সময়ের পরিমাপ অনুসারে মুমূর্ষুতার শ্রেণিবিভাগ(Classification of morbility on the basis of time)
■ স্বল্পকালীন রোগগ্রস্ততা (Short-time Disease): খুব অল্প সময়ের জন্য যে সব রোগ মানুষ রোগগ্রস্ত করে তাকে স্বল্পকালীন রোগগ্রস্ততা বলে। এক মাসের মধ্যে কোন দেশের কতজন ২০ ডাইরিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছে তার হিসেব থেকে স্বল্পকালীন রোগগ্রস্ততা পরিমাপ হয়। তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, অন্ধ্রপ্রদেশে পুরুষ অপেক্ষা মহিলাদের স্বল্পকালীন রোগগ্রস্ততাই বেশি। ভারতের গ্রামাঞ্চলে এখনও বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে ডাইরিয়া, জন্ডিস, টাইফয়েড প্রশ্ন রোগ দেখা দেয়।
প্রায় একবছর ধরে যখন মানুষ রোগে আক্রা হয়ে ভুগতে থাকে তখন তাকে দীর্ঘকালীন রোগগ্রস্ততা বলে। ডায়াবেটিস, নার্ভের অসুখ, মানসি ভারসাম্যহীনতা, হার্টের অসুখ প্রভৃতি দীর্ঘকালীন রোগগ্রস্ততা বলে। দীর্ঘকালীন দারিদ্র্যের কারণে অল থেকে অসুখ এবং অসুখ থেকে নিরাময়ের জন্য উপযোগী পথ্য ও বিশ্রামের অভাবে মানুষ দীর্ঘ ধরে ব্যাধিতে ভুগতে থাকে। কালক্রমে মরণশীলতার দিকে এগিয়ে যায়। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গো যে, জাতি বিশেষে এবং সামাজিক শ্রেণিবিশেষে রোগের প্রকৃতি নির্ভর করে। যেমন-
(A) খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে সাধারণতঃ যক্ষার হার বেশি লক্ষ্য করা যায়।
(b) উপজাতি এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে কুষ্ঠরোগের হার কম লক্ষ্য করা যা
(c) দারিদ্র্য ও অপুষ্টি থেকেই বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাবের হার বেশি হয়। এই জন্য তৃতীয় বিয়ে অনুন্নত দেশগুলিতে বিভিন্ন রোগের আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এদের জীবনযার মান খুবই নিম্নধরনের হয়।
■ মুমুর্ষুতার পরিমাপ (Measures of Morbidity):
প্রধানত তিনটি পদ্ধতি দ্বারা মুমুর্ষুতার পরিমাপ করা হয়।
(1) প্রকোপের হার (Incidence Rate)
(ii) প্রবণতার হার (Prevelence Rate)
(iii) রোগীর ভবিতব্যতার হার (Case Fatality Rate)
■ প্রকোপের হার (Incidence Rate): কোন অঞ্চলে প্রতি এক হাজার লোকের মধ্যে কত জ মানুষ নতুন করে রোগে আক্রান্ত হয়েছে তার সংখ্যা থেকে প্রকোপের হার নির্ধারণ করা হয়।
প্রকোপের হার (Incidence Rate)
নির্দিষ্ট সময়ে অসুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা
নির্দিষ্ট সময়ে মোট
×1000 জনসংখ্যা
∎ প্রবণতার হার (Prevelence Rate): প্রবণতার হার বলতে বোঝায় কোন অঞ্চলে কত সংখ্যক মানুষের নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অথবা কতজন মানুষ ইতিমধ্যে ওই নির্দিষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় কোন অঞ্চলে কয়েকজন ব্যস্তির মধ্যে HIV পজিটিভ সংক্রমন ঘটলে ওই অঞ্চলের অন্যান্য মানুষের মধ্যে ওই রোগে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। সুতরাম ওই অঞ্চলে HIV পজিটিভ প্রবণতার হার হবে, মোট কতজন HIV পজিটিভ আক্রান্ত হয়েছেন এবং ওই অঞ্চলের কতজন মানুষের মধ্যে এর প্রকোপের সম্ভাবনা আছে এই দুইয়ের অনুপাত এবং একে 1000 দিয়ে গুণ করে প্রবণতার হার নির্ণয় করা সম্ভব হয়।
প্রবণতার হার সর্বদা প্রকোপের হারের চেয়ে বেশি হয়।
রোগীর ভবিতব্যতার হার (Case Fatality Rate): কোন অঞ্চলে নির্দিষ্ট অসুখে মৃতের সংখ্যার পরিমানের সঙ্গে ওই অঞ্চলে ওই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যার অনুপাতকে রোগীর ভবিতব্যতার হার বলে।
নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ অসুখে মৃত ব্যস্তির সংখ্যা ওই নির্দিষ্ট অসুখে আক্রান্ত ব্যপ্তির মোট সংখ্যা রোগীর ভবিতব্যতার হার ×1000