পশ্চিমবঙ্গে জলসম্পদের চাহিদা ও জলের ব্যবহার (Demand and Utilisation of Water Resorces of West Bengal)
রাজ্যে মোট ১ কোটি ৩২ লক্ষ হেক্টর মিটার জলসম্পদের মধ্যে ৫৩-১ লক্ষ হেক্টর মিটার অর্থাৎ ৪০% এর কম ব্যবহারযোগ্য।
কৃষিক্ষেত্রে জলের ব্যবহার
২০০০-০১ খ্রিস্টাব্দে রাজ্যে প্রায় ৮ লক্ষাধিক সেচ প্রকল্পে প্রায় ৩৪-৩ লক্ষ হেক্টর এলাকা কৃষির আওতায় আসে।
রাজ্যের মাটিতে খোঁড়া কূপগুলি থেকে প্রায় ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে জলসেচ হয়। অগভীর ও গভীর নলকূপ থেকে যথাক্রমে প্রায় ২০ লক্ষ হেক্টর ও প্রায় ৩-১ লক্ষ হেক্টর জমিতে জলসেচ হয়। নদী ও খাল থেকে প্রায় ৪-৭ লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচ হয়। পুকুর, জলাশয় প্রভৃতি ক্ষুদ্র সেচ উদ্যোগে প্রায় ৬ লক্ষ হেক্টর কৃষিজমি সেচের আওতায় আছে। মোট সেচসেবিত জমির পরিমাণ ৩৪-২৭ লক্ষ হেক্টর।
দামোদর, ময়ূরাক্ষী, কংসাবতী প্রভৃতি জলাধারগুলির জলধারণ ক্ষমতা পলি সঞ্চয়ের জন্য কমে যাওয়ায় কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চাহিদার মাত্রা প্রায় ২-৫ শতাংশ মেটানো যায়।
গৃহে জলের ব্যবহার
রাজ্যে জনপ্রতি জলের চাহিদা দিনে ১৩৫ লিটার। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে বিশুদ্ধ জলের তীব্র অভাব রয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে গ্রীষ্মে তীব্র জলসংকট দেখা দেয়। কলকাতা শহরে জলের চাহিদা দিনে প্রায় ৫০ কোটি গ্যালন (হিসেব, ২০০১)। সাতটি পাম্পিং স্টেশন প্রায় ৪৫ কোটি গ্যালন জল হুগলি নদী থেকে উত্তোলন করে শহরে জলের সরবরাহ করে। তবে প্রচুর অপচয় হয় এবং জলের ঘাটতি মেটাতে গভীর নলকূপ খনন করে জল উত্তোলন করায় কলকাতা শহরের ভূ-গর্ভ জলস্তর নেমে যাওয়ায় চিন্তার কারণ হয়েছে।
শিল্পে জলের ব্যবহার
রাজ্যে শিল্পে জলের চাহিদা পূরণে জলের বিশেষ অভাব হয় না। কলকারখানাগুলির অধিকাংশ গঙ্গা ও দামোদর নদীর নিকটে অবস্থিত হওয়ায় জলের সুবিধা।
অন্যান্য ক্ষেত্রে জলের ব্যবহার
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে, বনায়নে এবং পরিবেশ সংরক্ষণে জলের প্রয়োজন হয়। সাধারণভাবে এই সকল ক্ষেত্রে জলের বিশেষ একটা অভাব হয় না।