অপ্রচলিত বা বিকল্প বা অচিরাচরিত শক্তিসম্পদ(Non conventional or Alternate Energy)
সংজ্ঞা: বিকল্প শক্তি সম্পদ যা অবাধ বা পূরণশীল হতে হয় এবং যার ব্যবহার তেমন প্রচলিত নয় তাকে অচিরাচরিত বা অপ্রচলিত বা বিকল্প শক্তি সম্পদ বলে। DNES (Department of Non-conventional Energy Source) হল ভারতে অচিরাচরিত শক্তির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার একটি মন্ত্রক।
সুবিধা: (i) কয়লা, খনিজ তেল প্রভৃতি ক্ষয়িত্ব শক্তিসম্পদের সংরক্ষণ হয়। (ii) পরিবেশ দূষণ কমায়। (iii) কাঁচামাল ফুরিয়ে উৎপাদন ব্যাহত হবার প্রশ্ন নেই। (iv) ক্ষুদ্র উদ্যোগে উৎপাদন সম্ভব। (v) জৈব শক্তির ব্যবহারে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো যায়
সৌরশক্তি: সূর্যরশ্মির তাপকে সিলিকন দ্বারা প্রস্তুত সৌরকোশে ধরে রেখে সৌরবিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়। এর সাহায্যে জল গরম, সৌরচুল্লি এবং সৌরবাতির ব্যবহার বিশেষত গ্রামাঞ্চলে শুরু হয়ে গেছে। সৌরশক্তিকে সিলিকন সৌরকোষ-এর মাধ্যমে আংশিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
(২) বায়ুশক্তি: বাতাসের গতির সাহায্যে বায়ুকল-এর চাকা ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। ওড়িশা, গুজরাট উপকূলে এ ধরনের বায়ুকূলের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। ৩,০০০ বেশি বায়ুশক্তি চালিত পাম্প রয়েছে দেশে।
(৩) ভূ-তাপ শক্তি: উয় প্রস্রবণের মাধ্যমে ভূ-গর্ভের যে তাপ বেরিয়ে আসে তাকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। হিমাচলপ্রদেশে মণিকরণ-এ ৫ কিলোওয়াট ক্ষমতাবিশিষ্ট একটি উয় প্রস্রবণ-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে। ছত্তিশগড়ের তাতাপানি, সরগুজাতে এবং লাদাখের পুগাতে ভূ-তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
উত্তরাখন্ডের চামোলি ও বদ্রীনাথ, গুজরাটের তুয়া, পশ্চিমবঙ্গের বক্রেশ্বরে ভূতাপ বিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে।
(৪)জোয়ারভাটা শক্তিঃ উপকূলের বা খাঁড়িতে জোয়ারভাটার প্রকোপ যেখানে বেশি সেখানে জোয়ারের শক্তিকে আংশিকভাবে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। তামিলনাড়ু উপকূলে একটি ১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে।
(৫) জৈব শক্তি: ভারতে কঠিন ও তরল জৈব আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প গৃহীত হয়েছে। দিল্লি, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে।
(৬) ওটেক (OTEC): ওসান থার্মাল এনার্জি কনভারসন পদ্ধতিতে সমুদ্রের ওপরের ও নীচের জলস্তরের উন্নতার পার্থক্যকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে তামিলনাড়ু উপকূলে।
ভারতে অচিরাচরিত শক্তির উন্নয়ন: ভারতে অচিরাচরিত শক্তির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার একটি মন্ত্রক খুলেছেন। অচিরাচরিত শক্তির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসে বায়ুশক্তি থেকে এবং প্রায় ৫ শতাংশ সৌরশক্তি।