welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নীতি (National Population Policy of India)

3 min read

ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নীতি (National Population Policy of India)

ভারত তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। জনসংখ্যার দিক দিয়ে ভারত পৃঞ্জি দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী। বিপুল পরিমাণ জনসংখ্যা এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা আমাদের অর্থনৈ উন্নয়নকে ব্যাহত করছে। সম্পদের যথাযথ ব্যবহার এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার। আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় জনসংখ্যা নীতি গ্রহণ করেছেন। 1951-52 সালে প্রথম পণ্য পরিকল্পনাকালে ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নীতি ঘোষিত হয়। বিভিন্ন পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা হল-

প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (1951-56 খ্রিঃ): বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে সর্বপ্রথম জন্ম‌ নিয়ন্ত্রণের ওপরে ভারত সরকার জোর দেয়। এর জন্য পরিবার পরিকল্পনা এবং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের বর করা হয়। এই উদ্দেশ্যে নিয়মিত আলোচনা, পরিবার পরিকল্পনার সুযোগ-সুবিধা দান করা, হাসপাতাল। অন্যান্য চিকিৎসা সংস্থার মাধ্যমে পরিকল্পিত পরিবার গঠনের উপদেশ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয় গ্রামে প্র এজন্য প্রচারের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়।

দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (1956-61 খ্রিঃ): প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাকালীন ব্যবস্থাগুলি চালু রাখা এই সময়ের প্রধান কাজ ছিল।

তৃতীয় পণ্যবার্ষিকী পরিকল্পনা (1961-66 খ্রিঃ): এই পরিকল্পনাকালে পূর্বের জনসংখ্যানীতি কা করে পরিবার পরিকল্পনার জন্য বিশেষ শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়। প্রধান নীতিগুলি ছিল-

(i) সীমিত পরিবার গঠনের জন্য উন্নত সামাজিক পরিবেশ তৈরি করা।

(ii) তাৎক্ষণিক সেবাদানের ব্যবস্থা করে মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করা।

(iii) দম্পতিদের পরিবার পরিকল্পনা সম্বন্ধে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা।

(iv) প্রচলিত সামাজিক প্রথার পরিবর্তন, যেমন- স্বল্প বয়সে বিবাহ নিষিদ্ধ করা, ছেলেদের বিবা বয়স বৃদ্ধি করা, স্ত্রী-শিক্ষার প্রসার, মহিলাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা- এ ওপর জোর দেওয়া হয়।

চতুর্থ পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা (1969-74 খ্রিঃ) চতুর্থ পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনাকালে জন্মনিয় এবং পরিবার পরিকল্পনার ব্যবস্থাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। এজন্য গ্রামাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে স্বাস্থ্যকর্মী দিয়ে 'ছোটো পরিবার, সুখী পরিবার' এই স্লোগান প্রচার করানো হয়। যে সমস্ত পরিবার পরিবার পরিক নীতি মানবে তাদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়। অসংখ্য গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।

পঞ্চম পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা (1974-79 খ্রিঃ) এই পরিকল্পনাকালে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জর নিয়ন্ত্রণের সমস্ত রকম ব্যবস্থা করা হয়। জন্মের হার প্রতি হাজারে 36 থেকে কমিয়ে প্রতি হাজরে জনে নিয়ে আসা হয়। গ্রামাঞ্চলের মেয়েদের শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা গড়ে তো ব্যবস্থা করা হয়।

ষষ্ঠ পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা (1980-85 খ্রিঃ):

এই পরিকল্পনায় গৃহীত নীতিগুলি হল:

(i) পরিবার কল্যাণ পরিকল্পনা।

(ii) পরিবার উন্নয়ন পরিকল্পনা।

(iii) পরিবার কল্যাণ সমিতি গঠন।

(iv) সামাজিক শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

(v) এই পরিকল্পনা কতদূর রূপায়িত হল তার ওপর নজর রাখা হয়।

(vi) দক্ষিণ এশিয়ার ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশের জনসংখ্যা প্রাপ্ত সম্পদের তুলনায় অধিক। ফলে এইসব দেশে জনাধিক্য বা অতি জনাকীর্ণতার সমস্যা বিদ্যমান।

সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (1985-90 খ্রিঃ):

এই পরিকল্পনায় নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। যথা-

(i) নারীদের বিবাহের বয়স 20 বছরের ঊর্ধ্বে স্থির করা হয়।

(ii) দুই সন্তানের পরিবার গঠনের ব্যবস্থা।

(iii) নারী স্বাক্ষরতা এবং বয়স্ক শিক্ষার প্রচলন।

(iv) শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা

(v) নারী কর্মসংস্থান বৃদ্ধি।

(vi) পরিবার পরিকল্পনার নতুন নতুন গবেষণা এবং তাদের প্রয়োগ কৌশল স্থির করা ইত্যাদি।

অষ্টম, নবম ও দশম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (1991-2007):

এই পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বছরগুলিতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবার পরিকল্পনার কাজগুলি রূপায়ণের ওষ্টা করা হয়েছে। এর ফলে 1971 সাল থেকে এখন পর্যন্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিম্নগামী হয়েছে। এখানে ভারতের জনসংখ্যার বৃদ্ধি প্রতি হাজারে 20 জনের সামান্য বেশি।

বর্তমানে (2007-2012) একাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনার মূল স্লোগান হল- 'একটি পরিবার, একটি সন্তান'। কন্যাসন্তান এবং পুত্রসন্তান উভয়কেই সমান মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখাতে হবে।

(i) শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে শতাংশ এবং প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অনুপাত প্রতি হাজারে হ্রাস করতে হবে।

(ii) বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি অর্ধেক কমাতে হবে।

(iii) শিশু শ্রমিক বাতিল করতে হবে।

(iv) সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে নারী ও কন্যার কল্যাণের জন্য অর্থ ব্যয় করতে হবে।

(v) লিঙ্গ অনুপাত এর বেশি বৃদ্ধি করা।

ভারতের জাতীয় জনসংখ্যা নীতির মাধ্যমে 2011-2051 সালের মধ্যে তামিলনাড়ু, কেরল এবং পাঞ্জাবের জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার শূন্য শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। 2051 সালে ভারতের জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় 164 কোটি। সরকারের জাতীয় জনসংখ্যা নীতিতে পরিবার পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দিলেও এই উদ্দেশ্য এখনও সাধিত হয়নি এবং এর জন্য বিভিন্ন আর্থসামাজিক এবং রাজনৈতির পরিকাঠামো দায়ী। বর্তমানে আমাদের দেশের জনসংখ্যা নীতিকে আইন করে বাধ্যতামূলকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে।

এই পোস্টগুলি আপনার ভাল লাগতে পারে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01