গ্রামের অবস্থানের জন্য পরিবেশগত সমস্যা(Environmental Problems by Virtue of Site of Village):
গ্রামের বসতিগুলির অবস্থানগত কারণে অনেকক্ষেত্রে পরিবেশগত সমস্যা দেখা দেয়। মানুষ উর্বর কৃষি জমির নিকট বসতি স্থাপন করে। ইউরোপ মহাদেশে গ্রামগুলি পার্বত্য কিংবা মালভূমি অঞ্চলের মৃদু ঢেউ খেলানো জমিতে অথবা পর্বতের মৃদু ঢালে অবস্থিত হয়। কিন্তু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় দেশগুলিতে গ্রামীধ বসতি নদী-উপত্যকার প্লাবনভূমি, বদ্বীপ সমভূমি কিংবা উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলে গড়ে ওঠে। নীচু এলাকার অধিবাসীগণ বন্যার প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য পর্বতের ধাপে কিংবা নদীর স্বাভাবিক বাঁধের ওপর বসতি গড়ে তোলে। নদীর তীরে গড়ে ওঠা বসতিগুলিতে বন্যা, বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এমনকি প্রতি মুহূর্তে এখানে বিভিন্ন ধরনের বিপর্যয় (বন্যা, নদী পাড়ের ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, কৃষিজমিতে লবণাক্ত জলের প্রবেশ ইত্যাদি) দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও মানুষ ঝুঁকি বহন করে এখানে বসবাস করছে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বিশ্ব উন্নায়ন ও তার প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উত্থানের কারণে সমুদ্র ও বড়ো বড়ো নদীর তীরবর্তী এলাকা বর্তমানে খুব 'ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল' (Vulnerable area) হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় পার্বত্য গ্রামগুলিতে প্রায়ই ভূমিকম্প, তুষারপাত, ভূমিধ্বস ইত্যাদি ঘটে। ফলে গ্রামগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। তা ছাড়া গ্রামগুলি এত দূরে দূরে অবস্থিত হয় যে, এগুলি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে। শহরগুলির তুলনায় এসব গ্রামগুলিতে বিপদের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। সাম্প্রতিককালে হড়পা বানে কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ অঞ্চলের গ্রামগুলি এভাবে ধ্বংস হয়েছে।