গ্রামীণ বসতির পরিবেশগত দিকসমূহ(Environmental Issues in Rural Settlement):
গ্রামীন বসতির ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায় যে, এখানে বেশির ভাগ জমি বনভূমি দ্বারা আবৃত রেবা বিস্তীর্ণ এলাকার জমিতে কৃষিকাজ করা হয়। প্রচুর পরিমাণে ফাঁকা জায়গা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে একে। কোনো অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষজন এবং ওই অঞ্চলের স্থানীয় পরিবেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ড়ে ওঠে। ফলে মানুষ পরিবেশকে ক্রমশ নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। যেহেতু শহরের মতো এখানে দ্রুত প্রিতে বসতিস্থাপন কিংবা অট্টালিকা নির্মাণ চলে না সেইজন্য শহরের মতো পরিবেশগত সমস্যা গ্রামীণ প্রতিতে বেশি প্রকট হতে পারে না।
গ্রামীণ বসতিতে গৃহ নির্মাণের জন্য পরিবেশ বান্ধব দ্রব্যের ব্যবহার বেশি হয়। মাটি, খড়, টালি, বাঁশ, খো, কাঁচা, ইট প্রভৃতি দ্বারা গ্রামের মানুষ গৃহ নির্মাণ করেন। এসব বস্তু থেকে পরিবেশে কখনও দূষণ ঘটে না। কৃষিকাজ প্রধান জীবিকা হওয়ায় শিল্প-কলকারখানার সংখ্যা অনেক কম হয়। পরিবেশ দূষণের হার এজন্য গ্রামীণ এলাকায় কম ঘটে। তবে যত্র-তত্র বর্জ্য পদার্থ ফেলার ফলে ভূমি ও বায়ুতে দূষণ ছড়ায়। প্রমীণ এলাকার সুস্থায়ী উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের নীতি পালিত হচ্ছে। গৃহকাজে ব্যবহৃত বস্তুসমূহ ব্যবহারের শেষে পচে মাটিতে পরিণত হয়। চিরাচরিত গ্রামীণ সমাজে খুব কম পরিমাণে বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয়। যে জর্জ পদার্থ তৈরি হচ্ছে সেটি আবার ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হচ্ছে। যেমন ধান কাটার পর ড় পড়ে থাকে। এই খড় গবাদি পশু খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে।
গ্রাম এবং শহরের মানুষের জীবনযাত্রার মধ্যে পার্থক্য লক্ষ করা যায়। জনপরিসেবা গ্রামে অনেক সীমিত। সেই তুলনায় নগরে নাগরিক পরিসেবা অনেক বেশি। সরকারি নীতিরূপায়ণ, যথা পুলিশ পরিসেবা, বিদ্যালয় গরসেবা, দমকল, লাইব্রেরী, পানীয় জল প্রভৃতি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গ্রামে এই ধরনের পরিসেবার মরা তুলনামূলকভাবে কম আছে। গ্রামে যেখানে সেখানে আবর্জনা পড়ে থাকে। পানীয় জলের সংকট, বিদ্যুৎ সংকট এবং অন্যান্য পরিসেবা এখনও কম আছে।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর রাস্তাঘাটের উন্নতিতে এগিয়ে এসেছে। বিভিন্ন NGO গ্রামকে 'মডেল গ্রামে' পরিণত করেছে। টেলিফোনের পরিসেবা বিশেষ করে মোবাইল ফোনের জন্য গ্রামাঞ্চলে জনসংযোগ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি ঘটেছে।
বর্তমানে গ্রামাঞ্চলেও জনসংখ্যা বাড়ছে। ফলে পরিবেশ দূষণ, পরিবেশের অবনমন দুটোই ঘটছে। পরিবেশ উন্নয়ন মন্ত্রক গ্রামের প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ সুরক্ষায় বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।