welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য (Population related information)

জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য (Population related information)


ভূমিকা (Introduction):

কোনো দেশে বসবাসকারী লোকজনকে ওই দেশের জনসংখ্যা (population) বলা হয়। জনসংখ্যা ধারণাটি অত্যন্ত গতিশীল চরিত্রের। কারণ স্থান ও কালভেদে যে-কোনো দেশের জনসংখ্যার পরিবর্তন কিংবা বিবর্তন ঘটে। সুপ্রাচীন কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যায় বৈশিষ্ট্যগুলির পরিবর্তন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। ফলে জনসংখ্যা সম্পর্কে সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে বিশেষ করে যাঁরা জনসংখ্যা বিষয়ে গবেষণায় নিয়োজিত আছেন তাঁরা জনসংখ্যাকে বিভিন্ন পরিসংখ্যানগত দিক থেকে ও তাত্ত্বিক দিক থেকে বিশ্লেষণ করে থাকেন

জনসংখ্যাবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে জনসংখ্যা বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যগুলি হল:

(1) জনসংখ্যার গঠনবিন্যাস, স্ত্রী-পুরুষ অনুপাত, বয়স ভিত্তিক লিঙ্গ-অনুপাত প্রভৃতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা অর্জন করা।

(ii) জন্মহার, মৃত্যুহার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার, পরিব্রাজন হার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করা: নির্ভরশীলতার অনুপাত নির্ণয় করা। জনসংখ্যা ও সম্পদের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ ইত্যাদি হল জনসংখ্যা বিশ্লেষণের উদ্দেশ্য।

(iii) ভবিষ্যতে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে কত হতে পারে, জনসংখ্যা সংক্রান্ত নীতি কী হওয়া উচিত, মানবসম্পদের উন্নয়ন কীভাবে ঘটানো যেতে পারে প্রভৃতি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের তথ্য কাছে থাকা জরুরি।

(iv) জনসংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কীভাবে দেশে সম্পদের সুষম বণ্টন ঘটানো যাবে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য (Basic sources of population data):

জনসংখ্যা সংক্রান্ত এসব বিভিন্ন তথ্য বা পরিসংখ্যান আমরা বিভিন্ন উপায়ে পেতে পারি। পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য গ্রহণের বিভিন্ন পলতি প্রচলিত আছে। তবে অনুন্নত দেশগুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনসংখ্যা সম্পর্কিত তথ্য সঠিকভাবে নথিভুক্ত রাখা হয় না। কিন্তু ব্রিটেন, কানাডা, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এই সমস্ত দেশে জনসংখ্যা সংক্রান্ত নিখুঁত তথ্য এবং বহু বিচিত্র ধরনের তথ্য নথিভুক্ত রাখে। ফলে জনসংখ্যার বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণে সুবিধা হয়।

জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্যের প্রধান উৎসগুলি হল:

(a) আদমশুমারি (Census),

(b) নমুনা সমীক্ষা (Sample Survey).

(c) রেজিস্ট্রেশন বা নথিবদ্ধকরণ (Registration),

(d) প্রাথমিক পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করা (Recording of basic data)।

আদমশুমারি (Census): 'Census' কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল 'দেশের লোকগণনা' বা 'আদমশুমারি'। জনসংখ্যাবিজ্ঞানীগণ জনসংখ্যা সংক্রান্ত যে-কোনো তথ্য জানার জন্য 'Census' ব্যবহার করেন।

প্রাচীন কালে জনগণনার কাজ মিশর, ব্যাবিলন, চিন, প্যালেস্টাইন এবং রোমে শুরু হয়েছিল। চিন, প্যালেস্টাইন এসব দেশেও বিভিন্ন পদ্ধতিতে জনগণন্য করা হত। অতীত কালে বিভিন্ন দেশের জনগণনার ক্ষেত্রে গৃহসংখ্যা, স্ত্রী-পুরুষ জনসংখ্যা, সৈন্যবাহিনীতে নিযুক্ত ব্যক্তির সংখ্যা, প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক, করদাতাদের সংখ্যা নির্ণয় করা হত। অনেক দেশে স্ত্রী এবং শিশু জনসংখ্যাকে জনগণনার অন্তর্ভুক্ত করা হত না।

রোম দেশে প্রতি 5 বছর অন্তর জনগণনা করা হত। ইংল্যান্ডে প্রথম উইলিয়াম (William I) ছিলেন প্রথম শাসক যিনি জনগণনার কাজে তাঁর কর্মচারীদের নিয়োগ করেছিলেন। মধ্যযুগে জনগণনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন অসুবিধা দেখা দেয়। ফলে এই সময় ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং এশিয়ার দেশগুলিতে জনগণনার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।

জনগণনার আধুনিক পর্বের অনেক পরে সূচনা ঘটে। এই সময় জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য, তথ্যগুলিকে বিশ্লেষণ এবং লিখিত আকারে প্রকাশের মাধ্যমে একটি সম্পূর্ণ জনগণনা (complete census) লিপিবন্ধ করা হয়। সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে ইটালি ও জার্মানির প্রদেশগুলিতে অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে জনগণনা শুরু হয়। 1790 খ্রিস্টাব্দ থেকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ধারাবাহিকভাবে জনগণনা করা হতে থাকে।

ভারতে জনগণনার কাজ শুরু হয় ঊনবিংশ শতকের মাঝপর্বে। 1865 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে, 1871 খ্রিস্টাব্দে ভারতে জনগণনা শুরু হবে। 1865 খ্রিস্টাব্দে জনগণনার জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি এবং প্রশ্ন তৈরি করা হয়। 1881 খ্রিস্টাব্দের জনগণনা (census) ছিল ভারতের প্রথম পূর্ণাঙ্গ জনগণনা। এই সময় থেকে প্রতি 10 বছর অন্তর ভারতে জনসংখ্যা গণনা হয়ে আসছে। এই আদমশুমারি থেকে মোট জনসংখ্যা, জনসংখ্যার গ্রামীণ ও শহরে বণ্টন, লিঙ্গ-ভিত্তিক বণ্টন, বয়স ভিত্তিক বণ্টন, সাক্ষরতার হার, ধর্মীয় বণ্টন, পেশা এবং পরিব্রাজন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

1981 খ্রিস্টাব্দের জনগণনায় ভারতের জনগণের পেশাভিত্তিক গঠনকাঠামো বিশ্লেষণ কালে 'Marginal worker' সম্পর্কে ধারণা দেয়। প্রত্যেক গ্রাম এবং শহরের জনগণনার তথ্য বিশদভাবে নথিভুক্ত করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশগুলির মধ্যে ভারতীয় আদমশুমারি ব্যবস্থা অত্যন্ত বিজ্ঞানভিত্তিক এবং আধুনিক রূপ পেয়েছে। 2001 খ্রিস্টাব্দের জনগণনার তত্ত্ব কম্পিউটারের মাধ্যমে লিপিবন্ধ করে বিভিন্ন CD. আকারে প্রকাশিত হয়েছে। 2011 খ্রিস্টাব্দের (15 তম জনগণনা) জনগণনার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে

জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা(Advantages and disadvantages of using population data):


জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে পাই। এই উৎসগুলি হল- আদমশুমারি (Census), নমুনা সমীক্ষা (Sample Survey), নথিবদ্ধকরণ (Registration) এবং প্রাথমিক পরিসংখ্যান (Recording of basic data)।

এসব উৎস থেকে জনসংখ্যা সংক্রান্ত যেসব তথ্য পাওয়া যায় তা বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক রাজনৈতিক পরিকল্পনা রূপায়ণে ব্যবহৃত হয়। এসব তথ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুবিধা যেমন আছে, তেমটি নানা ধরনের অসুবিধাও দেখা দেয়।

সুবিধা (Advantages):

(i) কোনো দেশের মোট জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব এবং আয়তন (কার্যকর জমির পরিমাণ) জানা থাকলে মানুষ-জমি অনুপাত (Man-land ratio) নির্ধারণ করা সম্ভব। মানুষ-জমির অনুপাতের সাহায্যেই কোনো দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির চিত্র স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। মোট জনসংখ্যা কিংবা জনঘনত্ব Census থেকে কিংবা অন্যান্য উৎস থেকে সঠিকভাবে জানা যায়।

(ii) সামাজিক ক্ষেত্রে মোট জনসংখ্যা, পুরুষ-নারী অনুপাত, বিভিন্ন বয়স গ্রুপের মানুষের সংখ্যা, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বিভিন্ন উৎস থেকে জানা যায়। এরপর এই তথ্যগুলি সামাজিক উন্নয়নমূলক পরিকল্পনাকালে। এবং রূপায়ণের সময় কাজে লাগানো হয়।

(iii) জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের সঙ্গেঙ্গ সামঞ্জস্য রেখে কীভাবে খাদ্যের জোগান দেওয়া যাবে সে সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা সরকারি পরিকল্পনাতে উল্লেখ করা হয়।

(iv) কোনো দ্রব্যের কিংবা পণ্যের বাজার কত বড়ো, ওইসব পণ্যের বাজারদরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পন্যের চাহিদা ও জোগান ঠিক রাখার পরিকল্পনা করা সম্ভব হয়।

(v) কোনো দেশের জন্মহার, মৃত্যুহার, জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি প্রভৃতি সংক্রান্ত তথ্য ব্যবহার করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা রূপায়ণের সুবিধা পাওয়া যায়। এর ফলে সঠিক অর্থনৈতিক কর্মসূচি সরকারি ও বেসরকারিভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও উন্নয়নমূলক কর্মসূচি জনসংখ্যা তথ্যের ওপর নির্ভর করে গড়ে তোলা হয়।

(vi) বেকারত্বের সমস্যা সমাধানে census থেকে বিভিন্ন কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তির সংখ্যা জানা যায়। কত শতাংশ ব্যক্তি বেকার আছে তাও আমরা জানতে পারি। সুতরাং কত শতাংশ মানুষের আরও কর্মসংস্থান করতে হবে তা জানতে এই সংক্রান্ত পরিসংখ্যান জানা আবশ্যক।

(vii) বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় সরকারের কর্মসূচি তৈরি করা হয় আগামী পাঁচ কিংবা দশ বছরে দেশের জনসংখ্যা কত হবে তার ওপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ (নথি) জনসমীক্ষার রিপোর্ট, পর্যালোচনা করা এবং ওই তথ্য ব্যবহার করে দেশ ও সমাজের উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে হবে। সুতরাং জনসংখ্যা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ব্যবহার আমাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে।

অসুবিধা (Disadvantages):

Population Statistics বা জনসংখ্যা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান বা তথ্য ব্যবহারের অসুবিধাও আছে।

(i) এই পরিসংখ্যান সর্বদা সঠিক হয় না। পরিসংখ্যান সর্বদা সমানভাবে ব্যবহার করাও যায় না। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো দেশের জনগণনা সংক্রান্ত বিষয়ে একই তথ্য একাধিকবার ব্যবহৃত হয়েছে। গৃহভিত্তিক সার্ভে করার সময় অনেকসময় সঠিক তথ্য পরিবেশিত হয় না। জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ প্রভৃতি রেজিস্ট্রেশন সর্বদা করা হয় না। ফলে এই সব তথ্যে কিছুটা ফাঁক থেকে যায়।

(ii) পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশেও আদমশুমারির পরিসংখ্যানে ধারাবাহিকতা দেখা যায় না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, 1941 খ্রিস্টাব্দে গ্রেট ব্রিটেনে আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়নি। ফ্রান্সে বিশ্বযুদ্ধের পর অনিয়মিতভাবে আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হতে থাকে। রাশিয়াতেও অনিয়মিতভাবে জনগণনা করা হয়েছিল। ভারতে 2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনার কাজ শেষ হলেও 2012 খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসেও সরকারিভাবে বিস্তারিত জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে সমাজবিজ্ঞানী ও অন্যান্য গবেষকদের কাজে ব্যাঘাত ঘটে। অনিয়মিত জনগণনা করলে একই সময়ের পরিপ্রেক্ষিত বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যার তুলনা করা অসুবিধাজনক হয়ে পড়ে।

(iii) বিভিন্ন দেশের জনসংখ্যা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান একই পদ্ধতিতে নেওয়া হয় না। এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আঞ্চলিক বণ্টনের তারতম্য সর্বদা লক্ষ্যনীয়। ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যে এটাই প্রচলিত নিয়ম আছে যে, জনগণনা করার সময় কোনো ব্যক্তি যে স্থানে বসবাস করেন, তাকে ওই স্থানের বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো ব্যক্তির প্রকৃত বাসভূমিকে তার বাসভূমির বাসিন্দা হিসেবে ধরা হয়েছে।

জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সর্বদা up to date পাওয়া যায় না। আবার পৃথিবীর সব দেশেই জনসংখ্যার নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না।

নমুনা সমীক্ষা (Sample Survey): কোনো দেশের জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি হল নমুনা সমীক্ষা (Sample Survey)। নমুনা সমীক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের করা হয়। তাঁদের দেওয়া উত্তর থেকে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। বহু সরকারি কর্মীদের সুনির্দিষ্ট ট্রেনিং দিয়ে নমুনা সমীক্ষার কাজে নিয়োগ করা হয়।

এই সমীক্ষার মাধ্যমে জন্ম, মৃত্যু, জন্মহার, মৃত্যুহার, জনগণের গতিশীলতা, বেকারত্ব, স্বাস্থ্য, শিক্ষা প্রভৃতি সম্পর্কে তথ্য সংগৃহীত হয়। 1950 খ্রিস্টাব্দে ভারতে 'National Sample Survey Organisation প্রতিষ্ঠিত হয়। এই সংগঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য হল আর্থসামাজিক পরিসংখ্যান, জনসংখ্যা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান সমগ্র দেশ জুড়ে সংগ্রহ করা।

নথিবদ্ধকরণ (Registration): জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নথিবদ্ধকরণের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংকলন করা হয়। যেমন জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ, কর্মে নিযুক্তি, দত্তক গ্রহণ, বিবাহ-বিচ্ছেদ বিষয়গুলি প্রভৃতি সরকারি অফিসে নথিবদ্ধ করতে হয়। নিয়মিত 'Census' চালু হওয়ার আগে থেকেই এই পদ্ধতি প্রচলন ছিল।

চিনদেশের Registration পদ্ধতি (Koseki or Household registers) পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ গ্রহণ করেছে। জাপান, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে। United Nations (1955 খ্রি:)-এর 'Hand book of Vital Statistics Methods' গ্রন্থে এই রকম জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নথিভুক্ত করা আছে।

প্রাথমিক পরিসংখ্যান সংরক্ষণ করা (Recording of Basic Data): জনসংখ্যা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য পূর্ব উল্লিখিত তিনটি পদ্ধতি ছাড়াও অন্যান্য উৎস কিংবা সংগৃহীত প্রাথমিক পরিসংখ্যান আমরা ব্যবহার করতে পারি। পরিব্রাজন রিপোর্ট, ভাষাগত রিপোর্ট, জনসংখ্যা সংক্রান্ত সমীক্ষাপত্র প্রভৃতি থেকেও জনসংখ্যা ভূগোলবিদগণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। পৃথিবীর প্রায় সমস্ত উন্নত দেশগুলিতে পরিব্রাজন সংক্রান্ত তথ্য ধারাবাহিকভাবে রেকর্ড করে রাখা হয়। প্রাচীন কালে চিনের 'Pass Book System'-এ চিনের প্রতিটি পরিবারের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য লিপিবদ্ধ করা হত। এই তথ্যই Macro Level-এ ব্যবহৃত হত। ভারতেও ব্রিটিশরা জনসংখ্যা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতির প্রচলন করেছিল। সাম্প্রতিক কালে United Nations জনসংখ্যা সংক্রান্ত গৌণ তথ্য (Secondary data) সরবরাহ করে থাকে। 1948 খ্রিস্টাব্দ থেকে ধারাবাহিকভাবে 'The Demographic Year book' প্রকাশিত হচ্ছে। এ ছাড়া Monthly Bulletin of Statistics 1947 খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। এভাবে জনসংখ্যা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01