welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

মুমুর্ষুতার অবস্থার কারণ (Causes of Morbidity)

মুমুর্ষুতার অবস্থার কারণ (Causes of Morbidity)


দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ যখন ভুগতে থাকে তখন মুমুর্ষ অবস্থা তৈরি হয়। প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন ধরনের আর্থ-সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থা এবং দৈহিক গঠন-কাঠামো এর জন্য দায়ী যেমন-

(A) জিনগত কারণ (Genetic Factor): কিছু কিছু রোগ আছে যেগুলি বংশপরম্পরায় পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে সংক্রমিত হয়। জিনগত বৈশিষ্ট্যের তারতম্যের জন্যই মানুষের মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার তারতম্য ঘটে। ফলে কিছু রোগে মানুষ আক্রান্ত হলে তার পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ওই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। উচ্চরক্তচাপ, ব্লাড সুগার, হিমোফিলিয়া এগুলি জিনগত কারণে ঘটে থাকে। খুব শীতল কিংবা খুব উদ্বু জলবায়ু অঞ্চলে যারা সর্বদা বসবাস করে তাদের মধ্যে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি হয়।

(B) অপুষ্টি (Malnutrition): প্রত্যেক মানুষের প্রতিদিন ন্যূনতম পুষ্টি বিভিন্ন জৈবিক কার্য পরিচালনা এবং দেহ গঠনের জন্য প্রয়োজন হয়। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট এই খাদ্য-উপাদান মানুষের দেহে পৃষ্টির যোগান দেয়। ন্যূনতম পুষ্টির যোগান না থাকলে মানুষ অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। আঅ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতা এরকম একটি অপুষ্টিজনিত রোগ। রিকেট রোগে শিশুরা আক্রান্ত হয় ভিটামিনের অভাবে। এই ভিটামিন বিভিন্ন খাদ্য উপাদান থেকে পাওয়া যায়।

উন্নত দেশগুলি আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে মাথাপিছু আয় বেশি হয়। মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত হয়। কিন্তু দরিদ্র দেশগুলিতে সমাজের একটি বড়ো অংশ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করে। ফলে বরিদ্রতার কারণে শিশুরা এখানে অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় পৌঁছায়।

(C) জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ (Attack of Virus and Bacteria): জল, বায়ু, খ প্রভৃতির মধ্যে বিভিন্ন জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে মানুষের শরীরে বিভিন্ন অসুখ ছড়ায়। যেমন সালমোনেলা টাইফসা দ্বারা টাইফয়েড, ভিব্রিও কলেরি দ্বারা কলেরা, মাইকো ব্যাকটেরিয়াম টিউবার কুলোছি যারা যক্ষ্মা রোগ ছড়ায়। দীর্ঘকালীন জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা রোগে আক্রান্ত হলে এবং চিকিত ঠিকমত না হলে মানুষ মুমূর্ষু অবস্থায় পৌঁছায়। অনেকক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটে।

(D) মানুষের খাদ্যাভাস (Foodhabit of Man): মানুষের খাদ্যাভাস অনেকক্ষেত্রে বিভিন্ন কে সংক্রমণের অন্যতম কারণ। দীর্ঘকাল ধরে Fast Food গ্রহণ, অর্ধসিদ্ধ বিভিন্ন মাছ-মাংস আহার প্রশ্ন খেতে থাকলে পাকস্থলী ও পেটের অসুখ দেখা দেয়। মানুষ ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং চরম মু অবস্থা প্রাপ্ত হয়।

(E) বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় (Natural Hazard or Calamity): প্রাকৃতিক বিপর্যয় যখন ভাল আকারে কোনো অঞ্চলে ঘটে, তখন তার প্রভাবে মানুষের মধ্যে বিভিন্ন মহামারী রোগের প্রাদুর্ভাব যা যেমন- ভয়ংকর বন্যার ফলে যে-কোনো জায়গায় আন্ত্রিক বা কলেরা রোগ ছড়িয়ে পড়ে। বন্যার। যত বেশি দিন স্থায়ী হবে তত আন্ত্রিকের প্রকোপ বাড়তে থাকে। এর ফলে এলাকার বহু মানুষ দীর্ঘকাল অসুস্থতার সম্মুখীন হয়। ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, সুনামি প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাধ্যমে এই ধরনে ঘটনা ঘটে।

(F) মানুষে বার্ধক্যজনিত মুমূর্ষু অবস্থা (Morbidity due to Old Age): যৌবন ও পরিষ অবস্থায় মানুষ খুব সচল থাকে। কিন্তু যখনই মানুষ বার্ধক্য অবস্থায় পৌঁছায় তখন তার শরীর ক্রন দুর্বল হতে শুরু করে। ফলে বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগ ক্রমশ মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়ে।

(G) পরিবেশের প্রভাব (Influence of Environment): দীর্ঘকাল ধরে নিম্নমানের পরিবো বসবাস করলে মানসিক ভাবে এবং শারীরিক দিক থেকে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই জন্য শহরাঝা যারা বস্তি এলাকায় বসবাস করেন তারা প্রায়ই বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয়। বার বার অসুখে আক্রা হওয়ার ফলে মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। স্বাস্থ্য ও পানীয় জলের পরিসেবার মান এখ খুব খারাপ হয়। ফলে মানুষের জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত নিম্নমানের পরিলক্ষিত হয়। কলকাতা, মুখা দিল্লীর মতো শহরেও প্রচুর বস্তি এলাকার অবস্থান আমাদের চোখে পড়ে। এই সব এলাকায় বসবাসকা মানুষের একটা বড়ো অংশ মুমূর্ষু অবস্থায় (Morbidity condition) আছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01