জনসংখ্যার অর্থনৈতিক গঠন (Economic Composition of Population)
ভারতীয় জনসংখ্যাকে জাতিগত ও ভাষাগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে যেমন শ্রেণিবিভাগ করা যায় তেমনি অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর ভিত্তিতেও ভারতীয় জনসংখ্যাকে বিভিন্ন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। অর্থনৈতিক পরিকাঠামো বলতে প্রধানত জনগণের পেশাগত বণ্টন, কর্মসংস্থান দারিদ্র্য, বেকারত্ব, মাথাপিছু আয়, জীবনযাত্রার মান, প্রভৃতি দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করা উচিত।
পেশাগত বণ্টন 2011 সালের জনগণনা অনুসারে ভারতের জনসংখ্যা 121 কোটি 19 লক্ষ 34 হাজার 422 জন। এর মধ্যের কোটি মানুষ বিভিন্ন কর্মে নিযুক্ত আছেন।
আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার 72.2% গ্রামে 27.8% শহরে বসবাস করেন। গ্রামের সিংহভাগ মানুষ প্রাথমিক অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বিশেষত কৃষিকাজে নিযুক্ত থাকেন। তবে গ্রামের সমস্ত মানুষই কৃষিকাজে নিযুক্ত হন না। গ্রামের কিছু লোক চাকরি ও অন্যান্য কাজে নিয়ন্ত্র থাকেন। ভারতের গ্রামীণ জনসংখ্যার প্রাথমিক, গৌণ ও তৃতীয় স্তরের অর্থনৈতিক কার্যকলাপে অসমানভাবে নিযুক্ত আছেন। নগরবাসীর মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের কাজকর্মে বেশি নিযুক্ত হতে দেখা যায়।
কর্মসংস্থান: ভারতের প্রায় ৩০% মানুষ প্রত্যক্ষভাবে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত আছে তবে মোট GDP-র 25% মাত্র কৃষিক্ষেত্র থেকে আসে। আমাদের দেশের 40 কোটি মানুষ বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত আছেন। এই সমস্ত পেশায় প্রতিবছর ২% করে আরও বেশি জনসংখ্যা নিযুক্ত হবে। ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গেঙ্গ সঙ্গে বিভিন্ন পেশায় প্রচুর পরিমাণে মানুষ নিযুক্ত যেমন হচ্ছে তেমনি অনেকে কাজের অভাবে বেকার হয়ে পড়েছে। গ্রাম কিংবা শহরে উভয় এলাকাতেই কর্মসংস্থানের গুরুত্ব আছে। কারণ এর মাধ্যমেই মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে।
ভারতের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়
(i) ভারতীয় জনগণের মূল পেশা হল কৃষিকাজ।
(ii) বিভিন্ন খনি এবং পাথর খাদানের কাজে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা বছর বছর হ্রাস পাচ্ছে।
(iii) গ্রামে এবং শহরে উভয় জায়গাতেই শ্রমশিল্পে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
(iv) শ্রমশিল্পে নিযুক্ত মানুষের সংখ্যা গ্রাম অপেক্ষা শহরে অনেক বেশি।
(v) শহর এলাকায় বিভিন্ন নির্মাণ কাজের পরিমাণ প্রতি বছর অত্যন্ত দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
(vi) অর্থ, বিমা ও সম্পত্তি ক্রয়বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মানুষের নিযুক্তি সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে শহর এলাকায়। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এই মানুষের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।
মাথাপিছু আয় স্বল্পতা: দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মাথাপিছু আয় কমে যাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে মাথাপিছু বার্ষিক আয় 15,000 টাকা, সেখানে শহরে মাথাপিছু বার্ষিক আয় 46,000 টাকা। মাথাপিছু স্বল্প আয় জীবনযাত্রার মানকে ব্যাহত করে।
দারিদ্র সমস্যা: ভারতে 30% মানুষ এখনও দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। ভারতে যে হারে প্রতিবছর শিশু জন্মগ্রহণ করে তার ০০% জন্মায় দরিদ্র পরিবারগুলিতে