welcome to mygeo.in Indian no 1 geography based website in Bengali

সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র হ্রাসের কার

সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র হ্রাসের কারণ


(১) জলের লবনতা বৃদ্ধি- নদীগুলি বর্তমানে আর সেই পরিমাণে স্বাদুজল বহন করে আনে না। গঙ্গা নদীর উর্ধ্বতর প্রবাহে এত অধিক সেচখাল খনন করা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহার প্রভৃতি রাজ্যে যে নদীতে স্বাদু জলের আসার পরিমাণ কমে গেছে, লবণতা বৃদ্ধির এটি উল্লেখযোগ্য একটি কারণ।

(২) নিওটেক্টনিক মুভমেন্ট (Neo tectonic movement) নব্য ভূ-গাঠনিক আন্দোলনের ফলে সুন্দরবন বাংলাদেশের দিকে কিঞ্চিৎ কাত হয়ে গেছে যার ফলে স্বাদু জলপ্রবাহ অনেক বেশি পরিমাণে বাংলাদেশে সুন্দরবনের দিকে চলে যাচ্ছে, ভারতীয় সুন্দরবনে স্বাদু জলের পরিমাণ কমে নদীর জলে লবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়েছে এবং এর ফলে লবণতা সহ্য করতে পারে না এরূপ প্রাণী ও উদ্ভিদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

(৩) চোরা শিকার- চোরা শিকারীদের উপদ্রবে কমতে বসেছে বিভিন্ন হরিণ, রয়‍্যাল বেঙ্গল টাইগার ও অন্যান্য প্রাণী। বিলুপ্ত হতে বসেছে বেশ কিছু প্রজাতির বৃক্ষ। সুন্দরী বৃক্ষ বর্তমানে প্রায় বিরল।

(৪) প্রাকৃতিক দুর্যোগ- বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়, বিশেষত আয়লা, আমফান সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বৃক্ষের অনেকখানি ক্ষতিসাধন করেছে।

(৫) বন্য প্রানী প্রকল্প - ব্যাঘ্র প্রকল্প, কুমীর প্রকল্প-এর পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় প্রানী পুনরুদ্ধার কর্মসূচীর অঙ্গ হিসেবে এদের প্রজননে সহায়তা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ (Biodiversity Conservation in Sundarban): সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণে বিশেষ উদ্যোগী হতে হবে। জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে ব্যাঘ্র প্রকল্প, কুমীর প্রকল্প ইত্যাদি কর্মসূচীগুলি বাস্তবায়িত করতে হবে। GIS বা ভৌগোলিক চুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে সুন্দরবনের দুষ্পাপ্য প্রাণীদের গতিবিধি লক্ষ্য করে সেগুলি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামীণ জনসংখ্যার বন সংরক্ষণে অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে হবে। বনকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং তাদেরকে বন সংরক্ষণে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে ২ ধরনের উভচর, ১৩ ধরনের সরীসৃপ, ২৫ ধরনের পাখি এবং ৫ ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী। সাম্প্রতিক জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change) সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্যে প্রতিকূল প্রভাব ফেলেছে। সমীক্ষালদ্ধফলাফলে দেখা গেছে সুন্দরবন দ্বীপ সংলগ্ন সমুদ্রের জলপৃষ্ঠ উপরে উঠছে এবং বেশ কয়েকটি দ্বীপ সুন্দরবনে আংশিকভাবে বা পুরোপুরি জলের তলায় চলে গেছে। এই জলপৃষ্ঠ বৃদ্ধি সুন্দরবনের বনভূমি এবং জীব বৈচিত্র্য হ্রাসের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ঘূর্ণিঝড়ের সংখ ্যা বৃদ্ধি ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ক্ষতি সাধন করছে। এছাড়া চোরাই কাঠ কারবারীদের উপদ্রবে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ক্ষতিসাধন হচ্ছে। ব্যাঘ্র প্রকল্প, কুমীর প্রকল্প-এর পাশাপাশি বিলুপ্তপ্রায় বৃক্ষ ও প্রানী পুনরুদ্ধার কর্মসূচী যেমন সুন্দরী বৃক্ষ সৃজন প্রকল্প ইত্যাদি প্রকল্পে নতুনত্ব ও গতি আনতে হবে। যৌথ বনব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট সংখ্যায় গ্রামবাসীদের যুক্ত করতে হবে। এতে গ্রামবাসীদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির পাশাপাশি অরণ্য সংরক্ষনের সহায়ক হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Middle post ad 01