welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও উদ্ভিদ(Climate, Soil and Vegetation of India)

 ভারতের জলবায়ু, মৃত্তিকা ও উদ্ভিদ(Climate, Soil and Vegetation of India)

ভারতের জলবায়ুর (Climate of India)

ভারতকে 'মৌসুমি বায়ুর দেশ' কেন বলে? গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সমগ্র ভারতে প্রভাব বিস্তার করে এবং ভারতে অধিকাংশ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং এই বায়ু শুষ্ক থাকায় বৃষ্টিপাত হয় না। সুতরাং সামগ্রিক বিবেচনায় ভারতের জলাবায়ু গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন এই দুই মৌসুমি বায়ু দ্বারাই অধিক প্রভাবিত। তাই ভারতকে মৌসুমি বায়ুর দেশ বলা হয়।

ভারতে জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য: ভারত মৌসুমি বায়ুর দেশ। জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল: ১. আর্দ্র গ্রীষ্ম ও শুষ্ক শীতকাল। ২. আর্দ্র গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু যেদিক থেকে প্রবাহিত হয় শুদ্ধ শীতকালীন মৌসুমি বায়ু ঠিক তার বিপরীত দিক থেকে প্রবাহিত হয়ে থাকে। ৩. বৃষ্টিপাত একটানা হয় না। মাঝে মাঝে সাময়িক বিরতি ঘটে। ৪. বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রধানত ভূ-প্রকৃতির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

[১] শীত ঋতু (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি):

ভারত উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। এই সময় সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধে থাকায় সমগ্র ভারতে উত্তাপের পরিমাণ সর্বাধিক কমে যায় বলে এই সময়কে শীতকাল বলে। পাঞ্জাবের অত্যধিক শৈত্যের জন্যে বায়ুর উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় এবং উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে শুষ্ক শীতল বায়ু দক্ষিণে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে গাঙ্গেয় উপত্যকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই বায়ু শীতল স্থলভাগের ওপর দিয়ে বয়ে যায় বলে এই বায়ুতে বৃষ্টিপাত হয় না।

পশ্চিমা ঝামেলা (Western Disturbance): এই সময় মাঝে মাঝে পশ্চিমের ভূমধ্যসাগর অঞ্চল থেকে ঘূর্ণবাত ইরানের ওপর প্রবাহিত হয়ে ভারতের পশ্চিমে প্রবেশ করে এবং বৃষ্টিপাত ঘটায়। কোনো জলীয় বাষ্পপূর্ণ এই বাতাস পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ, বিহার অতিক্রম করে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত এসে পড়ে। এই পশ্চিমা বায়ুকে Western Disturbance বা পশ্চিমা ঝামেলা বলে। এর ফলে কাশ্মীর হিমালয় অঞ্চলে প্রচুর তুষারপাত হয় এবং পাঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি সমভূমিতে বৃষ্টিপাতের ফলে গমচাষের সুবিধে হয়।

গ্রীষ্ম ঋতু (Summer Season) ২১ শে মার্চ সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে নিরক্ষরেখায় আসে এবং তারপর ক্রমশ উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখ এর দিকে অগ্রসর হয়। সূর্যের এই উত্তরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে ভারতে গরম পড়তে থাকে। মার্চ মাসে দাক্ষিণাত্যে উত্তাপের পরিমাণ থাকে ৩৮° সেঃ, এপ্রিলে গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশে উত্তাপের পরিমাণ ৩৮° সেঃ থেকে ৪৩° সেঃ পর্যন্ত এবং মে মাসে উত্তর ভারতে, বিশেষত উত্তর-পশ্চিমে মরু অঞ্চলের কাছে উত্তাপ ৪৮° সেঃ পর্যন্ত উঠে। এই সময় ভারত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্থানীয় নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয় এবং পার্শ্ববর্তী উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু প্রবল বেগে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয়ে স্থানীয়ভাবে ঝড় ও বৃষ্টিপাত ঘটায়। এই সকল স্থানীয় ঝড়ের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের কালবৈশাখী (Nor Wester), বিহার ও উত্তরপ্রদেশের ধূলিঝড় (Dust Storm) বা আঁধি এবং দক্ষিণ ভারতের আম্রবৃষ্টি (Mango shower) বিশেষ উল্লেখযোগ্য। কালবৈশাখীর ঝড়ে বাতাস উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে নিম্নচাপ কেন্দ্রে প্রবেশ করলে একে Nor Wester (North Westerly Wind) বলে এবং এই ঝড় নিম্ন-গাঙ্গেয় উপত্যকায় যথেষ্ট বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে কৃষিকার্যের সুবিধা হয়।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01