দণ্ডাকৃতি জনবসতি (Linear type of Settlement):
অনেকসময় দেখা যায় যে, কোনো অঞ্চলের বসতিগুলি প্রায় এক সরলরেখায় অবস্থান করছে। একে দণ্ডাকৃতি জনবসতি বলে।
■ দণ্ডাকৃতি জনবসতি গড়ে ওঠার কারণ:
(1) নদীর দুই তীর ধরে কিংবা উপকূল অঞ্চলের বালিয়াড়ি বরাবর দন্ডাকৃতি জনবসতি গড়ে ওঠে।
নদীর তীরে পানীয় জল, যাতায়াতের সুবিধা, মাছের প্রাপ্তি ইত্যাদি কারণে এ ধরনের জনবসতি গড়ে ওঠে। আবার ঝড়ের হাত থেকে উঁচু এবং স্থায়ী বালিয়াড়িগুলি ঘরবাড়িকে বাঁচায় বলে এই অঞ্চলে এ ধরনের বসতি দেখা যায়।
(i) জাতীয় সড়ক কিংবা রেললাইনের ধার ধরে (যাতায়াতের ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য) দণ্ডাকৃতি জনবসতি দেখা যায়।
(iii) বন্যাকবলিত অঞ্চলে রাস্তা উঁচু করে বাড়ি তৈরি করে লোকেরা বসবাস করেন।
(iv) উত্তর-পূর্ব ভারতের নাগা, মিশমি উপজাতিরা একলাইনে অবস্থিত বাড়িতে বসবাস করে। বাড়ির ছাদ একই থাকে কিন্তু প্রকোষ্ঠ আলাদা।
(১) পর্বতের পাদদেশ অঞ্চলে একটি করে ঘর বা বাড়ি সারিবদ্ধভাবে তৈরি হয় এবং এভাবে বসতি রৈখিক ধরনের হয়।
(vi) বনভূমির সীমানায় অনেকক্ষেত্রে সারিবদ্ধ বসতি গড়ে ওঠে। ফলে এদের আকৃতি রৈখিক ধরনের হয়।
(vii) মাছ ধরার সুবিধা পাওয়া যায় বলে নদী, খাল, বিলের ধার ধরে রৈখিক বসতি গড়ে ওঠে।
■ বৈশিষ্ট্য (Characteristics):
এই ধরনের বসতির নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য লক্ষণীয়:
(i) রৈখিক বসতিতে ঘরবাড়িগুলির পারস্পরিক ব্যবধান গ্রামীণ এলাকায় বেশি ও শহরের এলাকায় কম হয়।
(ii) অধিবাসীদের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক যোগাযোগ বেশি থাকে।
(iii) জনবসতির পার্শ্বীয় বিস্তার কম ঘটে।
(iv) পাকা রাস্তা, রেললাইন, নদী কিংবা খাল পাড়, পর্বতের পাদদেশ প্রভৃতি এলাকায় রৈখিক বসতি গড়ে ওঠে।
(v) একাধিক রৈখিক বসতির মিশ্রণের ফলে তারকা আকৃতির বসতি তৈরি হয়।
উদাহরণ: উত্তরবঙ্গের সেবক-নাগরাকাটা সড়কের ধার ধরে রৈখিক জনবসতি গড়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপের কিছু কিছু জায়গায় উপকূল ধরে এবং গ্রামের রাস্তার ধারে ধারে এধরনের বসতি দেখা যায়।