welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

জনসংখ্যা ভূগোলের ভূমিকা [Introduction to Population Geography]

জনসংখ্যা ভূগোলের ভূমিকা [Introduction to Population Geography]

ভূমিকা (Introduction):

পৃথিবীতে সমগ্র প্রাণীগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে উন্নত হল মানবগোষ্ঠী। মানবসভ্যতার উষালগ্ন থেকে মানুষ ক্রমশ জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে সভ্যতার অগ্রগতি ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। ভূগোলের আলোচনার অন্যতম বিষয় হল মানুষ ও তার পরিবেশে। এজন্য বর্তমানে জনসংখ্যা ভূগোল ভূগোলের পৃথক শাখা ও গবেষণার বিষয়ে রূপান্তরিত হয়েছে। Population Geography is concerned with the spatio- temporal analysis of the population অর্থাৎ জনসংখ্যা ভূগোলে জনসংখ্যার স্থানগত এবং সময়গত বণ্টনের বিশ্লেষণ করা হয়। জনসংখ্যার বৃদ্ধি, বৈশিষ্ট্য, গতিশীলতা, প্রভৃতি কোনো অঞ্চলের উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, তা ছাড়া জনসংখ্যা নিজেই হল যে কোনো দেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাই বর্তমান মানবসভ্যতার সঙ্কট মোচন ও অগ্রগতির ধারা বজায় রাখার জন্য প্রতিটি দেশের মানব উন্নয়ন সূচকের মাত্রা বৃদ্ধির প্রয়োজন আছে। এজন্য জনসংখ্যা ভূগোল একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখায় হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।

জনসংখ্যা ভূগোলের সংজ্ঞা (Definition of Population Geography):

1. "Population Geography is the spatial study of Human population, "SA. Qazi. It is mainly concerned with one aspect of the study of population, its spatial distribution and arrangements. অর্থাৎ জনসংখ্যা ভূগোল হল মানবসমাজের স্থানগত বণ্টন সংক্রান্ত অধ্যয়ন। জনসংখ্যার স্থানগত বণ্টন ও বিন্যাসকে নিয়ে আলোচনা করাই হল এর অন্যতম বিষয়।

2. G T. Trewartha তাঁর রচিত 'Geography of Population' গ্রন্থে জনসংখ্যা ভূগোলের যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তা বর্তমানে সর্বজনগ্রাহ্য। Trewartha বলেছেন- "Population serves as the point of reference from which all other geographic elements are observed and from which they all, singly and collectively, derieve signficance and meaning." অর্থাৎ, যে সমস্ত ভৌগোলিক উপাদানগুলি দেখা যায় এবং তাদের মধ্যে যেগুলি একক ভাবে অথবা সমবেতভাবে গুরুত্ব দাবি করে তাদের সমস্ত বিষয়কে নিয়ন্ত্রণ করে জনসংখ্যা। Trewartha-র মতে, The central theme of the science of population geography is the areal differentiation অর্থাৎ, জনসংখ্যা বিজ্ঞানের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু হল ক্ষেত্রীয় বিভাজন (arcal differentiation)। জনসংখ্যা ভূগোল হল অত্যন্ত গতিশীল বিষয়।

Trewartha ছাড়া John. 1. Clarke (1965), Wilber Zelinsky (1996). J. Beaujeu-Garmer (1996), Gary L. Petters and Robert P. Larkins (1979), Robert Woods (1979), M, S. Sidha (1980) প্রমুখ জনসংখ্যা-বিজ্ঞানী জনসংখ্যা ভূগোলের সংজ্ঞা ও বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছেন।

3. American Geography Inventory and Prospects edited by Preston E. James and Clarence, F. Jones (1954)। এই গ্রন্থের দুই সম্পাদক বলেন, "Population Geography is defined as a distinct topical speciality which serves as a central theme around which the entire geographic investigations could be organised." James বলেন, "the understanding of demographic phenomena operating in an area can help in discovering the wide variety of caused connections between population and total physical, biotic and cultural envi ronment," অর্থাৎ, কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যা বিষয়ক ঘটনা জানতে এবং জনসংখ্যার সঙ্গে প্রাকৃতিক, জৈবিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে এবং তাদের তারতম্য ব্যাখ্যা করতে জনসংখ্যা ভূগোল পাঠ প্রয়োজন।

4. Clarke তাঁর রচিত Population Geography (1965) গ্রন্থে বলেন "Population Geography is concerned with demonstrating how spatial variations in distribution, composition, migrations and growth are related to the spatial variations in the nature of places." অর্থাৎ, জনসংখ্যা ভূগোল হল কোনো স্থানের প্রাকৃতিক পরিবেশের পার্থক্যের সঙ্গ্যে জনসংখ্যার বণ্টন, গঠন, পরিব্রাজন এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির স্থানগত পার্থক্যের সম্পর্ক। Zelinsky তাঁর রচিত, A Prolonge to Population Geography' গ্রন্থে জনসংখ্যা ভূগোলের সংজ্ঞা দিয়েছেন। তাঁর মতে, Population Geography is the science that deals with the ways in which the geographical character of place is formed by and in return reacts upon a set of population phenomena that vary within it through both space and time as they follow their own behavioural laws, interacting non-demographic phenomena

5. Beaujeu-Gernier তাঁর রচিত 'Geography of Population' গ্রন্থে বলেন, "Population Geography is concerned with describing the demographic factors in their present environmental content, studying also the causes, their original characteristics and possible consequences." অর্থাৎ, বর্তমান পরিবেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন demographic নিয়ন্ত্রকগুলির প্রকৃত বৈশিষ্ট্য এবং তাদের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণ করাই জনসংখ্যা ভূগোলের বিষয়বস্তু। 1970 খ্রিস্টাব্দে E. Demko, Harold M. Rose and Geogrge, E. Schnell, Population Geography গ্রন্থ রচনা করেন। এই গ্রন্থে তাঁরা বলেন, "the definition of Population Geography has to be formulated with reference to the nature of the geography as a distinct discipline where population is the main stoke in trade. "অর্থাৎ, জনসংখ্যা ভূগোলের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে হবে ভুগোলের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে যা একটি পৃথক শাখায় রূপান্তরিত হবে এবং যেখানে আলোচনার বিষয় হবে মানুষ।

রাশিয়ার কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলিতে জনসংখ্যা ভূগোল বলতে গ্রামীণ ও শহর বসতি, বসতি গঠনের ইতিহাস, শ্রমের উৎস, জীবিকা, জনসংখ্যার বণ্টন সংক্রান্ত অধ্যয়নকে বোঝায়।

6. Melexin (1963 খ্রিস্টাব্দ) এর মতে, "Population Geography is the study of population distribution and productive relationships existing within various groups, the settlements network and its fitness, usefulness and effectiveness for productive goals of society:"অর্থাৎ, জনসংখ্যা ভুগোল হল জনসংখ্যার বণ্টন এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উৎপাদনের সম্পর্কের আলোচনা যার মধ্যে জনসংখ্যার শ্রেণি। জনবসতি, নেটওয়ার্ক, এর কর্মক্ষমতা, ব্যবহার যোগ্যতা সক্রিয়তা প্রভৃতি বিষয়ের উল্লেখ থাকে।

জনসংখ্যা ভূগোল হল বিশুদ্ধ ভূগোলের (Pure Geography) একটি প্রাণীবদ্ধ শাখা (Systematic branch)। এটি জনসংখ্যার আঞ্চলিক বণ্টনগত পার্থক্য ও বৈশিষ্ট্যের আলোচনার ওপর অধিক গুরুত্ব আরোপ করে। জনসংখ্যা ভূগোলের উন্নতি সর্বদা তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা (development of theory) করা। জনসংখ্যার স্থানগত বণ্টনের ব্যাখ্যা করা এবং জনসংখ্যার অভিক্ষেপের (Population projection) নিয়ন্ত্রক নিয়ে আলোচনা করা।

সুতরাং জনসংখ্যা ভূগোল হল, ভুগোলের সেই শাখা যেখানে স্থানগত জনবণ্টনের পার্থক্য, জনসংখ্যাগত এবং জনসংখ্যার non-demographic গুণাগুণ এবং আর্থসামাজিক প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।

জনসংখ্যা ভূগোল পাঠের উদ্দেশ্য (Objectives of studying Population Geography):

সামাজিক ভূগোল এবং মানবীয় ভূগোলের অন্যতম শাখা হল জনসংখ্যা ভূগোল (Population Geography)| Johnston বলেছেন যে, কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যার গঠন এবং বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করতে গেলে মানুষের জন্ম (Fertility), মৃত্যু (Mortality) এবং পরিব্রাজন (Migration) তিনটি মূল বিষয়কে অনুধাবন করতে হবে। বিভিন্ন ভৌগোলিক ও সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে জনসংখ্যা ভূগোলকে বিশ্লেষণ করেছেন। তাই জনসংখ্যা ভূগোল পাঠের উদ্দেশ্য বিভিন্ন জনের বিভিন্ন প্রকৃতির হয়।

উদেশ্য (Objectives):

(i) পৃথিবীর বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে জনবণ্টনের স্থানগত ও সময়গত তারতম্যের কারণ বিশ্লেষণ করা।

(ii) কোনো দেশ কিংবা অঞ্চলের জনসংখ্যার গঠন, জন্ম-বৃদ্ধি হার, মৃত্যুহার, বয়স ভিত্তিক জনসংখ্যার গঠন কাঠামো বিশ্লেষণ করা হয় ভুগোলের এই গুরুত্বপূর্ণ শাখায়।

(iii) জনসংখ্যার সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

(iv) মানুষের পরিব্রাজনের কারণ ও তার প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা।

(v) জনসংখ্যার বণ্টন এবং বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর উৎপাদনের সম্পর্ক আলোচনা করা।

(vi) জনগণের স্বাস্থ্য, পুষ্টি, শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে পর্যালোচনা করা।

(vii) জনসংখ্যার বৃদ্ধি ও নগরায়ন এদের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা।

(viii) উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জনসংখ্যার গুণগত মানের তারতম্য কেন ঘটে তা পর্যালোচনা করা হয় এই শাখায়।

(ix) জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুকূল এবং প্রতিকূল প্রভাব ব্যাখ্যা করা জনসংখ্যা ভূগোল পাঠের অন্যতম উদ্দেশ্য।

(x) কোনো দেশের জনসংখ্যা নীতি (Population policy) সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।


জনসংখ্যা ভূগোলের বিষয়বস্তু (Scope and Content of Population Geography):

Edward Ackerman উল্লেখ করেছেন যে, জনসংখ্যা ভূগোলের অন্যতম সমস্যা হল জনসংখ্যার শ্রেণিবিন্যাস, জনসংখ্যার বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করা এবং জনসংখ্যা পরিমাপের পদ্ধতিগুলির সঠিক প্রয়োগ করা।

জনসংখ্যা ভূগোলের আলোচনার প্রধান ক্ষেত্র হল জনসংখ্যার স্থানগত পার্থক্যের কারণ অনুসন্ধান করা। ভৌগোলিকগণ জনসংখ্যা সংক্রান্ত অধ্যয়ন করেন, কারণ জনসংখ্যার বণ্টন যে প্রক্রিয়ায় ঘটে তা ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয় জনসংখ্যা অধ্যয়নের মাধ্যমে। সুতরাং জনসংখ্যা ভূগোলের আলোচনার বিষয়বস্তু হল "Spatial distribution and the spatial interaction of population." জনসংখ্যা ভূগোলে মানুষকে সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়। অর্থাৎ "Man is the main focus of the study of population."

সুতরাং জনসংখ্যা ভূগোলের বিষয়বস্তু হল জনসংখ্যা স্থানগত বণ্টন এবং বিভিন্ন জনসংখ্যার মধ্যে স্থানগ আন্তঃসম্পর্কের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করা।

According to Trewartha, numbers, densities, distributions and qualities of the populatio provide the essential background for all geography.

অর্থাৎ, ভূগোলের যে-কোনো বিষয়ের ভিত্তি প্রস্তর নির্মাণে জনসংখ্যা, জনঘনত্ব, জনবণ্টন, জনসংখার গুণগত বৈশিষ্ট্যের বিশেষ ভূমিকা আছে

• জনসংখ্যা ভূগোলের আলোচনার বিষয়স্তুকে নিম্নলিখিতভাবে সংক্ষেপে প্রকাশ করা যায়-

(1) জনসংখ্যার বণ্টনগত যে-কোনো বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত অধ্যয়ন করা, যেমন- বসতির আয়তন, বসতিগুলির মধ্যে পারস্পরিক দুরত্ব, জনসংখ্যার মহাদেশীয় এবং উপমহাদেশীয় ধরনের বিন্যাস। মোট বণ্টন ecumeni and non-ecumenic দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করা এবং আন্তঃআঞ্চলিক বণ্টন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া।

(2) জনঘনত্ব, জনঘনত্বের বিভিন্ন শ্রেণি, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এবং দেশে জনঘনত্বের বিন্যাস প্রভৃত্বি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা যায়।

(3) জনসংখ্যা স্থানগত প্রচরণ (migration), আন্তর্জাতিক প্রচরণ, অভ্যন্তরীণ প্রচরণ, প্রচরণের বিভিন্ন শ্রেণি, প্রচরণের নিয়ম-নীতি, প্রচরণের ফলাফল, অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে উন্নত দেশগুলিতে প্রচরণের ধারা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে ধারণা গঠন করা।

(4) জনসংখ্যার বৃদ্ধির পরিমাপ করা (growth of population measurement), জন্ম ও মৃত্যুহার নির্ধারণ, জনসংখ্যা বৃদ্ধির নির্ধারক (যেমন জলবায়ু, খাদ্যাভ্যাস প্রভৃতি) প্রভৃতির প্রভাব জানা, জনসংখ্যা সংক্রান্ত তত্ত্ব (Population Theory), জনসংখ্যার অভিক্ষেপ (Population projection) প্রভৃতি বিষয় আলোচনা ও বিশ্লেষণ জনসংখ্যা ভূগোলের বিষয়বস্তুর অন্তর্গত।

(5) জনসংখ্যার গঠন বিশেষ করে নৃগঠন (ethnic composition), ধর্মীয় গঠন (religious composition) ভাষাগত গঠন (linguistic composition), বয়স-ভিত্তিক গঠন (Age-sex composition), পেশাগত গঠন (occupational structure), অর্থনৈতিক সংগঠন (economic composition), নির্ভরশীলতার অনুপাত (do pendency ratio), কর্মী সংগঠন (work force), পেশাগত অবস্থা (employment status), আয়ের দিব থেকে জনগণের শ্রেণিবিভাগ (income classification), দারিদ্রের বণ্টন (Poverty distribution) প্রভৃতি বিষয়গুলি জনসংখ্যা ভূগোলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়বস্তু.

(6) সাক্ষরতা এবং জনসংখ্যার গুণগত মানের পার্থক্য ও এই পার্থক্যের নির্ধারক, বিশ্ববিন্যাস, জনগণের গুণগত মান, গুণগত মানের উন্নতি ঘটানোর পদ্ধতি-এগুলি আলোচনা করাই হল জনসংখ্যা ভূগোলের মুখ্য বিষয়

(7) শহর এবং গ্রামের জনসংখ্যা তাদের গঠনগত ও বিন্যাসগত পার্থক্য, নগরায়ন প্রকিয়া, সমগ্রবিশ্ব জুড়ে নগরায়নের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা করা হয়।

(৪) জনসংখ্যা ও সম্পদের অনুপাত (Population Resource ratio), জনসংখ্যার বৃদ্ধি এবং সম্পদের উন্নয়ন, কাম্য জনসংখ্যা, স্বল্প জনসংখ্যা, জনাধিক্য, বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা-সম্পদের ধাঁচ, জনসংখ্যা নীতি প্রভৃতি বিষয়ের আলোচনা আমরা জনসংখ্যা ভূগোলে উল্লেখ পাই।

(9) ভৌগোলিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি, বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার অভিক্ষেপ (World Population Projection), প্রত্যাশিত জীবনের আয়ু (life expectancy), অর্থনৈতিক, সামাজিক রাজনৈতিক অবস্থা প্রভৃতি বিশ্বের জনসংখ্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে.

• Clarke জনসংখ্যার গুণাবলিকে তিনটি দৃষ্টিভঙ্গিতে আলোচনা করেছেন-

(a) প্রাকৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্যের অনুসন্ধান করা,

(b) জনসংখ্যার প্রকৃতি নির্ণয় করা এবং

 (c)গতিশীলতা ব্যাখ্যা করা।

Zelinesky-র মতে, জনসংখ্যা ভূগোলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু হল-

(a) জনসংখ্যার বণ্টন আলোচনা করা,

(b) জনসংখ্যা সম্পর্কিত বিষয়গুলির ভৌগোলিক ব্যাখ্যা করা।

• Demko ভূগোলের আলোচনার বিষয়বস্তুকে নিম্নলিখিতভাবে ভাগ করেছে-

(a) জনসংখ্যার বণ্টন,

(b) জাতির সংখ্যা এবং

(c) জনসংখ্যার বিভিন্ন গুণ, যেমন শারীরিক বৈশিষ্ট্য, সামাজিক ও জনতার অর্থনৈতিক অবস্থা এবং এদের আঞ্চলিক বণ্টন।

• R. C. Chandana জনসংখ্যা ভূগোলের বিষয়বস্তুকে সুন্দরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। এগুলি হল

(a) জনসংখ্যা ও জনঘনত্ব বিশ্লেষণ,

(b) জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পরিব্রাজন,

(c) জনসংখ্যায় নারী-পুরুষ অনুপাতের তারতম্য,

(d) সাক্ষরতা,

(c) নগরায়ন,

(f) জাতিগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা,

(g) জনসংখ্যা অঞ্চল এবং

(h) জনসংখ্যার জীবিকা পরিকাঠামো বিশ্লেষণ প্রভৃতি।

জনসংখ্যা ভূগোলের বিষয়বস্তু পর্যালোচনা করে একে নিম্নলিখিত প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত করা যেতে পারে Population Geography simply can be categorized as the study of -

(a) জনসংখ্যার সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করা। এই বৈশিষ্ট্যগুলি হল পরিব্রাজন, সাক্ষরতা, নৃগঠন, জাতি, ধর্ম ইত্যাদি।

(b) জনসংখ্যার অর্থনৈতিক পরিকাঠামোগত বিশ্লেষণ করা। এই শ্রেণির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল শ্রমের জোগান, জীবিকা, আয়গত বণ্টন, জীবনযাত্রার মান, দারিদ্র, উদ্‌বৃত্ত শ্রমিক, শ্রমিকের কর্মদক্ষতা ইত্যাদি।

(c) জনসংখ্যার জৈবিক বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনা করা জন্মহার, মৃত্যুহার, বয়স ভিত্তিক গঠন কাঠামো বিশ্লেষণ, বয়স, জাতি (race) প্রভৃতির আলোচনা করা।

জনসংখ্যা ভূগোলের সঙ্গে সমাজবিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সম্পর্ক(Relatioship of Population Geography with other branches of Social Sciences)

জনসংখ্যা ভূগোল হল, ভূগোলের এমন এক অতি গুরুত্বপূর্ণ শাখা যা সমাজবিজ্ঞানীদের নিকট গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রূপান্তরিত হয়েছে। শুধু সমাজবিজ্ঞানই নয় জনসংখ্যা বিজ্ঞান (Demography), অর্থনীতি (Economics), নৃতত্ত্ব (Anthropology), ইতিহাস (History) এবং জীববিজ্ঞান (Biology) প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্গেঙ্গ জনসংখ্যা ভূগোল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ঘনিষ্ঠ অনুবন্ধ (correlation) লক্ষ করা যায়।

জনসংখ্যা বিজ্ঞান যেমন জনসংখ্যার পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তেমনি জনসংখ্যা ভূগোল জনসংখ্যার পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে জনসংখ্যা মানচিত্র তৈরি করে (যেমন- জনঘনত্ব মানচিত্র, জনসংখ্যা পিরামিড তৈরি প্রভৃতি)।

Clarke-এর মতে, জনসংখ্যা ভূগোলে জনসংখ্যার স্থানগত বণ্টনের তারতম্যের সঙ্গে কীভাবে ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলির সম্পর্ক আছে তা বিশ্লেষণ করা হয়। জনসংখ্যার সংখ্যাগত পর্যালোচনা এবং রাজনৈতিক এলাকার (দেশ, রাজ্য, অঞ্চল) জনসংখ্যাবিজ্ঞান (Demography) পর্যালোচনা হল জনসংখ্যা বিজ্ঞান আলোচ্য বিষয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01