মহাদেশ অনুসারে জনসংখ্যার বণ্টন (Distribution of Population by Continents)
পৃথিবীর মধ্যে এশিয়া মহাদেশ শুধু আয়তনগত দিক থেকেই বৃহত্তম নয়, জনসংখ্যার দিক দিয়েও এই মহাদেশ বৃহত্তম জনবহুল মহাদেশে পরিণত হয়েছে।
1. এশিয়া মহাদেশ (Asia): পৃথিবীর বৃহত্তম জনবহুল মহাদেশ হল এশিয়া। 2011 খ্রিস্টাব্দের পরিস, অনুসারে এই মহাদেশের লোকসংখ্যা প্রায় 415 কোটি 70 লক্ষ। প্রতি বর্গকিমিতে গড়ে 122 জন ও বসবাস করেন। এশিয়া মহাদেশের বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার 12.7 (2010)
এই মহাদেশে অধিক লোক বসবাস করার কারণগুলি হল-
(1) কৃষিকাজের উপযোগী জলবায়ু বিরাজ করছে।
(ii) গঙ্গা, হোয়াংহো, ইয়াংসি-কিয়াং, পদ্মা প্রভৃতি নদীর বিস্তীর্ণ পলিগঠিত উর্বর সমতল ছে প্রচুর কৃষিজ ফসল উৎপাদিত হয় বলে জনবসতি খুবই ঘন।
(iii) শিল্পের প্রসার ও বিজ্ঞানের উন্নতি।
(iv) কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামি।
(v) চিকিৎসার উন্নতি এবং মৃত্যুহার হ্রাস পাওয়া।
(vi) অধিক জন্মহার।
(vii) পরিবার পরিকল্পনায় উদাসীনতা।
(viii) শিক্ষার স্বল্পহার।
2. আফ্রিকা (Africa) মহাদেশ: পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল মহাদেশ হল আফ্রিকা। এই মহাদেশে জনসংখ্যা 103 কোটিরও (2011) বেশি। নীলনদের অববাহিকা, মরক্কো, টিউনিশীয়া, ঘানা, নাইজেরিয়া, দক্ষি আফ্রিকা প্রভৃতি দেশ অত্যন্ত জনবহুল। এই মহাদেশ জন্মহার খুবই বেশি এবং বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হ 26.1 (2010)। জনঘনত্ব প্রতি বর্গ কিমিতে 30 জন।
3. ইউরোপ মহাদেশ (Europe): জনসংখ্যার দিক থেকে ইউরোপ মহাদেশ বিশ্বে তৃতীয় স্বার অধিকারী। 2011 খ্রিঃ পরিসংখ্যা অনুসারে এই মহাদেশের লোকসংখ্যা 73 কোটি 90 লক্ষ জন। ও মহাদেশ বেশ জনবহুল। ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইটালি, ব্রিটিশ যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশে জনঘনত্ব অপেক্ষার বেশি।
ইউরোপ মহাদেশের জনসংখ্যা বেশি হওয়ার কারণগুলি হল:
(i) এই মহাদেশ শিল্পে খুবই উন্নত।
(ii) নদী অববাহিকাগুলি কৃষিকাজে উন্নত
(iii) ব্যাবসাবাণিজ্য এবং অন্যান্য পরিসেবাগত দিক দিয়ে খুবই উন্নত।
(iv) উন্নত প্রযুক্তিবিদ্যা, যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত।
(v) নাতিশীতোয় জলবায়ু মানুষের বসবাসের খুবই উপযোগী।
4. উত্তর আমেরিকা (North America): উত্তর আমেরিকা মহাদেশে বর্তমানে 35 কোটির কিছু বেশি লোক বসবাস করেন, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১%। গড় জনঘনত্ব খুবই কম (20 জন প্রতি বর্গকিমি) এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার মাত্র 10.4 (2010)1
এই মহাদেশের নেস্কিকো, ক্যালিফোনিয়া উপত্যকা, বৃহৎ হ্রদ অঞ্চল, সেন্ট লরেন্স নদী অববাহিকা প্রভৃতি জায়গাতে জনবসতি অপেক্ষাকৃত বেশি।
5. দক্ষিণ আমেরিকা (South America): দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ বেশ জনবিরল প্রকৃতির। মোট জনসংখ্যা এবং জনঘনত্ব দুটোই বেশ কম। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ সমেত মোট জনসংখ্যা 60 কোটি এবং গড় জনঘনত্ব 21 জন প্রতি বর্গকিমি। এই মহাদেশে বার্ষিক জনসংখ্যা বৃদ্ধি হার 13.2 (2010)।
ব্রাজিলের আমাজন নদী অববাহিকা, আটাকামা মরুভূমি এগুলি জনবিরল এলাকার অন্তর্গত। অপরপক্ষে পম্পাস অঞ্চল, উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা, পেরু, চিলি, কলম্বিয়া প্রভৃতি দেশ বেশ জনবহুল।
6. ওশিয়ানিয়া (Oceania): ওশিয়ানিয়া মহাদেশের জনসংখ্যা খুব কম, মাত্র 3.5 কোটির কিছু বেশি। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে জনসংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে যেসব দ্বীপগুলি আছে সেগুলি বেশির ভাগ জনবসতিহীন। প্রতিবর্গকিমিতে মাত্র। জন লোক বসবাস করেন। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বার্ষিক হার 15.0.