জনসংখ্যার গতিশীলতা বৈশিষ্ট্য (Population Dynamics Characteristics)
(i) মানুষ-জমি অনুপাতের ক্ষেত্রে মানুষ হল সম্পদ উৎপাদনে সক্ষম মানুষ। এই মানুষ সংস্কৃতি সম্পন্ন এবং দক্ষ যারা জমির কার্যকারিতাকে বৃদ্ধি করে।
(ii) এক্ষেত্রে জমি বলতে কার্যকর বা সম্পদ উৎপাদনক্ষম জমিকেই বোঝায়। এখানে জমিকে দ্বিমাত্রিক সামগ্রী হিসেবে বিবেচনা না করে ত্রিমাত্রিক এবং বহুমাত্রিক সামগ্রী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জমির অভ্যন্তরে (ভূগর্ভে) মানুষ খনিজ সম্পদ উত্তোলন করছে, আবার জমিতে ব্যাবসা-বাণিজোর কেন্দ্র গড়ে তুলেছে। বর্তমানে জমি বহুবিধ সম্পদ উৎপাদনে সক্ষম। তাই জমি এখন বহুমাত্রিক।
(iii) কোনো দেশের কাম্য জনসংখ্যা সম্পর্কে একটা ধারণা মানুষ-জমি অনুপাত থেকে পাওয়া যায়। প্রতি বর্গকিমি জমিতে কী পরিমাণ মানুষ বসবাস করছে তা জানতে পারলে ওই দেশের বা অঞ্চলে জমিতে মানুষের চাপ কম না বেশি তা জানা যাবে। কার্যকরী জমির ওপর মানুষের চাপ অত্যধিক হলে ওই অঞ্চলে জনাধিক্য (overpopulation) ঘটবে। অন্যদিকে কার্যকরী জমির ওপর মানুষের চাপ কম হলে ওই অঞ্চলে স্বরজনাকীর্ণতার (underpopulation) সমস্যা দেখা দেবে।
(ক) মানুষ-জমি অনুপাত, মানুষ এবং জমির মধ্যে অবস্থিত একটি আপেক্ষিক সম্পর্ক নির্দেশ করে। কারণ দুটি কার্যকরী বা সম্পদ সৃষ্টিকারী জমির আয়তন এক হলেও সম্পদ সৃষ্টির ক্ষমতা এক নাও হতে পারে। একটি জমিতে একফসলি কৃষি এবং অন্যটিতে বহুফসলি কৃষিকাজ সম্পাদিত হলে, জমিদুটির সম্পদ উৎপাদন ক্ষমতা পৃথক হবে। আবার এমনও হতে পারে একটি জমি কৃষিকাজে নিয়োজিত এবং অন্যটি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ বা ব্যবসাবাণিজ্যে নিয়োজিত। ফলে একই আয়তনের দুটি কার্যকরী জমির কার্যকারিতা এক নাও হতে পারে।
(খ) মানুষ-জমি অনুপাতে কোনো দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান সম্পর্কে একটি ধারণা লাভ করা যায়। কিন্তু জীবনযাত্রার প্রকৃতমান জানা সম্ভব হয় না। কোনো দুটি দেশের মানুষ-জমি অনুপাত এক হলেও জীবনযাত্রার মান এক নাও হতে পারে। কারণ মানুষ বলতে আমরা কেবল সম্পদ সৃষ্টিকারী উদ্যমী মানুষকেই বোঝাই না। সংস্কৃতি, কলাকৌশল এবং বুদ্ধির বিচারে একটি দেশের মানুষ অন্যদেশের তুলনায় অনেক অগ্রসর হতে পারে। তাহলে অগ্রসর সংস্কৃতি সম্পন্ন মানুষ একই পরিমাণ জমি থেকে অনেক বেশি সম্পদ উৎপাদন করতে পারে।