)


ভারতে জনসংখ্যার গঠন নারী-পুরুষ অনুপাতে, বয়সভেদে, গ্রামীন ও পৌর জনসংখ্যাভেদে বিশেষত্ব রাখে। নিম্নে এগুলি পরিসংখ্যা সহ আলোচিত হ'ল:

ভারতে নারী-পুরুষ অনুপাতে জনসংখ্যার গঠন (Population Structure by Sex Ratio of Indian Population)

ভারতে নারী-পুরুষ অনুপাতে বৈষম্য রয়েছে। ১৯৯১ খ্রীষ্টাব্দে নারী সংখ্যা ছিল ৯২৭ প্রতি হাজার পুরুষে, ২০০১-এ তা বৃদ্ধি হয়ে হয় ৯৩৩ নারী প্রতি হাজার পুরুষে এবং ২০১১ আদমসুমারী অনুযায়ী তা সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৯৪০ নারী প্রতি হাজার পুরুষে। অথচ পূর্বে এরূপ ছিল না। ১৯০১ খ্রীষ্টাব্দের আদমসুমারীতে দেখা যায় নারী সংখ্যা যথেষ্ট বেশি, ৯৭২ নারী প্রতি হাজার পুরুষে। ১৯১১ সাল থেকে নারী সংখ্যা পুরুষ পিছু কমতে থাকলেও ১৯৯১ খ্রীষ্টাব্দে তা হয় সর্ব নিম্ন। রাজ্য গুলির মধ্যে সবচেয়ে কম হরিয়ানায় ৮৭৭ জন নারী প্রতি হাজার পুরুষে এবং সর্বাধিক নারীর সংখ্যা কেরালায় ১০৫৮ জন নারী প্রতি হাজার পুরুষে, নারী প্রতি হাজার পুরুষে। পশ্চিমবঙ্গে ৯৪৭ জন অতি অসামঞ্জস্যপূর্ণ নারী-পুরুষের অনুপাতের কারন হিসাবে বলা যায়, লিঙ্গ পরীক্ষা, ভ্রূণ হত্যা, নারী শিশু ও মায়ের পুষ্টিতে অবহেলা, টিকাকরণের অভাব ইত্যাদি দায়ী।

নারী পুরুষ অনুপাত এ দেখা যায় ২০১১ সালে ৯৪০ নারী হাজার পুরুষ পুরুষে নারী সংখ্যা ১৪০। পিছু অর্থাৎ প্রতি হাজার এটি সর্বনিম্ন ছিল ১৯৯১ সালে। প্রতি হাজার পুরুষে ৯২৭ জন নারী ছিল। নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি গ্রামাঞ্চলে নারীর ক্ষমতায়ণ ইত্যাদি কর্মসূচি প্রসারের এর ফলে সম্ভবত নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে আগের তুলনায়। ১৯৯১ সালে যেখানে ১২৭ জন নারী প্রতি হাজার পুরুষ ছিল, ২০০১ এ তা দাঁড়িয়েছে ৯৩৩ নারী প্রতি হাজার পুরুষে এবং ২০১১ সালে ১৪০ নারী প্রতি হাজার পুরুষে।

ভারতে নারী পুরুষ অনুপাত


বয়স ভিত্তিক জনসংখ্যার গঠন (Age Structure of Population):

বয়স ভিত্তিক জনসংখ্যার গঠনে দেখা যায় ২০১১ সালে সেন্সাস অনুযায়ী ০-১৪ বছর বয়স্কপ্রাপ্ত শিশুর সংখ ৫৩৩%। ১৫-৬০ বছর বয়স্ক জনসংখ্যা যারা শ্রম শক্তি সমর্থ হিসেবে বিবেচিত হন ৫৯.৪% এবং বরিষ্ঠ জনসংখ যা ৬০ বছরের উপরে যারা ৭.৬%। অর্থাৎ জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ শিশু যারা ১৪ বছরের নিচে এবং জনসংখ ‍্যার প্রায় পাঁচ ভাগের তিন ভাগ শ্রম শক্তি যোগানকারী জনসংখ্যা ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে। বয়স্ক জনসংখ্যা বা বরিষ্ঠ নাগরিকদের শতকরা হার ৭.৬। বরিষ্ঠ নাগরিকের সংখ্যা এবং শ্রম শক্তি জনসংখ্যা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০১ সালে ৫৫.৮ শতাংশ ১৫ থেকে ৬০ বছর বয়সের জনসংখ্যা ছিল, বর্তমানে তা ৫৯.৪ শতাংশ, ২০১১ সালের সেন্সাস অনুযায়ী। বয়স্ক নাগরিক ২০০১ এর সেন্সাস অনুযায়ী ৬.৯ শতাংশ এবং ২০১১ সালে সেন্সাস অনুযায়ী ৭.৬ শতাংশ। ২০০১ সালে ০ থেকে ১৪ বছর বয়স্ক যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক তাদের হার ছিল ৩৭.৩ শতাংশ ২০১১ সালে এই সংখ্যা কমে হয়েছে ৩৩ শতাংশ অর্থাৎ পরিবার কল্যাণ কর্মসূচি গ্রহণ করায় শিশু জনসংখ্যার হার কম হয়েছে এবং সামগ্রিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে।

বয়স ভিত্তিক জনসংখ্যার গঠন 


বয়ঃলিঙ্গভেদে উপরোক্ত জনসংখ্যা গঠনের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় পুরুষ ও নারী জনসংখ্যা বন্টনে ০-১৪ বয়: শ্রেণীতে পুরুষ জনসংখ্যা নারী জনসংখ্যার চেয়ে ১ শতাংশ বেশি। কিন্তু ১৫-৫৯ বয়: শ্রেণীতে আবার নারী জনসংখ্যা পুরুষ জনসংখ্যার চেয়ে ০.৬% বেশি। ৬০-এর উর্ধ্ব শ্রেণীতেও নারী জনসংখ্যা পুরুষ জনসংখ্যার চেয়ে ০.৬% বেশি। বয়ঃলিঙ্গভেদে গঠন থেকে আরো জানা যায় যে অপ্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যা (০-১৪) ভারতে যথেষ্ট বেশি (২৮.২%), অর্থাৎ প্রতি ১০ জনে প্রায় ৩ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক। এটি দেশের উচ্চ প্রজণন হার (High fertility rate) নির্দেশ করে যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি হওয়ার কারণ।

গ্রাম ও শহরের বয়ঃলিঙ্গভেদে জনসংখ্যা তুলনা করলে দেখা যায় ০-১৪ বয়: শ্রেণীতে গ্রামে (২৯.২%) জনসংখ্যার শতকরা হার শহরের (২৪.৩%) তুলনায় অনেকটাই বেশি (প্রায় ৫%)। শহরে পরিবার কল্যান বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবার পিছু সন্তানসংখ্যা কম হওয়াই এর কারণ। কিন্তু গ্রামে পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী ততটা সফল হয়নি। তবে বর্তমানে গ্রামেও চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নতি হওয়ায় গ্রাম ও শহরের ৬০ ঊর্ধ্ব জনসংখ্যার শতকরা হার প্রায় একই। মোট জনসংখ্যার হার গ্রাম ও শহর উভয় ক্ষেত্রেই ০-১৪ বয়ঃশ্রেণীতে পুরুষ জনসংখ্যা নারী জনসংখ্যার চেয়ে সামান্য বেশি। গ্রাম ও শহরে এখনো পুরুষ প্রাধান্য মানসিকতায় পুরুষ শিশুর প্রতি অধিক আগ্রহ ও যত্ন করার দিকটিরই ইংগিতবাহী।

গ্রামীণ ও পৌর জনসংখ্যাভেদে গঠন (Structure of Rural-Urban Population)

গ্রামীণ ও পৌর জনসংখ্যার অনুপাতে দেখা যায় ২০১১ সালে পৌর জনসংখ্যার পরিমাণ ৩১.১৬ শতাংশ এবং গ্রামীণ জনসংখ্যা ৬৮.৮৪ শতাংশ। ২০০১ সালে গ্রামীণ জনসংখ্যা ছিল ৭২.২% এবং পৌর জনসংখ্যা ২৭.৮ শতাংশ। অর্থাৎ নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে পৌর জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটছে। ১৯৯১ সালে ২৫.৭ শতাংশ পৌর জনসংখ্যা থেকে ২০১১ সালে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৩১.১৬ শতাংশ। গ্রামীণ জনসংখ্যার ১৯৯১ সালে ৭৪.৩ শতাংশ থেকে কমে ২০১১ সালে হয়েছে ৬৮.৮৪ শতাংশ। দেশে পৌরায়ণ বা নগরায়ণ যে বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা তার প্রমান।



ভারতের গ্রামীন ও পৌর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের চিত্র থেকে বোঝা যায় গ্রামীন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার পৌর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের থেকে অনেক বেশি। গ্রামীন নিরক্ষরতা, দারিদ্র, পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচী সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে গ্রামীন জনসংখ্যা বৃদ্ধি অনেক বেশি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01