welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশের ওপর প্রভাব(Influence on Social and Economic Environment):

 সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশের ওপর প্রভাব(Influence on Social and Economic Environment):


দ্রুত হারে নগরায়ণের প্রভাবে ভারতীয় নগর সভ্যতায় মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবন অনেক জটিল হয়ে পড়ছে। এমনকি বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা যায়।


ভারতীয় শহরগুলিতে অর্থনৈতিক সম্পদের জোগান পর্যাপ্ত নয়। ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য অনেক বেশি। ফলে শহরে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের বসবাসের সঙ্গ্যে সঙ্গে প্রচুর 'বস্তিবাসী মানুষ' (Slum dwellers) দেখা যায়।


বসতগৃহ নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমির বিপুল দামের জন্য একশ্রেণির প্রোমোটারদের হাতে জমির নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে। এমনকি এই জমি-বিবাদ থেকে অসামাজিক কার্যকলাপের পরিমাণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে যেহেতু নগরগুলি ক্রমাগত আয়তনে সম্প্রসারিত হচ্ছে এই জন্য বিভিন্ন পরিষেবার মান কমে যাচ্ছে। According to GEO-2000 inadequate provaon of water, sanitation, dramage and garbage removal means many people's Irve and health are under continous threat. The problems on the rural areas have driven people inte the cities is also a part of the problem (UNEP 1999. Gugler 1997)


বসতগৃহ নির্মাণ সমস্যা (Housing Problem): ভারতীয় শহরগুলিতে বসতগৃহ নির্মাণে উপযুক্ত পরিমাণ জায়গার অভাব আছে। ফলে দেখা যায় যে, প্রচুর সংখ্যক মানুষের পরিব্রাজন শহরে ঘটলে তাঁদের বাসস্থান বা থাকার জায়গার সংস্থান করা একটি বড়ো সমস্যা। কলকাতা, মুম্বাইয়ের মতো মহানগরগুলিতে প্রতি 6 জন সদস্য পিছু একটিমাত্র থাকার ঘর আছে (Census India, 2011)। শহরে প্রায় 39% মানুষ একটি ঘরে বসবাস করতে বাধা হন। প্রায় ২৩% শহুরে মানুষ ভাড়া বাড়িতে (Rented House) থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে তাঁদের জীবনযাত্রার মান কিছুটা নিম্ন।


শহরের খুব গরিব সম্প্রদায় রাস্তার ধারে বসতিতে, রেললাইনের ধারে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করছেন। কলকাতা, মুম্বাই শহরেও প্রচুর বস্তি অঞ্চল রয়েছে। অত্যধিক হারে slum (বস্তি) বসতির সংখ্যা বৃদ্ধি অন্যান্য সামাজিক সমস্যা তৈরি করছে। বিভিন্ন ধরনের দূষণের মাত্রা এই কারণে বৃদ্ধি পায়।


বেকারত্ব (Unemployment): ভারতের তথাকথিত প্রাচীন শহর কিংবা নতুন শহরগুলিয়ে15%-25% মানুষ কর্মহীন। শিক্ষিত সম্প্রদায়ের হার শহরে বেশি থাকায়, শিক্ষিত বেকারের সংখ্যাও এখানে অনেক বেশি হয়। ভারতের চারটি প্রধান মেগাসিটিতে মোট শিক্ষিত মানুষের অর্ধেক বেকার। এই চারটি মেগাসিটি হল- কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই এবং দিল্লি। গ্রাম থেকে শহরে প্রচুর সংখ্যক মানুষ এসে বসবাস করার ফলে বেকারের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।


শিক্ষিত বেকার সম্প্রদায়ের ছেলে ও মেয়েরা বাধ্য হয়ে ট্যাক্সিচালক, Daily Salesman এবং অনান নিকৃষ্ট মানের কাজ করতে বাধ্য হন। তাদের মজুরির পরিমাণও খুবই স্বল্প। খুব দরিদ্র সম্প্রদায়ের মহিলাগণ উচ্চবিত্ত পরিবারগুলিতে দৈনন্দিন গৃহস্থালির কাজকর্মে নিযুক্ত হন।


পরিবহণ সমস্যা (Transportation Problem): প্রয়োজনীয় রাস্তার অভাব, গাড়ির সংখ্য বৃদ্ধি, জনবিস্ফোরণ, রাস্তার স্বল্প ঘনত্ব প্রভৃতি কারণে আমাদের দেশের শহরগুলিতে পরিবহণের ক্ষেত্রে তীর সমস্যা দেখা যায়। যানজটের সমস্যা, পথ দুঘটনা, যানবাহনের অত্যন্ত ধীরগতি দৈনন্দিন মানুষের চলাচলে বিভিন্ন গুরুতর সমস্যা তৈরি করছে। অফিস সময়ে (affice time) বিভিন্ন ধরনের ট্রাক চলাচলের ফলে যানজটের সমস্যা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। প্রায় প্রতিটি শহরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে (C.B.D.) পরিবহণ জনিত সমস্য অত্যন্ত ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। প্রতিটি শহরেই ফ্লাইওভার রাস্তা, বাইপাস রাস্তা, মেট্রোরেল এই সমস্যার হাত থেকে কিছুটা আমাদের মুক্তি দেবে। এগুলির গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে।


রাজনৈতিক সমস্যা:

শহরাঞ্চলে অপরাধের সংখ্যা বৃদিদ্ধ (Increase of Urban Crime): শহরগুলির সামাজিক পরিবেশের অবক্ষয় বেশ কয়েক দশক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। ফ্ল্যাট, দোকান, জমি, বাড়ি বিক্রয় প্রভৃতিকে কেন্দ্র করে একশ্রেণির অসাধু গোষ্ঠী গাথেেেঠ মরারা কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে বেড়ে ওঠে। ফলে বিভিন্ন গোষ্ঠীগুলির মধ্যে টাকা উপার্জনের প্রতিযোগিতা চলে। নারী ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি, অপহরণ, খুন প্রভৃতি অসামাজিক কাজের সংখ্যা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি অনেক বেশিগুণ পেয়েছে। নারী নির্যাতনে পশ্চিমবঙ্গঙ্গ প্রথম (2011)। সুতরাং, শহরের মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা অনেক কমে গেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দাঙ্গা প্রায়ই সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সামগ্রিকভাবে দেখা যায় যে, অতি নগরায়ণ সামাজিক সমস্যাগুলিকে আরও প্রকট করে তুলছে। ভারতীয় শহরগুলির মধ্যে মুম্বাই এবং দিল্লিতে অপরাধমূলক কাজের সংখ্যা সব থেকে বেশি। মুম্বাইয়ের 31.8% এবং দিল্লির 30.5% মানুষ বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কাজের শিকার হচ্ছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বড়ো শহরগুলিতে প্রতি পাঁচ বছরের মধ্যে যে-কোনো ধরনের রাজনৈতিক দাঙ্গা ঘটছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রগুলি অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে মানুষের জীবনের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে।


এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও উচ্ছৃঙ্খলমূলক কাজের প্রভাবে সাধারণ মানুষের বসবাস এবং দৈনন্দিন জীবনে নিরাপত্তার অভাব প্রকট হয়ে দেখা যায়। এভাবে নগরায়ণের ফলে পরিবেশের ওপর ঋণাত্মক প্রভাব পড়ছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01