welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

নীল বিপ্লব (Blue Revolution)

 নীল বিপ্লব (Blue Revolution)


নীল বিপ্লব বলতে বোঝায় জলসম্পদের ব্যবহার করে মৎস্য উৎপাদনে বিপুল বৃদ্ধি ঘটানো। এই জলসম্পদ বলতে অভ্যন্তরীণ জলাশয়-পুকুর, খাল-বিল, নদী-নালা এবং উপকূলীয় বা সামুদ্রিক জলভাগ উভয়কেই বোঝায়।


ড. হীরালাল চৌধারী (Dr. Hiralal Chaudhary) নীল বিপ্লবের জনক হিসেবে পরিচিত।

মৎস্য সংগ্রহের উন্নতির জন্য ভারত সরকার Central Institute of Fresh Water Aquaculture (CIFA), National Fisheries Development Board (NFDB) এবং আরোও কয়েকটি মৎস্য উন্নয়ন পর্ষদ গড়ে তোলে, যা ছিল নিতান্তই জীবিকাসত্তাভিত্তিক মৎস্য সংগ্রহ, তার আধুনিকীকরণ এবং বাণিজ্যিকীকরণের জন্য এই সংস্থাগুলি সচেষ্ট হয়।

মৎস্য চাষ ভারতের উপকূলীয় অঞ্চলের একটি প্রধান জীবিকা যার উপর প্রায় ১-৫ কোটি মানুষ জীবিকা অর্জন করেন। অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় মৎস্য সংগ্রহে সরকারি পর্যায়ে গুরুত্ব দানের ফলে ১৯৯০ থেকে বর্তমান সময়ের মধ্যে মৎস্য উৎপাদন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারতে সমুদ্রোপকূল রেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ৮,১০০ কিলোমিটার যার তীরে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার মৎস্যজীবী গ্রাম এবং প্রায় ২০০০ প্রথাগত মাছ ধরার বন্দর। ভারতের প্রায় ২ লক্ষ কিলোমিটার নদী ও খালে, ৩০ লক্ষ হেক্টর ক্ষুদ্র ও বড়ো জলাধারে, প্রায় ২৩ লক্ষ হেক্টর পুকুর, দীঘি প্রমুখ জলাশয়ে এবং প্রায় ৭-৫ লক্ষ হেক্টর প্লাবনভূমিস্থিত জলাভূমিতে মৎস্য চাষের সুযোগ রয়েছে। এগুলি সবই মৎস্য সংগ্রহের উপযুক্ত।


• নীল বিপ্লবের লক্ষ্যঃ

হেক্টর পিছু জলাশয়ে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মৎস্য চাষের এলাকা বাড়ানো। নতুন নতুন হ্যাচারি (Hatchery) স্থাপনের মধ্য দিয়ে মৎস্য বীজ উৎপাদন বৃদ্ধি। মৎস্যজীবীদের মৎস্য বীজ ও মীন সরবরাহ করে মৎস্য চাষে উৎসাহ প্রদান। সমুদ্রে মৎস্য সংগ্রহে বৈচিত্র্য বৃদ্ধি (উদাহরণ-সিউইড চাষ, পার্ল কালচার, রঙিন মাছ চাষ ইত্যাদি)। মৎস্য শুদ্ধকরণ কেন্দ্র ও মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপন। সামুদ্রিক মৎস্য সংগ্রহে নৌ-প্রযুক্তি উন্নততর করা। নতুন নতুন আধুনিক মৎস্য বন্দর গড়ে তোলা এবং জীবিকাসত্তাভিত্তিক মৎস্য বন্দরগুলিতেও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা। উপকূলভিত্তিক মৎস্য শিল্প সংক্রান্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা। মৎস্য সংরক্ষণের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি। মৎস্য বিপণনের জন্য উপকূল ও বাজারের মধ্যে উন্নততর যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। মৎস্য বৈদেশিক বাণিজ্যে প্রেরণের উদ্দেশ্য বিশেষ বিশেষ মৎস্য যার বৈদেশিক চাহিদা প্রচুর (যেমন-চিংড়ি, পমফ্রেট প্রভৃতি মাছ) সেই সকল মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ইত্যাদি।


দেশে প্রায় ১৭ লক্ষ পূর্ণ সময়ের মৎস্যজীবী, ১৩ লক্ষ আংশিক সময়ের এবং ২৩ লক্ষ সংক্ষিপ্ত সময়ের মৎস্যজীবী রয়েছেন। এরা মৎস্য সংগ্রহে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত।


নীল বিপ্লবের সাফল্য এখনও তেমনভাবে আসেনি। ভারতে জনপ্রতি ১ জন মৎস্যজীবী বছরে মাত্র ২ মেট্রিক টন মৎস্য সংগ্রহ করে। যেখানে এই পরিমাণ চিনে ৬ মেট্রিক টন, চিলিতে ৭২ মেট্রিক টন ও নরওয়েতে ১৭২ মেট্রিক টন। দেশে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারলে যে বিপুল মৎস্য সংগ্রহের সুযোগ রয়েছে তা নীল বিপ্লবের সাফল্যের সুযোগ করে দেবে এবং দেশের মৎস্যজীবীদের অর্থনৈতিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটিয়ে জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।


নতুন নতুন, সৃজনশীল মৎস্য শিল্পপ্রযুক্তি, দক্ষ পরিচালন ব্যবস্থা এবং বাজারের সঙ্গে সুদৃঢ় যোগাযোগ ইত্যাদির মাধ্যমেই কেবল এই উন্নতি সম্ভব।


প্রধান কৃষিজাত পণ্যসমূহ (Principle Agricultural Products):

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভূ-প্রকৃতি, মৃত্তিকা, বৃষ্টিপাত ও উন্নতার পার্থক্যে বিভিন্ন ধরনের ফসল জন্মায়। এই সকল ফসলগুলিকে বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়।


খাদ্যশস্য (Food Crops): ভারতের উৎপন্ন খাদ্যশস্যসমূহের মধ্যে গম ও ধানই প্রধান। পৃথিবীর অধিকাংশ লোকেরই প্রধান খাদ্যশস্য গম অথবা চাল (ধান)। গম ও ধান ছাড়া অন্যান্য দানা খাদ্যশস্যের মধ্যে রয়েছে ভুট্টা, যব, রাই, ওট, মিলেট প্রভৃতি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01