welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতে নারী-পুরুষ অনুপাত/লিঙ্গ অথবা অনুপাত (Male Female ratio in India)

ভারতে নারী-পুরুষ অনুপাত/লিঙ্গ অথবা অনুপাত (Male Female ratio in India)


কোনো দেশের জনসংখ্যায় নারী ও পুরুষদের বণ্টনকে সাধারণভাবে লিঙ্গ অনুপাত বলা হয়। লিঙ্গ অনুপাত প্রকৃতপক্ষে কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের বাহকের মতো কাজ করে। মাজে নারী ও পুরুষের সাম্যতা কতটা আছে তা নারী-পুরুষ অনুপাত থেকে বোঝা যায়।

R. C. Chandra-এর মতে, "The seperate data for males and females are important or various types of planning and for the analysis of other demographic characteristics uch as natality, mortality, migration, marital status, economic characteristics etc. The alance of senes affects the social and economic relationship within a community." ভারতীয় আদমশুমারিতে প্রতি হাজার পুরুষ জনসংখ্যায় স্ত্রী লোকের সংখ্যার অনুপাতকে লিঙ্গ অনুপাত বা নারী-পুরুষ অনুপাত ধরা হয়।


লিঙ্গ অনুপাত = মোট স্ত্রীলোকের সংখ্যা মোট পুরুষ জনসংখ্যা ×100

2011 খ্রিস্টাব্দে আদমশুমারি অনুসারে ভারতের মোট জনসংখ্যা 121.01 কোটি, তার মধ্যে 62.37 কোটি পুরুষ জনসংখ্যা এবং 58.64 কোটি স্ত্রী জনসংখ্যা। সুতরাং 2011 খ্রিস্টাব্দ হিসেব অনুসারে ভারতে লিঙ্গ অনুপাত হল 940, অর্থাৎ প্রতি 1000 জন পুরুষ জনসংখ্যায় স্ত্রী জনসংখ্যা হল 940 জন।

পৃথিবীর উন্নত দেশ এবং আরও কয়েকটি উন্নয়নশীল দেশ অনুপাতে ভারতের নারী-পুরুষ অনুপাত বেশ কম। রাশিয়ান ফেডারেশান (1140), জাপান (1041), আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (1029), ব্রাজিল (1025), নাইজেরিয়া (1016) এবং ইন্দোনেশিয়াতে (1004) জন নারী-পুরুষ অনুপাত লক্ষণীয়।

ভারতে পুরুষ তুলনায় বেশি নারীর সংখ্যা কম হওয়ার কারণগুলি হল নিম্নরূপ-

(i) ভারতে কন্যা শিশু অপেক্ষা পুত্র শিশুদের জন্মহার বেশি। এ ধরনের ঘটনা প্রায় বিশ্বের অধিকাংশ দেশে লক্ষণীয়। 1949-1958 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে জন্ম নেওয়া 2 কোটির শিশুর মধ্যে দেখা যায় যে, 1000 জন পুত্র সন্তানে শিশু কন্যার সংখ্যা হল 942 জন। 1981-91 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে 6 কোটি জন্মানো শিশুর মধ্যে (শহরাঞ্চলে প্রধানত) নারী-পুরুষ অনুপাত হয় 891 অর্থাৎ 1950 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1980 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে পুরুষ অনুপাতে নারী সংখ্যা দ্রুত হারে কমে যায়।

(ii) নারী-পুরুষ বৈষম্য লিঙ্গ বৈষম্যের অপর উল্লেখযোগ্য কারণ। পুরুষরা নারীদের তুলনায় অনেক উন্নতমানের চিকিৎসার সুযোগ-সুবিধা পায়। এর ফলে স্ত্রীলোকের মৃত্যুর হার পুরুষদের তুলনায় বেশি হয়। শৈশব অবস্থায় এবং সন্তান প্রসবকালে নারী মৃত্যুর হার আমাদের দেশে খুব বেশি মাত্রায় ঘটে থাকে।

(iii) এখন ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র ও পরীক্ষাগারে বেআইনিভাবে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারিত হচ্ছে। এর ফলে কন্যা ভ্রুণ হত্যা এখনও চলছে। এর ফলে পুরুষ সন্তান জন্মের হার এখনও মেয়েদের তুলনায় বেশি হচ্ছে। 2005 খ্রিস্টাব্দে একটি পরিসংখ্যার ভিত্তিতে দেখা যায় যে, দিল্লিতে প্রতি 1000 জন পুরুষ সন্তান অনুপাতে মাত্র 821 জন শিশু কন্যা জন্ম লাভ করেছে।

(vi) ছোটো পরিবার পরিকল্পনা অঙ্গ হিসেবে দেখা যায় যে, যেসব পরিবারে প্রথম সন্তান পুত্র সন্তান হিসেবে জন্মলাভ করেছে সেই সব পরিবারের দম্পতি দ্বিতীয় সন্তান নিতে একেবারেই উৎসাহী হয় না। এর ফলে কন্যা সন্তানের সংখ্যা ক্রমশ কম হচ্ছে।

(Vii) গ্রামীণ ভারতে এবং শহরাঞ্চলেও এখন পণপ্রথা নিয়ে বধূ নির্যাতন ঘটছে। এর ফলে বধূ হত্যার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ফলে কন্যা জন্মদাতা মায়ের সংখ্যা অনেক কমে যাচ্ছে।।

বর্তমানে আমাদের দেশে মহিলার সংখ্যা ১৪ কোটি 65 লক্ষ এবং পুরুষের সংখ্যা 62 কোটি 37 লক্ষ। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতে প্রতি হাজার পুরুষ প্রতি মহিলার সংখ্যা এতটা হ্রাস পায়নি। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও লিঙ্গ অনুপাত হ্রাস পেয়েছে। 2011 খ্রিস্টাব্দের জনগণনার প্রাথমিক রিপোর্ট পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই যে, 6 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর সংখ্যা 10 কোটি 44 লক্ষের কিছু বেশি। শিশুদের মধ্যে পুত্র সন্তান অপেক্ষা কন্যা সন্তান কমে যাওয়াই 2011-এর আদমশুমারির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01