বসতির বিবর্তন (Evolution of Settlements)
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত মানুষের সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, মানুষের সংস্কৃতি চাহিদা ও পরিবেশের প্রভাবেই বসতির বিবর্তন ঘটেছে।
প্রজাতির বিবর্তনের ক্ষেত্রে কতগুলি সুস্পষ্ট স্তর লক্ষ করা যায়। সেগগুলি আমরা সংক্ষেপে আলোচনা
(1) ফলমূল সংগ্রহের যুগ (Stage of Food Gathering): মানবসভ্যতার প্রাথমিক পর্যায়ে মানুষ প্রতিভাবে বসবাস করত না। ফলমূল সংগ্রহ, পশু ও মৎস্য শিকার ছিল সেই সময়ের মানুষের প্রধান জীবিকা। প্রতিভাবে খাদ্য ও পানীয় সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থান থেকে ঘুরে বেড়াত। অস্থায়ীভাবে কোনো গৃহা কিংবা কোনো লতাপাতা দিয়ে তৈরি অস্থায়ী বাসগৃহে বাস করত। অল্প সংখ্যক মানুষ তখন প্রভাবে বড়ো অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়ে খাদ্য এবং পানীয় সংগ্রহ করত। কারণ সম্পদ সৃষ্টি করা কিংবা সম্পদের বাগবিতা বৃদ্ধি করার মতো বুদ্ধি এবং প্রযুক্তি তখনকার দিনের মানুষের আয়ত্তে ছিল ।
(3) কৃষি ও পশুপালনের যুগ (Stage of Agriculture and Animal Domestication): পরবর্তীকালে এর কৃষিকাজ এবং পশুপালন শুরু করে। প্রায় 11,000 বছর পূর্বে নিওলিথিকযুগে (Neolithic Age) মানুষ তারণ্যা পরিত্যাগ করে উর্বরভূমির সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। উর্বর ভূমি থেকে প্রাপ্ত সম্পদের ওপর নির্ভর করে জলসায়ীভাবে বসবাস শুরু করল। এই যুগ প্রস্তরযুগ রূপেও খ্যাত ছিল। অবশ্য এই যুগে স্থায়ী বসতির উৎপত্তি প্রায় সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। অনেক সমাজবিজ্ঞানীর মতে, নির্দিষ্ট জমিতে কৃষিকাজের প্রচলন থা িবসতি গড়ে ওঠার একমাত্র কারণ। আবার অন্য দিকে কেউ কেউ মনে করেন কৃষি ছাড়াও পশুপালন কাষ্ঠাহরণ মৎস্য শিকার প্রভৃতি কার্যকলাপও স্থায়ী বসতির ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
(3) ধাতুর যুগ (Age of Metals): ধাতুযুগে প্রথমে তামা, পরে ব্রোঞ্জ এবং সবশেষে লোহার ব্যবহার গ্রহয়। এসব ধাতুর ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিকাজের চরিত্র দ্রুত পালটাতে থাকে। জমি পিছু এবং মাথা বন্ধু সম্পদ উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে থাকে। অধিকাংশ মানুষ শস্য উৎপাদনে নিজেদের নিয়োজিত রাখলেও আানা অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে। ব্যাবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে উর্বর এইক্ষেত্র অধ্যুষিত অঞ্চলের বুকে কোথাও কোথাও নগর গড়ে উঠতে থাকে। গ্রামীণ বসতিগুলিও নাগরিক গতির নির্মাণ সামগ্রী ও নির্মাণ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে লাগল। যদিও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনুন্নত বহু গ্রামীণ প্রতি প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং যাতায়াতের অনুন্নয়নের জন্য অপরিবর্তিত থেকে গেল।
(4) শিল্পবিপ্লব এবং শিল্পবিপ্লবোত্তর যুগ (Phase of Industrial Revolution and Post-Industrialimalation): শিল্পবিপ্লব মানব বসতির বিস্তার এবং চরিত্রের ওপর অত্যন্ত শক্তিশালী প্রভাব বিস্তার হরছিল। শস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হতে শুরু করল। ফলে স্বল্প সংখ্যক মানুষ আধুনিক সৃষ্টি এবং কলাকৌশলের সাহায্যে অধিক পরিমাণ শস্য উৎপাদনে সমর্থ হল। অধিক সংখ্যক মানুষ শহর