welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

ভারতীয় ভাষার শ্রেণিবিভাগ (Classification of Indian Languages)

 ভারতীয় ভাষার শ্রেণিবিভাগ (Classification of Indian Languages)


1961 খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি অনুসারে ভারতে 1652টি বিভিন্ন ভাষায় মানুষ কথা বলতেন। কিছু পরবর্তিকালে 97% মানুষ 2.3টি প্রধান ভাষায় কথা বলতেন। বর্তমানে ভারতে ।৪টি প্রধান ভাষার প্রচলন দেখা যায় এবং এই ভাষাগুলির মাধ্যমে 91% মানুষ কথা বলেন।

ভারতীয় ভাষাগোষ্ঠীকে প্রধান চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলি হল-

(a) ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার (আর্য) (Indo-European Language Family-Arya),

(b) দ্রাবিড়ীয় ভাষা পরিবার (Dravidian Family),

(c) অস্ট্রিক ভাষা পরিবার (Austric Family-Nixshada) এবং

(d) সিনো-তিব্বতীয় ভাষা পরিবার (Smo-Tibetan Family)

▶ (a) ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার (Indo-European Family-Arya): ভারতীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভাষাটি হল আর্য ভাষা। ভারতীয় জনগণের প্রায় 75% মানুষ আর্য ভাষায় কথা বলেন। আর্য ভাষাগোষ্ঠীকে প্রধান দুটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়-

(i) ডার্ডিক আর্য ভাষা (দারডিক আর্য ভাষা),

(ii) ইন্দো-আর্য ভাষা (The Indo-Aryan Language)

▶(b) ডার্ডিক আর্য ভাষা (The Dardic Aryan Language): কয়েকটি স্থানীয় ভাষ্য নিয়ে এই ভাষা পরিবার গঠিত। কাশ্মীরের খুব স্বল্প পার্বত্য সম্প্রদায় এই ভাষায় কথা বলেন ভারতীয় জনগণ ছাড়াও, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান সীমান্তে বসবাসকারী মানুষজন এই ভাষা ব্যবহার করেন।

ডার্ডিক ভাষার প্রধান তিনটি শাখা হল-

(a) সিনা (কাশ্মীরি, সিনা এবং কোহিস্তানি নিয়ে গঠিত);

(b) খোয়ায় বা চত্রারি বা চৈত্রালি এবং

(c) কাফিরিস্তান উপভাষা।

কাশ্মীর রাজ্যে সিনা এবং কাশ্মীরি উপভাষার প্রচলন দেখা যায়। এই ভাষাটি প্রধানত সংস্কৃত ভাষা

প্রাকৃত ভাষা দ্বারা প্রভাবিত। অনেক ভাষাবিদ বলেন যে, কাশ্মীরি হল ইন্দো-আর্য ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। ভার্ডিক উপভাষা এখানে কম দেখা যায়। ডার্ডিক ভাষাকে শুধুমাত্র ইন্দো-আর্য ভাষার শাখা হিসেবে অনেকে মনে করেন। এই উপভাষা বর্তমানে প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রায় সাত হাজার মানুষ ডার্ডিক আর্য ভাষায় কথা বলেন।

▶(c) ইন্দো-আর্য ভাষা (Indo-Aryan Language): আর্য ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত দ্বিতীয় বৃহত্তম উপগোষ্ঠী হল ইন্দো-আর্য ভাষা। এই ভাষা গোষ্ঠীর মধ্যে হিন্দি, বাঙলা, পাঞ্জাবি, রাজস্থানি, গুজরাটি, সিন্ধি, মারাঠি, ওড়িয়া, সংস্কৃত, অসমিয় এবং উর্দু প্রভৃতি ভাষা উল্লেখযোগ্য। এদের উপগোষ্ঠীগুলি হল-

▶(d) উত্তরের আর্য ভাষা (Northern Aryan Language): উত্তর ভারতের পার্বত্য অঞ্চলের অধিবাসীরা এই ভাষায় কথা বলেন। নেপালি, মধ্য পাহাড়ি এবং পশ্চিম পাহাড়ি আর্য ভাষা এর অন্তর্গত উত্তর-পশ্চিমের আর্য ভাষা (North-Western Aryan Language) (Kachahi) এবং সিদ্ধি হল গুরত্বপূর্ণ ভাষা। উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ভারতীয় অধিবাসীগণ এই খান্দা (Khanda ভাষায় কথাধ্য

▶(e) দক্ষিণের আর্য ভাষা (Southern Aryan Languages): মারাঠি এবং কোঙ্কনি ভাষা এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত। (d) পূর্বের আর্য ভাষা (Eastern Aryan Lanange): দেশের পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীগণ এই ভাষায় অন্তর্গত। বিহারি, ওডিয়া, বাংলা এবং অসমিয় ভাষা এর প্রধান ভাষা।

▶(e) পূর্ব-মধ্য আর্য ভাষা (East-Central Aryan Language): ভারতের মধ্যাঞ্চলের অধিপ্রয় এই ভাষায় কথা বলেন। হিন্দি, পাঞ্জাবি, রাজস্থানি এবং আলোয়ারী ভাষা এই গোষ্ঠীর প্রধান ভাঙ

▶(f) পূর্ব-মধ্য আর্য ভাষা (East Central Aryan Language): অবোধ (Abadi), বুন্দেলখণ্ড, ছড়ি অঞ্চলের ভাষা এই ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে পড়ে। বুখেলি, ছত্তিশগড়ি এই ভাষা পূর্ব-মধ্য আর্য ভাষার অন্তর্গত হয়ে

▶(g) দ্রাবিড়ীয় ভাষা পরিবার (Dravidian Language): দ্রাবিড়ীয় ভাষা পরিবার আং পরিবারের চেয়ে বয়সে প্রাচীন। ভারতীয় জনগণ যারা আর্যদের আগমনের পূর্ব থেকে এদেশের স্থায়ী হল হিসেবে বসবাস করে আসছেন তাঁরা এই ভাষায় জনসংযোগ রক্ষা করেন।

দ্রাবিড় ভাষাগোষ্ঠীর দুটি প্রধান উপবিভাগ হল-

(i) উত্তর দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠী (North Dravidian Languages),

(ii) দক্ষিণ দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠী (South Dravidian Languages)।

▶(h) উত্তর দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠী (North Dravidian Languages): তেলুগু, গোল্ডী, ওঁরাও, মা কৌ, পারজি প্রভৃতি ভাষা এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত। দ্রাবিড় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত সর্বপ্রধান ভাষ। তেলুগু। এই ভাষায় রচিত সাহিত্যের ভাণ্ডার অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী। এই ভাষার প্রচলন বিদেশেও দেখায় যেমন- মায়ানমার, ইন্দোচিন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ভাষার ওপর সংস্কৃত ভাষার বিশেষ প্রভাব।

▶(i) দক্ষিণ দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠী (South Dravidian Languages): তামিল, কানাড়া এবং মালয়া ভাষ্য দক্ষিণ দ্রাবিড়ীয় ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত। টুলু, কোটা, কুর্গি এবং টোডা এগুলি এই গোষ্ঠীর মধ্যে পা তামিলনাড়ুর অধিকাংশ অধিবাসী এবং শ্রীলঙ্কার বেশ কিছু অধিবাসী তামিল ভাষায় কথা বলেন।

মালয়ালাম ভাষায় কেরল এবং লক্ষদ্বীপের অধিবাসীগণ কথা বলেন। প্রায় 1500 বছর পূর্বে তা ভাষা থেকেই এই ভাষার উদ্ভব ঘটেছিল। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ থেকে পঞ্চদশ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মালয়ালাম ভা প্রচুর সাহিত্য রচিত হয়েছিল কেরালাতে।

কর্ণাটক রাজ্যের প্রধান ভাষা হল কানাড়া। এই রাজ্যে কানাড়া ভাষা তিনটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে বিস্তৃতহ্যায়

(i) প্রাচীন কানাড়া ভাষা (খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত),

(ii) মধ্যযুগীয় কানাড়া ভাষা (খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত) এবং

(iii) হোষা কানাড়া (Hosa Kanada) এটি বর্তমানের প্রচলিত কানাড়া ভাষা।

▶ (j) অস্ট্রিক ভাষা (Austric Languages): ভারতীয় অস্ট্রিক ভাষা প্রকৃতপক্ষে অস্ট্রো-এশিয়া ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। এই ভাষাগোষ্ঠীর দুটি উপবিভাগ হল-

(i) মুন্ডা অথবা কোল ভাষা, (ii) মন-খামের ভাষা।

▶(k) মুণ্ডা অথবা কোল ভাষা (Munda or Kol Languages): অস্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর ময়ের ভাষার প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এগুলি প্রধানত 14টি উপজাতীয় ভাষা (Tribal Language) নিয়েও পূর্ব ভারতের খেরি (Kherwari) ভাষা হল প্রধান ভাষাগোষ্ঠী। ছোটোনাগপুর, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং পশ্চিমবে কিছু অঞ্চলে এই জাতীয় ভাষার প্রচলন দেখা যায়। সাঁওতালি মুণ্ডারি, হো, বিরহোড়, ভূমিজ (Bhum কোরয়া, কোরকু এই ভাষাগুলি মুণ্ডাগোষ্ঠীর পর্যায়ভুক্ত। সাঁওতালি, মুন্ডারি এবং হো ভাষায় অসংখ এবং মিথোলজি আছে।

▶(l) মন-খামের ভাষাগোষ্ঠী (Mon-Khamer Languages): অস্ট্রিক ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত মন-খামের ভাষার দুটি উপশ্রেণি আছে। এগুলি হল-

(a) খাসি (Khasi) এবং (b) নিকোবরি (Nicobari)।

খাসি ভাষায় কথা বলেন মেঘালয় রাজ্যের খাসি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন। নিকোবরি ভাষায় কথা বলেন নিকোবর দ্বীপপঞ্জের নিকোবরি সম্প্রদায়।

▶(m) সিনো-তিব্বতীয় ভাষাগোষ্ঠী (Sino-Tibetan Languages): বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ সিনো-তিব্বতীয় ভাষায় কথা বলেন। এই ভাষাগোষ্ঠীকে তিনটি উপবিভাগে ভাগ করা যায়-

(i) তিব্বত-হিমালয়,

(ii) উত্তর অসমীয় (North Assamese), এবং

(iii) অসমীয়া-মায়ানমারী [বর্মী])

▶(n) তিব্বতীয় হিমালয় ভাষাগোষ্ঠী (Tibeto-Himalayan Language): এই ভাষাগোষ্ঠীর মধ্যে হিমালয় থায়ী অধিদলা শ্রেণি এবং ভুটিয়া শ্রেণি পর্যায়ভুক্ত। হিমালয় শ্রেণির মধ্যে চারটি ভাষা আছে। এগুলি হল চম্বা, লাহুলি, শোড়ী (Kannauri) এবং লেপচা। হিমালয় শ্রেণির মধ্যে কন্নড়ী ভাষায় সবচেয়ে বেশি লোক কথা বলেন।

সিনো তিব্বতীয় শ্রেণির মধ্যে আরও কয়েকটি ভাষা আছে। এগুলি হল- মণিপুরি, গারো, ত্রিপুরী, সিকির এবং লুসাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01