দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনের ফলাফল (Impact in Internation immigration after 2nd Worldwar)
এই পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে এক নতুন গতিপ্রকৃতি লক্ষ করা যায়। 1970-এর দশকের মাঝামাঝি সময় আমেরিকা এবং ওশিয়ানিয়া থেকে প্রতিবছর প্রায় কয়েক মিলিয়ন মানুষ বিভিন্ন দেশে গমন করেছেন। 1990-এর দশকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনের হার ছিল 4 জন প্রতি 1000 জনসংখ্যায়। অধিকাংশ আমেরিকাবাসী এটা সচেতন যে, there has been a surge in US immigration over the past three or four decades but the rate of immigration in the 1990s was still only a third of what it was in the 1900s.
1910 খ্রিস্টাব্দ থেকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশে জন্মানো জনসংখ্যার পরিমাণ 15% থেকে 1970 খ্রিস্টাব্দে 4.7% নেমে এসেছে। 1000 খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার জনগণের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনের হার 107% বৃদ্ধি পেয়েছে। 1945 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1960 খ্রিস্টাব্দ এই 15 বছরের মধ্যে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নীট পরিব্রাজনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। মেক্সিকো এবং ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত বিভিন্নতা দেশে আমেরিকার অনেক মানুষ চলে আসেন।
1945 খ্রিস্টাব্দ থেকে পরবর্তী যত বছরে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা মহাদেশের জনগণের দিংসদ জন্মানো জনসংখ্যা 36.5% থেকে ২৪ 4% বৃদ্ধি পেয়েছিল। এশিয়ার জনসংখ্যা পরিব্রাজনজনিত কারণে প্রার খ্রিস্টাব্দে 28.6% বৃদ্ধি পায়। পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলই পরিব্রাজনের প্রধান গন্তব্যস্থলে। পৃথিত প্রায় 79৩% বিদেশে জন্মানো শিশু ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ওশিয়ানিয়া এবং পারস্য উপসাগরের তীরে দেখা যায়। যে অঞ্চল থেকে পরিব্রাজন ঘটেছিল অর্থাৎ, মানুষ যে সমস্ত স্থান ত্যাগ করে এসেছিলেন সেগুজি হল আফ্রিকা, এশিয়া, পূর্ব ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ।
অক্ষিকা, অনিয়ায়িকাদের মধ্যে এশিয়া মহাদেশ থেকে পরিরাজন কিছুটা স্থিতিশীল ছিল। এই সম ল্যাটিন আমেরিকা থেকে আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনে কিছুটা স্থিতিশীলতা লক্ষ করা গেছে। এমনকি বিশুদ্ধ 35 বছরে পূর্ব ইউরোপ থেকেও পরিব্রাজকের সংখ্যা কিছুটা কমে গেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী পঞ্চাশ বছরের আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে পাঁচটি বিশেষ অঞ্চল চিহ্নিতহয়ে আছে।
প্রথম ক্ষেত্র: ইউরোপ মহাদেশ থেকে পরিব্রাজকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। 19% খ্রিস্টাব্দে উত্তর আমেরিকা এবং ওশিয়ানিয়াতে বছরে প্রায় 4,00,000 জন মানুষ ইউরোপ থেকে এসেছিলেন। কিন্তু 19%) খ্রিস্টাব্দে এই পরিব্রাজকের সংখ্যা মাত্র 1,00,000 জন ছিল। ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে পরিব্রাজনে। হার বেশি থাকায়, বাইরের মহাদেশের মানুষের মধ্যে পরিব্রাজনের হার কম ছিল।
উনবিংশ শতকে উপনিবেশ গঠনের সময় থেকেই দক্ষিণ ইউরোপ থেকে আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনের চিরাচরিত প্রথা ছিল। কিন্তু পরিব্রাজন মূলত মহাদেশের অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ ছিল। Toward the 195 this more traditional outflow was replaced by migration heading north within Europe led by Italy, Greece, Portugal and Spain, later joined by Turkey (Venturini 2004: 1店 উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, পোর্তুগিজ অধিবাসীদের মধ্যে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে যাওয়ার হার 1955 54 খ্রি. ছিল মাত্র 1-5%। কিন্তু এই হার 1970-74 খ্রি. বৃদ্ধি পেয়ে হয় 57-1% (United Nations 1979)
ইউরোপ মহাদেশের অভ্যন্তরে পরিব্রাজনের হার দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের টিক পরেই। কারণ এই সময় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল। ফলে মানুষ নিরাপত্তার খোঁজে বিভিন্ন দেশে চলে আসেন। বিদেশি লোক জার্মানিতে 1957 খ্রিস্টাব্দে 6% ছিল। কিন্তু 1972 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে এর পরিমাণ হয় 11-2%। 1973 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইউরোপের উত্তরভাগ থেকে দক্ষিণভাগের দিকে পরিব্রাজন চলেছিল। Foreign nationals increased from 1.3% of the Western European population in 1950 to 45% in 1990. The 1990 figure would easily double if it included the foreig born that had become naturalized (Stalker 1994 189-90)
সাম্প্রতিককালে এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা, এমনকি সোভিয়েত রাশিয়া থেকে মানুষ পশ্চিম এবং দক্ষিন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চলে আসছেন। এর ফলে দেখা যাচ্ছে যে, ইউরোপের নীট পরিব্রাজকের সংখ্য 1980-এর দশকে যেখানে ছিল 2 লক্ষ, 1989-93 খ্রিস্টাব্দে সেই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় 10 লক্ষ।
দ্বিতীয় ক্ষেত্র: ল্যাটিন আমেরিকা থেকেও বিভিন্ন মহাদেশে মানুষের পরিব্রাজন ঘটেছিল। উনবিংশ শতকে অত্যন্ত দরিদ্র, স্বল্প মূল্যের মজুরির শ্রমিক কৃষিপ্রধান দেশগুলি থেকে শিল্পে উন্নত দেশগুলিতে গমন করেছিল। বাইরে থেকে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলিতে পরিযানের সংখ্যা কম ছিল। কারণ ল্যাটিন আমেরিকা অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলি থেকে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপূরে মানুষের পরিযানের সংখ্যা 1960 খ্রি. 19 মিলিয়ন থেকে 1980 খ্রি. 4.8 মিলিয়ন হয়।
আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের বহিঃপরিব্রাজকের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, 1950 খ্রিস্টাব্দে প্রায় 22-2% মানুষ দক্ষিণের সীমান্তবর্তী দেশগুলি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। 1990 খ্রিস্টাব্দে এর হার ছিল 47-2%। মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে 1950 খ্রিস্টাব্দে প্রায় 12% মানুষ পরিব্রাজনের মাধ্যমে চলে আসেন। 1990 খ্রিস্টাব্দে এর হার ছিল 25%।
তৃতীয় ক্ষেত্র: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী দশকগুলিতে এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলি থেভেও প্রচুর ভাষাত মানুষের পরিব্রাজন ঘটে। প্রধানত এশিয়ার অন্তর্গত ভারত, পাকিস্তান, চিন, কোরিয়া, ফিলিপাইন্স এথবা ভিয়েতনাম থেকে দলে দলে মানুষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে বসবাস শুরু করেন।
উন্নয়নশীল দেশগুলি থেকে ইউরোপের পাঁচটি দেশে প্রধানত মানুষ এসেছিলেন। এই পাঁচটি দেশ হল-বেলজিয়াম, জার্মানি, নেদারল্যান্ড, সুইডেন এবং ইউনাইটেড কিংডম। এই দেশগুলিতে 1975-99 খ্রিঃ পরিব্রাজনের মাধ্যামে 97,000 মানুষ আসেন। 1990-93 খ্রিস্টাব্দে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হয় 2,25,000 (United Nations 1997 32-3), উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, শুধুমাত্র জার্মানিতে বছরে উত্তর আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়া থেকে 20,000 জন মানুষ এসেছেন (1975-79 খ্রিস্টাব্দ)। 1990-93 খ্রিস্টাব্দে এর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে এডায় 67,000 জন। এই সময় সাব-সাহারা আফ্রিকা থেকে জার্মানিতে মানুষের আগমনের সংখ্যা 1200 থেকে বৃদ্ধি পেয়ে 22,000 জন হয়।
চতুর্থ ক্ষেত্র: পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী তেল উত্তোলক দেশগুলিতেও প্রচুর সংখ্যক মানুষ অন্যান্য দেশগুলি থেকে এসেছিলেন। সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরিন এবং সংযুক্ত আরব আমীর শাহী- এই দেশগুলিতে জুর শ্রমিকের চাহিদা আছে। ফলে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি সস্তার শ্রমিক নিয়ে আসা হয়। দ্রুত কর্মসংস্থানের জনা বাড়িঘর তৈরির কাজ, বাণিজ্য প্রভৃতি কাজে সস্তায় প্রচুর শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। তা ছাড়া ডাক্তার, নিজক, ইঞ্জিনিয়ার প্রভৃতির চাহিদা বিদেশ থেকে শ্রমিক এনে প্রয়োজন মেটানো হয়।
এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলি থেকে প্রতি বছরে গড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে 1975 খ্রিস্টাব্দে 1 লক্ষ তার শ্রমিক যেতেন। 1991 খ্রিস্টাব্দে এর পরিমাণ প্রায় 10 লক্ষে পৌঁছায়। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের দেশগুলি থেকে শ্রমিকের ও অন্যান্য চাকুরীজীবীদের যাওয়ার পরিমাণ 1975 খ্রি. ছিল 97%। কিন্তু 1991 খ্রি. এই সংখ্যা হ্রাস পেয়ে হয়েছে 36%। শুধুমাত্র বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা থেকে মধ্যপ্রাচ্যে মানুষের পরিযানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে 22% হয়েছে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি থেকে 42% মানুষ বেশি পরিমাণে পরিযান সম্পন্ন করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে অধিক মজুরি লাভের আশায় মানুষজন এসে ভিড় করতে থাকেন। প্রধানত স্বল্প সময়ের জন্য চুক্তি বিশেষে শ্রমিক এনে পারস্য উপসাগরের দেশগুলিতে রাখা হয় এবং তারা এখানকার নাগরিকত্ব লাভ করে।
পঞ্চম ক্ষেত্র: ইউরোপ মহাদেশের পূর্বভাগ থেকেও আন্তর্জাতিক পরিব্রাজন শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র এবং শিল্পে স্বল্পোন্নত দেশগুলি থেকে ধনী এবং শিল্পোন্নত দেশগুলিতে মানুষের পরিব্রাজন চলতে থাকে। এমনকি যুদ্ধের সময়ও পোল্যান্ড এবং চেকোস্লাভাকিয়া থেকে প্রচুর সংখ্যক মানুষ বেলজিয়াম এবং ফ্রান্সে চলে আসেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষের পরবর্তী পাঁচ বছরে পোল্যান্ড, চেকোস্লাভাকিয়া এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে 12 মিলিয়ন জার্মান নাগরিক জার্মানি অথবা অস্ট্রিয়াতে ফিরে আসেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঠিক শেষে 15 মিলিয়ন পোল্যান্ডের অধিবাসী অন্যদেশে চলে যান। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে "There was migration churning within Eastern Europe associated with postwar political readjustment"
1950 খ্রিস্টাব্দের পর কমিউনিস্ট শক্তির উত্থান সমগ্র বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল। "Migration to countries with established market economics was practically forbiden. Migration between centrally planned economics occurred on a very limuted scale... (United Nations 2002a 12)
• উপসংহার: ঐতিহাসিকভাবে এটা প্রমাণিত যে, 1950 খ্রিস্টাব্দের পর তিন থেকে চারদশক ধরে পরিব্রাজনের হার কিছুটা কমেছিল। 1960-এর দশকে ইহুদীরা ও জার্মানীর পরিবারবর্গ নিয়ে ইস্রায়েলে চলে আসেন। যুগোরিডিয়ার সরকার বহিঃপরিব্রাজনের নিয়ম শিথিল করে দিলে এদেশের অনেকে জার্মানিতে চলে যান এরকম পরিব্রাজকের সংখ্যা প্রায় অর্ধ মিলিয়ন। 1956 খ্রি. হাঙ্গোরিতে এবং 1968 খ্রিস্টাব্দে চোকোপ্লাভাকিয়াং রাজনৈতিক কারণে উদ্বাস্তু সৃষ্টি হয় এবং তারা বিদেশে গমনে করেন।
1980-এর দশকে আন্তর্জাতিক পরিব্রাজনের ক্ষেত্রে নাটকীয় পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। 1985 খ্রিস্ট থেকে 1989 খ্রিস্টাব্দ এই চার বছরের মধ্যে 1-2 মিলিয়ন লোক পোল্যান্ড এবং রোমানিয়াতে পরিগ্রাম থেকে। 1997-98 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউরোপ মহাদেশের মধ্যে পূর্ব-পশ্চিম দিকে মনুজে পরিব্রাজনের গতিপ্রকৃতি লক্ষ করা যায়।