জনসংখ্যা পিরামিডের গুরুত্ব (Importance of Population Pyramid)
যে লেখচিত্রের সাহায্যে কোনো দেশ বা অঞ্চলের জনসাধারণের বয়স অনুসারে নারী-পুরুষের জন্ম- মৃত্যুর আয়তন ও গঠন বিন্যাস প্রকাশ করা হয় তাকে জনসংখ্যা পিরামিড (Population Pyaramid) ব এজ-সেক্স পিরামিড (Age-Sex Pyramid) বলে। এই পিরামিডকে বয়সভিত্তিক স্ত্রী-পুরুষের অনুপাত সূচক পিরামিড বা বায়োগোষ্ঠীর পিরামিডও বলা হয়।
1. জনসংখ্যা পিরামিড থেকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি জানা যায়
(i) জনসংখ্যা পিরামিডের সাহায্যে নারী-পুরুষের বয়সভিত্তিক বিন্যাসের তাৎপর্য ও তারতম্য প্রকাশ করা যায়।
(ii) কোনো দেশ বা অঞ্চলের জন্ম ও মৃত্যুহার আর্থসামাজিক পরিস্থিতি এবং জনসংখ্যার বিবর্তনের স্তর সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
(iii) কোনো দেশ বা অঞ্চলের নির্ভরশীলতার অনুপাত সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় যা আমাদের ওই দেশ বা অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা ও অগ্রগতির ধারণা দেয়।
(iv) মোট জনসংখ্যার কতটা অংশ মহিলা ও পুরুষ তাও আমরা জানতে পারি।
(v) জনসংখ্যা পিরামিডের আকার দেখে পিরামিডটি উন্নত, উন্নয়নশীল কিংবা স্বল্পোন্নত দেশ, সে সম্পর্কে আমরা ধারণা করতে পারি।
(vi) জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতিপ্রকৃতি সম্পর্কেও আমরা বিভিন্ন তথ্য পাই।
(vii) পিরামিডের মধ্যভাগ প্রশস্ত হলে যুবক ও কর্মক্ষম জনসংখ্যার আধিক্য দেখা যায়। অর্থাৎ, তখন নির্ভরশীলতার অনুপাত হ্রাস পায়।
(viii) পিরামিডের শীর্ষভাগ সংকীর্ণ হলে স্বল্প আয়ু, উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা সহ অনেক আর্থসামাজিক অবস্থাকে নির্দেশ করে।
(ix) বয়স ভেদে মহিলা-পুরুষের তারতম্য মহিলা-পুরুষ অনুপাতকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করে এবং এর সাহায্যে মহিলা জনসংখ্যার সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা ও সমাজজীবনে মহিলাদের গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দেয়।
(x) পূর্ববর্তী বয়স-শ্রেণির তুলনায় পরবর্তী বয়স-শ্রেণিগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে পরিব্রাজন বা Migration-এর প্রভাব বোঝা যায়। একইভাবে জনসংখ্যা হ্রাস পেলে মৃত্যু কিংবা বহিঃ- পরিব্রাজক (Outmigration) সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।