জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার (Population Growth Rate)
কোনো দেশের মানুষের জন্মহার ও মৃত্যুহারের পার্থক্যকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বলা হয়। P-PXC
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার (Growth Rate) =
যেখানে P_{z} = বর্তমান জনসংখ্যা।
P_{1} = পূর্ববর্তী বছরের জনসংখ্যা।
C = 1 ধ্রুবক (Constant) |
উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি 2001 খ্রিস্টাব্দে ভারতের জনসংখ্যা ছিল 102,75,15.241 ।
2011 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে ভারতের জনসংখ্যা 121,01,93,422 জন। এই 10 বছরে ভাড় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হবে।
উদাহরণ:
(1210193422 - 1027515247)/1210193422 * 100 = 182678175/1210193422 * 100 = 15.09%
10 বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির শতকরা হার 15.09% ১.
প্রতি বছরে গড়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে (15.09% + 10) = 1.509%
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নির্ধারণের দ্বিতীয় সূত্রটি হল
জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার = (মোট জনসংখ্যা মৃত্যুসংখ্যা) (কোনো স্থানে লোকজন এসে বসা করা নিজের দেশ ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাওয়া)।
জন্মহার (Birth Rate):
প্রতি 1000 জন জনসংখ্যা পিছু যতজন শিশুর জন্ম হয়, তাকে জন্মহার বলা হয়। একে স্থূল জন্মহারা বলা হয়।
স্থূল জন্মহার (Crude Birth Rate) = এক বছরে জন্মলাভ করেছে যত জীবিত শিশু বছরের মধ্যবর্তী সময়ে দেশের জনসংখ্যা x1000
উদাহরণ: ধরা যাক, কোন শহরে 3550 জন, জীবিত শিশু এক বছরে জন্মগ্রহণ করেছে। বছরে মধ্যবর্তী সময়ে ওই শহরের জনসংখ্যা ছিল 35500 জন।
সুতরাং ঐ শহরের স্কুল জন্মহার হবে- 3550/30500 * 1000 = 116 জন প্রতি হাজার।
এই পদ্ধতিতে খুব সহজেই কোনো দেশের শিশুর জন্মহার নির্ণয় করা যায়। কিন্তু সবচেয়ে বড়ো অসুবিধ হল এই যে, মোট জনসংখ্যাতে অন্তর্ভুক্ত হয় বলে সন্তান জন্ম দিতে পারে না এমন নারী-পুরুষও এর অন্তর্গত হয় বলে সঠিক জন্মহার পাওয়া যায় না।
জন্মহার বিভিন্নভাবে নির্ণয় করা যায়।
(a) সাধারণ প্রজনন হার (General Fertility Rate): কোনো দেশে প্রতি বছরে প্রতি 1000 জন 15 থেকে 49 বছরের নারী যতজন জীবিত শিশুর জন্ম দেয়, তাকে সাধারণ প্রজনন হার বলা হয়।
সাধারণ প্রজনন হার = প্রতি বছরে জন্মগ্রহণকারী জীবিত শিশুর সংখ্যা 15-49 বছরের সন্তানধারণে সক্ষম নারী সংখ্যা x1000
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, কোলকাতা শহরে কোন বছরে 15-49 বছরের বয়স গ্রুপের মহিলাগণ 2000 জন জীবিত শিশুর জন্ম দিয়েছেন, ওই বয়স শ্রেণির অন্তর্গত সন্তান ধারণে সক্ষম নারীর সংখ্যা 1500 জন।
সুতরাং সাধারণ প্রজনন হার হবে- 1500 = 1333 জন প্রতি হাজার।
(b) প্রজনন অনুপাত (Fertility Ratio): কোনো দেশে জনগণনা বছরের প্রতি 1000 জন জনসংখ্যা 15-49 বছরের সন্তান জন্মদানে সক্ষম মহিলার সংখ্যা এবং 5 বছরের কম জীবিত শিশুর সংখ্যার অনুপাত হল প্রজনন অনুপাত (Fertility Ratio)। একে আমরা শিশু-নারীর অনুপাতও বলে থাকি।
প্রজনন অনুপাত= পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশু সংখ্যা 15-49 বছরের সন্তানধারণে সক্ষম মহিলার সংখ্যা -x1000
উদাহরণ: কোন শহরে কোন বছরে পাঁচ বছরের কম জীবিত শিশুর সংখ্যা ছিল 12000 জন। ওই শহরে 15-49 বছরের সন্তান ধারণে সক্ষম মহিলার সংখ্যা ৪000 জন।
সুতরাং প্রজনন অনুপাত হবে-
12000x1000 8000
= 1500 জন প্রতি হাজার।
(c) মোট প্রজনন হার (Total Fertility Rate): সারা জীবনে বিভিন্ন বয়সের মহিলাগণ মাথাপিছু গড়ে যতজন শিশুর জন্ম দেন তাকে মোট প্রজনন হার (Total Fertility Rate) বলা হয়।
মোট প্রজনন হার = মাথাপিছু গড়ে জন্মদানকারী মোট শিশুসংখ্যা 15-49 বছরের মহিলা সংখ্যা ×1000
×1000
উদাহরণ: কোন একটি রাজ্যে কোন বছরে মহিলা প্রতি গড়ে জন শিশু জন্ম দিয়েছেন। ঐ বছরে মহিলার সংখ্যা 5000001
সুতরাং প্রজনন অনুপাত= 3 500000 x1000
= 60 জন প্রতি হাজার।
(d) বয়স অনুসারে জন্মহার (Age Specific Birth Rate): কোনো দেশে বিভিন্ন বয়স গ্রুপের মহিলাগণ (যেমন 15-20 বছর, 20-25 বছর ইত্যাদি) মাথাপিছু গড়ে যতজন শিশুর জন্ম দেন তাকে বয়স অনুসারে জন্মহার (Age Specific Birth Rate) বলা হয়।
বয়স অনুসারে জন্মহার = 20-25 বছরের মহিলা যত সংখ্যক শিশুর জন্ম দিয়েছেন 20-25 বছরের মহিলা সংখ্যা x1000
উদাহরণ: কোন শহরে কোন বছরে 20-25 বছরের মহিলা 30000 জন শিশু জন্ম দিয়েছে।
শহরে 20-25 বছরের মহিলার সংখ্যা 700001
সুতরাং বয়স অনুসারে জন্মহার হবে- 700000
428.5 জন প্রতি হাজার
(e) প্রামাণ্য জন্মহার (Standardise Birth Rate): কোনো দেশে বিভিন্ন বয়সের মায়েরা প্র বছর যতসংখ্যক সম্ভাব্য শিশুর জন্ম দেন তাকে ওই অঞ্চলের মোট জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়। ও সম্ভাব্য জন্মলাভকারী শিশুসংখ্যা এবং মোট জনসংখ্যার অনুপাত হল প্রামাণ্য জন্মহার।
গ্রামাণ্য জন্মহার = বিভিন্ন বয়স গ্রুপের মায়েরা যতজন সম্ভাব্য শিশুর জন্ম দেন মোট জনসংখ্যা ×1000
কোন বছরে কোন শহরে বিভিন্ন বয়স গ্রুপের মাতাগণ 30000 জন সম্ভাব্য শিশুর জন্ম দেন। শহরের মোট জনসংখ্যা 100000 জন।
অতএব প্রামাণ্য জন্মহার হবে- 100000 30 জন প্রতি হাজার।
(f) সংজনন হার (Reproduction Rate): কোনো দেশে কোনো একটি নির্দিষ্ট বছরে মোট জন কন্যা সন্তান জন্মলাভ করে সেই সংখ্যা এবং 15 থেকে 49 বছারের সন্তান সাধারণে সক্ষম মোট মত সংখ্যায় অনুপাতকে সংজনন হার (Reproduction Rate) বলে।
সংজনন হার নির্দিষ্ট বছরে জন্মলাভকারী কন্যা সন্তানের সংখ্যা 15-49 বছরের সন্তানধারনে সক্ষম মহিলা সংখ্যা ×1000
কোন একটি শহরে কোন বছর 5000 জন কন্যা সন্তান জন্ম নিল। ওই 15-49 বছর বছর বয়স সন্তান ধারণে সক্ষম মহিলা সংখ্যা 20000 জন।
সুতরাং সংজনন হার হবে-
5000 20000 ×100 জন 25 জন প্রতি হাজার।
(g) নীটসংজনন হার (Net Reproduction Rate): কোনো দেশে 15-49 বছর বয়সী মায়েদে জীবিত প্রজননক্ষম কন্যাসন্তানের সংখ্যা এবং 15-49 বছরের মায়েদের সংখ্যার অনুপাতকে বলা হয় নীটসংজন হার (Net Reproduction Rate) বলে।
নীট সংজনন হার = 15-49 বছরের মায়েদের জীবিত প্রজননক্ষম কন্যা সন্তানের সংখ্যা ×1000 15-49 বছরের মায়েদের সংখ্যা
উদাহরণ: কোন শহরে 15-49 বছর বয়সী মায়েদের জীবিত প্রজননক্ষম কন্যা সন্তানের সংখ্যা 300 জন। 15-49 বছরের মায়েদের সংখ্যা 80000 জন।
অতএব নীট সংজনন হার হবে-
80000
- 37.5 জন প্রতি হাজার।
■ স্থিতিশীল জনসংখ্যা (Stable Population): কোন দেশের মানুষের জন্মহার ও মৃত্যুহার যদি সমান হয় কিংবা জন্ম ও মৃত্যুহারের পার্থক্য খুব কম হয়, তখন ঐ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় না। আবার হ্রাসও পায় না। একে স্থিতিশীল জনসংখ্যা বলা হয়।
আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতির মানের উন্নতি, অধিক বয়সে বিবাহ, সমাজ সচেতনতা প্রভৃতির মাধ্যমে সুস্থির জনসংখ্যা গঠিত হয়। এই পর্যায়ে জন্ম ও মৃত্যুহার দুটোই নিম্নমুখী হয়। জনসংখ্যা খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। জনপ্রতি উৎপাদন এবং আয় বৃদ্ধিপায়। শহরকেন্দ্রিক সভ্যতার বিকাশ ঘটে। উন্নত অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি হয়। উদাহরণ- রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, সুইডেন, ডেনমার্ক প্রভৃতি দেশে জনসংখ্যা স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। এইসব দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১% এর নীচে।
■ মরণশীলতা (Mortality):
জন্ম এবং মৃত্যু মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ অংশ। মানুষ মাত্রই মরণশীল। মানুষের মধ্যে জীবনের কোনোরকম প্রমাণ না থাকলে তাকে মৃত বলে গণ্য করা হয়। জন্মের পর শিশু অবস্থা থেকে যে কোনো অবস্থায় মানুষের মৃত্যুকে মরণশীলতা বলা হয়।
■ গুরুত্ব (Importance): প্রজনন, পরিব্রাজন প্রভৃতির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হল মরণশীলতা। কারণ জনসংখ্যার গঠন কাঠামাকে মরণশীলতা প্রভাবিত করে। কোনো দেশের জনসংখ্যার বৃদ্ধি ও গতি- প্রকৃতির সঙ্গে এই ধারণাটির আন্তঃসম্পর্ক লক্ষণীয়। কারণ আর্থসামাজিক পরিকাঠামোর ওপর এবং জীবনযাত্রার মানের ওপর মরণশীলতার হার নির্ভর করে। এমনকি মানুষের পুষ্টি, স্বাস্থ্য প্রভৃতিও তার সঙ্গে যুক্ত আছে। মরণশীলতা সম্পর্কে ধারণা প্রতিটি দেশে সমানভাবে প্রযোজ্য হয় না।
■ মৃত্যুর কারণ (Causes of Death): রাষ্ট্রসংঘের 'Principle of Vital Statistics System'নিবন্ধে মরণশীলতা সম্পর্কে যে ধারণা দেওয়া হয়েছে, সেখানে মৃত্যুর জন্য নিম্নলিখিত কারণগুলিকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে-
(1) প্রথম শ্রেণির মৃত্যুর কারণ: মহামারি, ফুসফসের অসুখ, দেহে পরজীবীর বসবাস ঘটিত রোগে মৃত্যু।
(ii) দ্বিতীয় শ্রেণির মৃত্যুর কারণ: মারণব্যাধি Aids, ক্যানসার প্রভৃতি কারণে মৃত্যু।
(iii) তৃতীয় শ্রেণির মৃত্যুর কারণ রক্তনালির অসুখ, শ্বাসনালির রোগ প্রভৃতি কারণে মৃত্যু।
(iv) চতুর্থ শ্রেণির মৃত্যুর কারণ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, খুন প্রভৃতি কারণে মৃত্যু।
(v) পঞ্চম শ্রেণির মৃত্যুর কারণ বিভিন্ন ধরনের শিশুরোগ, লিভারের রোগে মৃত্যু।
■ মৃত্যুহার (Death Rate): কোনো দেশে কিংবা যে-কোনো অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মৃত্যু হারও সম্পর্কিত আছে। জন্মহার ও মৃত্যুহারের পার্থক্য যত বৃদ্ধি পাবে জনসংখ্যার হ্রাসবৃদ্ধিও তত বেশি হয়।
মৃত্যুহারকে প্রধানত তিনভাবে পরিমাপ করা সম্ভব। যেমন-
(a) অশোধিত মৃত্যুহার (Crude Death Rate),
(b) বয়স বিশেষিত মৃত্যুহার (Age Specific Death Rate) এবং
(c) শিশু মৃত্যুহার (Child Mortality Rate)
■ অশোধিত মৃত্যুহার (Carde Death Rate): কোনো নির্দিষ্ট বয়তে কোনো উচ্ছিন যে পরিমাণ লোকের মৃত্যু ঘটে এবং সেই স্থানে বছরের মধ্যবর্তী মোট জনসংখ্যার অনুপাত হল অনন্ত মৃত্যুহার। এই হারকে আমরা শতকরা অথবা হাজারে প্রকাশ করি।
■ বয়স বিশেষিত মৃত্যুহার (Age Specific Death Rate): কোনো দেশের বা অথচ বিভিন্ন বয়স শ্রেণির মানুষের মধ্যে যে মৃত্যুহার দেখা যায়, তাকে বয়স বিশেষিত মৃত্যুহার মোট জনসংখ্যাকে বিভিন্ন বয়স শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এরপর ওই প্রত্যেকটি বয়াস শ্রেণিতে মৃয়াস এবং ওই বয়স শ্রেণির মোট জনসংখ্যার অনুপাতই হল বয়স বিশেষিত মৃত্যুহার (Age Specific Rate)
বয়স বিশেষিত মৃত্যুর হার কোনো নির্দিষ্ট বয়স শ্রেণিতে মানুষের মৃত্যুসংখ্যা ওই নির্দিষ্ট বয়স শ্রেণির মোট জনসংখ্যা ×1000
• শিশু মৃত্যুহার (Child Mortality Rate): কোনো দেশে মোট জন্মানো শিশুর সাপেছে। সংখ্যক শিশুর মৃত্যু ঘটে, তাকে শিশু মৃত্যুর হার বলে ধরা হয়। অর্থাৎ, বছরে জন্মানো দিন সংখ্যা এবং মৃত্যু ঘটেছে এমন শিশুর সংখ্যাগত অনুপাত হল শিশুমৃত্যুর হার। এ বছর বয়স পর শিশুমৃত্যুর হার এবং সদ্যোজাত শিশুমৃত্যুর হার-এই সু'ধরনের শিশুমৃত্যুর হার আমরা পরিমাণ বা থাকি।
• সাম্প্রতিক মৃত্যুহার হ্রাসের কারণ: বিগত দশকের তুলনায় অতি সম্প্রতি মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে এই মৃত্যুহার উন্নয়নশীল এবং অনুন্নাত দেশগুলিতে অনেক বেশি। কিন্তু সেই তুলনায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলির মৃত্যুহার অনেক কম। মৃত্যুর হার হ্রাসের কারণগুলি হল-
(i) চিকিৎসাশাস্ত্রে উন্নতি: বর্তমানে চিকিৎসাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটেছে। এর ফলে অনে জটিল ও মারণরোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। নিয়মিত গবেষণার দ্বারা ক্যাম্প এবং হূৎপিণ্ডের জটিল অসুখ নিরাময় করা যাচ্ছে। এর ফলে পূর্ববর্তী দশকের তুলনায় অতি সম্প্রী মৃত্যুহার কিছুটা কমেছে।
(ii) স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি: বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্নদেশের সরকারী ও বেসরকারী সংস গুলির নিরলস প্রচেষ্টা ও প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণের মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে ফলে আগের তুলনায় মানুষের জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সম্ভাবনা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
(iii) নারী শিক্ষার বিস্তার: নারী শিক্ষার প্রসারের ফলে মেয়েদের আগের তুলনায় অনেক বেশি বয়সে বিবাহ হয়। কিন্তু খুব অল্প বয়সে বিবাহের ফলে তাদের স্বাস্থ্যহানি ঘটত। ফলে নানারকম রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেত। নারী শিক্ষার প্রসার ও নারীকল্যাণের জন্য বর্তমানে মেয়েদের মৃত্যুহার অনেক কমে গেছে।
(iv) সরকারী উদ্যোগ: বিভিন্ন দেশের সরকার মানুষের মৃত্যুহার কমানোর জন্য স্বাস্থ্যখাতে আর্থিক বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। ফলে স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে।
(v) দারিদ্র্য ও অপুষ্টি দূরীকরণ: অনুন্নত দেশগুলিতে দারিদ্র্য দূরিকরণ কর্মসূচী রূপায়নের উ এইসব দেশে অপুষ্টি এবং তার প্রভাবে রোগের প্রাদুর্ভাব কমেছে। স্বাস্থ্য ও পুষ্টির উন্নতির জন্য মৃত্যুহার হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে। ভারত সরকার শহরে এবং গ্রামে দারিদ্র্য দূরিকরণ কর্মসূচী রূপায়ন করেছে।
(vi) মুমূর্ষু অবস্থা (Morbidity Condition):
দীর্ঘকাল ধরে কোনো ব্যক্তি যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ থাকেন এবং এই অবস্থায় প্রায় মৃত্যুমুখে এসেও বেঁচে থাকেন সেই অবস্থাকে মুমূর্ষ অবস্থা বলা হয়।
দূরারোগ্য বিভিন্ন অসুখ, যেমন- ক্যান্সার, জটিল হার্টের অসুখ, দীর্ঘকালীন পঙ্গু অবস্থা, দীর্ঘকাল অপুষ্টিতে ভোগার জন্য জটিল অসুখের আক্রমণ, শারীরিক কর্মক্ষমতা হ্রাস প্রভৃতি কারণে মানুষের মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থা তৈরি হয়।
উন্নত দেশগুলিতে জীবনযাত্রার উচ্চমান, চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, পুষ্টিকর আহার গ্রহণ প্রভৃতি কারণে মানুষের মধ্যে সহজে এই অবস্থা দেখা দিতে পারে না।
কিন্তু স্বল্পোন্নত এবং অত্যন্ত দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বিভিন্ন আর্থসামাজিক কারণে এবং অন্যান্য কারণে মানুষ মুমূর্ষু অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছেন। স্বল্প বয়স্ক জনসংখ্যা অপেক্ষা বার্ধক্য জনসংখ্যার মধ্যেই এই মুমূর্ষু অবস্থা বেশি দেখা যায়।
মানুষের মুমূর্ষু অবস্থার জন্য বিভিন্ন ধরনের রোগ (disease) এবং আঘাত (injuries) দায়ী। তবে ক্ষুধার্ত, অপুষ্টি অবস্থা কিংবা মানসিক ব্যাধিও মানুষকে মুমূর্ষু করে তোলে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন ধরনের রোগ/অসুখকে নিম্নলিখিত শ্রেণিতে ভাগ করেছে।
(i) সংক্রামক এবং পরিপোষক অসুখ (infections and parastic disease);
(ii) Neoplasam.
(iii) Endocrine, nutritional and metabolic diseases and disorder,
(iv) রক্তের বিভিন্ন অসুখ;
(v) মানসিক রোগ (mental disease);
(vi) স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন অসুখ (diseases of the nervous system).
(vii) Diseases of the circulatory system,
(viii) পরিপাক প্রক্রিয়াগত অসুখ (diseases of the digestive the genitourinary system,system);
(ix) Diseases of the respiratory system,
(x) শিশুর জন্ম, বন্ধ্যাত্ব, গর্ভাবস্থায় সংগঠিত অসুখ;
(xi) বিভিন্ন কলাতন্ত্রের অসুখ;
(xii) Congenital anomalies.
(xiii) চর্মের বিভিন্ন অসুখ;
(xiv) আঘাত এবং বিষক্রিয়া জনিত অসুখ রোগের শ্রেণিবিভাগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রেণিবিন্যাস হল এরকম-
(a) সংক্রামক অসুখ (infections disease) এবং
(b) সংক্রামক নয় এমন অসুখ (non-infections disease)
A. Actute Disease:
(1) সংক্রামক অসুখ - সাধারণ সর্দিকাশি, নিউমোনিয়া, মাম্পস, টাইফয়েড, কলেরা, সদর
(ii) সংক্রামক নয় এমন অসুখ অ্যাপেন্ডিসাইটিস, ট্রমা, বিষক্রিয়া ইত্যাদি।
B. Chronic Disease:
(i ) সংক্রামক অসুখ - AIDS, টিউবারকুলোসিস, সিফিলিস বিশেষ ধরনের জ্বর