বিশ্বের ধর্ম অনুযায়ী জনসংখ্যা বৌদ্ধ ধর্ম
(Population as per Religions of the World the buddhism)
বৌদ্ধধর্ম (The Buddhism):
বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গৌতম বুদ্ধ। তিনি নেপালের লুম্বিনী উদ্যানে 563 খ্রি. পূর্বাব্দে জন্মগ্রং করেন। পিতার নাম শূদ্ধোধন, তিনি শাক্য বংশের রাজা ছিলেন।
তাঁর প্রকৃত নাম ছিল সিদ্ধার্থ। তিনি জীবনের মুক্তির পথ হিসেবে চারটি প্রধান সত্যের সন্ধান পান এগুলি হল-
(i) জীবনে দুঃখ আছে।
(ii) দুঃখের অনেক কারণ আছে।
(iii) দুঃখ-কষ্ট নিবারণের উপায় আছে।
(iv) সৎপথে বেঁচে থাকতে হবে।
লক্ষ লক্ষ বুদ্ধ অনুগামীগণ কপিলাবস্তু শহরে তীর্থ করতে আসেন। গৌতম বুদ্ধ সংসারের সমস্ত মায় পরিত্যাগ করে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধধর্মের প্রচার করেন।
ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ থেকে এই ধর্ম এশিয়া এমনকি ইউরোপ মহাদেশেও বিস্তার লাভ করেছিল।
সম্রাট অশোক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন এবং এই ধর্মের প্রচারে বিশেষ উদ্যোগী হন। এমনকি তাঁর পুত্র মহেন্দ্রকে তিনি সিংহলে বৌদ্ধধর্ম প্রচারে পাঠিয়েছিলেন। সিংহলের রাজা এবং তাঁর প্রজারা বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।
খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে কাশ্মীর এবং ব্রহ্মদেশে (বর্তমান নাম মায়ানমার) এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গাতে বৌদ্ধধর্মের প্রসার ঘটে এবং অসংখ্য বৌদ্ধ মঠ স্থাপিত হয়।
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে বণিক সম্প্রদায় বাণিজ্য পথ দিয়ে বৌদ্ধধর্মকে চিনে সম্প্রসারণ করেন। অসংখ্য চিনা নাগরিক বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করেন। এমনকি বৌদ্ধধর্মগ্রন্থ 'ত্রিপিটক' চিনা ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।
পরবর্তীকালে চিন থেকে ভিয়েতনাম, কোরিয়া, জাপানে বৌদ্ধধর্মের বিস্তার ঘটে। বৌদ্ধধর্মের উৎপত্তিস্থল। এবং আর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এই ধর্মীয় প্রভাব শিথিল হলেও অন্যান্য অঞ্চলে এই ধর্মের এখনও যথেষ্ট প্রভাব আছে।
গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর পর বৌদ্ধ সম্প্রদায় হীনযান ও মহাযান- এই দুটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত হয়ে যান। মহাযান অনুগামীরা তিব্বত, মঙ্গোলিয়া, চিন, জাপান, ভিয়েতনাম ও শ্রীলঙ্কায় আছেন। হীনযান অনুগামীরা মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং কাম্পুচিয়া দেশে ছড়িয়ে আছেন। খ্রিস্টপূর্ব 500 থেকে 49 পর্যন্ত বৌদধর্মের বিস্তারের শ্রেষ্ঠ যুগ ছিল।
জরাথুস্টিয়বাদ (Zoroastrianism-1000 BCE):
জরাথুস্টিয় ধর্মের প্রবক্তা হলেন- জরাষ্ট্রস্ট। তিনি খ্রিস্টপূর্ব 660 সালে জন্মগ্রহণ করেন। এখনকার ইরান দেশটির তখন নাম ছিল পারস্য (Persia)। জরাথুস্টিয় মতবাদে বিশ্বাসী ব্যক্তিগণ মনে করেন যে, জীবন হল শুভশক্তি ও অশুভ শক্তির দ্বন্দ্বের সমন্বয় (the dualism of good and evil)। Ahura Mazda ছিল শুভ শক্তির প্রতীক। Angra Mainyn ছিল অশুভ শক্তির প্রতীক। এই ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ হল- 'A আত্র'। এই গ্রন্থে জরায়ুস্টের রচিত পাঁচটি পর্যায়ক্রমিক বাণী সংক্রান্ত ইতিহাস জানা যায়। একে বলা হয় Gathas'। এখানে এক ঈশ্বরবাদী ধর্মের উল্লেখ পাওয়া যায়।
কোনো একটি পবিত্র স্থানে আগুন জ্বালিয়ে সেই আগুনকে তাঁরা পূজা করেন। They dedicate their lives to a three-fold path represented by their motto: "Good thoughts, good words, good docds." ভারতে যেসব জরাঘুস্টিয়গণ চলে আসেন তাঁরা এখনকার পার্সি সম্প্রদায়ের পূর্বপুরুষ।
ইহুদি ধর্ম:
হিব্রু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্ম হল ইহদি। এদের গুরু ছিলেন মোজেস। হিব্রু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রথম ঐতি বাস্তিত্ব ছিলেন আব্রাহাম। হিব্র উপজাতি সম্প্রদায় দীর্ঘকাল ধরে আরবের মরুভুমিতে বসবাস করেন। মিশরে এঁরা চলে আসলে ফারাওরা হিব্রুদের ক্রীতদাসে রূপান্তরিত করে।
রে এদিকে ওমেপুর মোজেস ফারাওদের হাত থেকে মুক্ত করেছিত সিনাই পর্বতে জিওভার মধুর হৈদিদেনয়ে যাওয়ার জন্য যাত্রা শুরু করেন। যাত্রাপথে মাউন্ট সিনাই পরতে জিওভার নিকট মধুর অনুশাসন লাভ করেন। এরপর গড়ে তোলেন। 586 খ্রি. পূর্বাব্দে নেবুকাডনেজার ইজরায়েল দখল করে নেন এবং হিব্রু সম্প্রদায়ের লোকজন গাড়লনে আটক করেন। রাজা সাইপ্রাস প্যালেস্তাইন জয় করার পর হিব্রুরা আবের ইযায়েলে বসন করে। তাদের আদিগুরুর শিক্ষা লিখিত আকারে রাখা হয়। 'Old Testament' বা হিব্রু বাইবেল বরচিত হে জেরুজালেম হল ইহুদিদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র শহর।
শিন্টোবাদ (Shinto 5000+ BCE):
জাপানিদের অত্যন্ত প্রাচীন ধর্ম হল শিস্টোধর্ম। শিন্টোধর্মের অনুগামীরা শাস্তির জীবন এবং পবিত্র জীবনবাদ বিশ্বাস করেন।
শিন্টোধর্মের চারটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল-
(৫) পরিবারের মাধ্যমে বংশ পরম্পরায় প্রাচীন প্রথা, সংস্কার সুরক্ষিত হয়।
(i) প্রকৃতি হল পবিত্র। তাই সমস্ত প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান হল পবিত্র। এজন্য একে প করা উচিত।
(iii) সর্বদা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকা দরকার।
(iv) Matsuri-এই উৎসবে আত্মার প্রতি সম্মান দেখানো হয়।
জাপানি সন্তাট মিকাডোর অনুগামীদের ধর্ম হল শিন্টোধর্ম।
তাওবাদ (Taoism-440 CE):
খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে এই ধর্মের প্রবর্তক হলেন Lao-Tse. তিনি চিনে জন্মগ্রহণ করেন। তাও। মনস্তত্ত্ব ও দর্শনের সমন্বয়ে তাওবাদ শুরু হয়েছিল। Tao-te-ching' গ্রন্থে জীবনের প্রকৃতি, শাস্তির এবং একজন শাসক কীভাবে তাঁর জীবনযাপন করবেন সে সম্পর্কে পথ নিদের্শ আছে। দয়া, সংযম এ বিনয় এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পালনীয় কর্তব্য তাওবাদে বলা হয়েছে। পরবর্তীকালে Lao-Tse-র শিষগ তাওবাদ থেকে দূরে সরে আসেন। প্রত্যেক মানুষের লক্ষ্য হবে তাও অনুসরণ করা। 'তাও' শব্দের জ হল পথ (Path):
শিখধর্ম (Sikhism -1500 CE):
শিখধর্মের প্রবর্তক হলেন গুরু নানক। তিনি বর্তমান পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে প্রথম শিখধর্মের প্রতিষ্ঠ করেন। তিনি একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর নয় জন গুরু এই ধর্মকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলে শিখদের ধর্মগ্রথ হল গ্রন্থসাহেব। দশম গুরু গোবিন্দ সিংহ এটি সংকলন করেন।
শিখ ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন যে, সব মানুষ সমান মর্যাদাসম্পন্ন। শিখদের মধ্যে যাঁরা গুরুর কা দীক্ষা নিতেন তাঁদের বলা হয় খালসা (পবিত্র)। রণজিৎ সিং খালসা বাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই ধাম নিয়ম অনুসারে প্রত্যেক শিখকে কেশ, চিরুনী, কৃপাণ, বালা ধারণ করতে হবে। ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ান ও দিল্লিতে বেশি শিখ সম্প্রদায় বসবাস করেন।
জৈনধর্ম (Jainism 420 BCE):
জেন্দন নামের উৎপত্তি 'জৈন' শব্দ থেকে। এর অর্থ হল বিজয়ী। এটি বর্ধমান বা মহাবীরের আরেক এর মহাবীর দীর্ঘ 12 বছর সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে এই ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেন।
এজেনবর্মে তিনটি পথ নির্দেশ আছে যা করলে মানুষ মুক্তি পাবেন। এই তিনটি পথ হল-
সৎ বিশ্বাস
সৎ চিন্তা এবং
সৎ আচরণ।
একে একসঙ্গে ত্রিরত্ন বলা হয়। এই ধর্মের দুটি শাখা হল দিগম্বর ও শেতাম্বর।
শ্লোরের পরেশনাথের কাছে জৈনদের তীর্থক্ষেত্র গড়ে উঠেছে; কারণ এইখানে পার্শ্বনাথ নির্বাণ লাভ জান। নীলগিরি পর্বতে এবং কর্ণাটকের শ্রবণ গোলায় তীর্থঙ্কর, আদিনাথ এঁদের মন্দির আছে। জৈনদের এ তীর্থঙ্কর হলেন বর্ধমান বা মহাবীর।